ঢাবিতে ছাত্র রাজনীতির রূপরেখা প্রণয়নে কমিটি গঠন
Published: 14th, August 2025 GMT
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ছাত্র রাজনীতির সমন্বিত রূপরেখা প্রণয়ন বিষয়ে সুপারিশ প্রদানের লক্ষ্যে কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতির সমন্বিত রূপরেখা প্রণয়ন বিষয়ে সুপারিশ প্রদানের লক্ষ্যে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। হল পর্যায়ে দলীয় রাজনীতি বিষয়ে গত ৮ আগস্ট শিক্ষার্থীদের তীব্র প্রতিক্রিয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ১০ আগস্ট ক্যাম্পাসে ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে ঢাবি কর্তৃপক্ষের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ আলোচনার ধারাবাহিকতায় ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনগুলো, সাধারণ শিক্ষার্থী এবং অন্যান্য অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে ১১ আগস্ট অনুষ্ঠিত এসএমটি সভায় এ কমিটি গঠনের প্রস্তাব করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড.
আরো পড়ুন:
নবাব স্যার সলিমুল্লাহ স্মৃতি সংসদের নেতৃত্বে জাহিন-রাফি
ঢাবির হলগুলোতে ছাত্রদলের কমিটি বহাল থাকবে: রাকিব
বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, এই কমিটি ক্যাম্পাসে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ অক্ষুণ্ন রেখে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি চর্চার লক্ষ্যে ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনগুলো, সাধারণ শিক্ষার্থী এবং অন্যান্য অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রচলিত ছাত্র রাজনীতির গঠনমূলক ভূমিকা বিষয়ে একটি সমন্বিত রূপরেখা সুপারিশ করবে।
কমিটির সদস্যরা হলেন, ঢাবির কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান, সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের প্রাধ্যক্ষ ড. আব্দুল্লাহ-আল-মামুন, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. নাজমুল হোসাইন, শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আলেয়া বেগম এবং আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নাজমুজ্জামান ভূঁইয়া।
এর আগে, বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে এবং ডাকসু কেন্দ্রিক ছাত্র রাজনীতির রূপরেখা নির্ধারণের লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন ছাত্রদলের ১৩ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। সাক্ষাৎ শেষে ঢাবির হলগুলোতে ছাত্রদলের কমিটিগুলো বহাল থাকবে বলে জানান সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত রদল ছ ত র র জন ত র র লক ষ য র পর খ আগস ট
এছাড়াও পড়ুন:
রোহিঙ্গা সংকটের একমাত্র সমাধান প্রত্যাবাসন: প্রধান উপদেষ্টা
দীর্ঘস্থায়ী রোহিঙ্গা সংকটের একমাত্র শান্তিপূর্ণ সমাধান হলো তাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস সংকট নিরসনে সাত দফা পদক্ষেপের প্রস্তাব করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে রাখাইন রাজ্যে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করে নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের জন্য একটি বাস্তবসম্মত রোডম্যাপ প্রণয়ন।
তিনি বলেন, “অর্থায়ন কমে আসছে। একমাত্র শান্তিপূর্ণ পথ হচ্ছে তাদের প্রত্যাবাসন শুরু করা।”
মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ‘মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি’ বিষয়ক উচ্চপর্যায়ের সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধান উপদেষ্টা এই প্রস্তাব দেন।
তিনি বলেন, “গণহত্যা শুরুর আট বছর পরও রোহিঙ্গাদের দুর্দশা অব্যাহত রয়েছে। সংকট নিরসনে কার্যকর উদ্যোগ নেই। আন্তর্জাতিক অর্থায়নও মারাত্মক ঘাটতিতে ভুগছে।”
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “রোহিঙ্গা সংকটের উৎপত্তি মিয়ানমারে এবং সমাধানও সেখানেই নিহিত।”
রোহিঙ্গাদের ওপর নিপীড়ন বন্ধ এবং দ্রুত প্রত্যাবাসন শুরু করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে মিয়ানমার সরকার ও আরাকান আর্মির ওপর কার্যকর চাপ প্রয়োগ করতে হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি বলেন, “এটাই সংকটের একমাত্র সমাধান। মিয়ানমারের সার্বিক সংস্কার প্রক্রিয়ায় জিম্মি করে রাখা উচিত নয়।”
তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিক সুরক্ষা অব্যাহত রাখার তুলনায় প্রত্যাবাসনে অনেক কম সম্পদের প্রয়োজন হবে। রোহিঙ্গারা বরাবরই নিজ মাতৃভূমিতে ফিরে যেতে চেয়েছে।”
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “সাম্প্রতিক সংঘাত থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের অবিলম্বে প্রত্যাবাসনের সুযোগ দিতে হবে।”
তিনি উল্লেখ করেন, “বাংলাদেশ সংকটের শিকার। আমাদের সামাজিক, পরিবেশগত ও আর্থিকভাবে বিপুল চাপ সহ্য করতে হচ্ছে।”
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “রোহিঙ্গাদের মাধ্যমে মাদক পাচারসহ নানা অপরাধমূলক কার্যক্রম বাংলাদেশের সামাজিক কাঠামোকে হুমকির মুখে ফেলছে। আমাদের উন্নয়ন চ্যালেঞ্জ—যেমন বেকারত্ব ও দারিদ্র্য—বিবেচনায় দেশে রোহিঙ্গাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ দেওয়া সম্ভব নয়।”
টেকসই সমাধানের জন্য প্রধান উপদেষ্টা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সাত দফা পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তাব দেন—
প্রথমত, রাখাইন অঞ্চলে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করে নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের জন্য একটি বাস্তবসম্মত রোডম্যাপ প্রণয়ন।
দ্বিতীয়ত, মিয়ানমার ও আরাকান আর্মির ওপর চাপ সৃষ্টি করে রোহিঙ্গাদের ওপর সহিংসতা বন্ধ এবং সম্প্রতি বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ও অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুতদের টেকসই প্রত্যাবাসন শুরু।
তৃতীয়ত, রাখাইনে স্থিতিশীলতা আনতে আন্তর্জাতিক সহায়তা জোগাড় এবং তা পর্যবেক্ষণে আন্তর্জাতিক বেসামরিক উপস্থিতি নিশ্চিত করা।
চতুর্থত, রোহিঙ্গাদের রাখাইন সমাজ ও শাসন ব্যবস্থায় স্থায়ী অন্তর্ভুক্তির জন্য আস্থা গড়ে তোলার পদক্ষেপ গ্রহণ।
পঞ্চমত, যৌথ প্রতিক্রিয়া পরিকল্পনায় অর্থদাতাদের পূর্ণ সহায়তা নিশ্চিত করা।
ষষ্ঠত, জবাবদিহি ও পুনর্বাসনমূলক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা।
সপ্তম, মাদক অর্থনীতি ভেঙে দেওয়া এবং আন্তঃসীমান্ত অপরাধ দমন করা।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “বিশ্ব আর রোহিঙ্গাদের নিজ মাতৃভূমিতে ফেরার জন্য অপেক্ষায় রাখার সামর্থ্য রাখে না।”
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “আজ আমাদের সংকট সমাধানে একযোগে কাজ করার অঙ্গীকার করতে হবে। বাংলাদেশ এ লক্ষ্যে পূর্ণ সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত।”
ঢাকা/ইভা