প্রতারণার পৃথক ৫টি মামলায় ‘বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্ক’–এর চেয়ারম্যান খায়রুল বাশারের আবার ১৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত আজ বুধবার এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এর আগে বিকেলে বাশারকে আদালতে হাজির করে পৃথক ৫ মামলায় ৩১ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার আবেদন করে গুলশান থানা-পুলিশ। আবেদনে বলা হয়, উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশ পাঠানোর নামে বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্কের চেয়ারম্যান খায়রুল বাশার বিপুল অঙ্কের টাকা আত্মসাৎ করেছেন। টাকা আত্মসাতের ঘটনার সঙ্গে আর কারা কারা জড়িত রয়েছেন, সে জন্য বাশারকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি। আসামিপক্ষ থেকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন নাকচ চাওয়া হয়। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত খায়রুল বাশারকে ১৩ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেন।

গত ১৫ জুলাই মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের মামলায় খায়রুল বাশারকে ১০ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশের অপরাধ ও তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এর আগের দিন রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকা থেকে বাশারকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। মানি লন্ডারিংয়ের অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে গত ৪ মে গুলশান থানায় সিআইডি মামলাটি করে।

বিদেশে উচ্চশিক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে বিপুল অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে বাশারের বিরুদ্ধে।

সিআইডির পক্ষ থেকে বলা হয়, প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০১৮ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত খায়রুল বাশার তাঁর স্ত্রী খন্দকার সেলিমা রওশন ও ছেলে আরশ ইবনে বাশারকে সঙ্গে নিয়ে একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র গড়ে তোলেন। চক্রটি বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ, স্কলারশিপ ও ভিসা প্রক্রিয়াকরণের নামে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে। ভুয়া ভিসা প্রসেসিং, মনগড়া প্রতিনিধিত্ব ও চটকদার বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের আকৃষ্ট করা হতো। তবে অনুসন্ধানে জানা যায়, শিক্ষার্থীদের অনেকের নামে বিদেশি কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনই করা হয়নি। আবার অনেকে বিদেশে গিয়ে নানাভাবে প্রতারিত হয়েছেন।

সিআইডির তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত ৪৪৮ জন ভুক্তভোগী প্রতারিত হওয়ার কথা জানিয়েছেন। তবে প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে কয়েকজন ভুক্তভোগী প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগে বিভিন্ন থানায় মামলা করেছেন।

সিআইডি বলছে, খায়রুল বাশার ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় করা অর্থ বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে জমা রাখতেন এবং সেখান থেকে অর্থ উত্তোলন করে স্থাবর সম্পদ ক্রয়, ব্যবসা পরিচালনা ও অবৈধভাবে অর্থ স্থানান্তর করেছেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: জ জ ঞ স ব দ কর কর ছ ন ব শ রক স আইড

এছাড়াও পড়ুন:

দলের দুই পক্ষের বিরোধ মেটাতে যাচ্ছিলেন সালিস বৈঠকে, পথে দুর্ঘটনায় মৃত্যু বিএনপি নেতার

দলের দুটি পক্ষের মধ্যে হাতিহাতি ও সংঘর্ষের ঘটনায় বিরোধ মীমাংসায় ডাকা হয়েছিল সালিস বৈঠক। সে বৈঠকে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন ফেনীর পরশুরামের বিএনপি নেতা পারভেজ মজুমদার (৫৮)। পথে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান তিনি। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন তাঁর এক সহযোগী।

পারভেজ মজুমদার ফেনীর পরশুরাম উপজেলার মির্জানগর ইউনিয়নের নিজকালিকাপুর গ্রামের সাদেক মজুমদারের ছেলে। তিনি উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ছিলেন।

পুলিশ ও নিহত ব্যক্তির পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রোববার দুপুরে নিজকালিকাপুর গ্রামে নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ও মারামারির ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় উভয় পক্ষের চারজন আহত হন। সংঘর্ষের ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরশুরাম উপজেলা সদরে সন্ধ্যায় একটি সালিস বৈঠকে উদ্যোগ নেওয়া হয়। সালিসে যোগ দিতে স্থানীয় বিএনপি নেতা পারভেজ মজুমদার ও তাঁর সহযোগী মোহাম্মদ হারুন মোটরসাইকেলে নিজকালিকাপুর থেকে পরশুরাম যাচ্ছিলেন। তাঁদের বহন করা মোটরসাইকেলটি সুবার বাজার-পরশুরাম সড়কের কাউতলী রাস্তার মাথায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে মোটরসাইকেল আরোহী দুজন গুরুতর আহত হন।

স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরে ফেনীর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। পারভেজের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চিকিৎসকের পরামর্শে পরিবারের সদস্যরা রাতে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিলে পথে তাঁর মৃত্যু হয়।

পরশুরাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নুরুল হাকিম মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় বিএনপি নেতা পারভেজ মজুমদারের মৃত্যুর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, নিহত ব্যক্তির পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না থাকায় বিনা ময়নাতদন্তে মরদেহ বাড়ি নিয়ে যায় স্বজনরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ