প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) বিরুদ্ধে সরকারকে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। তিনি বলেছেন, ‘আমরা দেখেছি গুম, খুন, হত্যার সঙ্গে কীভাবে রাষ্ট্রীয় এজেন্সিগুলো জড়িত রয়েছে। ৫ আগস্টের আগে আমাদেরকে ভিলেন বানানোর চেষ্টা করা হয়েছে। আমরা দেখেছি, এজেন্সিগুলো মিডিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে।

এজেন্সিগুলো হচ্ছে ব্যুরোক্রেটদেরকে (আমলাদের) নিয়ন্ত্রণ করে। সে জন্য ডিজিএফআই নামে যে সংগঠনটি রয়েছে, সেটির বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।’

মঙ্গলবার রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে আন্তর্জাতিক যুব দিবস উপলক্ষে জাতীয় নাগরিক পার্টির যুব সংগঠন জাতীয় যুবশক্তির আয়োজিত ‘জাতীয় যুব সম্মেলন ২০২৫’–এ বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন হাসনাত আবদুল্লাহ।

বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র রুখতে ডিজিএফআইয়ের কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেই বলে মন্তব্য করেন হাসনাত আবদুল্লাহ। তিনি বলেন, ‘আপনি দেখবেন ডিজিএফআইয়ের কাছে বিদেশে বাংলাদেশ নিয়ে কী ষড়যন্ত্র হচ্ছে, সেটি নিয়ে কোনো তথ্য নেই। তারা একটা রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আরেকটা রাজনৈতিক দলের, একটা রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে আরেকটা রাজনৈতিক দলকে কীভাবে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেওয়া যায়, সেটি নিয়ে তারা দিনরাত ব্যস্ত থাকে।’

ডিজিএফআইকে সংস্কারের দাবি জানিয়ে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘প্রয়োজনে প্রতিষ্ঠানটাকে ব্যান (নিষিদ্ধ) করে দিতে হবে। এই মিলিটারি অর্গানাইজেশনকে বাংলাদেশপন্থী হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। কোনো দলপন্থী করার প্রয়োজন নাই।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের জন্য এই মিলিটারি অর্গানাইজেশনকে আধুনিক ও যুগোপযোগী, আমাদের ২৪ দফায় আমরা যেভাবে বলেছি, বাংলাদেশপন্থী একটা মিলিটারি অর্গানাইজেশন আমরা গড়ে তুলব। সেভাবেই গড়ে তুলতে হবে।’

বক্তব্যে সংবাদমাধ্যমের ভূমিকা নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেন হাসনাত আবদুল্লাহ। মিডিয়ার (গণমাধ্যম) চরিত্র আগের মতো হয়ে গেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন সম্প্রতি মিডিয়া কীভাবে নগ্নভাবে এই গণ–অভ্যুত্থানের সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের ক্যারেক্টার অ্যাসাসিনেশনের (চরিত্র হনন) জন্য, নারীদেরকে কীভাবে বিতর্কিত করার জন্য একটা চেইন একটা অ্যাপ্রোচ নিয়েছে।’

গণমাধ্যমের প্রতি বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশের আহ্বান জানিয়েছেন হাসনাত আবদুল্লাহ। জনগণের যে বক্তব্য, জনগণের দেশ নিয়ে যে পরিকল্পনা, সেটা সঠিকভাবে উঠে আসুক—সেই প্রত্যাশা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘অথচ আমরা দেখতে পাচ্ছি, গণমাধ্যমে আগের মতো ডিজিএফআই থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন এজেন্সি সেখানে নগ্নভাবে হস্তক্ষেপ করে। এজেন্সি ছবি তুলে মিডিয়াকে দেয়, মিডিয়া সেটি প্রকাশ করে। মিডিয়া এখন আর গণমানুষের নাই, সেটি এখন এজেন্সির মুখপাত্র হিসেবে কাজ করছে।’

প্রশাসনের সমালোচনা করে হাসনাত বলেন, ‘গত এক বছরে প্রশাসনের চরিত্র বদলায়নি। ৫ আগস্টের পরে একধরনের গোষ্ঠী প্রশাসন কবজা করেছে। আগের তিনটি নির্বাচনে যারা জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।’

গত এক বছরে অন্তর্বর্তী সরকার কী কী কাজ করেছে, তা প্রকাশের দাবি জানিয়ে এনসিপির এই নেতা বলেন, ‘পরবর্তী সময়ে যত দিন থাকে সরকারের কী কী পরিকল্পনা রয়েছে, বিশেষ করে তিনটা বিষয়ে এক মিডিয়া, দুই অ্যাডমিনিস্ট্রেশন এবং তিন মিলিটারি। এই তিনটা বিষয়ে সরকারের কী ধরনের ব্যবস্থা রয়েছে, কী ধরনের পরিকল্পনা রয়েছে, আমাদের সামনে প্রকাশ করতে হবে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন ত ক ব যবস থ প রক শ সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

নার্সদের অমর্যাদাকর অবস্থানে রাখা হয়েছে: ফরহাদ মজহার

বাংলাদেশে জনগণের স্বাস্থ্যব্যবস্থা নিশ্চিত করাটা অত্যন্ত জরুরি হলেও এখানে পেশা হিসেবে নার্সদের অমর্যাদাসম্পন্ন একটা অবস্থানে রাখা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন কবি ও রাষ্ট্রচিন্তক ফরহাদ মজহার।

ফরহাদ মজহার বলেন, ‘নার্সদের ডাক্তারি ব্যবস্থার অধীন একটা পেশা হিসেবে যে দেখা হয়, আমরা মনে করি এটা ভুল। এখান থেকে মুক্ত হতে হবে। নার্স সেবাটা স্বাস্থ্যসেবার একটা মৌলিক দিক। ফলে তাঁদের স্বাধীনভাবে এই পেশাকে চর্চা করবার সুযোগ–সুবিধা দিতে হবে।’

আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন ফরহাদ মজহার। সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশন (বিএনএ) ও স্বাস্থ্য আন্দোলন। স্বাস্থ্য আন্দোলনের পক্ষে বক্তব্য দেন ফরহাদ মজহার।

সরকার স্বাস্থ্যকে এখন আর জনগণের অধিকার হিসেবে স্বীকার করছে না বলে অভিযোগ করেন ফরহাদ মজহার। তিনি বলেন, ‘এখন স্বাস্থ্যকে অধিকার নয়, বাজারজাত পণ্য বানানো হয়েছে। টাকা থাকলে চিকিৎসা পাবেন, টাকা না থাকলে নয়।’

নার্সদের স্বাধীন পেশাগত চর্চা, পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ, ন্যায্য বেতন ও মর্যাদা নিশ্চিতের জন্য জাতীয় নার্সিং কমিশন গঠনের দাবি জানিয়ে ফরহাদ মজহার বলেন, নার্সদেরকে ডাক্তারদের হুকুমমতো চলতে হবে—এই ধারণা ভাঙতে হবে। স্বাস্থ্য মানে শুধু প্রেসক্রিপশন নয়, প্রতিরোধও একটি বড় দিক। নার্সদের মর্যাদা ও স্বাধীনতা নিশ্চিত হলে জনগণ প্রকৃত স্বাস্থ্যসেবা পাবে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফরহাদ মজহার বলেন, নার্সিং স্বাস্থ্যসেবার এক মৌলিক দিক। কিন্তু আমাদের সমাজে চিকিৎসাকে ডাক্তারিকরণ বা মেডিক্যালাইজেশন করা হয়েছে। অনেক রোগে ডাক্তার কিংবা ওষুধের প্রয়োজনই হয় না। এ জায়গায় নার্সরা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।

সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএনএ) সভাপতি মো. শরিফুল ইসলাম। এক মাসের মধ্যে নার্সিং কমিশন গঠনের এক দফা দাবি বাস্তবায়ন না হলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনের সঞ্চালনা করেন বিএনএর সহসভাপতি মাহমুদ হোসেন তমাল। এতে উপস্থিত ছিলেন স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারপারসন জরিনা খাতুন, সহসভাপতি মনির হোসেন ভূঁইয়া এবং সংগঠনের অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতা-কর্মী।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সংস্কার, বিচার ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য তরুণ নেতৃত্বের বিকল্প নেই: রাশেদ খান
  • প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য দেশের পরিস্থিতি অস্থির করে তুলছে: ফারুক
  • নার্সদের অমর্যাদাকর অবস্থানে রাখা হয়েছে: ফরহাদ মজহার
  • ১৭ বছর এক অসুর জনগণের ভোটাধিকার হরণ করেছিল: নিপুন রায় 
  • নির্বাচিত সরকার না থাকায় অনেক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি: আমীর খসরু
  • অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বেই ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে: অ্যাটর্নি জেনারেল
  • ড. ইউনূসের নেতৃত্বেই ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে: অ্যাটর্নি জেনারেল
  • চাঁদপুরে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করায় এনসিপির নিন্দা
  • রাষ্ট্র মানে কিন্তু গ্রামীণ ব্যাংক চালানো নয়: ফরহাদ মজহার
  • ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক নিষেধাজ্ঞা আরোপের পক্ষে ভোট