আইন উপদেষ্টার বক্তব্যে বেসরকারি হাসপাতাল মালিকদের প্রতিবাদ, ব্যাখ্যা দিলেন উপদেষ্টা
Published: 17th, August 2025 GMT
চিকিৎসকদের নিয়ে করা আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে বাংলাদেশ প্রাইভেট হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএইচসিডিওএ)। একই সঙ্গে ওই বক্তব্য পুনর্বিবেচনা ও ব্যাখ্যা করার অনুরোধ জানিয়েছে সংগঠনটি।
আজ রোববার এক বিবৃতিতে এ প্রতিবাদ জানানো হয়।
বিপিএইচসিডিওএর সভাপতি মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বিশ্বাস ও সাধারণ সম্পাদক এ এম শামীম স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গতকাল শনিবার রাজধানীর শহীদ আবু সাঈদ আন্তর্জাতিক কনভেনশন হলে বিপিএইচসিডিওএর নতুন কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠানে অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল চিকিৎসকদের নিয়ে আপত্তিকর ও অপমানজনক মন্তব্য করেন। তাঁর বক্তব্যে বিপিএইচসিডিওএ গভীর হতাশা প্রকাশ করছে ও তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, দেশের প্রাইভেট হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার এবং সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকেরা নিরলসভাবে চিকিৎসাসেবা দিয়ে আসছেন। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চিকিৎসকেরা কোভিড-১৯ ও ডেঙ্গুর মতো মহামারিতে মানুষের সেবা নিশ্চিত করেছেন। এ অবস্থায় আইন উপদেষ্টার এমন মন্তব্য চিকিৎসকদের সততা, নিষ্ঠা ও আত্মত্যাগকে হেয় করেছে এবং স্বাস্থ্যসেবার প্রতি জনসাধারণের আস্থাকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
জুলাই অভ্যুত্থানে চিকিৎসকদের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত স্বৈরাচারী সরকারের অত্যাচার-নির্যাতন ও রক্তচক্ষু উপক্ষো করে জুলাই-২৪ অভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসাসেবায় এ দেশের চিকিৎসকেরা আত্মনিয়োগ করেছেন। জীবনের নিরাপত্তাঝুঁকি ও জীবননাশের ভয় থাকার পরও ছাত্র–জনতার পাশে দাঁড়িয়েছেন। এমন আত্মত্যাগী চিকিৎসকদের সম্পর্কে আইন উপদেষ্টার বক্তব্য অত্যন্ত আপত্তিকর ও নিন্দনীয়।
বক্তব্যের প্রতিবাদে ওজিএসবির আলটিমেটামআইন উপদেষ্টার দেওয়া ওই বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছে অবস্ট্রেটিক্যাল অ্যান্ড গাইনোকোলজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশ (ওজিএসবি)। সংগঠনটি উপদেষ্টাকে অবিলম্বে বক্তব্য প্রত্যাহার ও চিকিৎসকদের কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানিয়েছে। অন্যথায় প্রতীকী প্রতিবাদ হিসেবে ১৮ আগস্ট এক দিনের জন্য প্রাইভেট চেম্বার বন্ধ রাখার ঘোষণাও দিয়েছে সংগঠনটি। রোববার এক বিবৃতিতে সংগঠনটির সভাপতি অধ্যাপক ফিরোজা বেগম ও সদস্যসচিব ডা.
এদিকে আজ রোববার সন্ধ্যায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে চিকিৎসকদের নিয়ে দেওয়া বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়েছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। যা হুবহু তুলে ধরা হলো—
আসিফ নজরুল বলেন, ‘গতকাল একটি অনুষ্ঠানে ডাক্তারদের সম্পর্কে আমি কিছু কথা বলেছিলাম। প্রথমে রোগী হিসেবে আমার ভালো অভিজ্ঞতার কথা বলেছি। তারপর অন্যদের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে জানা কিছু সমালোচনার কথাও বলেছি। সেখানে আমি বলেছি, এই সমালোচনাগুলো সব ডাক্তারদের জন্য প্রযোজ্য না। বলেছি, অনেক ডাক্তার আছেন ভালো, কিন্তু অন্য অনেকের বিরুদ্ধে অভিযোগও আছে। কিছু অভিযোগ স্টেটমেন্ট আকারে বলেছি, কিছু প্রশ্ন আকারে। পত্রপত্রিকা যখন এগুলো ছাপিয়েছে, তখন আমার সম্পূর্ণ বক্তব্য তুলে ধরেনি। ফলে কারও কাছে মনে হতে পারে যে রোগীর কথা মন দিয়ে না শোনা, বেশি টেস্ট করতে দেওয়া বা ওষুধ কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ—আমি এসব অভিযোগ ঢালাওভাবে সব ডাক্তারদের সম্পর্কে করেছি। কিন্তু এটি ঠিক নয়। আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে জানাচ্ছি, আমার এসব অভিযোগ একশ্রেণির ডাক্তারদের বিরুদ্ধে, সব ডাক্তারদের বিরুদ্ধে না।
আমার বক্তব্য যেভাবে কিছু পত্রিকায় ছাপানো হয়েছে, মনে হতে পারে অভিযোগগুলো সবার উদ্দেশে করা। প্রচণ্ড ত্যাগ, সততা আর দক্ষতা নিয়ে এ দেশের যে বিপুলসংখ্যক ডাক্তার রোগীদের সেবা করেন, তাঁদের কাছে এটি গভীর মনোবেদনার কারণ হতে পারে। এমন ডাক্তার ভাইবোনদের কাছে আমি দুঃখ প্রকাশ করছি। তবে কিছু ডাক্তারের (তাঁরা সংখ্যায় কম হতে পারেন) ক্ষেত্রে এসব অভিযোগ সত্যি কি না, তা বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার অনুরোধও আপনাদের কাছে করে গেলাম।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আইন উপদ ষ ট র ব প এইচস ড চ ক ৎসকদ র স গঠনট
এছাড়াও পড়ুন:
সিদ্ধিরগঞ্জের নতুন বাজারে গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো মাদক সেবীদের আস্তানা
মাদকের করাল গ্রাস থেকে যুব সমাজকে রক্ষায় এবার সরাসরি মাঠে নামল সিদ্ধিরগঞ্জের নতুন বাজার সামাজিক সংগঠন।
শনিবার (১৫ নভেম্বর) সকালে ১১টায় সংগঠনটি এক ব্যতিক্রমী মাদকবিরোধী কার্যক্রমের অংশ হিসেবে আদমজীনগর সোনামিয়া বাজা’র এলাকায় মাদক ব্যবসায়ী ও সেবীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয়।
সংগঠনের সদস্যরা নতুন বাজার এলাকার মাদক সেবীদের আস্তানায় মহড়া দেন এবং যেখানে বসে মাদক সেবন করা হয়, সেই স্থানগুলো ভেঙে গুঁড়িয়ে দেন। পরবর্তীতে তারা আশেপাশের স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রতি মাদকের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার জন্য জোর আহ্বান জানান।
এ সময় সংগঠনটির সভাপতি ইসমাইল হোসেন বলেন, আজ আমাদের সমাজে মাদক রন্ধ্রে রন্ধ্রে সয়লাব। দিন দিন যুবসমাজের মধ্যে এ প্রবণতা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা আমাদের ভবিষ্যতকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিচ্ছে।
মাদক শুধু একটি পরিবার নয়, একটি সমাজকেও শেষ করে দেয়। আমাদের এই অভিযান মাদকমুক্ত সমাজ গড়ার প্রথম পদক্ষেপ। নতুন বাজার সামাজিক সংগঠন কোনোমতেই এই এলাকায় মাদক সেবন বা ব্যবসা চলতে দেবে না।
সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে মাদকের বিরুদ্ধে একজোট হয়ে দাঁড়াতে হবে। আমরা স্থানীয় প্রশাসন ও জনগণের সহযোগিতা কামনা করি।
এসময় মাদকবিরোধী এই অভিযানে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের, উপদেষ্টা মোঃ সেলিম, আবুল হাশেম মন্টু, মাইন উদ্দিন আহমেদ, সংগঠনের সভাপতি ইসমাইল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মোঃ সোহেল হোসেন মুসা, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ আব্দুল আহাদ, সদস্য মোঃ আজিমসহ সংগঠনের অন্যান্য সদস্যরা।
সংগঠনের সদস্যরা দৃঢ়তার সাথে জানান, মাদকের এই ভয়াবহতা রোধে তাদের কার্যক্রম ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।