যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে বিমানবন্দরে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেনকে লক্ষ্য করে ডিম ছোড়ার ঘটনার পর যুবলীগ কর্মী মিজানুর রহমানকে আটক করেছে পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে বিএনপির কর্মীকে ছুরি দিয়ে মারার অভিযোগ রয়েছে।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে যোগ দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সফরসঙ্গী হিসেবে আখতার হোসেন নিউইয়র্কে পৌঁছান।

প্রত্যক্ষদর্শী সুলাইমান হক জানান, বিএনপি সমর্থিত একজন ব্যক্তি পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন, মিজানুর রহমান তাঁকে ছুরি দিয়ে মারতে এসেছেন। এরপর নিউইয়র্ক পুলিশ তাঁকে আটক করে।

বিক্ষোভ শেষে সন্ধ্যার পর আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা আনন্দ উদযাপন করছিলেন। ২২ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৯টার দিকে জ্যাকসন হাইটসের বাংলাদেশ স্ট্রিট থেকে পুলিশ মিজানুরকে আটক করেন। আগামীকাল তাঁকে আদালতে নেওয়া হবে।

আটক করার পর মিজানুর রহমান ‘জয় বাংলা’ বলে স্লোগান দেন। তাঁর সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা স্লোগান দেন।

এনওয়াইপিডি সূত্র বলছে, আগামীকাল মিজানুর রহমানকে আদালতে পাঠানো হবে। আজ রাত তাঁকে হাজতে কাটাতে হবে।

নিউইয়র্কের জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর চার নম্বর টার্মিনাল থেকে বের হওয়ার সময় স্থানীয় সময় ২২ সেপ্টেম্বর (সোমবার) বিকেল পাঁচটার দিকে আখতার হোসেনকে ডিম যুবলীগ কর্মী মিজানুর ডিম ছোড়েন বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। এ সময় আওয়ামী লীগের নেতা কর্মী ও সমর্থকেরা সেখানে ছিলেন।

আরও পড়ুননিউইয়র্কে এনসিপি নেতা আখতারকে হেনস্তা করল আওয়ামী লীগ নেতা–কর্মীরা, ডিম নিক্ষেপ২ ঘণ্টা আগে

আখতার হোসেনের সঙ্গে হাঁটছিলেন সফরসঙ্গী হিসেবে আসা বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা। স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা কর্মী ও সমর্থকেরা এ সময় তাসনিম জারাকে লক্ষ্য করে কটূক্তি করেন। তাঁরা সেখানে বিক্ষোভ করেন।

প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গীরা ম্যানহাটনের গ্র্যান্ড হায়াত হোটেলে আছেন। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ সেখানে প্রতিবাদ করার অনুমতি নিয়ে রেখেছে। সে অনুযায়ী সন্ধ্যায় তাঁরা সেখানে বিক্ষোভ করেন। রাস্তার দুই পাশে পরস্পরবিরোধী স্লোগান দেয় এনসিপি ও আওয়ামী লীগ। সেখানে এনসিপি নেতা আখতার হোসেন এ ঘটনায় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের বিচার দাবি করেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম জ ন র রহম ন আখত র হ স ন আওয় ম সমর থ ব এনপ এনস প

এছাড়াও পড়ুন:

নিউইয়র্ক, ভার্জিনিয়া ও নিউ জার্সির ভোটাররা ট্রাম্পকে প্রত্যাখ্যান করে কী বার্তা দিলেন

যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূলজুড়ে ভোটাররা মঙ্গলবার ডেমোক্র্যাটদের জয় এনে দিয়েছেন। এই ফলাফল প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের এক বছরের মধ্যেই তাঁর প্রতি মানুষের অসন্তোষের সুস্পষ্ট প্রকাশ বলা চলে।

ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যে মধ্যপন্থী প্রতিনিধি পরিষদের সাবেক সদস্য অ্যাবিগাইল স্প্যানবার্গার রাজ্যের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিসেবে সহজেই জয়ী হয়েছেন।

নিউ জার্সি অঙ্গরাজ্যের আরেক মধ্যপন্থী প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য মিকি শেরিল প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং তাঁর রিপাবলিকান প্রতিদ্বন্দ্বী জ্যাক সিয়াটারেলি হারিয়ে দিয়েছেন।

নিউইয়র্ক নগরে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জোরান মামদানি এই বছর দ্বিতীয়বারের মতো সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমোকে হারিয়েছেন। প্রথমে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রাইমারিতে এবং তারপর সাধারণ নির্বাচনে। সাধারণ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী কুমো প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সমর্থন পেয়েছিলেন।

তীক্ষ্ণ আদর্শগত পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও ডেমোক্র্যাট প্রার্থীদের এসব জয় তাঁদের দলের দীর্ঘদিনের অভ্যন্তরীণ বিতর্ককে খুব একটা মীমাংসা করতে পারবে না। সেই বিতর্ক হচ্ছে, তাঁদের কোন পথে এগিয়ে যেতে হবে। কারণ, কয়েক মাসের মধ্যেই একাধিক মধ্যবর্তী নির্বাচন সামনে রেখে দলীয় প্রাইমারি অনুষ্ঠিত হবে। ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সামনে রেখে দলীয় প্রাইমারিও আসন্ন।

তবে ডেমোক্র্যাটদের সর্বশেষ নির্বাচনী প্রচারে কিছু বিষয়ে মিল ছিল। যদিও সমাধানের পথ তাঁরা ভিন্ন ভিন্নভাবে তুলে ধরেছেন। প্রার্থীরা মানুষের সাশ্রয়ী জীবনযাত্রার ওপর জোর দিয়েছিলেন। তাঁরা সবাই প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের কর্মকাণ্ডের কঠোর সমালোচক ছিলেন।

নিউইয়র্কের প্রতিনিধি আলেকজান্দ্রিয়া ওকাসিও-কর্তেজ জোহরান মামদানির বিজয় সমাবেশ থেকে সিএনএনকে বলেছেন, ‘এটি শুধু ডেমোক্র্যাটদের নিয়ে একটি বার্তা নয়; বরং গোটা দেশের জন্য একটি বার্তা। আমি মনে করি, মার্কিনরা এই প্রশাসনের কাছ থেকে যা দেখছেন, তাতে আতঙ্কিত।’

ক্যালিফোর্নিয়ায় ভোটাররা ‘ভোট পুনর্বিন্যাস’ ব্যালটের পদক্ষেপে অনুমোদন দিয়েছেন। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে, আগামী বছর কংগ্রেসের নিয়ন্ত্রণের লড়াইয়ে ডেমোক্র্যাটদের সুযোগ বৃদ্ধি করা।

পেনসিলভানিয়ায় সুপ্রিম কোর্টের ডেমোক্র্যাট বিচারপতিরা পুনর্নিয়োগের ভোটে জয় পেয়েছেন। ফলে রাজ্যের সর্বোচ্চ আদালতে ডেমোক্র্যাটদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা বজায় থাকছে। এই অঙ্গরাজ্য সব সময় রাজনৈতিক লড়াইয়ের কেন্দ্র, যেখানে ভোটের নিয়ম নিয়ে আইনি চ্যালেঞ্জ দেখা যায়।

কুমোকে আবার হারালেন মামদানি

মামদানি তাঁর প্রগতিশীল ভাবনা ও নতুন নেতৃত্বের প্রতিশ্রুতির দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন। নিউইয়র্ক নগরে তিনি মানুষের জীবনযাত্রার খরচ কমানোর প্রতিশ্রুতির ওপর জোর দেন, যা ভোটারদের কাছে সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলেছে বলে মনে হচ্ছে। ভোটাররা তাঁর পরিকল্পনাকে আরও এগিয়ে নিতে একাধিক প্রস্তাবও অনুমোদন করেছেন, যাতে সাশ্রয়ী মূল্যে বাড়ি নির্মাণের জটিল নিয়মগুলো সহজ করা যায়।

জোহরান যদি তাঁর প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে পারেন, তাহলে নিউইয়র্ক নগর যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য শহরের জন্য একটি দৃষ্টান্ত হয়ে উঠবে, বিশেষ করে যেখানে জীবনযাত্রার খরচ বেড়ে গেছে। কিন্তু তিনি ব্যর্থ হলে ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে প্রগতিশীল রাজনীতির জন্য এটি একধরনের সতর্কবার্তা হয়ে দাঁড়াতে পারে।

বিজয় মঞ্চে নিউ জার্সির ডেমোক্রেটিক পার্টির নবনির্বাচিত গভর্নর মিকি শেরিল। ৪ নভেম্বর ২০২৫, ইস্ট ব্রান্সউইক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘সালাম বম্বে!’, থেকে ‘মুনসুন ওয়েডিং’, মামদানির মাকে কতটা চেনেন
  • ট্রাম্প–মামদানি কি সমানে সমান
  • মামদানিপত্নী কে এই রমা, কীভাবে তাঁদের প্রেম–পরিণয়
  • জোহরান মামদানির ‘ট্রানজিশন’ দলের সবাই নারী
  • জোহরান মামদানিকে বেছে নিয়ে আমরা সার্বভৌমত্ব হারিয়েছি: ডোনাল্ড ট্রাম্প
  • সকালেই পড়ুন আলোচিত ৫ খবর
  • মামদানির জয়, ট্রাম্পকে বার্তা
  • ধনকুবেরদের ৪ কোটি ডলার ব্যয়েও জিততে পারেননি কুমো
  • মেয়র নির্বাচনে জয়ের পর এবার আসল চ্যালেঞ্জের মুখে মামদানি
  • নিউইয়র্ক, ভার্জিনিয়া ও নিউ জার্সির ভোটাররা ট্রাম্পকে প্রত্যাখ্যান করে কী বার্তা দিলেন