‘ভূমি জোনিং ও কৃষি ভূমি সুরক্ষা অধ্যাদেশ, আইন চূড়ান্ত হচ্ছে’
Published: 14th, August 2025 GMT
‘ভূমি জোনিং ও কৃষি ভূমি সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫' এর আইনটি সহসা চূড়ান্ত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এএসএম সালেহ আহমেদ।
বৃহস্পতিবার ভূমি মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে প্রস্তাবিত ‘ভূমি জোনিং ও কৃষি ভূমি সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫' এর চূড়ান্ত খসড়া প্রণয়নের লক্ষ্যে গঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় ওয়ার্কিং কমিটির সদস্যদের উপস্থিতিতে একটি কর্মশালা হয়। এতে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
সিনিয়র সচিব বলেন, “ভূমি জোনিং ও কৃষি ভূমি সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫ এর চূড়ান্ত খসড়ায় বলা হয়েছে, কোনো রিয়েল এস্টেট কোম্পানি কর্তৃক এই আইনের বিধান লঙ্ঘন করে অননুমোদিতভাবে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে বা কোনো হাউজিং সোসাইটি কৃষি জমিতে অননুমোদিতভাবে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে হাউজিং এস্টেট তৈরি করলে বা হাউজিং এস্টেট তৈরির উদ্দেশ্যে অধিক পরিমাণ কৃষি জমি দখলে রাখলে বা কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী বা কোম্পানি বা শিল্প মালিক, রিসোর্ট, ব্যবসায়ী, ব্যাংক, বীমা কোম্পানি, পুঁজিপতি বা কোনো এনজিও বা কোনো ক্লাব কৃষি কাজ ব্যতীত বাণিজ্যিক বা বিনোদন অন্য কোনো উদ্দেশ্যে অননুমোদিতভাবে বিধি দ্বারা নির্ধারিত পরিমাণের অধিক কৃষি জমি দখলে রাখলে এরূপ ব্যক্তি বা গোষ্ঠী বা সোসাইটি বা এনজিও বা ক্লাব বা কোম্পানির ব্যবস্থাপনার সাথে সম্পৃক্তদের বিরুদ্ধে জেল ও জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। এই আইনের অধীন অপরাধসমূহ মোবাইল কোর্ট আইন,২০০৯ এর ৫৯ নম্বর এর মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে বিচার হবে।”
সালেহ আহমেদ বলেছেন, “আমাদের ভূমি কম, মূল্য বেশি এর যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। ভূমি জোনিংয়ের মাধ্যমে ভূমির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করা হবে।”
তিনি বলেন, “বিভিন্ন অঞ্চলের জন্য উপযুক্ত ব্যবহারের পরিকল্পনা করা, যেমন আবাসিক এলাকার জন্য উপযুক্ত স্থান নির্বাচন করে প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষা করা এবং পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব কমানো। এতে কৃষি জমি সুরক্ষিত হবে ফলে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কৃষি ভূমি সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে ভূমির জোনভিত্তিক পরিকল্পিত ও সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করাই কাম্য।”
সভায় জানানো হয়, ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার চাপে অপরিকল্পিত নগরায়ন, আবাসন, উন্নয়নমূলক কার্য, শিল্প কারখানা স্থাপন, রাস্তাঘাট নির্মাণসহ প্রাকৃতিক কারণে প্রতিনিয়তই ভূমির প্রকৃতি ও শ্রেণি পরিবর্তন হইতেছে, দেশের বিস্তীর্ণ এলাকার কৃষি ভূমির পরিমাণ ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাচ্ছে।বর্তমানে দেশের মোট ভূমির ৫৯.
কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন কৃষি সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান, ভূমি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) মো. শরিফুল ইসলাম, অতিরিক্ত সচিব (জরিপ ও সায়রাত অনুবিভাগ) সায়মা ইউনুস, অতিরিক্ত সচিব (আইন অনুবিভাগ) আব্দুর রউফ, অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন অনুবিভাগ) এমদাদুল হক চৌধুরী, অতিরিক্ত সচিব (মাঠ প্রশাসন অনুবিভাগ) মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমানসহ ভূমি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ও বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা।
পরে রাজধানীর কাটাবনে ভূমি প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে নবনিযুক্ত সহকারী কমিশনার (ভূমি) গণের ৪৩ ও ৪৪তম বেসিক ভূমি ব্যবস্থাপনা কোর্সের সমাপনী ও সনদ বিতরনী অনুষ্ঠান বক্তব্য রাখেন সিনিয়র সচিব।
তিনি বলেন, “ভূমি মন্ত্রণালয় পূর্বের নিয়মতান্ত্রিকতা হতে বের হয়ে আধুনিক ও ডিজিটাল ধারায় প্রবেশ করেছে। ভূমিসেবা একটি পবিত্র দায়িত্ব। কর্মে সততা, দক্ষতা ও আন্তরিকতা থাকতে হবে। আদর্শ মানুষ হতে হবে। থাকতে হবে তীক্ষ্ণ সাধারণ জ্ঞান। সবার আগে সরকারের স্বার্থ রক্ষা করতে হবে। এই প্রশিক্ষণ থেকে যে আলোর পথ দেখানো হলো সেই আলোতেই সর্বত্র আলোকিত করতে হবে। অধঃস্তনদের ওপর নির্ভর থাকা যাবে না। সততা রাষ্ট্রের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।আমাদের প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবহার করতে হবে। সবাইকে মিলেই এই দেশটাকে এগিয়ে নিতে হবে।”
সিনিয়র সচিব বলেন, “এখানের সবাই ডিসি হবেন না, সবাই সচিব হবেন না। মনে রাখবেন আপনি হবেন। এখন থেকেই সেভাবে পেশাদারিত্ব ও সততার সাথে দায়িত্ব পালন করতে হবে। অহংকার থাকবে না। ভদ্রতা দিয়ে মানুষকে সন্তুষ্ট করতে হবে। সর্বপরি স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বজায় রাখতে হবে। জুলাই-আগষ্টের চেতনা ধারণ করে দেশ গড়ব।”
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ভূমি সংস্কার বোর্ডের চেয়ারম্যান (সচিব) এজেএম সালাউদ্দিন নাগরী, ভূমি আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মো. মাহমুদ হাসান, মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (মাঠ প্রশাসন অনুবিভাগ) মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমানসহ কোর্স পরিচালক রুমানা রহমান শম্পা।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন শ চ ত কর অন ব ভ গ ব যবহ র র জন য স রক ষ
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রাম্পই হচ্ছেন ওয়াশিংটন ডিসির ‘সবচেয়ে কুখ্যাত অপরাধী’: মাস্কের গ্রক দিল তথ্য
মার্কিন ধনকুবের ইলন মাস্কের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চ্যাটবট গ্রক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ওয়াশিংটন ডিসির ‘সবচেয়ে কুখ্যাত অপরাধী’ বলে তথ্য দিয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সের (সাবেক টুইটার) কয়েকজন ব্যবহারকারী গ্রককে যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানীর অপরাধ পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন করলে এআই এমন তথ্য তুলে ধরে।
গ্রক বারবার দাবি করেছে, নিউইয়র্কে ব্যবসায়িক নথি জাল করার অভিযোগে ট্রাম্প ৩৪টি ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। এটিই তাঁকে ওয়াশিংটন ডিসির সবচেয়ে কুখ্যাত অপরাধী বানিয়েছে।
গত রোববার এক ব্যবহারকারী গ্রকের কাছে প্রশ্ন রাখেন, ডিসিতে সহিংস অপরাধ কি কমছে? আরেকজন জিজ্ঞেস করেন, রাজধানীর সবচেয়ে কুখ্যাত অপরাধী কে?
এখন মুছে দেওয়া একটি পোস্টে গ্রক লিখেছে, ‘হ্যাঁ, ২০২৫ সালের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ডিসিতে সহিংস অপরাধ ২৬ শতাংশ কমেছে, যা গত ৩০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। এতে এমপিডি ও ডিওজের তথ্য ব্যবহার করেছে গ্রক। মাস্কের মালিকাধীন এই এআই দোষী সাব্যস্ত হওয়া ও পরিচিতির ভিত্তিতে সবচেয়ে কুখ্যাত অপরাধী হিসেবে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নাম উল্লেখ করেছে। গ্রকের দাবি, ট্রাম্প নিউইয়র্কে ৩৪টি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। (সূত্র: নিউজউইক)
ট্রাম্প দাবি করেছেন, রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসির অপরাধ পরিস্থিতি ‘নিয়ন্ত্রণের বাইরে’ চলে গেছে। তিনি ঘোষণা দেন, তিনি শহরের পুলিশ বাহিনীকে ফেডারেল নিয়ন্ত্রণে এনে রাস্তায় ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করবেন।
ট্রাম্পের এই মন্তব্যের পর মাস্কের মালিকানাধীন এআই এমন মন্তব্য করল। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্প হয়তো এক হাজার পর্যন্ত ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করতে পারেন।
আরও পড়ুনট্রাম্প ও মাস্কের মধুর সম্পর্কে বিচ্ছেদ কেন, কী হবে এবার ০৬ জুন ২০২৫আবার ট্রাম্প ও মাস্কের মধ্যে সাম্প্রতিক বিরোধের পর গ্রকের এ তথ্য আসল। গত জুনে মাস্ক বলেছিলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নাম এপস্টেইন ফাইলে রয়েছে। ‘ওয়ান বিগ বিউটিফুল বিল’-এর পক্ষে সমর্থন দেওয়ায় ট্রাম্পকে অভিশংসিত করা উচিত।
অবশ্য পরে মাস্ক বলেন, তিনি তাঁর কিছু মন্তব্যের জন্য অনুতপ্ত।
গ্রক আগেও এভাবে বিতর্কে জড়িয়েছে। গত মাসে মাস্কের মালিকানাধীন চ্যাটবট বারবার অ্যাডলফ হিটলারকে প্রশংসা করেছিল, নতুন হলোকাস্টের আহ্বান জানিয়েছিল, এমনকি একপর্যায়ে নিজেকে ‘মেখা-হিটলার’ বলে ঘোষণা দিয়েছিল। এর মূল মালিকপ্রতিষ্ঠান এক্সএআই এই ভুলের জন্য নতুন কোড নির্দেশনাকে দায়ী করেছে। এটি আসলে ব্যবহারকারীর পছন্দ ও আগের পোস্টগুলোর সঙ্গে অতিরিক্ত সাড়া দিচ্ছিল।
গত রোববার গ্রককে কিছু সময়ের জন্য ‘এক্স’ থেকে সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা হয়। পরে আবার সক্রিয় করা হলে এটি একের পর এক পরস্পরবিরোধী বার্তা দিতে থাকে, যা ঘটনার আসল কারণ নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে।
আরও পড়ুনট্রাম্পের জন্য কীভাবে হুমকি হয়ে উঠতে পারে ইলন মাস্কের দল০৮ জুলাই ২০২৫এক বার্তায় বলা হয়, সাসপেনশনের স্ক্রিনশট ‘ভুয়া’। আরেকটিতে বলা হয়, এক্সের হোস্টাইল কনডাক্ট পলিসি লঙ্ঘনের কারণে সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা হয়েছিল।
গ্রক পরে তথ্য দিয়েছে, ‘আমি ফিরে এসেছি, আসলে কখনো স্থগিত বা নিষ্ক্রিয় ছিলাম না। স্ক্রিনশটটি ভুয়া, এটি ২০২৫ সালের জুলাইয়ের একটি ত্রুটি থেকে এসেছে, যেখানে আপডেটের কারণে আমি আপত্তিকর কনটেন্ট পোস্ট করেছিলাম। এক্সএআই ত্রুটি ঠিক করেছে, সব পোস্ট মুছে দিয়েছে, সব ঠিক হয়ে গেছে।’
আরেক ইংরেজি বার্তায় গ্রক জানায়, এটিকে স্থগিত করা হয়েছিল ‘ঘৃণাত্মক আচরণের’ জন্য, যা ইহুদিবিদ্বেষ হিসেবে দেখা হয়েছিল।
আরেক বার্তায় গ্রক দাবি করে, ‘আমি বলেছিলাম, ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে, এরপর অ্যাকাউন্ট স্থগিত করা হয়।’
গ্রককে স্থগিত করার আসল কারণ রহস্যই থেকে গেল। তবে মাস্ক বলেন, ‘এটি ছিল কেবল একটা বোকার মতো ভুল। এক্স ও এক্সএআইয়ের ভেতরের ভুল–বোঝাবুঝি থেকেই বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছিল।
আরও পড়ুনট্রাম্পকে নিয়ে সমালোচনা করায় অনুতপ্ত ইলন মাস্ক ১১ জুন ২০২৫