মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম বীর সেনানায়ক, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) সাবেক চেয়ারম্যান এবং লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন (বীর উত্তম) ৫ আগস্ট চট্টগ্রাম সিএমএইচে মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তির দিনে অনেকটাই নিভৃতে চলে গেলেন একজন ‘নিভৃত নায়ক’ জিয়াউদ্দিন। এর সঙ্গে শেষ হলো একজন অসমসাহসী সেনা কর্মকর্তার জীবন, যাঁকে ঘিরে ছিল মুক্তিযুদ্ধের বীরত্ব, সেনাজীবনের কিংবদন্তি, সততা-সাহসিকতা-আত্মমর্যাদা-আপসহীনতার উদাহরণ, বিপ্লবের রোমান্টিকতা, রহস্যময়তা ও কিছু বিতর্ক।

কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার হারবাং ইউনিয়নের মধ্যম পহরচাঁদা গ্রামে ১৯৩৯ সালের ২২ নভেম্বর জন্মগ্রহণ করেন জিয়াউদ্দিন। ১৯৬২ সালের ২২ জুলাই তিনি পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমির (পিএমএ) ২৫তম পিএমএ লং কোর্সের সঙ্গে কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়ে ১ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে কমিশন লাভ করেন।

১৯৬৫ সালের পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধে ১ ইস্ট বেঙ্গল (খেমকরন সেক্টরে) অসীম সাহসিকতার সঙ্গে যুদ্ধ করেন। জিয়াউদ্দিন ব্যাটালিয়নের অ্যাডজুট্যান্ট হিসেবে তখন অসাধারণ ভূমিকা পালন করেন। জিয়াউদ্দিন পরবর্তী সময়ে (১৯৬৭-৬৯) পিএমএর প্রশিক্ষক বা ‘প্লাটুন কমান্ডার’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন, যা ছিল বাঙালি অফিসারদের মধ্যে বিরল কৃতিত্ব। উল্লেখ্য, এই সময় মেজর জিয়াউর রহমানও (পরে লেফটেন্যান্ট জেনারেল, বীর উত্তম, সেনাপ্রধান ও প্রেসিডেন্ট) সগৌরবে পিএমএতে প্রশিক্ষক বা প্লাটুন কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ১৯৭০ সালে মেজর হিসেবে জিয়াউদ্দিন রাওয়ালপিন্ডির সেনাবাহিনীর জেনারেল হেডকোয়ার্টারের ‘মিলিটারি সেক্রেটারিয়েট’ শাখায় কর্মরত ছিলেন।

জেনারেল এম এ জি ওসমানী স্নেহভরে জিয়াউদ্দিনকে ‘দালাই লামা’ বলে ডাকতেন। এভাবে জিয়াউদ্দিন তাঁর পেশাগত দক্ষতা, জ্ঞান, ব্যক্তিত্ব, ক্যারিশমা ও সাহসের ফলে অল্প বয়সেই পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে একজন আলোচিত সামরিক কর্মকর্তায় পরিণত হয়েছিলেন। তাঁকে ঘিরে সেই সময় পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কিছু লিজেন্ড, মিথও প্রচলিত ছিল।

মুক্তিযুদ্ধের খবর শুনে জিয়াউদ্দিন যুদ্ধে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। ১৯৭১ সালের ২৬ জুলাই মেজর আবু তাহের (পরবর্তী সময়ে লেফটেন্যান্ট কর্নেল), মেজর মোহাম্মদ আবুল মঞ্জুর (পরে মেজর জেনারেল) ও ক্যাপ্টেন বজলুল গনি পাটোয়ারীর (পরে কর্নেল) সঙ্গে গোপনে পাকিস্তান থেকে পালিয়ে শিয়ালকোট হয়ে ভারতে প্রবেশ করেন জিয়াউদ্দিন। এ যাত্রা ছিল যেমন ঝুঁকিপূর্ণ, তেমনি রোমাঞ্চকর।

লাখো প্রাণের বিনিময়ে স্বাধীনতা লাভের পর বাংলাদেশে সে এক অদ্ভুত ও অস্থির সময়। একদিকে নতুন দেশ গড়ার অযুত স্বপ্ন, অন্যদিকে ভারতীয় আধিপত্যের মেঘ, নৈরাজ্য, রক্ষী বাহিনী গঠন, শাসক দলের অনৈতিক কর্মকাণ্ড, হতাশা ও স্বপ্নভঙ্গের হাহাকার.

..। সমাজের এই অস্থিরতা, নৈরাজ্য ও হতাশা জিয়াউদ্দিনকেও স্পর্শ করেছিল।

এরপর তৎকালীন লেফটেন্যান্ট কর্নেল জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন জেড ফোর্সের অধীন থাকা প্রথম ইস্ট বেঙ্গলের অধিনায়কের দায়িত্ব দেওয়া হয় জিয়াউদ্দিনকে। কামালপুরের দ্বিতীয় পর্বের যুদ্ধ, শ্রীমঙ্গলের কেজুরিছড়া ঘাঁটি, ফুলতলা ঘাঁটি, ধলই বিওপি, আটগ্রাম, কানাইঘাট এবং শেষে সিলেটের এমসি কলেজের কাছে পাকিস্তানি বাহিনীকে ধরাশায়ী করে সিলেটের উপকণ্ঠে পৌঁছান। তাঁর এই বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য তাঁকে ‘বীর উত্তম’ খেতাবে ভূষিত করা হয়। উল্লেখ্য, ১ ইস্ট বেঙ্গলের সাহসী সৈনিক ‘বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান’ ধলই বিওপির যুদ্ধে শহীদ হন।

স্বাধীনতার পর ১ ইস্ট বেঙ্গল সিলেট থেকে ঢাকা সেনানিবাসে চলে আসে। কিছুদিন পর জিয়াউদ্দিন লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদে উন্নীত হন এবং ১৯৭২ সালের এপ্রিলে ঢাকা সেনানিবাসের ৪৬ স্বতন্ত্র পদাতিক ব্রিগেডের অধিনায়ক (এপ্রিল-সেপ্টেম্বর) নিয়োজিত হন। মার্চ মাসে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী বাংলাদেশ সফরে এলে জিয়াউদ্দিন তাঁকে ‘গার্ড অব অনার’ দিয়েছিলেন। ব্রিগেডের অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে তিনি বিমানবাহিনীর একদল উচ্ছৃঙ্খল সেনার বিদ্রোহ দমন করেন এবং যুদ্ধোত্তর সেনাবাহিনীর অফিসারদের প্রশিক্ষণে গঠিত অস্থায়ী ‘ব্যাটেল স্কুল’ পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন।

লাখো প্রাণের বিনিময়ে স্বাধীনতা লাভের পর বাংলাদেশে সে এক অদ্ভুত ও অস্থির সময়। একদিকে নতুন দেশ গড়ার অযুত স্বপ্ন, অন্যদিকে ভারতীয় আধিপত্যের মেঘ, নৈরাজ্য, রক্ষী বাহিনী গঠন, শাসক দলের অনৈতিক কর্মকাণ্ড, হতাশা ও স্বপ্নভঙ্গের হাহাকার...। সমাজের এই অস্থিরতা, নৈরাজ্য ও হতাশা জিয়াউদ্দিনকেও স্পর্শ করেছিল।

১৯৭২ সালের ১৯ মার্চ বাংলাদেশ ও ভারত উভয় দেশের প্রধানমন্ত্রী ‘ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী, সহযোগিতা ও শান্তিচুক্তি’ শিরোনামে ২৫ বছর মেয়াদি চুক্তি সই করেন। সে সময় অনেকে এ চুক্তিকে বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী মনে করতেন। এসবের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হয়ে উঠলেন জিয়াউদ্দিন।

১৯৭২ সালের ২০ আগস্টে জনপ্রিয় সাপ্তাহিক হলিডে পত্রিকায় ‘হিডেন প্রাইজ’ (লুকানো মূল্য) নামে তাঁর একটা লেখা ছাপা হলে জিয়াউদ্দিন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে আসেন, যেখানে তিনি তৎকালীন সরকারের বিভিন্ন নীতিনির্ধারণ ও ভারতের সঙ্গে ‘গোপন চুক্তির’ বিরুদ্ধে প্রকাশ্য সমালোচনা করেন। এ লেখা প্রকাশের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান দেশের বাইরে ছিলেন। দেশে ফিরে প্রধানমন্ত্রী কর্নেল জিয়াউদ্দিনকে ডেকে পাঠান এবং ক্ষমা চাইতে বলেন। জিয়াউদ্দিন সরাসরি এমন প্রস্তাব নাকচ করে দেন। পরে এ জন্য জিয়াউদ্দিনকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। চাকরি হারানোর পর জিয়াউদ্দিন আত্মগোপনে চলে যান। শুরু হয় তাঁর গোপন বিপ্লবী জীবন।

১৯৭৩ সালে জিয়াউদ্দিন আত্মগোপনে গিয়ে সিরাজ সিকদারের ‘পূর্ব বাংলার সর্বহারা পার্টিতে’ যোগ দেন এবং সশস্ত্র বামপন্থী আন্দোলনে যুক্ত হন। তিনি সমাজতন্ত্রের মাধ্যমে সমাজ পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখেছিলেন। নানা ঘটনার পরে সিরাজ সিকদার নিহত হলে সর্বহারা পার্টি দুই ভাগ হয়। কর্নেল জিয়াউদ্দিন তখন একটি অংশের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।

জিয়াউদ্দিনের গোপন বিপ্লবী জীবনের একটি অংশ পার্বত্য চট্টগ্রাম (বান্দরবান) ও তৎসংলগ্ন চট্টগ্রাম-কক্সবাজার জেলার পূর্বাংশে বিস্তৃত ছিল। সর্বহারা পার্টির অনেক সদস্য ১৯৭৪ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামের অরণ্য-পাহাড়বেষ্টিত দুর্গম অঞ্চলে আশ্রয় গ্রহণ করেন। সেনাবাহিনী ১৯৭৪ সালের শেষের দিকে পাহাড়ে সর্বহারা পার্টির বিরুদ্ধে ‘অপারেশন ড্রাগন ড্রাইভ’ পরিচালনা করেছিল। জিয়াউদ্দিনের ঘনিষ্ঠ সহকর্মীরা তখন পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাবাহিনীর বিভিন্ন পর্যায়ের কমান্ডার। অদ্ভুত একটা পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনী কাজ করছিল। পাহাড়ে এ ধরনের পরিস্থিতি পরেও হয়েছে।

দীর্ঘদিন আত্মগোপনে থেকে জিয়াউদ্দিন ১৯৮৯ সালে সর্বহারা পার্টি ত্যাগ করে সাধারণ ক্ষমার আওতায় স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসেন। তাঁর চিন্তাভাবনায় বেশ পরিবর্তন দেখা যায়। ১৯৯১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এলে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া লেফটেন্যান্ট কর্নেল জিয়াউদ্দিনকে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যান (১৯৯৩-৯৬) নিযুক্ত করেন। চট্টগ্রাম শহরের ‘মাস্টার প্ল্যান’ তাঁর সময়ই তৈরি হয়েছিল। জিয়াউদ্দিন উন্নত ও সুন্দর একটি মহানগরীর স্বপ্ন দেখতেন।

সরাসরি রাজনীতিতে আবারও যোগদানের নানা সুযোগ থাকলেও জিয়াউদ্দিন তা করেননি। তবে নানা সময় রাজনৈতিক ও সামাজিক ইস্যুতে স্পষ্টভাষী অবস্থান নিয়েছিলেন। তিনি অত্যন্ত সৎ জীবন যাপন করতেন এবং কঠিন নীতিমান ছিলেন। জিয়াউদ্দিন স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার পর জাহানারা বেগমের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। বলা যায়, মমতাময়ী ও ধৈর্যশীল এই নারী হয়ে ওঠেন জিয়াউদ্দিনের জীবনে আল্লাহর পাঠানো একটি শ্রেষ্ঠ উপহার। তাঁদের দুই ছেলে এক মেয়ে।

জিয়াউদ্দিন ১৯৯৮ সালে চট্টগ্রামের প্রেসিডেন্সি ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন। কয়েক বছরের মধ্যেই স্কুলটি চট্টগ্রাম মহানগরীর অন্যতম সেরা স্কুলে পরিণত হয়। তিনি এই স্কুলে উন্নত মানের শিক্ষার সঙ্গে সঙ্গে ভালো মানুষ হওয়ার বিষয় ও নৈতিকতার উৎস হিসেবে ধর্মের গুরুত্ব দিতেন।

৭ আগস্ট বিকেলে ২৪ পদাতিক ডিভিশনের তত্ত্বাবধানে চট্টগ্রাম সেনানিবাসের সামরিক কবরস্থানে পূর্ণ সামরিক মর্যাদায় জিয়াউদ্দিনের দাফনের আয়োজন করা হয়। মরদেহ কবরে নামানো ও দাফন সম্পন্ন হওয়ার পর ১৮ বীরের চৌকস একটি সেনাদল কর্তৃক ‘ভলি ফায়ার’ (গান স্যালুট) প্রদান করা হয়। সেনাবাহিনী প্রধানের পক্ষে স্থানীয় জিওসি ও এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল মীর মুশফিকুর রহমান কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর সেনাবাহিনী সম্মান গার্ড মরণোত্তর সালাম (আর্মস ডাউন) প্রদান করে। বিউগলের করুন সুরে এভাবেই জিয়াউদ্দিনকে শেষবিদায় জানানো হয়।

বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে গেলেও শিক্ষিত মানুষের মধ্যে চরম নৈতিক অধঃপতন হয়েছে। আমি ভাবি, ভোগবাদিতা ও আত্মসর্বস্বতায় মগ্ন এই সমাজে কীভাবে জিয়াউদ্দিন এত সাহসী, নির্মোহ, নির্লোভ, আপসহীন ও প্রতিবাদী থাকতে পেরেছিলেন?

১৯৭১ সালে দেশের মুক্তিযুদ্ধের জন্য চরম ঝুঁকি নিয়ে বাংলাদেশে এসেছিলেন যুবক জিয়াউদ্দিন। এই অকুতোভয় বীরযোদ্ধা আমাদের স্মৃতিতে চির অম্লান হয়ে রইবেন। দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও সম্মান ছিল তাঁর ধ্যানজ্ঞান। বিভিন্ন কারণে তরুণ প্রজন্মের কাছে তিনি পরিচিত ছিলেন না। কিন্তু ভবিষ্যৎ প্রজন্ম জিয়াউদ্দিনের মতো সাহসী, আপসহীন, দেশপ্রেমিক ও আত্মমর্যাদাসম্পন্ন বীরদেরই খুঁজে নেবে অবলীলায়। স্যালুট টু ইউ জিয়াউদ্দিন স্যার। পরম করুণাময় আল্লাহ তাঁকে বেহেশত নসিব করুন।

মো. বায়েজিদ সরোয়ার অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল, গবেষক ও বিশ্লেষক

*মতামত লেখকের নিজস্ব

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: জ য় উদ দ ন র ন জ য় উদ দ ন কর ন ল জ য় কম ন ড র উদ দ ন ত স ব ধ নত তৎক ল ন র রহম ন ন কর ন কর ছ ল ঙ গল র র সময়

এছাড়াও পড়ুন:

ফিলিপাইনে ৬ দশমিক ৯ তীব্রতার ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৬৯

ফিলিপাইনের মধ্যাঞ্চলে ৬ দশমিক ৯ তীব্রতার শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহত হওয়ার সংখ্যা বেড়ে ৬৯ জন হয়েছে। দেশটির দুর্যোগ-সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা আজ বুধবার এ খবর জানান। বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা ও পানি-বিদ্যুতের সংযোগ আবার চালু করার চেষ্টা করছে ফিলিপাইন সরকার।

দেশটির সিভিল ডিফেন্স কর্মকর্তা রাফি আলেজান্দ্রো সাংবাদিকদের বলেন, স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার রাত ১০টার আগে সেবু প্রদেশের উত্তরে বোগো শহরের কাছে ভূমিকম্পটির উৎপত্তি হয়। স্থানীয় হাসপাতালগুলো আহত মানুষের ভিড়ে রীতিমতো উপচে পড়ছে।

আঞ্চলিক সিভিল ডিফেন্স দপ্তরের তথ্য কর্মকর্তা জেন আবাপো বলেন, সেবুর প্রাদেশিক দুর্যোগ দপ্তরের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ভূমিকম্পে নিহত হওয়ার সংখ্যা এখন পর্যন্ত ৬৯ জন। অন্য একজন কর্মকর্তা জানান, আহত হয়েছেন ১৫০ জনের বেশি।

দেশটির প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোস জুনিয়র বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের দ্রুত সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি জানান, মন্ত্রিপরিষদ সচিবেরা ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। প্রিয়জন হারানো ব্যক্তিদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন তিনি।

সেবু ফিলিপাইনের জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্যগুলোর একটি। সেখানে প্রায় ৩৪ লাখ মানুষের বসবাস। ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও ম্যাকতান-সেবু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্যক্রম চালু রয়েছে। এটা ফিলিপাইনের দ্বিতীয় ব্যস্ততম বিমানবন্দর।

ভূমিকম্পে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সান রেমিগিও শহরটিও। উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রমে সহায়তার জন্য এ শহরে ‘দুর্যোগপূর্ণ অবস্থা’ ঘোষণা করা হয়েছে। শহরের ভাইস মেয়র আলফি রেইনেস বলেন, উদ্ধারকর্মীদের জন্য খাবার ও পানি, সেই সঙ্গে ভারী সরঞ্জাম প্রয়োজন।

স্থানীয় ডিজেডএমএম রেডিওকে আলফি রেইনেস বলেন, ‘ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। বিদ্যুৎ নেই। আমাদের সত্যিই সহায়তা দরকার। বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলে পানির তীব্র সংকট রয়েছে। ভূমিকম্পে সেখানে সরবরাহ লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’

আরও পড়ুনফিলিপাইনে শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহত অন্তত ২৬, চলছে উদ্ধারকাজ৫ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৪০ ঘণ্টা পর এক ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার, নিখোঁজ আরেকজন
  • সিদ্ধিরগঞ্জে ৭ কেজি গাঁজাসহ মাদক কারবারি গ্রেপ্তার 
  • গরুর গোবর কুড়ানো থেকে সাত তারকা হোটেলে, জয়দীপের গল্প জানেন কি
  • টর্চলাইট
  • স্বাস্থ্য খাতে আলাদা বেতনকাঠামো হোক
  • গাজীপুরে আট বছরের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে একজন গ্রেপ্তার
  • খাগড়াছড়ির ঘটনায় জাতিসংঘকে যুক্ত করে বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি
  • ডাক্তারদের হাতের লেখা ঠিক করার নির্দেশ দিলো আদালত
  • ‘মোটা জেনারেলদের’ কড়া সমালোচনা করলেন মার্কিন প্রতিরক্ষা হেগসেথ
  • ফিলিপাইনে ৬ দশমিক ৯ তীব্রতার ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৬৯