রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপ-উপাচার্য, প্রক্টরসহ অন্যান্য শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ওপর হওয়া হামলার প্রতিবাদ ও জড়িতদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করা হয়েছে।

সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে এই কর্মসূচি পালন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

আরো পড়ুন:

বিশ্বসেরা গবেষকদের তালিকায় জাবির ৮ শিক্ষক-শিক্ষার্থী

হাবিপ্রবিতে ঘুষের অভিযোগে দুদকের অভিযান

শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের দাবি, শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) যারা শিক্ষকের গায়ে হাত দিয়েছে তাদের বহিষ্কার করতে হবে। তাদের প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা (পোষ্য কোটা) নিশ্চিত করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা রক্ষায় যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকবেন বলেও জানান তারা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক ড.

আব্দুল আলিম বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ও কর্মকর্তা-শিক্ষকদের ওপর সাম্প্রতিক বর্বরোচিত হামলাকে আমরা গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে দেখি। এমন জঘন্য কর্মকাণ্ড কোনো আদর্শবান শিক্ষার্থীর কাজ হতে পারে না। যারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সবাইকে অবশ্যই বিচারের আওতায় আনা এবং ছাত্রত্ব বাতিলসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। আমরা প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি, দ্রুত ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করুন।”

অফিসার্স সমিতির সভাপতি মুক্তার হোসেন বলেন, “উপ-উপাচার্যহ অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দের উপর যে ন্যাক্কারজনক হামলা হয়েছে, তেমন নিদর্শন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে আগে দেখা যায়নি। যারা এ কার্যকলাপে জড়িত, তাদের ছাত্রত্ব অবিলম্বে বাতিল করা হোক এবং তারা প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রার্থনা করুক। আমরা প্রশাসনের দ্রুত ন্যায্য বিচার প্রক্রিয়া চালানোর দাবি জানাই। যদি তা না হয়, আমরা সর্বোচ্চ কঠোর অবস্থান নেওয়ার দিকে যেতে বাধ্য হবো।”

এর আগে, রাবিতে কর্মরতদের সন্তানদের ভর্তির জন্য আগে থেকেই ৪ শতাংশ পোষ্য কোটা ছিল। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে চলতি বছরের ২ জানুয়ারি পোষ্য কোটা বাতিলের ঘোষণা দেন রাবি উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব। এরপর থেকেই শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা পোষ্য কোটাকে প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা দাবি করে একের পর এক আন্দোলন শুরু করেন।

সর্বশেষ গত ১৭ সেপ্টেম্বর এক চিঠিতে ১৮ তারিখের মধ্যে দাবি আদায় না হলে ২১ সেপ্টেম্বর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য পূর্ণদিবস কর্মবিরতির ঘোষণা দেন তারা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৮ সেপ্টেম্বর বিকেলে জরুরি অ্যাকাডেমিক কমিটির সভা ডাকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সভায় ১০ শর্তে প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু এর বিরুদ্ধে আবার টানা আন্দোলনে নামেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) মাঈন উদ্দিনসহ প্রশাসনে থাকা তিনজন কর্মকর্তা জুবেরী ভবনে শিক্ষার্থীদের হাতে লাঞ্ছিত হন। পরে জুবেরী ভবনে উপ-উপাচার্যসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষক-কর্মকর্তাকে অবরুদ্ধ করে সেখানে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ করতে থাকেন। রাতে জুবেরী ভবনের সামনে থেকে অবরোধ উঠিয়ে নিয়ে শিক্ষার্থী উপাচার্যের বাসভবনের সামনে জড়ো হন। পরে গভীর রাতে হল থেকে বের হয়ে এসে ছাত্রীরাও তাদের সঙ্গে যোগ দেন। তারা মাঝরাত পর্যন্ত উপাচার্যের বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ করতে থাকেন।

পরে উপাচার্য সালেহ হাসান নকীব মধ্যরাতে বাসার প্রধান ফটকের সামনে এসে ঘোষণা দেন, প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধায় ভর্তি আপাতত স্থগিত। এ নিয়ে রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠিত হবে।

এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে শনিবার রাতেই কর্মসূচি ঘোষণা করেন শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। ঘোষণা অনুযায়ী রবিবার পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করেন তারা। এদিন তারা ঘোষণা দেন, প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধায় সন্তানদের ভর্তির সুযোগ না দিলে সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) থেকে কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচিতে যাচ্ছেন তারা। তবে ২৫ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিতব্য রাকসু নির্বাচন এ কর্মসূচির বাইরে থাকবে।

এ ঘোষণা পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি অব্যাহত আছে।

ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপ উপ চ র য স প ট ম বর কর মকর ত র স মন

এছাড়াও পড়ুন:

নান্দাইলের ইউএনও’র দুর্নীতি তদন্তের দাবিতে মানববন্ধন

ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার সদ্য সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সারমিনা সাত্তারের বিরুদ্ধে ওঠা ৩ কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত ও বিচার দাবিতে মানববন্ধন করেছে বিভিন্ন ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও স্থানীয়রা।

মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) দুপুর ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কের নান্দাইল নতুন বাজার এলাকায় ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন করেন তারা। 

আরো পড়ুন:

রাজশাহীতে ৫ কোল পরিবারকে উচ্ছেদের প্রতিবাদে মানববন্ধন

বিএলআরআই নিয়োগবিধিতে বৈষম্যের অভিযোগে গবিতে মানববন্ধন

উপজেলার শেরপুর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মাসহুদ পারভেজসহ অন্যান্য ইউপি সদস্যরা গত ২৮ মার্চ ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনারের কাছে সারমিনা সাত্তারের বিরুদ্ধে ৩ কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ করেন। 

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা থাকাকালীনও সারমিনা সাত্তারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠে। যা নিয়ে তখন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর নান্দাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হিসেবে সারমিনা সাত্তার যোগ দেন। এরপর থেকে সীমাহীন দুর্নীতি করেছেন। উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজার ইজারা, পাথর কেলেঙ্কারি, খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির ডিলার নিয়োগ, নামজারিতে অতিরিক্ত টাকা আদায়, ভুয়া প্রকল্প থেকে টাকা উত্তোলনসহ নানা দুর্নীতি করেছেন।

বক্তব্যে ইউপি সদস্য মাসহুদ পারভেজ বলেন, ‘‘সারমিনা সাত্তার শুধু অনিয়ম-দুর্নীতিতে সীমাবদ্ধ ছিলেন না, ইউপি সদস্যদের সঙ্গে অসদাচরণসহ মিথ্যা মামলার হুমকিও দিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে অভিযোগ দিয়েছি।’’  

মানববন্ধনে আরো উপস্থিত ছিলেন খারুয়া ইউনিয়নের ইউপি সদস্য আব্দুস কদ্দুস মুন্সি, বাচ্চু মিয়া, শেরপুর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য শাহজাহান প্রমুখ। 

এ বিষয়ে জানতে সারমিনা সাত্তারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

ঢাকা/মিলন/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিএনপি থেকে প্রার্থী দেওয়ার দাবিতে হরিপুরে বিক্ষোভ–মানববন্ধন
  • সিলেট চেম্বারের নির্বাচন দাবিতে ব্যবসায়ীদের মানববন্ধন
  • বিএনপি নেতা শহিদুলকে মনোনয়ন না দেওয়ায় তৃতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ
  • নান্দাইলের ইউএনও’র দুর্নীতি তদন্তের দাবিতে মানববন্ধন
  • রাজশাহীতে ৫ কোল পরিবারকে উচ্ছেদের প্রতিবাদে মানববন্ধন
  • মাদ্রাসা সভাপতির বিরুদ্ধে চোরাচালান মামলা, প্রত্যাহারের দাবিতে শিশুশিক্ষার্থীদের দিয়ে মানববন্ধন