আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে নির্বাচন করলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জি এম) কাদের।

আজ বুধবার বিকেলে জাতীয় পার্টি কেন্দ্রীয় কার্যালয় মিলনায়তনে জাতীয় পার্টি ঢাকা জেলা শাখার মতবিনিমিয় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

ওই সভায় জি এম কাদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগ যখন জামায়াতে ইসলামীকে রাজনীতিতে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে, আমি তার প্রতিবাদ করেছি। একইভাবে এখন বলছি, আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে নির্বাচন করলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না।’

জি এম কাদের বলেন, ‘জুলাই গণহত্যায় অনেক মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। আমার ও আমাদের নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে অনেকগুলো মিথ্যা হত্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। মিথ্যা মামলায় যাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাঁদের জামিন দেওয়া হচ্ছে না। আইন উপদেষ্টা ও আইজিপি বলেছেন, অনেক মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। তাহলে যাঁদের আটক করা হয়েছে, তাঁদের জামিন দেওয়া হচ্ছে না কেন?’

জাতীয় পার্টির চেয়ার‍ম্যান বলেন, ‘আইনের কথা হচ্ছে একজন নিরপরাধকে বাঁচাতে প্রয়োজনে দশজন দোষীকে ছেড়ে দাও। কিন্তু এখন কী হচ্ছে? একজন দোষীকে শাস্তি দিতে দশজন নিরাপদ মানুষকে শাস্তি দিচ্ছে। বাড়িঘর ও অফিসে আগুন দিয়ে, মামলা হামলা করে আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না। আমরা বর্তমান সরকারের অপকর্মের বিরোধিতা করছি, ঝুঁকি নিয়ে জনগণের পক্ষে কথা বলছি।’

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘দেশের মানুষের মুখে হাসি নেই। দেশের মানুষ অতঙ্কের মধ্যে বসবাস করছে। এখন যারা যা খুশি করতে পারে, তারা তো নির্বাচন চাইবে না। নির্বাচন যত পিছিয়ে যাবে, ততই তাদের লাভ। জনগণের কথা তাদের বিবেচনায় নেই। নির্বাচন চাই না, এটা বলার আপনি কে? সবাইকে বলতে দিন, এটাই তো গণতন্ত্র। স্বৈরাচার হবেন? থাকতে পারবেন না। এ দেশের মানুষ স্বৈরতন্ত্র মেনে নেয় না।’

জি এম কাদের বলেন, ‘শেখ হাসিনা সরকার আইনের মারপ্যাঁচে আমার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল। এখন এই সরকারও আইনের মারপ্যাঁচে আমাকে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। দেশীয় রাজনীতিবিদ ও বিদেশি কূটনীতিকদের উপস্থিতিতে একটি সফল সম্মেলনে আমাকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত করা হয়েছে। চেয়ারম্যান হিসেবে আমি যাকে নিয়োগ দিয়েছি, তাকে বাদ দেওয়ার গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ক্ষমতাও আছে। আওয়ামী লীগ সরকার যা করেছে, বর্তমান সরকারও তা–ই করছে, পরিবর্তন কী হলো?’

জি এম কাদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে ফ্যাসিবাদ বা স্বৈরাচার বলা হয়, একই কাজ যদি বর্তমান সরকারও করে, তাকে কী বলবেন? আমাদের দলীয় প্রতীক অন্যদের দেওয়া হবে, এমন ভয় দেখিয়ে আমাদের ব্ল্যাকমেল করেছিল আওয়ামী লীগ, এখন আবার সেই খেলা শুরু হয়েছে। সরকার আমাদের পিছে লেগে রয়েছে। সুবিধা তো দূরের কথা, আমরা আমদের সাংবিধানিক অধিকার ভোগ করতে পারি না। জনগণের চোখে এখন আমরাই মজলুম।’

জাতীয় পার্টির মহাসচিব শামীম হায়দার পাটোয়ারী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। এ সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন প্রেসিডিয়াম সদস্য মো.

রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, ইকবাল হোসেন, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মো. খলিলুর রহমান খলিল প্রমুখ।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন ত আম দ র আওয় ম সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

‘আমাদের অনুমতি ছাড়া ওই এলাকায় কেউ এমপি হতে পারেন না’

নতুন বাংলাদেশে জনগণ বিএনপি-জামায়াত কাউকেই ক্ষমতায় দেখতে চায় না বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর। সোমবার (১১ আগস্ট) বিকেলে রাজশাহী নগরীর বাটার মোড়ে এক গণসমাবেশে এই মন্তব্য করেন তিনি। 

এই মন্তব্যের একটি ফটো কার্ড নিজের ফেসবুকে শেয়ার করেছেন অভিনেতা, নির্মাতা ও উপস্থাপক শাহরিয়ার নাজিম জয়। এ পোস্টের ক্যাপশনে নুরকে নিয়ে যেমন কথা বলেছেন, তেমনি দেশের সমকালীন রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও জয় তার পারিবারিক রাজনৈতিক ইতিহাসও তুলে ধরেছেন।   

নুরকে উদ্দেশ্য করে জয় বলেন, “জনগণ ক্ষমতায় দেখতে চায় আমাদের নুর ভাইকে। অবশ্যই উনি যদি ক্ষমতায় আসেন সবচেয়ে খুশি হব আমি। কারণ উনি প্রথম প্রতিবাদী ব্যক্তি তিনি মানুষের কাছে সরল ইমেজ নিয়ে ভালোবাসার মানুষের কন্ঠস্বর হিসেবে গ্রহণযোগ্য হয়েছেন। কিন্তু জনগণ সম্পর্কে কারো কোনো আইডিয়া নাই।”  

আরো পড়ুন:

ডাকসুর মনোনয়নপত্র বিতরণ শুরু

ক্ষমতা নয়, জনগণের ভোট ফেরত দেওয়ার জন্য নির্বাচনের কথা বলছি: টুকু

আগামী নির্বাচনের পর কারা সরকার গঠন করবে, সে বিষয়ে আলোকপাত করে জয় বলেন, “আগামীবার কে যে ক্ষমতায় আসবে আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না। সুস্থ নির্বাচন হলে শতভাগ বিএনপি ছাড়া আর কারো কোনো অস্তিত্ব থাকবে না। আবার ঠিক উল্টাটাও হতে পারে, বিএনপি যা ভাবছে তার উল্টা ঘটনা ফুটে উঠতে পারে এবং এ কথাও বলে দিলাম আমার এলাকায় আমি যদি এমপি  প্রার্থী হই তাহলে সব দলের সবার জামানত বাজেয়াপ্ত হবে। অবশ্যই, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে। আর ১৬ বছরের মতো নির্বাচন হলে আমার জামানত বাজেয়াপ্ত হবে। ভয় পাইয়েন না। কাউকে আন্ডারস্টিমেট কইরেন না।”  

জয়ের পরিবারের অনুমতি ছাড়া তাদের এলাকায় কেউ সংসদ সদস্য হতে পারে না বলে দাবি জয়ের। তার ভাষায়, “আমার দাদা ওই এলাকার তিনবারের এমপি ছিলেন মুসলিম লীগের এবং আমার চাচা ৯৮ শতাংশ ভোট পেয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলেন। বর্তমানে তিনি শরীয়তপুর জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি। আওয়ামী লীগের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে ভোটে দাঁড়াবার আগে আমার দাদিকে সালাম করতেন। আব্দুর রাজ্জাকও সালাম করতেন। বিএনপির কিরণও সালাম করতেন। এই সালাম ছাড়া কেউ আগাতে পারতেন না। আমাদের অনুমতি ছাড়া ওই এলাকায় কেউ এমপি হতে পারেন না। এটাই বাস্তবতা। হা হা হা হা হা হা।” 

জয়ের এই বক্তব্য নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় চর্চা চলছে। আগামী নির্বাচন নিয়ে জয়ের মতো অনেকে নিজেদের মতামত ব্যক্ত করেছেন। অনেকে জয়কে জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। আহসান হাবিব নামে একজন লেখেন, “আপনি ভোটে দাঁড়ান। আমরা আপনার পাশে আছি!” ইউসুফ মীর খানিকটা সমালোচনা করে লেখেন, “হা নাজিম ভাই সেটাই, সব আপনাদের আমরা শুধু এই দেশে বাতের….আইছি। এজন্যই এখন নতুনদের প্রয়োজন।” 

আরেকজন প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে লেখেন, “আপনাকে কেউ চায় কি না সেটা কি জানেন?” এ প্রশ্ন জয়ের নজরে এসেছে। জবাবে বিতর্কিত এই সঞ্চালক লেখেন, “কে চায় কে না চায়, তাতে আমার কি যায় আসে। মানুষ তো আমাকে চায় এলাকার।” এমন অসংখ্য মন্তব্য ভেসে বেড়াচ্ছে কমেন্ট বক্সে। 

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • লাঙ্গল কাউকে দিতে চাইলেই আন্দোলন: জি এম কা‌দের
  • তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনে তামাক কোম্পানির মতামত অগ্রহণযোগ্য
  • নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে ‘গলায় গামছা ও মাজায় রশি’ লাগতে পারে: সিইসিকে ইসলামী আন্দোলন
  • গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে অনাকাঙ্ক্ষিত ও ঢালাও অভিযোগের প্রতিবাদ সম্পাদক পরিষদের
  • আমরা জনগণের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ: প্রধান উপদেষ্টা
  • জনগণ প্রচলিত রাজনীতির পরিবর্তন চাইছে: তারেক রহমান
  • সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা, জাতীয়তাবাদ আমাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে: ফরহাদ মজহার
  • স্লোগাননির্ভর রাজনীতির যুগ শেষ: তারেক রহমান
  • ‘আমাদের অনুমতি ছাড়া ওই এলাকায় কেউ এমপি হতে পারেন না’