বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ২০২৩-২৪ মেয়াদের নির্বাচন ঘিরে সন্ত্রাসী হামলা, ভোট জালিয়াতি, মারধর, হত্যাচেষ্টা ও শ্লীলতাহানির অভিযোগে সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস ও সাবেক কয়েকজন পুলিশ সদস্যসহ ৭৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

বুধবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো.

রবিউল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি করেন।

শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালেদ মনসুর প্রথম আলোকে বলেন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি নির্বাচনে হামলার অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। তদন্ত করে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শাহবাগ থানায় দায়ের করা এজাহার অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ১৪ মার্চ সন্ধ্যায় নীল প্যানেলের প্রার্থী ও সমর্থকেরা জানতে পারেন, আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবীরা গোপনে ব্যালটে সিল মারছেন। প্রতিবাদ করতে গেলে কয়েকজন আইনজীবী মারধরের শিকার হন। পরদিন ১৫ মার্চ সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত সমিতির অডিটরিয়ামে প্রায় ৪০-৫০ জন আইনজীবী ও শতাধিক পুলিশ সদস্য জোরপূর্বক প্রবেশ করে বিএনপি–সমর্থিত প্রার্থী ও ভোটারদের ওপর হামলা চালান।

এ সময় মাহবুব উদ্দিন খোকন, রুহুল কুদ্দুস কাজল, মাহদিন চৌধুরীসহ বহু প্রার্থী ও সদস্য গুরুতর আহত হন। নারী আইনজীবীদেরও মারধর ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ রয়েছে। রাইফেলের বাঁট, লাঠি ও বুটের আঘাতে কয়েকজন আইনজীবী রক্তাক্ত জখম হন বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়।

এজাহারে আরও বলা হয়েছে, আইনজীবী রাসেল আহম্মেদ, ইব্রাহিম খলিল, সালাউদ্দিন রিগানসহ প্রায় তিন শতাধিক আইনজীবীকে লাঠি, রাইফেলের বাঁট ও বুটের আঘাতে আহত করা হয়। এ ছাড়া ভবনের বিভিন্ন কক্ষ ভাঙচুর, কাচ ভেঙে ফেলা, পুলিশের প্রবেশে সহযোগিতা, সাংবাদিকদের ওপর হামলারও অভিযোগ রয়েছে। আজকের পত্রিকা, জাগো নিউজ, মানবজমিন, এটিএন বাংলা, সময় টিভি, ডিবিসি নিউজ ও বৈশাখী টিভির অন্তত ২৫ জন সাংবাদিক গুরুতর আহত হন।

বাদীর দাবি, তৎকালীন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিনের প্রত্যক্ষ মদদে পুলিশ সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে প্রবেশ করে তাণ্ডব চালায়। নির্বাচনের দ্বিতীয় দিন ১৬ মার্চও ভয়ভীতি ও কারচুপির অভিযোগ ওঠে। অবশেষে রাতে জাল ব্যালটের মাধ্যমে ১৪ জনকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স প র ম ক র ট আইনজ ব

এছাড়াও পড়ুন:

নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী প্রকল্পে অর্থায়ন রয়েছে প্রাইম ব্যাংকের

কৌশলগতভাবে পরিবেশ ও সমাজের উন্নতি করে, একই সঙ্গে ভালো মুনাফা দেয়—এমন টেকসই প্রকল্পে অর্থায়নের মাধ্যমে যেকোনো ব্যাংক ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে। এতে পরিবেশ সুরক্ষার পাশাপাশি অর্থনীতিতে নতুন সুযোগ তৈরি হয় এবং ব্যাংকের সুনাম বাড়ে। প্রাইম ব্যাংকও টেকসই অর্থায়নের মাধ্যমে পরিবেশ ও সমাজে ইতিবাচক পরিস্থিতি তৈরিতে কাজ করছে। আমরা নবায়নযোগ্য জ্বালানি, বিদ্যুৎ সাশ্রয় ও কার্বন নিঃসরণ কমায় এমন বিভিন্ন প্রকল্পে নিয়মিত অর্থায়ন করছি। 

প্রাইম ব্যাংক টেকসই অর্থায়নের ক্ষেত্রে পরিবেশ, সমাজ ও সুশাসনের বিষয়গুলোকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়। বিশেষ করে কুটির, অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগ (সিএমএসএমই) এবং নারী উদ্যোক্তাদের ব্যবসায় সহযোগিতা করা হয়। গ্রিন ফাইন্যান্স সাপোর্ট ডেস্ক ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে সুবিধাবঞ্চিত মানুষের ক্ষমতায়নের জন্য কাজ করে ব্যাংকটি। প্রাইম ব্যাংকের এসব নীতির ফলে একদিকে দীর্ঘমেয়াদি পরিবেশগত ও সামাজিক ঝুঁকি কমছে; অন্যদিকে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি ও মুনাফার স্থিতিশীলতা বাড়ছে। পাশাপাশি অনাদায়ি ঋণের আশঙ্কা কমছে। 

টেকসই ঋণের আওতায় পরিবেশগত দিকের পাশাপাশি সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের খাতকেও বুঝায়। আর পরিবেশবান্ধব বা গ্রিন অর্থায়নের আওতায় শুধু পরিবেশবান্ধব খাতে ঋণ দেওয়া হয়। ২০২৪ সালে প্রাইম ব্যাংকের পরিবেশবান্ধব ঋণের পরিমাণ ছিল ১২ হাজার ২৬৮ কোটি টাকা। এটি ব্যাংকের মোট ঋণের এক–তৃতীয়াংশ। ২০২৩ সালে এই খাতে ঋণ ছিল বিতরণ করা মোট ঋণের ২০ শতাংশ। অন্যদিকে ২০২৪ সালে প্রাইম ব্যাংকের টেকসই ঋণ বেড়ে দাঁড়ায় ২ লাখ ৮০ হাজার ৪১৬ কোটি টাকায়, যা ব্যাংকের মোট ঋণের ৮০ শতাংশের বেশি। ২০২৩ সালে এটি ছিল মাত্র ৩৮ শতাংশ। 

অর্থাৎ, টেকসই ও পরিবেশবান্ধব—উভয় খাতেই ভালো করছে প্রাইম ব্যাংক। এটি সম্ভব হয়েছে মূলত ব্যাংকের টেকসই অর্থায়ন নীতির সঠিক বাস্তবায়ন এবং পরিবেশ ও সামাজিক দায়বদ্ধতা প্রকল্পে বিনিয়োগের ফলে। এ প্রচেষ্টার কারণেই প্রাইম ব্যাংক তিন বছর ধরে বাংলাদেশ ব্যাংকের টেকসই উন্নয়ন রেটিংয়ে শীর্ষস্থানীয় ব্যাংক হিসেবে স্থান পেয়েছে। এ ছাড়া ইউরোমানি প্রকাশনা সংস্থা বাংলাদেশে ইএসজি মানদণ্ডে সেরা ব্যাংক হিসেবে প্রাইম ব্যাংককে টানা তিন বছর ধরে পুরস্কৃত করছে। 

প্রাইম ব্যাংক ২০১৪ সাল থেকে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী বার্ষিক টেকসই উন্নয়ন প্রতিবেদন প্রকাশ করে আসছে। ২০২৩ সালে ব্যাংকটি জাতিসংঘের নেট-জিরো ব্যাংকিং অ্যালায়েন্সে যোগ দেয়। সেই ধারাবাহিকতায় গত বছর ব্যাংকের প্রথম জলবায়ু কৌশল প্রকাশ করা হয়। এ ছাড়া ঋণ প্রদানে ইএসজি মানদণ্ড অনুসরণ শুরু করে প্রাইম ব্যাংক। 

প্রাইম ব্যাংকের পরিবেশবান্ধব অর্থায়ন প্রকল্পগুলো দেশের ব্যাংকিং খাতে টেকসই উন্নয়ন ও পরিবেশবান্ধব অর্থায়নের ক্ষেত্রে একটি মডেল হিসেবে কাজ করছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিবেশবান্ধব পুনঃ অর্থায়ন কর্মসূচির আওতায় বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে ঋণ দেয় প্রাইম ব্যাংক। উন্নত যন্ত্রপাতি ক্রয়, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও পরিবেশবান্ধব অবকাঠামো নির্মাণে এসব ঋণ দেওয়া হয়। যেমন নারায়ণগঞ্জে অবস্থিত শতভাগ রপ্তানিমুখী প্রতিষ্ঠান ফারিহা স্পিনিং মিলসকে প্রাইম ব্যাংক প্রায় ১২৭ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে। এই টাকা ব্যবহার করে প্রতিষ্ঠানটি তাদের স্পিন্ডল বা সুতা পাকানোর যন্ত্রের সংখ্যা বাড়িয়ে দ্বিগুণ করেছে। এতে একদিকে কাজের গতি বেড়েছে; অন্যদিকে, বছরে প্রায় ৩ হাজার ৯৭৩ টন কার্বন নির্গমন কমাতে সহায়তা করছে। এই সম্প্রসারণের ফলে নতুন কর্মসংস্থান হয়েছে ১ হাজার ৮২৪ জনের। আরেক রপ্তানিমুখী প্রতিষ্ঠান এবিআর স্পিনিং মিলসে ১২৮ কোটি টাকা অর্থায়ন করে প্রাইম ব্যাংক। এই অর্থ দিয়ে প্রতিষ্ঠানটি নতুন যন্ত্রপাতি স্থাপন করে বছরে প্রায় ৪৫ লাখ ৮৭ হাজার কিলোওয়াট-ঘণ্টা বিদ্যুৎ সাশ্রয় করতে পারছে; এতে কার্বন নির্গমন কমবে প্রায় ৩ হাজার ৭৩ টন।

ফারেবা নাজ শাওলী
উপপ্রধান, টেকসই অর্থায়ন, প্রাইম ব্যাংক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • র‍্যাগিংয়ের অভিযোগে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী বহিষ্কার
  • কুবিতে র‍্যাগিং: ২ শিক্ষার্থী বহিষ্কারসহ বিভাগীয় প্রধান ও ছাত্র উ
  • খনিজ ও তেল–গ্যাস অনুসন্ধানে পাকিস্তানের সঙ্গে সহযোগিতা বৃদ্ধি করবে যুক্তরাষ্ট্র
  • নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী প্রকল্পে অর্থায়ন রয়েছে প্রাইম ব্যাংকের
  • আবারো গ্রেপ্তার টিকটকার প্রিন্স মামুন
  • গাজায় নিহতের সংখ্যা ৬১ হাজার ৭০০ ছাড়াল
  • সিদ্ধিরগঞ্জের হত্যা মামলায় রিমান্ড শেষে সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুলকে কারাগারে প্রেরণ 
  • মাদ্রাসাছাত্র সোলাইমান হত্যা মামলায় রিমান্ড শেষে আনিসুল হক কারাগারে
  • নেতানিয়াহু পথ হারিয়ে ফেলেছেন: নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী