পেহেলগামকাণ্ডের বাহানায় তাহলে মোদি সরকার জম্মু–কাশ্মীরের রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দিচ্ছে না
Published: 16th, August 2025 GMT
ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সশস্ত্র গোষ্ঠীর হানা কি তাহলে জম্মু–কাশ্মীরের পূর্ণাঙ্গ রাজ্যের মর্যাদা প্রাপ্তির পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে চলেছে? জম্মু–কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ নিজেই এ প্রশ্ন তুলেছেন। স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে এ প্রশ্ন তুলে তিনি জানতে চেয়েছেন, জম্মু–কাশ্মীর পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা ফিরে পাবে কি না, তা পাকিস্তান বা পেহেলগামের জঙ্গিরা ঠিক করে দেবে কি না।
রাজ্যের মর্যাদার কোনো ঘোষণা গতকাল শুক্রবার লালকেল্লা থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি না করায় মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ হতাশা প্রকাশ করে বলেন, ‘সারা দিন ধরে ভেবেছিলাম, লালকেল্লা থেকে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা শোনা যাবে। অথচ তা হলো না। এর মধ্যে সুপ্রিম কোর্ট মন্তব্য করেছেন, ওই সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগে পেহেলগামকাণ্ড বিবেচনা করা উচিত। এর অর্থ কি রাজ্যের হৃত মর্যাদা ফেরানোর সিদ্ধান্ত পাকিস্তান বা পেহেলগামের জঙ্গিরা নেবে?
ওমর বলেন, জম্মু–কাশ্মীরে যে দ্বৈত সরকারব্যবস্থা বিদ্যমান, তাতে সাফল্য নয়, ব্যর্থতারই প্রতিফলন ঘটে চলেছে।
সুপ্রিম কোর্টে জম্মু–কাশ্মীরের রাজ্যের মর্যাদা ফেরানোর দাবিতে করা মামলার শুনানি ছিল গত বৃহস্পতিবার। শুনানির সময় প্রধান বিচারপতি বি আর গাভাই ও বিচারপতি কে বিনোদ চন্দ্রণের ডিভিশন বেঞ্চ পেহেলগাম পরিস্থিতি বিবেচনায় থাকা দরকারসংক্রান্ত মন্তব্য করেন। কেন্দ্রীয় সরকারকে এই বিষয়ে বক্তব্য জানানোর জন্য আট সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ কাশ্মীরের বক্সি স্টেডিয়ামে স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে এই খেদোক্তি করে বলেন, এত দিনের অনুরোধ–উপরোধে কোনো কাজ হয়নি। রাজ্যের মর্যাদা ফেরত আসেনি। এবার ওই দাবিতে রাজ্যের মানুষের সই সংগ্রহ অভিযান শুরু করা হবে।
প্রধান বিচারপতির মন্তব্য ‘দুর্ভাগ্যজনক’ ও ‘অন্যায্য’ জানিয়ে ওমর তাঁর ভাষণে বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টে পরবর্তী শুনানি আট সপ্তাহ পর। এই দুই মাস আমি ও আমরা বসে থাকব না। এই সময়ের মধ্যে জম্মু–কাশ্মীরের ২০ জেলার ৯০ বিধানসভা কেন্দ্রের প্রতিটি ঘরে আমরা যাব। পূর্ণাঙ্গ রাজ্যের মর্যাদা ফেরত পাওয়ার দাবিতে জনগণের সই সংগ্রহ করব।’
ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ। ১৫ আগস্ট, শ্রীনগর.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ওমর আবদ ল ল হ ম খ যমন ত র
এছাড়াও পড়ুন:
পুতিনের জন্য কেন হাঁটু গেড়ে লালগালিচা বিছালেন মার্কিন সেনারা, কী বলছেন ইউক্রেনের মানুষ
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে বিশাল আয়োজন করে সাড়ম্বরে স্বাগত জানালেন। অন্য কোনো বিশ্বনেতাকে এমনভাবে অভ্যর্থনা জানাননি ট্রাম্প। ২০১৮ সালের পর এই প্রথম তাঁরা মুখোমুখি বৈঠক করলেন। আর শুরু থেকেই দুজনের মধ্যে উষ্ণ সম্পর্কের প্রকাশ দেখা গেছে।
নিজেকে ‘চুক্তির কারিগর’ বলতে পছন্দ করেন ট্রাম্প। আলাস্কার এক বিমানঘাঁটিতে তিনি পুতিনের জন্য লালগালিচা বিছিয়ে দিলেন। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে হামলার নির্দেশ দেওয়ার পর গতকাল শুক্রবারই প্রথম পশ্চিমা মাটিতে পা রাখলেন পুতিন।
ট্রাম্প বিমানঘাঁটির টারম্যাকে ধৈর্য ধরে দাঁড়িয়ে তাঁর ‘বন্ধু’ পুতিনের অপেক্ষা করলেন। পুতিন এগিয়ে আসতেই ট্রাম্প হাততালি দিতে থাকলেন। এরপর উষ্ণ করমর্দন ও হাসিমুখে একে অপরকে স্বাগত জানালেন।
তবে যে দেশের মানুষ ট্রাম্পের কাছ থেকে শান্তির আশা করছিলেন, সেই ইউক্রেন থেকে ট্রাম্প–পুতিনের বৈঠকের একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে। ছবিতে দেখা যায়, পুতিনের প্রেসিডেনশিয়াল বিমান থেকে নামার সিঁড়ির নিচে মার্কিন সেনারা হাঁটু গেড়ে বসে লালগালিচা ঠিক করছেন।
ইউক্রেনের অবকাঠামো উন্নয়ন সংস্থার সাবেক প্রধান মুস্তাফা নায়েম ছবিটি শেয়ার করে ব্যঙ্গ করে লিখলেন—‘মেক নিইলিং গ্রেট অ্যাগেইন’ (হাঁটু গেড়ে বসাকে আবার মহৎ করো)।
ট্রাম্প-পুতিন বৈঠক
ট্রাম্প–পুতিনের এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক থেকে ইউক্রেন ইস্যুতে কোনো বড় অগ্রগতি হয়নি। তবে তাঁরা কিছু বিষয়ে একমত হয়েছেন এবং পুরোনো বন্ধুত্ব আবারও ঝালিয়ে নিয়েছেন। কিন্তু যুদ্ধবিরতি নিয়ে কোনো ঘোষণা আসেনি।
তিন ঘণ্টা শীর্ষ উপদেষ্টাদের সঙ্গে আলোচনার পর ট্রাম্প ও পুতিন শুধু উষ্ণ মন্তব্য করলেন। কিন্তু সাংবাদিকদের কোনো প্রশ্ন নিলেন না। মার্কিন প্রেসিডেন্ট যিনি কিনা মিডিয়া পছন্দ করেন, তাঁর ক্ষেত্রে এটি বিরল ঘটনা।
ট্রাম্প বলেন, ‘আমাদের বৈঠক অত্যন্ত ফলপ্রসূ ছিল, অনেক বিষয়ে আমরা একমত হয়েছি।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, ‘খুব অল্প কিছু বিষয় রয়ে গেছে, যার মধ্যে একটি রয়েছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তবে এখনই সে বিষয়ে বিস্তারিত বলব না।’
ট্রাম্প পরে ফক্স নিউজকে বলেন, এখন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির দায়িত্ব। তাঁকে এই আলাস্কা বৈঠককে কাজে লাগিয়ে রাশিয়ার তিন বছরের আক্রমণ শেষ করার মতো কোনো চুক্তিতে পৌঁছাতে হবে।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের ভাষায়, ‘এখন এটা প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির দায়িত্ব। ইউরোপীয় দেশগুলোকেও কিছুটা ভূমিকা রাখতে হবে। তবে মূলত জেলেনস্কির হাতেই বিষয়টা।’
ট্রাম্প ফক্স নিউজকে বলেন, ‘আমি এই বৈঠককে দশের মধ্যে দশ দিয়েই মূল্যায়ন করব।’