Prothomalo:
2025-08-14@16:21:48 GMT

কলোনির অশরীরীরা

Published: 14th, August 2025 GMT

গলির মাথাটায় এসে থমকে গেলাম। নিজেকে নিজেই চিনতে পারছি না। এতটাই অন্ধকার যে গলির সামনে ও পেছনে কোনোকিছু ঠাওর করা মুশকিল। বুঝতে পারছি, মাথার বয়স হয়েছে, হাত-পা, চোখ-কানেরও তা–ই। গলির দুই পাশে দুই সরু পথ  ঘুমন্ত সাপের মতো শুয়ে আছে। কোথাও একচিলতে আলো নেই, যেন পাথরখণ্ডের দেয়াল দুই পাশে ঝুলিয়ে দিয়েছে কেউ। পাথরের বুকে হাত চালান দিয়ে অনুভব করছি খোদাই করা কিছু রেখার। ‘ওগুলো কি আলতামিরার গুহাচিত্র?’ নিজের মনের কাছে নিজেই প্রশ্ন করি। মন কোনো উত্তর দেয় না। উত্তর না দেওয়া মনের মধ্যেও অন্ধকার ঢুকে পড়েছে। মনের ভেতরটা দেখা যাচ্ছে না। শুধু একটা নাম মাঝেমধ্যে জোনাকির আলোর মতো জ্বলছে, নিভছে। নামটা কিছুতেই মনে করতে পারছি না।

গলির কোনদিকে যাব? ডানে না বাঁয়ে? শৈশবে এমন পথ ভুল করলে চোখ বন্ধ করে মনের মধ্যে দেখতাম। এখন তো মনের ভেতরও অন্ধকার, দেখব কেমন করে! সাতপাঁচ না ভেবে বাঁয়ের গলিতেই পা বাড়ালাম। কেমন কবরখানার মতো দুই পাশের বাড়িগুলো। কোনো আলো নেই। শব্দ নেই। নির্জন। টিকটিকির গলার স্বরও যেন কেউ অপহরণ করেছে। কোনো গাছ নেই, আকাশে তারা নেই, নিশিপাখির ডাক নেই। মনে হচ্ছে দূর কোনো পৃথিবীর ধন্দ ও ধাঁধার মহল্লায় ঢুকে পড়েছি।

কলোনির অশরীরীরা কি গলির মধ্যে আনাগোনা করছে? আমার গা ছমছম করে। পায়ের পাতা নিশপিশ করে। খুকখুকিয়ে ওঠা কাশির শব্দে কান খাড়া হয়। শব্দটা কোনদিক থেকে আসছে, বোঝার চেষ্টা করি। পায়ের শব্দ করি না। কাশির সেই শব্দ অনুসরণ করে বাড়িটির সামনে গিয়ে পা থামে। ঘরের ভেতরে হারিকেনের টিমটিমে আলো জ্বলছে। ঘরটা বাঁশের বেড়া দিয়ে তৈরি। বেড়ার ফাঁক দিয়ে টিমটিমে আলোর সামান্য ছটা এসে পড়েছে আমার শরীরে। ঘুটঘুটে অন্ধকারের গলিতে সামান্য এই আলোই আমার আশা জাগিয়ে রাখে। মন থেকে আঁধারের বোঝা নেমে যায়।

এই মহল্লা আমার চেনা। এর গাছপালা, মানুষজন, পশুপাখি, জল-হাওয়ার মধ্যে আমার বেড়ে ওঠা। অথচ চেনা সেই মানচিত্র আর নেই। হাওয়া নেই, মানুষ নেই। শুধু গলির ঘরটার আলো অন্ধকারে দিশা হয়ে আছে। ‘কেউ কি ভেতরে আছেন?’ ঘরটার দরজার সামনে দাঁড়িয়ে খুব নিচু গলায় ডাকলাম। কোনো সাড়া নেই। কিছুক্ষণ পরপর খুকখুক কাশির মিহি একটা ধ্বনি বাঁশের বেড়ার ফাঁকফোকর দিয়ে বাইরে বেরিয়ে হাওয়ায় মিলিয়ে যাচ্ছে। দাঁড়িয়ে রইলাম নিশ্চুপ। যার খোঁজে এত দূর এসেছি, তাঁকে আমার পেতেই হবে। খানিক পরে আবারও ডাকলাম, ‘কেউ আছেন?’ ভেতর থেকে এবারও কোনো সাড়া পেলাম না। কিছুক্ষণ পর কাঁপা কাঁপা কণ্ঠে একটা শব্দ ভেসে এল, ‘কে?’

হারিকেনের মৃদু আলো দুলিয়ে দুলিয়ে তিনি প্রকাশ্য হলেন। এক বৃদ্ধ। গায়ে জীর্ণ একটা জামা। বয়সের ভার তাঁকে কাবু করলেও চামড়ায় তেমন ভাঁজ পড়েনি। তাঁকে জিজ্ঞাসা করলাম, ‘মানিক পরামানিকের বাড়িটা খুঁজছি। আপনি চেনেন তাঁকে?’ তিনি মাথা নিচু করে চিন্তা করছেন। হারিকেনের মৃদু আলোটা তাঁর চোখের সামনে দুলছে। ভুরু কুচকে চোখের পাতা খুলে বললেন, ‘কোন মানিক পরামানিক?’ তাঁকে বললাম, ‘সাপমারি মানিক। চিনতে পেরেছেন?’ তিনি মাথা দুলিয়ে হ্যাঁ-সূচক সম্মতি জানালেন। এত রাতে তাঁকে পাওয়া যাবে না বলে বৃদ্ধ আমাকে তাঁর ঘরে বসতে বললেন। সকাল হলেই আমাকে ঠিকানা বাতলে দেবেন বলে আশ্বাস দিলেন।

সাঁইত্রিশ বছর পর এই মহল্লায় ঢুকে শুধু নিজেকে নয়, সবকিছুই পাথর মনে হচ্ছে। সাড়াশব্দহীন একটা মহল্লা। একসময়ের জমকালো মহল্লা কীভাবে এত সুনসান হতে পারে, আল্লাহ মালুম! বৃদ্ধের ঘরটিতে তেমন কিছু নেই। দুটো কাঠের তক্তা জোড়া দিয়ে বানানো হয়েছে শোবার জায়গা। ঘরের দক্ষিণ কোণে একটা মাটির কলস। বাঁশের বাতা দিয়ে নির্মিত ঘুণেধরা একটি শেলফে প্রাইমারি স্কুলের কয়েকটি পুরোনো বই। দু–চারটি খাবার বাসনকোসন ছাড়া তেমন কিছু নজরে এল না। আমি তাঁর সঙ্গে আলাপ জোড়ার একটা মওকা খুঁজছি, সেই মুহূর্তে নীরবতা ভেঙে বৃদ্ধ বলে উঠলেন, ‘আমি কুদ্দুস মাস্টার। প্রাইমারি স্কুলে পড়াতাম। এখন নিজেই পড়ি। ওই যে বইগুলো দেখছ, এখন ওরাই আমাকে পড়ায়।’ আমি অবাক হয়ে মাস্টারের মুখের দিকে তাকিয়ে রইলাম। তিনি খুব নিচুস্বরে বললেন, ‘ভোর হলেই তুমি চলে যেয়ো। নইলে আর কোনো দিনই যেতে পারবে না।’

মানিক পরামানিকের জন্য আমার মন বিচলিত। এই যে আমি চলাফেরা করছি, পৃথিবীর আলো-বাতাস গায়ে মাখছি, শুধু তাঁরই জন্য। তাঁর নিকট আমার কৃতজ্ঞতার অন্ত নেই। মানিক পরামানিকের বাড়ির পাশে ছিল আমাদের বাসা। এক রুমের টিনের ঘর। টানাটানির সংসার। মা, বাবা আর আমার সেই রুমেই কেটেছে জীবনের অনেকটা সময়। একদিন বৈশাখের তপ্ত দুপুরে মা ‘সাপ, সাপ’ বলে শোরগোল তুলে দিলেন। মহল্লার মানুষজন জড়ো হলো। মা কিছুতেই থামছেন না। ‘আমার ছেলেকে বাঁচাও, ‘আমার ছেলেকে বাঁচাও’ চিৎকারে আকাশ কাঁপিয়ে তুলেছেন। আমি ঘরের চৌকির ওপর শোয়া। মাথার পেছনে কপাল বরাবর ফণা তুলে আছে বিশাল এক সাপ। ঘাড়ে বসিয়েছে ছোবল। সকলে বলছে, ছেলেকে তো বাঁচানো মুশকিল। ভিড় ঠেলে এগিয়ে এলেন মানিক পরামানিক। পুরো ঘর তছনছ করে মারা হলো সাপ। ঘরের মধ্য থেকে সাপের লেজ ধরে বেরিয়ে এলেন মানিক পরামানিক। মহল্লার সাহসী পুরুষ। তাঁর পিছু পিছু লোক জড়ো হলো মাঝিদিঘির মাঠে। হাতে মাপা হলো সেই সাপ, সাড়ে সাত হাত লম্বা। আমাকে নিয়ে হাসপাতালে ছুটলেন মহল্লার কয়েক যুবক। সে যাত্রায় রক্ষা পেল  প্রাণ। চিকিৎসার দায়ভার মেটালেন মানিক পরামানিক। তখন থেকে মহল্লায় মানিকের তিলকে নতুন নাম যুক্ত হলো, সাপমারি মানিক।

হাসপাতালে আমাকে জড়িয়ে ধরেও মায়ের আনন্দাশ্রু থামে না। আমি ফ্যালফ্যাল করে তাঁর দিকে তাকিয়ে থাকি। আমার চোখেও পানি টলমল। মা বললেন, ‘তুই নতুন জীবন পেলি রে, জীবন কুমার।’ তখন আমার বয়স ছিল সাড়ে আট বছর। বৈশাখের সেই ঘটনার পর আমরা আর কলোনিতে থাকিনি। ফিরে গেছি শরৎপুরে। যতই বয়স ক্ষয় হয়েছে, ততই কাছে এসেছেন মানিক পরামানিক। তাঁকে কৃতজ্ঞতা না জানানোর বেদনা প্রকট হয়ে উঠেছে ক্রমেই। লোকটির জন্য কেমন মায়া কাজ করে আমার ভেতর। সে জন্যই এত দিন পর ঢুকে পড়েছি কলোনির অশরীরী গলির গুহায়।

কুদ্দুস মাস্টার হারিকেনের মৃদু আলোয় মগ্ন হয়ে পড়ছেন প্রাইমারি স্কুলের বই। তাঁর কোনো হেলদোল নেই। দুটি মগ্নতার পাথর ঢুকিয়ে নিয়েছেন চোখের মণিতে। নিচু গলায় বললাম, ‘মানিক পরামানিকের ঠিকানাটা দেন। রাতেই ওনার সঙ্গে দেখা করে চলে যাব।’ আমার কথা মাস্টারের কানে পৌঁছাল কি না, বোঝা গেল না। উটপাখির মতো বালুতে মাথা নয়, তিনি বইয়ের পাতায় গুঁজে আছেন চোখ। মিনিট পনেরো বাদে মাস্টার হাতে তুলে নিলেন হারিকেন। আমাকে বললেন, ‘চলো।’ তাঁর পিছু পিছু কিছুদূর হাঁটার পর একটা মাটির ঢিবির ওপর হারিকেনটা রাখলেন। আলো আরও খানিক বাড়িয়ে দিয়ে বললেন, ‘এই আলোর নিচেই মানিক পরামানিকের ঠিকানা। যাও, দেখা করে আসো।’ আমার সারা শরীর কাঁপতে লাগল। পা দুটো অবশ হয়ে ভাঁজ হয়ে এল। হাঁটু মুড়ে বসে পড়লাম।

যেদিন মানিক পরামানিককে খুন করে মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়, সেদিন মহল্লার প্রতিটি ঘরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল বিরিয়ানির পুঁটুলি। ঢোল বাজিয়ে চলছিল দিঘি ভরাট। গালকাটা হাবুর লোকজন অস্ত্র নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল মহল্লার গলিতে গলিতে। কেউ কোনো রা করেনি। ঢোল বাজিয়ে চলেছে দিঘি ভরাটের কাজ। শুধু বাধা দিয়েছিল মানিক পরামানিক।

‘তারপর, কী হলো?’ আমি জিজ্ঞাসা করলাম কুদ্দুস মাস্টারকে। তাঁর চোখ ঝাপসা হয়ে আসছে। চোখের কোনা বেয়ে মাটিতে গড়িয়ে পড়ল দু–এক ফোঁটা পানি।

‘তারপর আর কী হবে? সেই রাতেই মানিককে কুপিয়ে মারল গালকাটা হাবু। মহল্লার কোনো বাসিন্দা বাইরে বেরোল না। সবাই দরজা এঁটে চুপ করে রইল। রামদা দিয়ে কুপিয়ে কুপিয়ে শরীর দুফালা করে দিল। ঢোল বাজিয়ে মাটি খোঁড়ার কাজ চলল। হাবুর লোকজন মানিকের দুভাগ হওয়া শরীর তুলে মাটিচাপা দিল। পরদিন সকালে মানিকের পরিবার উধাও হয়ে গেল। কোথায় যে গেল, কেউ জানে না।’

কুদ্দুস মাস্টারের সারা শরীর কাঁপছে। কাঁপা কাঁপা হাতে হারিকেনটা তুললেন। হাঁটতে লাগলেন ধীরপায়ে, যেন সব শক্তি দিয়ে তাঁর এই এগিয়ে চলা। ‘মহল্লার বাকি লোকজন কই?’ তাঁকে বললাম। তিনি ঠোঁটে আঙুল দিয়ে চুপ থাকতে বললেন। অশরীরী কলোনিতে আমি যেন অচেনা আগন্তুক।

গালকাটা হাবুর পেছনে ছিল বিশাল এক ভূমি কারবারি। হাবু ছিল তাদের প্রধান হাতিয়ার। একে একে মহল্লার সবার নামে মানিক খুনের মামলা হলো। পুরুষশূন্য হলো সবার ঘর। অত্যাচারের সীমা ছাড়িয়ে গেল। মেয়েরা নিরাপত্তা পেল না। পুলিশ নির্যাতন করল, হাবুর লোকজন দল বেঁধে শুরু করল ধর্ষণ। বাড়ি ছেড়ে একজন গেল, দুইজন গেল। যেতে যেতে শূন্য গলি, গলির পর মহল্লার সব বাড়ি। এখন তাদের রাজত্ব।

কিছুদূর হেঁটে মাটির ওপর বসে পড়লেন মাস্টার। ধীরে ধীরে শ্বাস নিলেন। হারিকেনটা পাশে রেখে আবার বলতে শুরু করলেন—

‘গাছ কেটে কেটে সব বিক্রি করে দিল হাবুর বাহিনী। ছোটখাটো ডোবাগুলোও আর নেই। সব ভরাটের পর লাগানো হয়েছে নামে-বেনামে সাইনবোর্ড। পুরো মহল্লায় তৈরি হবে সারের কারখানা। কাড়ি কাড়ি টাকা আসবে। হাবুর লোকজন টাকার কলাগাছ লাগাবে। শুধু মরব আমরা, ভেজাল সার ব্যবহার করে মরবে সেই কৃষক।’

কুদ্দুস মাস্টার বললেন, ‘চলো, জীবন কুমার। ভোর হতে আর বেশি দেরি নেই। ঘরে একটু আরাম করো। তারপর বেরিয়ে পড়ো।’

মাস্টার ঘরে এসে তাঁর জীর্ণ জামাটা খুলে চৌকির পেছনে বাঁশের বাতায় ঝুলিয়ে দিলেন। আমাকে একটা চটের বস্তা বিছিয়ে দিলেন মেঝেতে। আমার শরীরে ক্লান্তির রেখা ফুটে উঠতে শুরু করেছে। চোখ দুটো ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে আসছে। মানিক পরামানিকের কবরের খানিক মাটি আমি পকেটে পুরে রেখেছি। শরৎপুরে ফিরে মাটির সঙ্গে এই মাটি মিশিয়ে লাগাব একটি গাছ। ওর নাম দেব সাপমারি। তন্দ্রার ঘোরে মনে হচ্ছে, এমন দমবন্ধ পাথরের মহল্লা থেকে বেরিয়ে যেতে পারলেই আমার মুক্তি।

ভোরের আলো ফুটেছে। দুয়েকটি পাখির ডাক কানে আসছে। বেড়ার চিকন ফাঁক দিয়ে সূর্যের রশ্মি এসে পড়েছে আমার চোখের ওপর। চোখ না খুলেও টের পাচ্ছি সেই আভা। খেয়াল করলাম, আমার পা ও হাত নড়াতে পারছি না। কিছুতেই উঠে বসতে পারছি না। চোখ মেলে থ হয়ে গেলাম। কাঠের তক্তা জোড়া দেওয়া চৌকির ওপর বসে আছে দুজন সুঠাম যুবক। কোথাও কুদ্দুস মাস্টারকে দেখা গেল না। তাদের হাতে ধারালো ছুরি ও অস্ত্র।

একজন আমাকে লাথি মেরে বলল, ‘উঠ নাক্কির পুলা। এখানে আইছস ক্যান, ক?’

আমি তাদের বোঝানোর চেষ্টা করলাম, ‘কুদ্দুস মাস্টারের কাছে এসেছি। উনি আমার স্যার হন। দেখা করতে এসেছি। এখনই আমি চলে যাব, ভাই। আমার হাত-পায়ের বাঁধন খুলে দেন।’

অট্টহাসি দিয়ে অন্যজন বলল, ‘শালা, বাহানা মারস! কুদ্দুস তো মইরা কবেই মাটি হয়া গেছে। আমরা কি ভুগরইলের ভকেট নাকি? চল, তোরে মাস্টারের সঙ্গে দেখা করায়া দি। এই হাবু ধর ওরে, গলাটা পার কইরা দে। আপদ রাখা ঠিক হইবো না।’

আমার কোনো কথাই ওরা শুনল না। মুহূর্তে বুকের ওপর চড়ে বসল হাবু। হাতে ধরা ধারালো ছুরিটা আমার গলায় চালিয়ে দিল। রক্তের ফিনকি ছিটকে পড়ল বেড়ায় ঝোলানো কুদ্দুস মাস্টারের জীর্ণ জামার ওপর।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন ম ন ক পর ম ন ক ম ন ক পর ম ন ক র হ ব র ল কজন মহল ল র মহল ল য় র স মন র ভ তর করল ম বলল ন র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

জোতার জন্য বিশ্বকাপ বোনাসের টাকা দেবেন চেলসির খেলোয়াড়েরা

সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত লিভারপুল ফুটবলার দিয়েগো জোতার পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের দল চেলসি। দ্য অ্যাথলেটিক জানিয়েছে, ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপজয়ী চেলসির খেলোয়াড়েরা তাঁদের বোনাসের একটি অংশ জোতা ও তাঁর ভাই আন্দ্রে সিলভার পরিবারকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

গত ৩ জুলাই স্পেনে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান ২৮ বছর বয়সী পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড জোতা, গাড়িতে থাকা তাঁর ভাই সিলভাও ঘটনাস্থলে প্রাণ হারান। ফুটবলবিশ্বকে শোকাভিভূত করা ওই দুর্ঘটনার ১০ দিন পর যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ জেতে চেলসি।

প্রথমবারের মতো ৩২ দল নিয়ে আয়োজিত ক্লাব বিশ্বকাপে ছিল বড় অঙ্কের বোনাস। চ্যাম্পিয়ন হিসেবে চেলসি পেয়েছে মোট ১ কোটি ৫৫ লাখ মার্কিন ডলার।

যা ক্লাব কর্তৃপক্ষ দলের প্রত্যেক খেলোয়াড়ের মধ্যে সমান ভাগে ভাগ করে দেবে বলে জানিয়েছে। এতে জনপ্রতি ৫ লাখ মার্কিন ডলারের বেশি করে পাবেন ফুটবলারেরা।

দ্য অ্যাথলেটিক জানিয়েছে, বোনাসের একটি অংশ জোতা ও সিলভার পরিবারকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত চেলসির খেলোয়াড় ও ক্লাব কর্তৃপক্ষ যৌথভাবে নিয়েছে।

২০২৫ ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ জেতে চেলসি

সম্পর্কিত নিবন্ধ