সাবেক আইজিপিসহ ১২৩ জন দুদকের নজরদারিতে
Published: 17th, August 2025 GMT
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ লিখে আর্থিক ও প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা নেওয়ার অভিযোগে সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) জাবেদ পাটোয়ারীসহ ১২৩ জনের বিরুদ্ধে গোয়েন্দা নজরদারি চলছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের গোয়েন্দা প্রতিবেদনের ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
রবিবার (১৭ আগস্ট) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির মহাপরিচালক মো.
তিনি বলেন, “অসমাপ্ত আত্মজীবনী নিয়ে সম্প্রতি গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের বিষয়টি দুদকের নজরে এসেছে। এরই মধ্যে এ বিষয়ে অভিযোগের প্রেক্ষিতে গোয়েন্দা কার্যক্রম চলছে। গোয়েন্দা প্রতিবেদনের ভিত্তিতেই পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
২০১২ সালে ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ প্রকাশের পর বইটি নিয়ে দেশে-বিদেশে ব্যাপক আলোচনা হয়। ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দাবি করেছিলেন, বঙ্গবন্ধুর লেখা চারটি খাতা সম্পাদনা ও সংশোধনের মাধ্যমে বইটি প্রকাশ করা হয়েছে। তবে সম্প্রতি একটি গণমাধ্যমের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে বলা হয়, বাস্তবে বইটি রচনা করেছিলেন তৎকালীন আইজিপি জাবেদ পাটোয়ারী ও তার নেতৃত্বাধীন ১২৩ সদস্যের একটি বিশেষ দল। এর বিনিময়ে তারা সরকারি পদ, নগদ অর্থ ও ফ্ল্যাট পান।
এই সংবাদ প্রকাশের পর বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হলে দুদক বিষয়টি আমলে নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে গোয়েন্দা নজরদারি শুরু করে।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
গাজার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হতে চান ট্রাম্প
প্রায় দুই বছর ধরে চলা গাজা যুদ্ধের অবসান ঘটাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০ দফা শান্তি প্রস্তাব প্রকাশ করেছেন। প্রস্তাবে তিনি যুদ্ধ-পরবর্তী গাজার অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসনের নেতৃত্ব দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম পলিটিকোর খবর অনুসারে, সোমবার হোয়াইট হাউজে বৈঠক শেষে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ট্রাম্পের এই প্রস্তাবে সমর্থন জানিয়েছেন। গাজার শাসকগোষ্ঠী হামাস এখনও প্রস্তাবটি গ্রহণ বা প্রত্যাখান করেনি।
আরো পড়ুন:
গাজায় নতুন শান্তি পরিকল্পনায় একমত ট্রাম্প ও নেতানিয়াহু
গাজায় নিহতের সংখ্যা ৬৬ হাজার ছাড়াল
নতুন পরিকল্পনার অধীনে, যুদ্ধ-পরবর্তী গাজা একটি ক্রান্তিকালীন ‘টেকনোক্র্যাটিক, অরাজনৈতিক ফিলিস্তিনি কমিটি’ দ্বারা পরিচালিত হবে যা ‘যোগ্য ফিলিস্তিনি ও আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের’ সমন্বয়ে গঠিত হবে। ওই কমিটির প্রধান হিসেবে থাকবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
সোমবার বিকেলে হোয়াইট হাউজে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, “আরব বিশ্ব এবং ইসরায়েলের নেতারা এবং সংশ্লিষ্ট সকলেই আমাকে এটি করতে বলেছিলেন, তাই এটির নেতৃত্বে থাকবেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড জে. ট্রাম্প নামে পরিচিত একজন ভদ্রলোক।”
ট্রাম্প আরো বলেন, “আমি এটাই চাই। এটি করার জন্য আমাকে অতিরিক্ত কাজ করতে হবে, তবে এটি এত গুরুত্বপূর্ণ যে আমি তা করতে ইচ্ছুক।”
এদিকে, ট্রাম্পের এই নতুন ২০ দফা পরিকল্পনার সবগুলো প্রস্তাবের সঙ্গে হামাস সম্মত হবে কিনা, তা এখনো নিশ্চিত নয়।
ট্রাম্প সতর্ক করে বলেছেন, হামাস যদি এই পরিকল্পনায় সম্মত না হয় তাহলে হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের যেকোনো পদক্ষেপে যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ণ সমর্থন থাকবে।
নেতানিয়াহু হমকি দিয়ে বলেছেন, যদি হামাস এই প্রস্তাবটি প্রত্যাখ্যান করে অথবা গ্রহণ করে পরে পিছু হটে তাহলে ইসরায়েল একাই কাজটা শেষ করে দেবে।
এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে ট্রাম্প গাজা দখল করার হুমকি দিয়েছিলেন। নেতানিয়াহুকে তিনি বলেছিলেন, গাজার মালিক হবে যুক্তরাষ্ট্র। বোমাবর্ষণে বিধ্বস্ত গাজা উপত্যকাকে ‘রিভিয়েরা’ হিসেবে পুনর্গঠিত করা যেতে পারে বলে তিনি পরামর্শ দিয়েছিলেন।
যুদ্ধ-পরবর্তী গাজার শাসন ব্যবস্থা নিয়ে বিস্তারিত প্রকাশ করা হয়নি। পরিচালনা কমিটিতে কারা থাকবেন, সে সম্পর্কে হোয়াইট হাউজের একজন মুখপাত্র বোর্ডে অতিরিক্ত তথ্য প্রদান করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।
তবে এখন পর্যন্ত যা জানা গেছে তা হলো-
* আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে নিয়ে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হবে, যার নাম হবে ‘দ্য বোর্ড অব পিস’ বা শান্তি প্রশাসন।
* ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন এই অন্তর্বর্তী সরকারে অন্য বৈশ্বিক নেতারাও থাকবেন। এখন পর্যন্ত ট্রাম্প এই পর্ষদে সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারের নাম থাকার কথা উল্লেখ করেছেন।
* নতুন প্রশাসন গাজার পুনর্নির্মাণের জন্য কাঠামো নির্ধারণ করবে এবং তহবিল পরিচালনা করবে।
* ট্রাম্প জানান, তার প্রশাসন বিশ্বব্যাংক ও অন্যান্যদের সঙ্গে কাজ করবে নতুন ফিলিস্তিনি সরকারকে নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য।
* ট্রাম্প বলেন, হামাস এবং অন্যান্য মার্কিন-ঘোষিত সন্ত্রাসী গোষ্ঠী বোর্ডে বা গাজার শাসনে কোনো ভূমিকা পালন করবে না।
নেতানিয়াহুর বোর্ডে কোনো ভূমিকা থাকবে কিনা তা স্পষ্ট নয়। তবে ইসরায়েলি নেতা সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন যে, পরিকল্পনাটি ‘সামনের বছরগুলোতে গাজার জন্য একটি বাস্তবসম্মত পথ খুলে দেবে যেখানে গাজা হামাস বা ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ দ্বারা পরিচালিত হবে না বরং ইসরায়েলের সঙ্গে প্রকৃত শান্তির জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ব্যক্তিদের দ্বারা পরিচালিত হবে’।
ঢাকা/ফিরোজ