Prothomalo:
2025-10-03@04:00:41 GMT

লালভাঙার লাল ফুল

Published: 15th, August 2025 GMT

জেমস লি (১৭১৫-১৭৯৫) আর লুইস কেনেডি (১৭২১-১৭৮২) ছিলেন দুটি পরিবারের দুজন স্কটিশ নার্সারিকর্মী। তাঁরা দুজন মিলে লন্ডনের হ্যামারস্মিথে আঠারো শতকের প্রথম দিকে একটি নার্সারি গড়ে তুলেছিলেন, যার নাম ছিল ভাইনইয়ার্ড নার্সারি। ধারণা করা হয়, সেটি বিশ্বের প্রথম দিকের নার্সারিগুলোর একটি।

বিশ্বের প্রথম বাণিজ্যিক নার্সারিটি ছিল লিনিয়ান বোটানিক গার্ডেন অ্যান্ড নার্সারি। রবার্ট প্রিন্স ১৭৩৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে সেটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ভাইনইয়ার্ড নার্সারি ছিল সেটির সমসাময়িক। লি ও কেনেডি বংশের সন্তানেরা তিন প্রজন্ম ধরে একই সঙ্গে সেই নার্সারিকে টিকিয়ে রেখেছিলেন। 

নার্সারি কাজের পাশাপাশি জেমস লি ছিলেন একজন উদ্ভিদ সংগ্রাহকও। জেমস লি ১৭৮৭ সালে লন্ডনে প্রথম চীনা গোলাপ প্রবর্তন করেছিলেন। কালক্রমে তিনি হয়ে ওঠেন উদ্ভিদের দ্বিপদী নামকরণের জনক কার্ল লিনিয়াসের একজন সহযোগী। জেমস লি ১৭৬০ সালে প্রকাশিত লিনিয়ান পদ্ধতির একটি সংকলন তৈরি করেন। অ্যান ইন্ট্রোডাকশন টু বোটানি নামের সংকলনটির সে সময় পাঁচটি সংস্করণ প্রকাশিত হয়। লিনিয়াস নার্সারি কর্মী জেমস লির নামে একটি উদ্ভিদ গণের নামকরণ করেন। Leea নামের সে গণের সারা বিশ্বে ২০২৩ সালের ১২ জুলাই পর্যন্ত ৪৫টি গ্রহণযোগ্য প্রজাতি প্লান্টস অব দ্য ওয়ার্ল্ড অনলাইনে প্রকাশিত হয়। বাংলাদেশে আছে এ গণের অন্তত ১০টি প্রজাতি। কুকুরজিব বা বনচালিতা, কাকজংলা, ডানাজংলা, কুকুরা, ঢোলসমুদ্র, লালভাঙা ইত্যাদি এ গণের উদ্ভিদ।

ঢাকায় আহসান মঞ্জিলে রয়েছে একটি ঢোলসমুদ্রগাছ, চন্দ্রিমা উদ্যানে পুকুরপাড়ে দেখেছিলাম কুকুরজিবগাছ আর এবার আষাঢ় মাসে বলধা উদ্যানের সিবিলি অংশে গিয়ে দেখা পেলাম লালভাঙাগাছের। লালভাঙা বা red leea গাছের প্রজাতিগত নাম Leea rubra ও পরিবার ভিটেসি। অর্থাৎ গবেষকেরা এ গাছকে আঙুরের গোত্রে ফেলেছেন। আগে এ গাছের গোত্র ছিল লিয়েসি। প্রজাতিগত নামের শেষাংশ রুব্রা অর্থ লাল।

বলধা উদ্যানে দেখলাম লালভাঙাগাছে কয়েকটা থোকায় লাল টকটকে ফুল ফুটেছে। ফুল এত ক্ষুদ্র যে খুব খেয়াল করে না দেখলে তা সহজে চোখে পড়ে না। গাছটার ডালপালা লালচে সবুজ, গিঁটগুলো ফোলা ফোলা, দেখে মনে হয়, চাপ দিলেই বোধ হয় ওখান থেকে মটাৎ করে ডালটা ভেঙে যাবে। আসলে তা হয় না, কাণ্ড বেশ শক্ত। শাখাপ্রশাখা নিয়ে গুল্ম প্রকৃতির গাছটার উচ্চতা ৬ থেকে ৭ ফুটের বেশি উঁচু হয়ে সেখানে এলোমেলোভাবে ছড়িয়ে রয়েছে। ডালপালা ও পাতার সন্ধিস্থলে রয়েছে বড় খোঁপার মতো পুষ্পমঞ্জরি। ফোটা ফুলের চেয়ে বুটের দানার মতো কুঁড়িগুলোই যেন বেশি সুন্দর।

লালভাঙা একটি বহুবর্ষজীবী ছোট আকারের গুল্ম প্রকৃতির গাছ। উচ্চতা ৩ মিটার পর্যন্ত হতে পারে। কাণ্ডের রং লালচে, পাতা সবুজ। পাতা উপবৃত্তাকার, অগ্রভাগ সুচালো, কিনারা অগভীরভাবে খাঁজকাটা, পাতা দেখতে অনেকটা চালতা পাতার মতো, তবে চালতাপাতার চেয়ে আকার ছোট। শাখা-প্রশাখায় পাতাগুলো বিপরীতমুখী হয়ে একান্তরক্রমিকভাবে জন্মে। পাতা খসখসে ও প্রায় ৩০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। একে আমরা পাতা বলছি, আসলে সেগুলো পত্রক বা লিফলেট। কেননা পত্রদণ্ডের দুধারে পত্রকগুলো সাজানো থাকে। পুষ্পমঞ্জরি, কুঁড়ি ও ফুল উজ্জ্বল লাল। ফুলের পাপড়ির রং উজ্জ্বল লাল, গোলাপি বা ঘিয়ে হতে পারে। 

ফোটা ফুলগুলো এতই ক্ষুদ্র যে পুষ্পমঞ্জরিতে ফোটার পর সেগুলো ঘিয়ে রঙের বিন্দুর মতো দেখায়। ফুলের পাঁচটি পাপড়ি তারার মতো মেলে থাকে, মাঝখানে থাকে ঘিয়ে রঙের জননাঙ্গগুলো। ক্ষুদ্র নাকফুলের মতো ফুল। আষাঢ় মাস থেকে ফুল ফোটা শুরু হয়, ফল ধরা শেষ হয় অগ্রহায়ণ মাসে। ফলের রং প্রথমে লাল থাকলেও পরে হয় বেগুনি ও পাকার পর কালো হয়ে যায়। ফল বেরি প্রকৃতির, বড় মটর দানার মতো, ব্যাস মাত্র ১১ মিলিমিটার, ফলের ভেতরে ৪ থেকে ৬টি বীজ থাকে। বীজ থেকে চারা হয়। তবে শাখা কেটে কলম করে ও শাখায় গুটিকলম করে এ গাছের চারা তৈরি করা যায়। বয়স্ক গাছ থেকে কলম করে তা টবে বা বাগানে লাগালে সেসব গাছে দ্রুত ফুল ফোটে। এ গাছের কিছু ঔষধি গুণ আছে। পাতা ক্ষত সারানোয় ব্যবহৃত হয়। আমাশয় সারানোয় এর ফল খাওয়া হয়। এ দেশে বুনো গাছ হলেও কেউ কেউ বাহারি গাছ হিসেবে বাগানে লাগান। ফুল ফোটা গাছ দেখতে সুন্দর। এ গাছের আদি নিবাস বাংলাদেশ, আসাম, মিয়ানমার হলেও লাওস, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া, মালয়েশিয়া, ব্রুনেই, ফিলিপাইন প্রভৃতি দেশে এ গাছ দেখা যায়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

‘মোটা জেনারেলদের’ কড়া সমালোচনা করলেন মার্কিন প্রতিরক্ষা হেগসেথ

মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ ‘মোটা জেনারেল’ এবং বৈচিত্র্য আনার উদ্যোগের কড়া সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, এর ফলে কয়েক দশক ধরে সামরিক বাহিনীর অধঃপতন হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার কমান্ডারদের এক বিরল সমাবেশে তিনি বলেন, যাঁরা তাঁর কর্মসূচিকে সমর্থন করেন না, তাঁদের পদত্যাগ করা উচিত।

হেগসেথের সঙ্গে মার্কিন ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তাদের সমাবেশে যোগ দেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনিও ভার্জিনিয়ার কোয়ান্টিকোতে সমবেত অ্যাডমিরাল এবং জেনারেলদের উদ্দেশে ভাষণ দেন। ভাষণে তিনি মার্কিন শহরগুলোতে সেনা মোতায়েনকে ‘আমাদের সামরিক বাহিনীর জন্য প্রশিক্ষণ ক্ষেত্র’ হিসেবে ব্যবহার করার ধারণা দেন।

ফক্স নিউজের সাবেক গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব হেগসেথ এবং সাবেক রিয়েলিটি টিভি তারকা ট্রাম্পের এ মন্তব্য একটি টেলিভিশন অনুষ্ঠানের মতো মনে হয়েছে। কারণ, গত সপ্তাহে হঠাৎই এই সমাবেশের জন্য মার্কিন সামরিক বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের তলব করা হয়েছিল।

হেগসেথ অনুষ্ঠান শুরু করে বলেন, ‘নির্বোধ ও বেপরোয়া রাজনৈতিক নেতারা ভুল পথে পরিচালনা করায় আমরা পথ হারিয়ে ফেলেছি। আমরা ‘ওউক ডিপার্টমেন্ট’ (অতিমাত্রায় প্রগতিশীল বিভাগ) হয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু আর নয়।’

সারা বিশ্ব থেকে উড়ে আসা শীর্ষ কর্মকর্তায় ভরা মিলনায়তনে ভাষণ দেওয়ার সময় হেগসেথ তাঁর মাধ্যমে ফ্ল্যাগ কর্মকর্তাদের যাঁরা বরখাস্ত হয়েছেন, সেই সেটিকে সমর্থন করেন। বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তাদের মধ্যে ছিলেন একজন কৃষ্ণাঙ্গ শীর্ষ মার্কিন জেনারেল এবং নৌবাহিনীর শীর্ষ অ্যাডমিরাল, যিনি একজন নারী। তিনি বলেন, যেসব কর্মকর্তাকে তিনি অব্যাহতি দিয়েছেন, তাঁরা একটি ভেঙে পড়া সংস্কৃতির অংশ ছিলেন।

হেগসেথ পেন্টাগন যেভাবে বৈষম্যের অভিযোগ ও অন্যায়ের তদন্ত পরিচালনা করছে, তাতে ব্যাপক পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি বলেন, বর্তমান ব্যবস্থায় শীর্ষ কর্মকর্তাদের ‘ডিমের খোসার ওপর দিয়ে হাঁটার মতো’ সতর্ক থাকতে হয়।

প্রতিরক্ষামন্ত্রী হেগসেথের ডাকে সমাবেশে যোগ দেওয়া মার্কিন শীর্ষ জেনারেলরা। ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ভার্জিনিয়া

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৪০ ঘণ্টা পর এক ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার, নিখোঁজ আরেকজন
  • সিদ্ধিরগঞ্জে ৭ কেজি গাঁজাসহ মাদক কারবারি গ্রেপ্তার 
  • গরুর গোবর কুড়ানো থেকে সাত তারকা হোটেলে, জয়দীপের গল্প জানেন কি
  • শিশুর নাম রেখে ৩০ হাজার ডলার পর্যন্ত নেন তিনি
  • টর্চলাইট
  • স্বাস্থ্য খাতে আলাদা বেতনকাঠামো হোক
  • গাজীপুরে আট বছরের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে একজন গ্রেপ্তার
  • খাগড়াছড়ির ঘটনায় জাতিসংঘকে যুক্ত করে বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি
  • ডাক্তারদের হাতের লেখা ঠিক করার নির্দেশ দিলো আদালত
  • ‘মোটা জেনারেলদের’ কড়া সমালোচনা করলেন মার্কিন প্রতিরক্ষা হেগসেথ