টিউলিপের বাংলাদেশি নাগরিকত্ব রয়েছে
Published: 12th, August 2025 GMT
যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট সদস্য (এমপি) টিউলিপ সিদ্দিকের বাংলাদেশি নাগরিকত্ব আছে। বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে এ তথ্য জানিয়েছেন। যদিও টিউলিপ বলে আসছেন, তাঁর বাংলাদেশি নাগরিকত্ব নেই। যুক্তরাজ্যের সাবেক ‘সিটি মিনিস্টার’ টিউলিপ এখন বাংলাদেশে বিচারের মুখোমুখি।
বিধিবহির্ভূতভাবে সরকারি প্লট নেওয়ার অভিযোগে চলতি সপ্তাহে টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে করা মামলার শুনানির ফাঁকে দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মোহাম্মদ সুলতান মাহমুদ ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে বলেন, যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির এই এমপি একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি হিসেবে বাংলাদেশি পাসপোর্ট ও পরিচয়পত্র গ্রহণ করেছেন এবং ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত হয়েছেন।
সুলতান মাহমুদ বলেন, ‘তাঁর (টিউলিপ সিদ্দিকের) ঠিকানা, একাধিক পাসপোর্ট এবং ভোটার তালিকায় তাঁর নাম—সব পাওয়া গেছে। আমরা যথাসময়ে এগুলো দাখিল করব।’
এ ধরনের নথিপত্র থাকে বাংলাদেশের এমন কয়েকটি দপ্তর বা সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করেছে ফিন্যান্সিয়াল টাইমস। তাদের কাছে এসব কাগজপত্রের অনুলিপি আছে বলে তারা নিশ্চিত করেছে।
টিউলিপ এই বিচারকে ‘হয়রানি ও প্রহসন’ আখ্যায়িত করছেন। টিউলিপ অনেক আগে থেকে দাবি করে আসছেন, তিনি বাংলাদেশি নাগরিক নন। ২০১৭ সালে তিনি সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘আপনি কি আমাকে বাংলাদেশি বলছেন? আমি ব্রিটিশ.
টিউলিপ সিদ্দিকের আইনি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান স্টিফেনসন হারউডের একজন মুখপাত্র এসব নথির অস্তিত্ব অস্বীকার করেছেন এবং সেগুলোকে জাল বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘টিউলিপের কখনো বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্র বা ভোটার আইডি ছিল না এবং তিনি শিশু বয়স থেকে কোনো পাসপোর্ট নেননি।’
আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, টিউলিপের নাগরিকত্বের প্রশ্নটি বাংলাদেশের আইনে তাঁর বিচার হতে পারে কি না, সেটাকে প্রভাবিত করে না। তবে আদালতে আনুষ্ঠানিক বিচার শুরুর কয়েক দিন আগে তাঁর সততা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হওয়াটা অস্বস্তিকর হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
টিউলিপ সিদ্দিকের খালা শেখ হাসিনা গত বছরের আগস্টে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ক্ষমতাচ্যুত হন।
খালা, মা ও দুই ভাই-বোনসহ টিউলিপের বিরুদ্ধে ঢাকার পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে বেআইনিভাবে সরকারি প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগ আনে দুর্নীতি দমন কমিশন। সংস্থাটির আইনজীবীরা দাবি করেন, প্লট পাওয়ার যোগ্যতার নিয়ম এড়াতে রাজনৈতিক প্রভাব ব্যবহার করেছেন টিউলিপ সিদ্দিক।
শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলে কর্তৃত্ববাদ, নির্বাচনে কারসাজি ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ রয়েছে। ছাত্রদের নেতৃত্বে দেশব্যাপী বিক্ষোভের মুখে আকস্মিক তাঁর সরকারের পতন হয়। তিনি ভারতে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন। শেখ হাসিনার বিদায়ের ফলে তাঁর সরকার ও পরিবারের দুর্নীতির ব্যাপকতর তদন্তের সুযোগ আসে নোবেলজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের সামনে।
ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের অনুপস্থিতিতে তাঁর বিচারকাজ চলছে। টিউলিপ বলেছেন, মামলার বিষয়ে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ থেকে তাঁর সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করা হয়নি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে গত সোমবার তিনি লিখেন, ‘কোনো যোগাযোগ নেই। কোনো প্রমাণও দেওয়া হয়নি। এমনকি আমার আইনজীবীদের পক্ষ থেকে আইনসিদ্ধভাবে এ বিষয়ে জানতে চাইলেও কোনো সাড়া দেওয়া হয়নি। এটি যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া নয়। এটা হয়রানি ও প্রহসন।’
দুর্নীতি দমন কমিশনের কৌঁসুলি সুলতান মাহমুদ বলেন, টিউলিপের পাসপোর্ট, জাতীয় পরিচয়পত্র ও ভোটার তালিকায় থাকা ঠিকানায় একটি সমন পাঠানো হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘ভোটার আইডি কার্ডে থাকা ঠিকানাগুলো পরিদর্শন করা হয়েছিল। তাঁর একটি জাতীয় পরিচয়পত্র ও একটি পাসপোর্ট আছে। আমাদের দুদক টিমগুলো, একাধিক টিম তদন্তের জন্য সেসব ঠিকানায় গিয়েছিল এবং যথাসময়ে নোটিশ দেওয়া হয়েছে।’
দুদকের ঠিকানায় গত জুনে টিউলিপের আইনজীবীদের পাঠানো একটি চিঠি ফিন্যান্সিয়াল টাইমস দেখতে পেয়েছে। এতে দুদককে তাঁর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রচারণা চালানোর এবং তাঁর আইনি পরামর্শক দলের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করতে অস্বীকৃতি জানানোর অভিযোগ করা হয়েছে।
বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন নিশ্চিত করেছে, টিউলিপ সিদ্দিকের একটি জাতীয় পরিচয়পত্র রয়েছে, যদিও এটি সরাসরি নাগরিকত্ব নির্দেশ করে না।
টিউলিপ সিদ্দিক গত জানুয়ারিতে যুক্তরাজ্যের সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীন সিটি মিনিস্টারের (ইকোনমিক সেক্রেটারি) পদ থেকে পদত্যাগ করেন। এ পদে দেশটির আর্থিক খাতে দুর্নীতি রোধের দায়িত্বে ছিলেন তিনি।
খালা শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন দল আওয়ামী লীগ-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সম্পদ থেকে তিনি সুবিধা নিয়েছেন, ফিন্যান্সিয়াল টাইমস-এ প্রথমবারের মতো এমন প্রতিবেদন প্রকাশের পর রাজনৈতিক চাপের মুখে টিউলিপ পদত্যাগ করেন।
টিউলিপ কোনো ধরনের অনিয়ম করার কথা অস্বীকার করে আসছেন। শেখ হাসিনার ভাগনি বলছেন, অধ্যাপক ইউনূস সরকার ‘বিরোধীদের দমন’ করছে, তার শিকার তিনি।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ট উল প স দ দ ক র য ক তর জ য র ট উল প র আইনজ ব য গ কর কর ছ ন র আইন সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
আইনজীবী মাসুদ মিয়ারমৃত্যুতে আইনজীবী সমিতির শোক সভা ও দোয়া
নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির বিজ্ঞ সদস্য এড. মোহাম্মদ মাসুদ মিয়ার মৃত্যুতে আইনজীবী সমিতির উদ্যোগে শোক সভা ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রবিবার ( ১৬ নভেম্বর ) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ আইনজীবী সমিতির বার ভবনের নিচতলায় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
শোক সভায় নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এড. সরকার হুমায়ূন কবির ও সাধারণ সম্পাদক এড. এইচ এম আনোয়ার প্রধানসহ আইনজীবীরা প্রয়াত এড. মোহাম্মদ মাসুদ মিয়ার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং স্মৃতিচারণ করে বক্তব্য রাখেন।
পরে এড. মোহাম্মদ মাসুদ মিয়ার প্রয়াত সকল আইনজীবীদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত এবং সকল আইনজীবীদের সু- স্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে দোয়া পরিচালনা করা হয়।
নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এড. সরকার হুমায়ূন কবিরের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এড. এইচ এম আনোয়ার প্রধানের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এড. সাখাওয়াত হোসেন খান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক এড. জাকির হোসেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর ( পিপি) এড. আবুল কালাম আজাদ জাকির, জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল (পিপি) এড. খোরশেদ আলম মোল্লা, সিনিয়র আইনজীবী এড. রফিক আহমেদ, এড. হাফিজুর রহমান মোল্লা, এড. কাজী আ. গাফ্ফার, এড. রেজাউল করিম রেজা,এড. জয়নাল আবেদীন, এড.বোরহান উদ্দিন সরকার, এড. মশিউর রহমান শাহিন, এড. রাকিবুল ইসলাম শিমুল, এড. আজিজুল হক হান্টু, এড. শামসুল আরেফীন টুটুল, এড. সালাউদ্দিন সবুজ, এড. কামরুজ্জামান রতন, এড. কায়সার আলম টুটুল।
এছাড়াও আরও উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে এড. কাজী আ. গাফ্ফার, সহ-সভাপতি এড. সাদ্দাম হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এড. ওমর ফারুক নয়ন, কোষাধ্যক্ষ এড. শাহাজাদা দেওয়ান, আপ্যায়ন সম্পাদক এড. মাইন উদ্দিন রেজা, লাইব্রেরি সম্পাদক এড. হাবিবুর রহমান , ক্রীড়া সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক এড. সারোয়ার জাহান, সমাজসেবা সম্পাদক রাজিব মন্ডল, আইন ও মানবাধিকার সম্পাদক এড. মামুন মাহমুদ, সদস্য এড. ফাতেমা আক্তার সুইটি, এড. তেহসিন হাসান দিপু, এড. দেওয়ান আশরাফুল ইসলাম, এড. আবু রায়হান, এড.আফরোজা জাহানসহ সিনিয়র ও জুনিয়র আইনজীবীবৃন্দ।