হবিগঞ্জে চাঁদাবাজির অভিযোগে ছাত্রদল নেতাসহ দুজন সেনাবাহিনীর হাতে আটক
Published: 15th, August 2025 GMT
চাঁদাবাজির অভিযোগে হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলা ছাত্রদলের সদস্যসচিব জামিল চৌধুরীসহ দুজনকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আজ শুক্রবার ভোরে তাঁদের নিজ বাড়ি থেকে আটক করা হয়। তাঁদের কাছ থেকে চাঁদাবাজির ৯০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার দুপুরে মাধবপুর উপজেলার গাজীপুর গ্রামে স্বজনের বাড়িতে বেড়াতে আসেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার ধরমন্ডল গ্রামের অরূপ চৌধুরী (৩০) ও তাঁর স্ত্রী রাহেলা আখতার (২২)। বেড়ানো শেষে একই দিন বেলা সাড়ে তিনটার দিকে মোটরসাইকেলযোগে বাড়ি ফিরছিলেন তাঁরা। উপজেলার গাজীপুর গ্রামের সেতুর কাছে আসার পর ছাত্রদলের নেতা জামিল চৌধুরীর নেতৃত্বে পাঁচ থেকে সাতজন ব্যক্তি তাঁদের গতি রোধ করেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, জামিল চৌধুরী অরূপ চৌধুরীকে আওয়ামী লীগ পরিবারের সদস্য হিসেবে আখ্যা দিয়ে তাঁদের পুলিশে দেওয়ার ভয় দেখান। একপর্যায়ে জামিল তাঁদের কাছে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। পরে অরূপ চৌধুরী মুঠোফোন ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে দেড় লাখ টাকা দিয়ে ছাড়া পান। বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানান এলাকাবাসী।
পুলিশ সূত্র জানায়, এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মাধবপুরের শাহজীবাজার সেনা ক্যাম্পের একটি দল আজ শুক্রবার ভোরে মাধবপুর উপজেলার কালিকাপুর গ্রামে অভিযান চালিয়ে আটক করা হয় জামিল চৌধুরীকে। পরে সেনাসদস্যরা পাশের বাঘাসুরা গ্রামে অভিযান চালিয়ে জামিলের সহযোগী মোনায়েমকে (২৫) আটক করেন। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে চাঁদাবাজির ৯০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
মাধবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সহিদ উল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, সেনাসদস্যরা আটক দুজনকে আজ শুক্রবার বেলা তিনটার দিকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁরা রাস্তায় গতি রোধ করে মামলার ভয় দেখিয়ে এক দম্পতির কাছে চাঁদাবাজি করেন। পাশাপাশি তাঁদের কাছ থেকে চাঁদাবাজির ৯০ হাজার টাকাও উদ্ধার করা হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: উপজ ল র র উপজ ল ম ধবপ র সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
শাটডাউনের বিপক্ষে জনজীবন
আওয়ামী লীগের ‘শাটডাউন’ কর্মসূচির প্রথম দিনে রাজধানী ঢাকায় জনজীবনে তেমন কোনো চাপ সৃষ্টি হয়নি।
রবিবার (১৬ নভেম্বর) সকাল থেকে গুলিস্তান, ফুলবাড়িয়া, চানখারপুল, সচিবালয়, জিপিওসহ গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো ঘুরে দেখা গেছে- যান চলাচল স্বাভাবিক, মানুষের চলাচল স্বাভাবিক এবং বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ডও অন্যান্য দিনের মতোই চলছে।
আরো পড়ুন:
ঢাবি শিক্ষক এরশাদের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি ছাত্র ফ্রন্টের
ঢাবিতে কৃত্রিম বুদ্ধমত্তা-বিষয়ক জাতীয় প্রতিযোগিতা
সকাল থেকেই বিভিন্ন সড়কে রিকশা ও অটোরিকশার আধিক্য যেমন লক্ষ্য করা গেছে, বাসের জন্য অপেক্ষমাণ যাত্রীও দেখা গেছে। কোথাও যান সংকট হয়নি, বরং কিছু বাসে বাড়তি যাত্রীর চাপ ছিল।
গুলিস্তানে এক বেসরকারি অফিসকর্মী রিফাত হোসেন বলেন, “শাটডাউন বলে আজকে কিছুই বুঝলাম না। প্রতিদিন যেমন বের হই, আজও ঠিক তেমনই বের হয়েছি। রাস্তায় কোনো সমস্যা দেখিনি।”
চানখারপুলে বাসের জন্য অপেক্ষমাণ মাহমুদা আক্তার বলেন, “শাটডাউনের নামে মানুষকে ভয় দেখানো ঠিক না। বাস কম হলেও চলাচল পুরোপুরি থেমে যায়নি। আমরা স্বাভাবিকভাবেই অফিসে যাচ্ছি।”
ঠিকানা পরিবহন শ্রমিক শহীদুল ইসলাম বলেন, “শাটডাউন ডেকেছে শুনেছি, কিন্তু রাস্তায় কোনো প্রভাব নেই। পুলিশের বাড়তি অবস্থানও দেখি নাই। গাড়ি চলছে, যাত্রীও আছে।”
সচিবালয়ের কাছে একজন সরকারি চাকরিজীবী হাসিবুল করিম বলেন, “শাটডাউনের মতো কর্মসূচি কখনোই জনস্বার্থের পক্ষে নয়। এতে ব্যবসার ক্ষতি হয়, মানুষের দৈনন্দিন জীবন ব্যাহত হয়। আজকে যানচলাচল প্রতিদিনের মতোই।”
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক
নিষিদ্ধ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত সতর্ক উপস্থিতি বিশেষভাবে দেখা যায়নি। নিয়মিত দায়িত্বপালন ছাড়া আলাদা কোনো প্রস্তুতি চোখে পড়েনি।
শাটডাউনের বিপক্ষে জনমতই শক্তিশালী
সরেজমিন চিত্র, সাধারণ মানুষের বক্তব্য এবং বিভিন্ন পরিবহন সংশ্লিষ্টদের প্রতিক্রিয়া থেকে স্পষ্ট- রাজধানীবাসী শাটডাউনের পক্ষে নয়। বরং জনজীবন স্বাভাবিক রাখার পক্ষেই তাদের মত।
রাজধানীর ৩৩নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা জসিম উদ্দীন বলেন, ব্যস্ত সকাল, মানুষের স্বাভাবিক আনাগোনা এবং চলমান পরিবহন কার্যক্রম প্রমাণ করেছে- শাটডাউন ঢাকার জনজীবনে চাপ সৃষ্টি করতে পারেনি বরং জনগণ নিষেধাজ্ঞামূলক রাজনীতির বিরুদ্ধে স্বতঃস্ফূর্ত অবস্থানই দেখিয়েছে।
ঢাকা/আসাদ/ফিরোজ