চাঁপাইনবাবগঞ্জে ১৪ হাজার বিঘা নিমজ্জিত, ৮ হাজার কৃষকের ক্ষতি
Published: 14th, August 2025 GMT
চাঁপাইনবাবগঞ্জের দুটি উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে ১ হাজার ৮৮২ হেক্টর অর্থাৎ ১৪ হাজার ৫৯ বিঘা জমির রোপা আউশ, কলা, ভুট্টাসহ শাকসবজি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে ৭ হাজার ৯৭১ জন কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর ও শিবগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিস।
সংশ্লিষ্টরা জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলায় ৩ হাজার ১৫ জন কৃষকের ৫৪০ হেক্টর ও শিবগঞ্জ উপজেলার ৪ হাজার ৯২৬ কৃষকের ১ হাজার ৩৪২ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব জমিতে রোপা আউশ ধান, কলা, ভুট্টা, হলুদ ও শাকসবজি চাষ করেছিলেন কৃষকরা।
নিম্নাঞ্চলের কৃষকরা বলছেন, প্রতিদিনই পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে তাদের আবাদি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। আবাদ করা ফসলগুলো ডুবে গিয়ে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তারা। এ পরিস্থিতির বিষয়ে কৃষি বিভাগ দাবি করছে, পদ্মার নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের পানি দ্রুত নেমে গেলে ফসলের ক্ষতির আশঙ্কা থাকবে না। তবে পানি দ্রুত না নামলে কৃষকরা ক্ষতির সম্মুখীন হবেন।
শিবগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো.
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরের কৃষি কর্মকর্তা আনিসুল হক জানান, সদর উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার নিম্নাঞ্চলের জমি তলিয়ে গেছে। এরমধ্যে সম্পূর্ণ জমি পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে ১৩৫ হেক্টর ও আংশিক নিমজ্জিত হয়েছে ৪০৫ হেক্টর জমি। ফলে ৩০১৫ জন কৃষক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন।
পদ্মা নদীর পানির পরিস্থিতির বিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম আহসান হাবিব জানান, উজানের ঢলে গত সপ্তাহ ধরে পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। পদ্মায় পানি বিপৎসীমা ধরা হয়েছে ২২ দশমিক ০৫ মিটার। বর্তমানে পদ্মার পানি বিপৎসীমার মাত্র ৩২ সেন্টিমিটার নিচ নিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে কয়েক দিনের মধ্যে নদীর পানি কমতে শুরু করবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
ঢাকা/শিয়াম/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর শ বগঞ জ উপজ ল প ইনব বগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
‘আবর্জনার মতো লাগে’, তাই বিভাজকের অর্ধশত বকুলগাছ কাটলেন তিনি
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ঢাকামুখী লেন দিয়ে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার পদুয়ার বাজার রেলওয়ে ওভারপাস পার হতেই বেলতলী এলাকা। এই এলাকায় মহাসড়কের বিভাজকে থাকা সারি সারি বকুলগাছ যে কারোরই মন কেড়ে নেয়। গাছগুলো দেশের ব্যস্ততম এই মহাসড়কের সৌন্দর্যও কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। মহাসড়কটির সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য এসব গাছ লাগানো হয়েছিল সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের উদ্যোগে।
তবে বেলতলী এলাকায় নির্মিত শিশু হাসপাতালের সামনে যেতেই চোখে পড়ে ভিন্ন এক চিত্র। এই এলাকায় মহাসড়কের বিভাজকের সারি সারি বকুলগাছ কেটে ফেলা হয়েছে। এসব গাছের কোথাও কেটে নেওয়া হয়েছে গোড়া থেকে, আবার কোনোটি কাটা হয়েছে মাঝখানে। বেশ কিছু গাছ আগুনে পুড়িয়ে রাখা হয়েছে কেটে ফেলার জন্য। প্রায় ৫০০ মিটার এলাকায় এভাবেই অন্তত ৫২টি বকুলগাছ কেটে ফেলা হয়েছে।
বেলতলী এলাকায় মহাসড়কের চট্টগ্রামমুখী লেনের পাশে দেড় দশক ধরে চা বিক্রি করেন স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল কুদ্দুস। বকুলগাছগুলোর প্রসঙ্গ তুলতেই ক্ষোভের সঙ্গে তিনি বলে উঠলেন, ‘রাস্তার ওই পাশে গিয়া টিনের ঘরে জিজ্ঞেস করেন। কত সুন্দর গাছডি কাইট্টা ফালাইছে। আহ, কত সুন্দর আছিলো বকুলগাছডি। সে বকুলগাছ কাইট্টা ডিভাইডারে কলাগাছ আর শাকসবজি লাগাইছে।’
আবদুল কুদ্দুসের কথা ধরে তাকাতেই মহাসড়কের ঢাকামুখী লেনের পাশে শিশু হাসপাতালের ফটকসংলগ্ন স্থানে একটি ছোট্ট টিনের ঘর চোখে পড়ল। সেখানে গিয়ে পাওয়া যায় মো. আজমির হোসেন নামের এক ব্যক্তিকে। তিনি দোচালা ওই টিনের ঘরের একাংশে থাকেন, অন্য অংশে চা-বিস্কুট বিক্রি করেন। ৩৭ বছর বয়সী মো. আজমির হোসেনের বাড়ি কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার সাওড়াতলী গ্রামে।
বিভাজকের গাছগুলো কে কেটেছে—জিজ্ঞেস করতেই আজমির হোসেন বলেন, ‘ডিভাইডারের এই গাছগুলো আবর্জনার মতো লাগে, কোনো কামের না। এর লাইগ্যা কাইট্টা ফালাইছি। এইখানে এখন কলাগাছ, কাঁঠাল, আম, পেঁপেগাছ লাগাইতেছি। আর জায়গাটার মধ্যে শাকসবজির চাষ করমু। মানুষে আমারে কইতাছে তুমি একটা ভালো কাজ করছ। এই জায়গা থাইক্কা মানুষ ফল ও সবজি খাইতে পারব। কাটার পর কিছু গাছ আমি আনছি আর কিছু মাইনসে নিছে লাকড়ির জন্য। আরও কিছু গাছ কাইট্টা ফলগাছ লাগামু। মাইনসে খাইয়া দোয়া করব।’
গাছগুলো কেটেছেন আজমির হোসেন নামে এই ব্যক্তি