গত এশিয়া কাপে বাবর আজম ছিলেন পাকিস্তান অধিনায়ক। তাঁর সর্বশেষ আন্তর্জাতিক সেঞ্চুরিও সেই এশিয়া কাপে। ২০২৩ সালের ৩০ আগস্ট এশিয়া কাপে নেপালের বিপক্ষে ১৫১ রানের ইনিংস খেলেছিলেন বাবর। এবার গল্প ভিন্ন। টি-টোয়েন্টি সংস্করণের এবারের এশিয়া কাপের পাকিস্তান দলে বাবরকে রাখাই হয়নি।

বাবর সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও পাকিস্তানের অধিনায়ক ছিলেন। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে পাকিস্তানের হয়ে সবচেয়ে বেশি রান বাবরের। প্রায় ৪০ গড়ে রান করেছেন ৪২২৩। ৩৬টি ফিফটির সঙ্গে আছে ৩টি সেঞ্চুরিও।

আরও পড়ুন২৯ বলে ১০ ছক্কায় রেকর্ড গড়লেন কক্স২ ঘণ্টা আগে

তবে স্ট্রাইক রেট নিয়ে দীর্ঘদিন সমালোচনার মুখে ছিলেন তিনি। দলের জন্য নয়, বাবর নিজের জন্য খেলেন—এমন প্রশ্নের মুখেই একপর্যায়ে দল থেকে বাদ পড়েন পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক।

গত বছরের ডিসেম্বরে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের পর থেকে এই সংস্করণের দলে সুযোগ পাচ্ছেন না পাকিস্তানের সাবেক এই অধিনায়ক। এরপর পাকিস্তান তাঁকে ছাড়াই খেলেছে চারটি টি-টোয়েন্টি সিরিজ।

এর মধ্যে জিতেছে দুটিতে, যার একটি ঘরের মাঠে বাংলাদেশের বিপক্ষে, অন্যটি সর্বশেষ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। বাংলাদেশের মাটিতে লিটন দাসের দলের বিপক্ষে একটি সিরিজে হেরেছেও পাকিস্তান, অন্য হারটি নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে।

তবে তাঁকে ছাড়া এই প্রথমবার বড় টুর্নামেন্ট খেলবে পাকিস্তান। এশিয়া কাপ বলেই অনেকেই ভেবেছিলেন বাবরকে স্কোয়াডে রাখতে পারে পাকিস্তান। তবে আজ ঘোষিত দলে তেমন কিছু হয়নি। এর একটা ব্যাখ্যাও দিয়েছেন কোচ মাইক হেসন। তিনি আসলে বাবরকে আরও উন্নতি করার চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন।

ছন্দে নেই বাবর।.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

সিলেটে টাস্কফোর্সের অভিযানে আরও ৩৯ হাজার ঘনফুট পাথর উদ্ধার, আটক ২

সিলেটে টাস্কফোর্সের অভিযানে প্রায় ৩৯ হাজার ঘনফুট পাথর উদ্ধার করা হয়েছে। আজ রোববার সকাল থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত সিলেট সদর, কোম্পানীগঞ্জ ও গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলংয়ে অভিযান চালিয়ে এসব পাথর উদ্ধার করা হয়। এ সময় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুজনকে আটক করা হয়েছে।

সাদাপাথর পর্যটনকেন্দ্রসহ সিলেটের বিভিন্ন এলাকা থেকে অবৈধভাবে লুট হওয়া পাথর উদ্ধারে গত বুধবার রাত থেকে জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযানে নামে টাস্কফোর্স ও যৌথ বাহিনী। এরই অংশ হিসেবে আজ পঞ্চম দিনের মতো সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত অভিযান চালানো হয়।

অভিযানসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, আজ সকালে সদর উপজেলার ধোপাগুল–সংলগ্ন সালুটিকর ভাটা এলাকায় সিলেটের জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার (রাজস্ব, জেলা ব্র্যান্ডিং ও পর্যটন সেল) মাহমুদ আশিক কবিরের নেতৃত্বে অভিযান চালানো হয়। এতে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র‌্যাবের সদস্যরা ছিলেন। অভিযানে পাথর ভাঙার কারখানার (স্টোন ক্রাশার মিল) আঙিনায় মাটিচাপা দেওয়া পাথরের সন্ধান পাওয়া যায়। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে দুজনকে আটক করা হয়।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খোশনূর রুবাইয়াৎ বলেন, উদ্ধার হওয়া পাথরগুলোর মধ্যে ৯টি ট্রাকে প্রায় সাড়ে চার হাজার ঘনফুট পাথর ভোলাগঞ্জের ১০ নম্বর ঘাটে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আটক দুজনকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দায়েরের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া কোম্পানীগঞ্জের কলাবাড়ি ও কালীবাড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রায় ২৫ হাজার ঘনফুট সাদাপাথর জব্দ করা হয়েছে। অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া জেলা প্রশাসনের জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার (ভূমি অধিগ্রহণ শাখা, জেনারেল সার্টিফিকেট শাখা) তমালিকা পাল বলেন, উদ্ধার হওয়া পাথরের মধ্যে প্রায় পাঁচ হাজার ঘনফুট পাথর সাদাপাথর পর্যটনকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বাকি ২০ হাজার ঘনফুট পাথর কালীবাড়ি এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জিম্মায় আছে। সেগুলোও সাদাপাথর পর্যটনকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হবে।

এদিকে গোয়াইনঘাটের জুমপার এলাকায় অভিযান চালিয়ে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত প্রায় তিন হাজার ঘনফুট পাথর উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রতন কুমার অধিকারী। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, উদ্ধার হওয়া পাথরের মধ্যে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত প্রায় ১ হাজার ৫০০ ঘনফুট পাথর জাফলং জিরো পয়েন্ট এলাকায় প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। পাথর উদ্ধারের পাশাপাশি নদী থেকে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন করা ৫০টি নৌকা আটক করে ধ্বংস করা হয়েছে।

সারা দেশে ৫১টি কোয়ারি (পাথর ও বালু উত্তোলনের নির্দিষ্ট স্থান) আছে। এর মধ্যে সিলেটের কানাইঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট ও জৈন্তাপুরে আছে আটটি পাথর কোয়ারি। এর বাইরে সিলেটে সাদাপাথর, জাফলং, বিছনাকান্দি, উৎমাছড়াসহ আরও ১০টি জায়গায় পাথর আছে। এসব জায়গা পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। সীমান্তের ওপারে ভারতের পাহাড়ি নদী থেকে এসব পাথর আসে। ২০২০ সালের আগে সংরক্ষিত এলাকা বাদে সিলেটের আটটি কোয়ারি ইজারা দিয়ে পাথর উত্তোলনের সুযোগ দেওয়া হতো। তবে পরিবেশ ও প্রতিবেশের ক্ষতির কারণে ২০২০ সালের পর আর পাথর কোয়ারি ইজারা দেওয়া হয়নি।

সিলেটের ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক দলের নেতারা সব সময় পাথর উত্তোলনের পক্ষে জোরালো অবস্থান নেন। বিগত পাঁচ বছরে তাঁরা নানাভাবে কোয়ারি ইজারা আবার চালুর চেষ্টা করেছেন, কিন্তু সরকার অনুমতি দেয়নি। এ অবস্থায় রাতের বেলা আড়ালে–আবডালে মানুষ অবৈধভাবে পাথর তুলতেন। গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর টানা এক বছর দেদার পাথর লুটপাট চলে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ