জাবিতে পোষ্য কোটা বহাল, ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা
Published: 14th, August 2025 GMT
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পোষ্য ভর্তি পুনর্বহাল রেখে প্রথম বর্ষের ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করার সিন্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে বাতিল করা হয়েছে শিক্ষকদের ভাই-বোন কোটা।
এদিকে, কোটা পুনর্বহালের এই সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) ড.
আরো পড়ুন:
ডাকসু নির্বাচন: তৃতীয় দিনে মনোনয়ন নিলেন ২২ প্রার্থী
কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক সংস্কারে জরুরি টেন্ডার দাবি শিক্ষার্থীদের
জানা যায়, সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে কিছু শর্তসাপেক্ষে পোষ্য ভর্তি বহাল রাখা হয়েছে। পোষ্যদের ভর্তি পরীক্ষায় ন্যূনতম ৪০ শতাংশ নম্বর পেতে হবে। কোনো পোষ্য যদি ভর্তি হওয়ার পর আইনশৃঙ্খলাবিরোধী কাজ করে, তাহলে তার ও সংশ্লিষ্ট অভিভাবকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়াও শিক্ষকদের স্বামী-স্ত্রী ও ভাই-বোনদের জন্য থাকা কোটা বাতিল করা হয়েছে। এখন থেকে শুধু ঔরসজাত সন্তানরাই পোষ্য কোটার আওতায় ভর্তির সুযোগ পাবে।
পোষ্য কোটা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৮ ব্যাচের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম লিখেছেন, “পোষ্য ভর্তি নিয়ে প্রশাসন যে ধৃষ্টতা দেখাল, এটা সত্যিই আমাদেরকে মর্মাহত করেছে। যারা দাবি করেছিল, পোষ্য ভর্তি বাতিল করতে হবে; তাদের দাবিকেও কর্ণপাত করা হলো না। আর যারা যৌক্তিক সংস্কার চেয়েছে, তাদের দাবিও কর্ণপাত করা হল না।”
তিনি বলেন, “সকল যুক্তির ঊর্ধ্বে উঠে প্রশাসন যাচ্ছেতাই একটা সিদ্ধান্ত নিল। এতদিন পর্যন্ত প্রশাসন যে প্রহসন করেছে, তার মধ্যে সবচেয়ে বিশ্রিতম প্রহসন হল এই সিদ্ধান্ত। ডেয়ার প্রশাসন, আপনাকে মাথায় রাখতে হবে, শিক্ষার্থীরা ম্যানেজড না।”
শাখা ছাত্রশিবিরের দপ্তর সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম লিখেছেন, “বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে পোষ্য ভর্তি বাতিল করলেও হঠাৎ অপ্রত্যাশিতভাবে তা আবার ফেরানোর ঘোষণা দিয়েছে। আমরা ছাত্রশিবিরের পক্ষ থেকে আর্থ-সামাজিকভাবে অগ্রসর এবং উন্নত জীবনমানের সুবিধাপ্রাপ্তদের জন্য এ সুবিধা কতটা যৌক্তিক-সে প্রশ্ন দৃঢ়ভাবে রেখে আসছি। প্রশাসনকে আহ্বান জানাচ্ছি দ্বিমুখী আচরণ না করে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করে যৌক্তিক সমাধানে পৌঁছানোর জন্য।”
ইংরেজি বিভাগের ৫৩ ব্যাচের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আলী চিশতী লিখেছেন, “আমরা অনশন করেছি, আন্দোলন করেছি, সারাদিন রোদে ঘামে ভাই-বোনেরা একসঙ্গে থেকেছি। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের লাঞ্ছনার শিকার হয়েছি, তবুও পিছিয়ে যাইনি। প্রশাসনিক ভবনের পশ্চিম পাশে প্রতীকীভাবে পোষ্য কোটাকে কবর দিয়েছি “
তিনি আরো লিখেছেন, “আমাদের আশ্বস্ত করা হয়েছিল, পোষ্য কোটা বাতিল। কিন্তু কে জানত, তারা আবারো সুযোগ বুঝে আঘাত হানবে। জাকসুকে সামনে রেখে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নতুন তামাশা করবে! মুখের কথা যদি রাখতে না পারেন, মনে যদি অসৎ উদ্দেশ্য লালন করেন, তাহলে ওই চেয়ার আপনাদের জন্য নয়। এ চেয়ার শিক্ষার্থীদের অধিকার রক্ষাকারীর জন্য, প্রতারণাকারীর জন্য নয়।”
এর আগে চলতি বছরের শুরুতে শিক্ষার্থীদের লাগাতার ধারাবাহিক আন্দোলন ও অনশনের মুখে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পোষ্য কোটা বাতিলের ঘোষণা দিয়েছিল। ফেব্রুয়ারি মাসে টানা ১৯ ঘণ্টার গণঅনশনের পর উপাচার্যের আশ্বাসে আন্দোলন প্রত্যাহার করেন শিক্ষার্থীরা।
এরপর উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান ঘোষণা দেন, পোষ্য কোটা স্থগিত থাকবে, তবে কর্মচারীদের প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা দেওয়া হবে। একইসঙ্গে শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা পুনর্বিবেচনার জন্য একটি কমিটি গঠনের কথাও তখন জানানো হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরিচালনা কমিটির তথ্য অনুযায়ী, পোষ্য কোটায় আবেদনকারী ভর্তিচ্ছুদের মধ্যে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে ভর্তি হওয়ার সুযোগ মিলত। প্রতি বিভাগে চারজন করে সর্বোচ্চ ১৪৮ জন শিক্ষার্থী পোষ্য কোটায় ভর্তির সুযোগ পেতেন। যদিও বিগত ৫ বছরে এই কোটায় ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল সর্বোচ্চ ৫৫ জন।
ঢাকা/আহসান/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প ষ য ভর ত ব ত ল কর ত কর ছ র জন য য় ভর ত
এছাড়াও পড়ুন:
ফ্লোটিলা বহরে ভেসে চলা একমাত্র জাহাজ ম্যারিনেট কোথায়
ফিলিস্তিনের গাজা অভিমুখে যাত্রা করা ত্রাণবাহী নৌবহর ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’-এর একটি মাত্র নৌযান এখনো আটক করতে পারেনি ইসরায়েলি বাহিনী। এই নৌযানটি হলো দ্য ম্যারিনেট।
পোল্যান্ডের পতাকাবাহী এই নৌযানে ছয়জন আরোহী রয়েছেন ।
ফ্লোটিলার লাইভ ট্র্যাকার অনুযায়ী, ম্যারিনেট আন্তর্জাতিক জলসীমায় ভেসে চলেছে। এর গতি ঘণ্টায় প্রায় ২.১৬ নট (ঘণ্টায় প্রায় ৪ কিলোমিটার) , গাজার আঞ্চলিক জলসীমা থেকে ম্যারিনেটের দূরত্ব প্রায় ১০০ কিলোমিটার।
বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত এক ভিডিওতে জাহাজটির ক্যাপ্টেন বলেন, ম্যারিনেটের ইঞ্জিনে সমস্যা হচ্ছিল। এটি এখন সারানো হয়েছে।
ফ্লোটিলা আয়োজকেরা বলছেন, ম্যারিনেট নৌযান এখনো স্টারলিঙ্কের মাধ্যমে সংযুক্ত। এটি যোগাযোগের আওতার মধ্যেই রয়েছে। লাইভস্ট্রিমও সক্রিয় আছে।
ইনস্টাগ্রামে দেওয়া এক পোস্টে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা জানিয়েছে, অন্য জাহাজগুলো আটক করলেও ম্যারিনেট এখনো ভেসে চলছে।
ম্যারিনেট ফিরে যাবে না বলেও ওই পোস্টে জানানো হয়েছে। পোস্টে বলা হয়েছে, ‘ম্যারিনেট শুধু একটি জাহাজ নয়। ম্যারিনেট হলো ভয়, অবরোধ ও সহিংসতার বিরুদ্ধে দৃঢ়তা।’
ফ্লোটিলা আয়োজকরা আরও লিখেছেন, ‘গাজা একা নয়।’ ‘ফিলিস্তিনকে কেউ ভুলে যায়নি। আমরা কোথাও যাচ্ছি না।’
ফ্লোটিলা বহরের প্রায় সব নৌযানে থাকা অধিকারকর্মীদের আটক করেছে ইসরায়েল। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন সুইডিশ অধিকারকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ। ইসরায়েলের এমন পদক্ষেপকে ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড’ উল্লেখ করে নিন্দা জানিয়েছে অনেক দেশ। বিভিন্ন দেশে বিক্ষোভও হয়েছে।
আরও পড়ুনগাজা অভিমুখী নৌবহরে ইসরায়েলি সেনাদের আক্রমণ, ধরে নেওয়া হলো অধিকারকর্মীদের৬ ঘণ্টা আগে