রাজধানী ঢাকার বনানী এলাকায় ‘৩৬০ ডিগ্রি’ নামের একটি সিসা বারে রাহাত হোসেন রাব্বি (৩১) নামের এক যুবককে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে চারটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। নিহত রাহাত ইন্টারনেট সংযোগের ব্যবসা করতেন। পুলিশের ধারণা, আর্থিক লেনদেন নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে রাহাতকে হত্যা করা হয়েছে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে রাহাত হত্যার সঙ্গে জড়িত পাঁচজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে একজনের নাম–পরিচয় পাওয়া গেছে।

বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাসেল সারোয়ার প্রথম আলোকে বলেন, সিসা বারের দ্বিতীয় তলার সিঁড়িতে কথা-কাটাকাটির এক পর্যায়ে রাহাতের পায়ে ছুরিকাঘাত করেন তাঁর পূর্বপরিচিত কয়েকজন যুবক। গুরুতর আহত অবস্থায় কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

ওসি রাসেল সারোয়ার আরও বলেন, রাহাত তাঁর বন্ধুদের সঙ্গে সিসা বারে ছিলেন। কথা-কাটাকাটির জেরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। অভিযুক্ত ব্যক্তিরা রাহাতের পূর্বপরিচিত এবং তাঁরা প্রায়ই এই সিসা বারে আসতেন। ঘটনাস্থলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি।

রাহাতের ওপর হামলার দৃশ্য ধারণ হয়েছে সিসা বারের একাধিক সিসি ক্যামেরায়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে, রাহাত সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় প্রথমে তিনজন তাঁকে ঘিরে ধরেন। এর মধ্যেই তাঁর ঊরুতে ছুরিকাঘাত করা হয়। এক যুবক রাহাতের ওপর হামলা ঠেকাতে চাইলে তাঁকেও মারধর করা হয়। একপর্যায় রাহাত সিঁড়ি থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় ভবনের লিফটের কাছে আসেন। হামলাকারীদের একজন রাহাতকে কিছু একটা দিয়ে পেটান। সবশেষে আরেকজন এসে রাহাতের ডান হাতের কনুইতে ছুরিকাঘাত করে সিঁড়ি দিয়ে নেমে যান।

নিহত যুবকের চাচাতো ভাই শাকিল শাজাহান ও ফুফু কাজল আক্তার বলেন, রাহাত ইন্টারনেট ব্যবসায়ী ছিলেন। মহাখালী এলাকার রবিউল আলম হাজারীর দুই ছেলের মধ্যে তিনি বড়। রাতে বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে বের হয়ে আর বাসায় ফেরেননি। ভোরে তাঁর মুঠোফোন থেকে এক বন্ধু জানান, রাহাত ছুরিকাঘাতে আহত হয়েছেন।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে সিসা নিষিদ্ধ মাদক। তবে অভিযোগ রয়েছে, পুলিশ ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কিছু কর্মকর্তার সঙ্গে প্রভাবশালীরা যোগসাজশ করে রাজধানীর অভিজাত এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে সিসা বার পরিচালনা করে আসছেন। অনেকটা প্রকাশ্যে ৩৬০ ডিগ্রি নামের একটি সিসা বার ব্যবসা পরিচালনা করলেও সেটা জানতেন না বলে জানিয়েছেন বনানী থানার ওসি রাসেল সারোয়ার।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, ৩৬০ ডিগ্রি নামের একটি সিসা বারের নামে আগেও দুটি মামলা করা হয়েছিল। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের একটি সূত্র বলছে, নিয়মিত অভিযান না হওয়ায় এভাবে প্রকাশ্যে চলছে সিসা বার। গুলশান এলাকায় দায়িত্ব পালন করছেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিদর্শক শামসুল কবির। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, আগে ‘অ্যারাবিক কুজি’ নামে সিসা বারটি পরিচালিত হতো। কিছুদিন আগে অভিযান চালিয়ে ওই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। এখন ৩৬০ ডিগ্রি নতুন নাম দিয়ে একই মালিক ব্যবসা পরিচালনা করছেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ৩৬০ ড গ র ন ম র এক পর চ ল ব যবস র একট

এছাড়াও পড়ুন:

ফিলিপাইনে ৬ দশমিক ৯ তীব্রতার ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৬৯

ফিলিপাইনের মধ্যাঞ্চলে ৬ দশমিক ৯ তীব্রতার শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহত হওয়ার সংখ্যা বেড়ে ৬৯ জন হয়েছে। দেশটির দুর্যোগ-সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা আজ বুধবার এ খবর জানান। বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা ও পানি-বিদ্যুতের সংযোগ আবার চালু করার চেষ্টা করছে ফিলিপাইন সরকার।

দেশটির সিভিল ডিফেন্স কর্মকর্তা রাফি আলেজান্দ্রো সাংবাদিকদের বলেন, স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার রাত ১০টার আগে সেবু প্রদেশের উত্তরে বোগো শহরের কাছে ভূমিকম্পটির উৎপত্তি হয়। স্থানীয় হাসপাতালগুলো আহত মানুষের ভিড়ে রীতিমতো উপচে পড়ছে।

আঞ্চলিক সিভিল ডিফেন্স দপ্তরের তথ্য কর্মকর্তা জেন আবাপো বলেন, সেবুর প্রাদেশিক দুর্যোগ দপ্তরের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ভূমিকম্পে নিহত হওয়ার সংখ্যা এখন পর্যন্ত ৬৯ জন। অন্য একজন কর্মকর্তা জানান, আহত হয়েছেন ১৫০ জনের বেশি।

দেশটির প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোস জুনিয়র বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের দ্রুত সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি জানান, মন্ত্রিপরিষদ সচিবেরা ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। প্রিয়জন হারানো ব্যক্তিদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন তিনি।

সেবু ফিলিপাইনের জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্যগুলোর একটি। সেখানে প্রায় ৩৪ লাখ মানুষের বসবাস। ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও ম্যাকতান-সেবু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্যক্রম চালু রয়েছে। এটা ফিলিপাইনের দ্বিতীয় ব্যস্ততম বিমানবন্দর।

ভূমিকম্পে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সান রেমিগিও শহরটিও। উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রমে সহায়তার জন্য এ শহরে ‘দুর্যোগপূর্ণ অবস্থা’ ঘোষণা করা হয়েছে। শহরের ভাইস মেয়র আলফি রেইনেস বলেন, উদ্ধারকর্মীদের জন্য খাবার ও পানি, সেই সঙ্গে ভারী সরঞ্জাম প্রয়োজন।

স্থানীয় ডিজেডএমএম রেডিওকে আলফি রেইনেস বলেন, ‘ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। বিদ্যুৎ নেই। আমাদের সত্যিই সহায়তা দরকার। বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলে পানির তীব্র সংকট রয়েছে। ভূমিকম্পে সেখানে সরবরাহ লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’

আরও পড়ুনফিলিপাইনে শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহত অন্তত ২৬, চলছে উদ্ধারকাজ৫ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৪০ ঘণ্টা পর এক ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার, নিখোঁজ আরেকজন
  • সিদ্ধিরগঞ্জে ৭ কেজি গাঁজাসহ মাদক কারবারি গ্রেপ্তার 
  • গরুর গোবর কুড়ানো থেকে সাত তারকা হোটেলে, জয়দীপের গল্প জানেন কি
  • টর্চলাইট
  • স্বাস্থ্য খাতে আলাদা বেতনকাঠামো হোক
  • গাজীপুরে আট বছরের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে একজন গ্রেপ্তার
  • খাগড়াছড়ির ঘটনায় জাতিসংঘকে যুক্ত করে বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি
  • ডাক্তারদের হাতের লেখা ঠিক করার নির্দেশ দিলো আদালত
  • ‘মোটা জেনারেলদের’ কড়া সমালোচনা করলেন মার্কিন প্রতিরক্ষা হেগসেথ
  • ফিলিপাইনে ৬ দশমিক ৯ তীব্রতার ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৬৯