আখতারকে ডিম ছোড়ার পর যুবলীগকর্মী মিজানুর আটক, বিএনপিকর্মীকে মারার অভিযোগ
Published: 23rd, September 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে বিমানবন্দরে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেনকে লক্ষ্য করে ডিম ছোড়ার ঘটনার পর যুবলীগ কর্মী মিজানুর রহমানকে আটক করেছে পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে বিএনপির কর্মীকে ছুরি দিয়ে মারার অভিযোগ রয়েছে।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে যোগ দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সফরসঙ্গী হিসেবে আখতার হোসেন নিউইয়র্কে পৌঁছান।
প্রত্যক্ষদর্শী সুলাইমান হক জানান, বিএনপি সমর্থিত একজন ব্যক্তি পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন, মিজানুর রহমান তাঁকে ছুরি দিয়ে মারতে এসেছেন। এরপর নিউইয়র্ক পুলিশ তাঁকে আটক করে।
বিক্ষোভ শেষে সন্ধ্যার পর আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা আনন্দ উদযাপন করছিলেন। ২২ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৯টার দিকে জ্যাকসন হাইটসের বাংলাদেশ স্ট্রিট থেকে পুলিশ মিজানুরকে আটক করেন। আগামীকাল তাঁকে আদালতে নেওয়া হবে।
আটক করার পর মিজানুর রহমান ‘জয় বাংলা’ বলে স্লোগান দেন। তাঁর সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা স্লোগান দেন।
এনওয়াইপিডি সূত্র বলছে, আগামীকাল মিজানুর রহমানকে আদালতে পাঠানো হবে। আজ রাত তাঁকে হাজতে কাটাতে হবে।
নিউইয়র্কের জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর চার নম্বর টার্মিনাল থেকে বের হওয়ার সময় স্থানীয় সময় ২২ সেপ্টেম্বর (সোমবার) বিকেল পাঁচটার দিকে আখতার হোসেনকে ডিম যুবলীগ কর্মী মিজানুর ডিম ছোড়েন বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। এ সময় আওয়ামী লীগের নেতা কর্মী ও সমর্থকেরা সেখানে ছিলেন।
আরও পড়ুননিউইয়র্কে এনসিপি নেতা আখতারকে হেনস্তা করল আওয়ামী লীগ নেতা–কর্মীরা, ডিম নিক্ষেপ২ ঘণ্টা আগেআখতার হোসেনের সঙ্গে হাঁটছিলেন সফরসঙ্গী হিসেবে আসা বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা। স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা কর্মী ও সমর্থকেরা এ সময় তাসনিম জারাকে লক্ষ্য করে কটূক্তি করেন। তাঁরা সেখানে বিক্ষোভ করেন।
প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গীরা ম্যানহাটনের গ্র্যান্ড হায়াত হোটেলে আছেন। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ সেখানে প্রতিবাদ করার অনুমতি নিয়ে রেখেছে। সে অনুযায়ী সন্ধ্যায় তাঁরা সেখানে বিক্ষোভ করেন। রাস্তার দুই পাশে পরস্পরবিরোধী স্লোগান দেয় এনসিপি ও আওয়ামী লীগ। সেখানে এনসিপি নেতা আখতার হোসেন এ ঘটনায় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের বিচার দাবি করেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম জ ন র রহম ন আখত র হ স ন আওয় ম সমর থ ব এনপ এনস প
এছাড়াও পড়ুন:
নিউইয়র্কে আখতারের ওপর হামলা, এনসিপি ডায়াস্পোরা অ্যালায়েন্সের ক্
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেনে ও সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারার ওপর হামলার ঘটনাটি অন্তর্বর্তী সরকারের চরম ব্যর্থতা দাবি করে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে দলটির ডায়াস্পোরা অ্যালায়েন্স।
মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকালে এনসিপি ডায়াস্পোরা অ্যালায়েন্স থেকে গণমাধ্যমের কাছে পাঠানো এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়।
আরো পড়ুন:
অধ্যাপক ইউনূস নিজের স্বার্থে পার্টিগুলোকে ব্যবহার করছেন, দাবি সামান্তার
নিউইয়র্কে আখতার হোসেনের ওপর ডিম নিক্ষেপ
বিবৃতিতে বলা হয়, জুলাই বিপ্লবের সময় যারা জীবনবাজি রেখে লড়েছিলেন, তাদের প্রতি প্রতিশোধপরায়ণ হামলাকারীদের ক্ষোভ আজও থামেনি। আখতার হোসেনকে খুনী হাসিনা সরকার জুলাইতে গ্রেপ্তার করে নির্যাতন চালায়। যিনি গণআন্দোলনের জন্য নিজের জীবন ঝুঁকিতে ফেলেছিলেন, আজও সেই সংগ্রামের মূল্য দিতে হচ্ছে। এটা অন্তর্বর্তী সরকারের চরম ব্যর্থতা।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, আখতার হোসেন ও তাসনিম জারার সঙ্গে হওয়া এই হামলার সময় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ অন্যান্য সফরসঙ্গীরাও ছিলেন এবং তারাও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের তোপের মুখে পড়েন, কিন্ত এই হামলার প্রধান লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে মূলত এনসিপি নেতৃবৃন্দকে।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, আমরা গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, সরকারি আমন্ত্রণে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র সফরে অংশগ্রহণকারী জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতা আখতার হোসেন ও তাসনিম জারার ওপর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সমর্থক সন্ত্রাসীরা ন্যাক্কারজনক হামলা চালিয়েছে। এ ঘটনা শুধু রাজনৈতিক সহিংসতার বহিঃপ্রকাশ নয়, বরং রাষ্ট্রের কূটনৈতিক মর্যাদা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার চরম ব্যর্থতার উদাহরণ।
আমরা প্রশ্ন রাখছি- যদি সরকারি সফরের অংশগ্রহণকারীরা ন্যূনতম নিরাপত্তা না পান, তবে বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি কনস্যুলেট ও দূতাবাসগুলোর অস্তিত্বের যৌক্তিকতা কোথায়? তারা কাদের স্বার্থে কাজ করছে, আর কেন এ ধরনের অপরাধীদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে না? বাংলাদেশ সরকার এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রাষ্ট্রীয় সফররত ব্যক্তিদের নিরাপত্তা প্রদানে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছেন।
এ ঘটনার বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের কাছে অবিলম্বে দৃঢ় পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আমরা বাংলাদেশ সরকারের কাছে এ বিষয়ে অবিলম্বে দৃঢ় পদক্ষেপের দাবি জানাই। আমাদের সুস্পষ্ট তিনটি দাবি হলো-
* বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সরকার এবং নিউ-ইয়র্ক শহরের সরকার ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে সরাসরি অভিযোগ করতে হবে।
* নিউইয়র্কের বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলসহ সম্পূর্ণ ফরেন সার্ভিস টিমকে অবিলম্বে চাকরিচ্যুত করতে হবে।
* সফরের পরবর্তী অংশের জন্য প্রত্যেক সফররত নেতাদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
এনসিপি ডায়াস্পোরা অ্যালায়েন্স আরো বলেছে, বিদেশি মাটিতে আওয়ামী লীগের এধরণের সন্ত্রাসী হামলা শুধু প্রবাসী বাংলাদেশিদের নিরাপত্তার জন্য নয়, বরং বাংলাদেশের মর্যাদা ও গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের জন্যও হুমকিস্বরূপ। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই এবং অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ দাবি করছি।
ঢাকা/রায়হান/ফিরোজ