চীনের দাফু পাম্প ও মোটর নিয়ে এল ন্যাশনাল পলিমার
Published: 14th, August 2025 GMT
বাংলাদেশের বাজারে আসছে চীনের পাম্প প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান দাফুর পাম্প ও মোটর। দেশীয় প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল পলিমার ইন্ডাস্ট্রিজের সঙ্গে চুক্তি সইয়ের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে এখানকার বাজারে আসতে চলেছে চীনা কোম্পানিটি। আগামী সেপ্টেম্বরে দেশের বাজারে দাফু গ্রুপের মোট ৩০ ধরনের পানির পাম্প ও মোটর পাওয়া যাবে।
এ নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে উভয় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে একটি চুক্তি হয় এবং পাম্প ও মোটর বাজারজাতকরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়। ন্যাশনাল পলিমার দেশের বাজারে পাইপ ফিটিংস, পিভিসি ও ডব্লিউ পিভিসি ডোর ও পানির ট্যাংক পাওয়া যায়। নতুন করে তারা এবার দাফুর পরিবেশক হিসেবে পাম্প ও মোটর সরবরাহ করবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এনপলি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রিয়াদ মাহমুদ। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দাফু গ্রুপের পরিচালক মি.
অনুষ্ঠানে দাফুর তৈরি সারফেস পাম্প, সাবমার্সিবল পাম্প, সেন্ট্রিফিউগাল পাম্প, সোলার ওয়াটার পাম্পসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য প্রদর্শনী করা হয়।
ন্যাশনাল পলিমার গ্রুপের এমডি রিয়াদ মাহমুদ বলেন, ‘গুণগত মান ও দীর্ঘমেয়াদি আস্থার ফলে দাফুর তৈরি মোটর ও পাম্প বাজারে আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আমাদের লক্ষ্য দেশের পানি সরবরাহ ব্যবস্থায় গুণগত পরিবর্তন আনা। এতে শিল্প ও কৃষি উভয় ক্ষেত্রেই উৎপাদনশীলতা বাড়বে।’
দাফু গ্রুপের পরিচালক মি. টিম বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের বাজারের চাহিদা অনুযায়ী পাম্প তৈরি করব। এ জন্য ভবিষ্যতে বাংলাদেশি প্রকৌশলীদের চীনে প্রশিক্ষণ দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। বাংলাদেশে পাম্পের বাজার এখন বেশ বড়। পাম্পের চাহিদাও অনেক। তাই আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড হিসেবে আমাদেরও অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। বাংলাদেশে বিদ্যুৎ–ব্যবস্থাও উন্নত হয়েছে। ফলে এ দেশের মানুষ আরও বেশি কার্যক্ষম, সাশ্রয়ী ও স্মার্ট পণ্য চাইছেন। আমরা তা সরবরাহের চেষ্টা করব।’
ন্যাশনাল পলিমারের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা লোকমান হাকিম বলেন, ‘পাইপ, ট্যাংক ও দরজার পাশাপাশি আমরা এখন পাম্পের মাধ্যমে পানির নিরবচ্ছিন্ন উৎস নিশ্চিত করব। নতুন এই পণ্য দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে পৌঁছে দিতে আমাদের প্রায় ৪ হাজার পরিবেশক, ২৫ হাজার খুচরা বিক্রেতা ও ৮৫০ জন দক্ষ বিক্রয়কর্মী প্রস্তুত রয়েছেন।’
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
চলতি অর্থবছরে ৫% জিডিপি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস এডিবির; ৪ কারণে চাপে প্রবৃদ্ধি
চলতি অর্থবছর মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) কিছুটা বাড়বে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। এডিবির পূর্বাভাস অনুসারে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৫ শতাংশ হতে পারে। গত অর্থবছরের জন্য জিডিপি প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন হলো ৪ শতাংশ।
এডিবি আরও বলেছে, তৈরি পোশাক রপ্তানি স্থিতিশীল থাকলেও রাজনৈতিক পরিবর্তন, ঘন ঘন বন্যা, শিল্প খাতে শ্রমিক অস্থিরতা এবং বিরাজমান উচ্চ মূল্যস্ফীতি কারণে দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা দুর্বল হয়ে পড়েছে। এই চার কারণে প্রভাব পড়ছে সামগ্রিক প্রবৃদ্ধিতে।
আজ মঙ্গলবার এডিবি এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক (এডিও) সেপ্টেম্বর সংস্করণ প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি সম্পর্কে এমন পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
এডিবি আরও বলেছে, চলতি অর্থবছরে ভোগ্যব্যয় বাড়বে। কারণ, রেমিট্যান্সের প্রবৃদ্ধি পাবে। এ ছাড়া আসন্ন নির্বাচনসংক্রান্ত নানা ধরনের খরচের কারণেও ভোগব্যয় বাড়াবে।
বাংলাদেশে এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হো ইউন জিয়ং বলেন, ‘ভবিষ্যৎ প্রবৃদ্ধিনির্ভর করবে ব্যবসায়িক পরিবেশ উন্নয়নের মাধ্যমে প্রতিযোগিতা বাড়ানো, বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা এবং নির্ভরযোগ্য জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করার ওপর। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের বাণিজ্যে মার্কিন শুল্কের প্রভাব এখনো স্পষ্ট নয়। দেশের ব্যাংক খাতের দুর্বলতা অব্যাহত রয়েছে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য জরুরি।
এডিবির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০২৬ অর্থবছরের জন্য কিছু ঝুঁকি রয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যসংক্রান্ত অনিশ্চয়তা, ব্যাংক খাতের দুর্বলতা এবং নীতি বাস্তবায়নের অনাগ্রহ প্রবৃদ্ধির অগ্রগতিতে বাধা হতে পারে। এ জন্য সঠিক সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বজায় রাখা এবং কাঠামোগত সংস্কার দ্রুততর করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৭ শতাংশ। গত অর্থবছরের তা বেড়ে দাঁড়ায় ১০ শতাংশ। এর পেছনে রয়েছে পাইকারি বাজারে সীমিত প্রতিযোগিতা, বাজার তথ্যের ঘাটতি, সরবরাহ শৃঙ্খলে বাধা এবং টাকার অবমূল্যায়ন।
এডিবি বলছে, চলতি অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি হবে ভোগব্যয়, যা শক্তিশালী রেমিট্যান্স প্রবাহ ও নির্বাচন-সংশ্লিষ্ট ব্যয়ের কারণে বাড়বে। তবে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি ও রাজস্বনীতি এবং বিনিয়োগকারীদের সতর্ক মনোভাব বিনিয়োগকে মন্থর করতে পারে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রপ্তানির ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নে প্রতিযোগিতা বাড়ায় রপ্তানি খাত এবং এর প্রবৃদ্ধি চাপ বাড়াবে। ফলে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে রপ্তানিকারকদের মূল্য কমাতে হতে পারে।