আমার নাকি মন খারাপ শাকিব খানের জন্য: মিষ্টি জান্নাত
Published: 14th, August 2025 GMT
চিত্রনায়িকা মিষ্টি জান্নাত কিছুদিন আগে বাবাকে হারিয়েছেন। এরপর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একের পর এক আবেগঘন পোস্ট দিয়ে চলেছেন নায়িকা। এর আগে নানা সময়ে শাকিব খানের সঙ্গে তোলা ছবি শেয়ার করে আলোচনা ও সমালোচনায় ভাসছিলেন নায়িকা। শাকিব খান যখন আমেরিকায় বুবলী ও বীরের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন সেই সময় মিষ্টি জান্নাতের একের পর এক আবেগঘন পোস্টকে নেটিজেনরা নাকি শাকিব খান কেন্দ্রিক করে ফেলেছেন— এমনই মনে করছেন মিষ্টি জান্নাত।
বুধবার রাতে এক দীর্ঘ স্ট্যাটাস দিয়েছেন মিষ্টি জান্নাত। তিনি পোস্টের সঙ্গে শাকিব খানের সঙ্গে তোলা একটি সেলফিও জুড়ে দিয়েছেন। মিষ্টি জান্নাত লিখেছেন, ‘‘আমার বাবা আজ ১৪ দিন হলো এই পৃথিবীতে নেই। আমি আমার বাবা-মায়ের রাজকন্যা। আমার পৃথিবী বলতে তারা দু’জনই। আমার কোনো আপন ভাইবোন নেই (যদিও আমার কাজিনরা আপন ভাইবোনের চেয়েও বেশি)। কোনোভাবেই আমি বা আমার পরিবার এই শোক কাটিয়ে উঠতে পারছি না। এর মধ্যে শাকিব খান আর আমাকে নিয়ে কত নিউজ হচ্ছে—বলছে, আমার নাকি মন খারাপ শাকিব খানের জন্য!’’
মিষ্টি জান্নাত ওই পোস্ট থেকে জানা যায়, তিনি বাবাকে নিয়ে স্ট্যাটাস দেন, আর নেটিজেনরা বলেন, মিষ্টি জান্নাত নাকি শাকিবের জন্য সুইসাইড করতে যাচ্ছেন! এদিকে মিষ্টি জান্নাতের বাবার মৃত্যুতে শাকিব খানসহ দেশের অনেক তারকা মিষ্টি জান্নাতকে সমবেদনা জানিয়ে মেসেজ দিয়েছেন। কিন্তু মিষ্টি জান্নাত সেই সব মেসেজের উত্তর দিতে পারেননি। কারও সঙ্গে কথা বলার মতো অবস্থায় তিনি নেই।
আরো পড়ুন:
বাবা হারালেন চিত্রনায়িকা মিষ্টি জান্নাত
দয়া করে শাকিব খানকে প্রশ্নটি করুন: মিষ্টি জান্নাত
মিষ্টি জান্নাত আরও লিখেছেন, ‘‘ আমাকে নিয়ে এইসব ফালতু কমেন্ট, স্ট্যাটাস, নিউজ, ব্লগ করা বন্ধ করুন! কারও সাথে কোনো কিছু নিয়ে আমার কোনো পরিস্থিতি নেই। মিডিয়ার সবার সাথে আমার ভালো ফ্রেন্ডশিপ আছে। কিছু মানুষ আমাকে দেখতে পারে না—কারণ আমি তাদের চেয়ে অনেক বেশি সুন্দর, যোগ্য এবং মানসম্পন্ন। তাই তারা আমার স্ট্যাটাসে পৌঁছাতে পারে না, পারবেও না—এই কারণে দূর থেকে টাকা দিয়ে বা ব্যক্তিগত সম্পর্ক (লেডিজ) দিয়ে আমার বিরুদ্ধে লোক লাগায়।এইসব যারা করছে, সবার প্রমাণ রেখে দিয়েছি—প্রয়োজনে কাজে লাগাবো। শাকিব খানের সাথে আমার অনেক ছবি আছে—তাতে কী? বারবার কিসের প্রমাণ চান? আমি তার ব্যাপারে আর কোনো মন্তব্য বা কথা বলতে চাই না। আমি আপাতত কোনো কিছুর মন-মানসিকতায় নেই। একটু থামুন—অনেক হয়েছে।’’
মিষ্টি জান্নাত নেটিজেনদের উদ্দেশ্যে লিখেছেন, ‘‘আপনাদের কি বাবা-মা নেই? তারা যখন থাকবেন না, তখন বুঝতে পারবেন পৃথিবীটা কত কঠিন! বাবা ছিলেন—বুঝতে পারিনি কিছু। বাবা-মা থাকলে সব কিছু এমনিতেই হয়ে যায়। এখন বুঝতে পারছি। আর কিছু বাঙালি জাতির চেয়ে রাস্তায় পশুও মানুষের মন ও কষ্ট বোঝে। শান্তি চাই, শান্তি দিন।’’
ঢাকা/লিপি
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
আমাদের হুমায়ূন আহমেদ
হুমায়ূন আহমেদের বই পড়ার আগেই তাঁর নাম জানা হয়ে গিয়েছিল টিভিতে ‘এইসব দিনরাত্রি’ নাটকের কারণে। নাটকের রাতে পাশের বাসার চাচিরাও চলে আসতেন। কত রকম আলাপ এর চরিত্রগুলোকে ঘিরে। এখনকার মতন তো না যে হাজার হাজার স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মের কোটি কোটি কনটেন্ট। কিছু দেখতে বসলে ব্রাউজ করতে করতেই হয়রান হতে হয়।
একটা একান্নবর্তী মধ্যবিত্ত পরিবারকে ঘিরে আবর্তিত হয়েছে নাটকটা। মধ্যবিত্তদের নিয়ে আগেও নাটক হয়েছে অনেক, তবুও এই নাটকটা অন্য রকম লাগত। আমি ক্লাস ফোরে পড়ি তখন। অত কিছু বুঝতাম না, তারপরও ছাদের ঘরের ম্যাজিশিয়ান আনিস ভাই যখন শাহানাকে ম্যাজিক দেখাতে দেখাতে রুমালের ভেতর থেকে বের করে আনতেন আস্ত একটা গোলাপ ফুল, তাজ্জব হয়ে যেতাম! আবুল খায়ের বহুদিন পর্যন্ত আমাদের কাছে ছিলেন ‘সুখি নীলগঞ্জ’। বোহেমিয়ান আর একটু পাগলা মতন ছোট ভাই রফিকের প্রেমেই পড়ে গিয়েছিলাম প্রায়। কিছু কিছু দৃশ্য এখনো স্পষ্ট—সারা দিনের সব কাজ শেষে খাবার টেবিলে একা বসে ছোট ছোট চুমুকে চা খাচ্ছেন ডলি জহুর; হোমিওপ্যাথি বিষয়ে প্রবল স্পর্শকাতর বাবা ঝগড়া করছেন আবুল খায়েরের সঙ্গে, এসব দৃশ্যে বড়রা হেসে অস্থির। আবার এত বড় একটা পরিবার সামলাতে গিয়ে হিমশিম বড় ভাই বুলবুল আহমেদ যখন অসহায়ভাবে একটা টেবিলের কোণ আঁকড়ে ডুকরে উঠতেন, ‘বড় কষ্ট’! দেখতাম, বড়দের অনেকের চোখ ছলছল করছে। এভাবে নাটকের চরিত্রগুলো আমাদের নিজেদের লোক হয়ে উঠত। যেদিন টুনি মারা গেল, আমাদের স্কুলে বাংলা ক্লাসে সবাই টুনির মৃত্যু নিয়ে কথা বলছিলাম, মনে আছে।
জীবনানন্দ দাশের মতন আমিও বিশ্বাস করি ‘কেউ কেউ কবি’। তাঁরা দুনিয়ায় আসেন তাঁদের কবিসত্তা নিয়ে। হুমায়ূন আহমেদ আমার কাছে সে রকম একজন। তিনি দোষ-গুণ মিলিয়ে স্বাভাবিক একজন মানুষ ছিলেন, যিনি প্রবল কৌতূহল এবং অপার ভালোবাসা নিয়ে তাঁর চারপাশ অনুধাবনের চেষ্টা করেছেন।হুমায়ূন আহমেদের যে উপন্যাস আমি প্রথম পড়েছি, তার নাম শঙ্খনীল কারাগার। তত দিনে ক্লাস ফাইভে পড়ি। বহুক্ষণ ধরে বইটার নাম নিয়ে ভাবলাম। ভেতরে কৃতজ্ঞতা স্বীকারের একটা বাক্য ছিল, কোনো একজন কবির লেখা থেকে নামটা তিনি নিয়েছেন। ‘শঙ্খনীল কারাগার’ বলতে যে পৃথিবীকে বোঝানো হয়েছে, অনেক ভাবনাচিন্তার পর এই আবিষ্কার করতে পেরে আর্কিমিডিসের চেয়েও বেশি খুশি হয়েছিলাম!
প্রথম বাক্যটাই নিয়ে গেল আরেক দুনিয়ায়—
‘বাস থেকে নেমেই হকচকিয়ে গেলাম। বৃষ্টিতে ভেসে গেছে সব। রাস্তায় পানির ধারাস্রোত। লোকজন চলাচল করছে না, লাইটপোস্টের বাতি নিভে আছে।’
এইসব দিনরাত্রি নাটকের একটি দৃশ্য। ছবি: বিটিভির সৌজন্যে