বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে গিয়ে ট্রলার বিকল, ভোলার ১৯ জেলে ভারতের কারাগারে
Published: 24th, September 2025 GMT
বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে গিয়ে ভোলার ১৯ জেলে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) হাতে আটক ও দেশটির কারাগারে বন্দী আছেন বলে জানিয়েছেন তাঁদের স্বজনেরা। এ বিষয়ে তাঁরা থানায় সাধারণ ডায়েরি (ডিজি) করেছেন এবং উপজেলা প্রশাসনকে জানিয়েছেন। ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনে জেলেদের ফিরিয়ে আনার আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন।
স্বজনেরা জানান, বঙ্গোপসাগরে ইলিশ ধরতে গিয়ে ইঞ্জিন বিকল হয়ে পথ হারিয়ে ভারতীয় অংশে চলে যান ওই ১৯ জেলে। পরে বিএসএফের হাতে গ্রেপ্তার হয়ে বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় আলিপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী আছেন। তাঁরা হলেন ভোলা সদর উপজেলার দক্ষিণ দিঘলদী ইউনিয়নের কোড়ালিয়া গ্রামের সফিজল ব্যাপারী, শাহে আলম, ছিডু মুন্সি, রাজীব চন্দ্র দাশ, আক্তার হোসেন, মিন্টু হাওলাদার, ফরিদ, আলমগীর, ফরিদ, ইউনুছ, বাবুল সরদার, নিরব হোসেন, ইসমাইল, শাহে আলম হাওলাদার, গৌতম চন্দ্র দাস, জাকির, ছগির সিকদার, টুটুল ও শহিদুল ইসলাম।
পুলিশ, স্বজন ও স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দার সূত্রে জানা গেছে, ৫ সেপ্টেম্বর ওই ১৯ জেলে বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে যান। তাঁরা ইলিশ ধরে বাড়ি ফিরছিলেন। ১২ সেপ্টেম্বর স্বজনদের সঙ্গে তাঁদের সর্বশেষ ফোনালাপ হয়। এরপরই তাঁদের আর খোঁজ মিলছিল না। ১৭ সেপ্টেম্বর জানতে পারেন, তাঁদের ট্রলারের ইঞ্জিন বিকল হয়ে ভাসতে ভাসতে ভারতের সুন্দরবন টাইগার রিজার্ভ বেল্ট এলাকায় চলে যায়। সেখান থেকে তাঁদের আটক করে বিএসএফ। বর্তমানে তাঁরা আলিপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী আছেন। এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার ভোলা সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।
নিখোঁজ জেলেদের কয়েকজন স্বজন জানান, তাঁরা (জেলেরা) পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। রোজগার না থাকায় পরিবারের সদস্যরা মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন।
ভোলা জেলা ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শেখ আল মামুন জানান, জেলেদের তথ্য সংগ্রহ করে প্রশাসনকে জানাবেন। এদিকে ভোলা মৎস্য কর্মকর্তা মেহেদী হাসান ভূঁইয়া জানিয়েছেন, তাঁর অধিদপ্তর থেকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হবে।
এদিকে ভোলা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
নারী-শিশুসহ ১৯ জনকে ঠেলে পাঠাল বিএসএফ
চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলার একটি সীমান্ত দিয়ে নারী-শিশুসহ ১৯ জনকে ঠেলে পাঠিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ।
বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) ভোরে উপজেলার চামুচা ও চাঁনশিকারী বিওপির মধ্যবর্তী এলাকা দিয়ে তাদের পাঠানো হয়। পরে বিজিবির টহলদল তাদের আটক করে। বিজিবি জানায়, আটককৃতদের মধ্যে ১০ জন পুরুষ, ৬ জন নারী ও তিনজন শিশু।
আরো পড়ুন:
মহেশপুর সীমান্ত দিয়ে ৬ বাংলাদেশিকে হস্তান্তর বিএসএফের
টেকনাফে মানব পাচারকারী চক্রের আস্তানা থেকে ৮৪ জনকে উদ্ধার
আটকরা হলেন- চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার নরেন্দ্রপুর গ্রামের লুৎফর রহমান (৩৮), রাজশাহীর চর আষাড়িয়াদহ গ্রামের আসাদুল ইসলাম (৩৩), রাজশাহীর শ্রীরামপুর গ্রামের দেলোয়ার হোসেন (২৮), রাজশাহীর মালকামলা এলাকার হযরত আলী (২৮), যশোরের আড়সিংড়ি পুকুরিয়া গ্রামের আরিফ হোসেন (৩৮), রাজবাড়ির চরখি কমলা এলাকার আব্দুর রহমান (৩৭), মাগুরার নতুন গ্রামের সয়ন সিকদার (২২), কুড়িগ্রামের কালিরহাট হাজিপাড়ার আব্দুল মোতালেব (৪৭), একই গ্রামের মেহেদুল ইসলাম (২৩), মোকছেদুল হক (৩০), মুর্শিদা বিবি (৩৭), শরিফা বেগম (২৫), রমজান হক (৩), খুলনার ঘোপখালী এলাকার জান্নাতুল ফেরদৌস (২৬), ঢাকার নবীনগর এলাকার সুমি (২৫), একই এলাকার আব্দুল্লাহ (২ মাস), নড়াইলের কতুয়ালী গ্রামের রেহেনা বেগম (৫৫), ময়মনসিংহ জেলার গড়পয়ারী গ্রামের মারুফ হোসেনের দুই বছরের মেয়ে রুহি আক্তার।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ ৫৯ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া বলেন, “আটকরা সবাই বাংলাদেশি নাগরিক বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানাতে পেরেছি। তারা ২০১৫ থেকে ২০২৪ সালের বিভিন্ন সময় কাজের সন্ধানে ভারতে অনুপ্রবেশ করেন। এরপর তাদের ভারতীয় পুলিশ গ্রেপ্তার করে। পরে সেখানে তাদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়। সাজাভোগ শেষে ভারতীয় পুলিশ তাদেরকে ১১৯ ব্যাটালিয়ন বিএসএফের কাছে হস্তান্তর করে।”
তিনি আরো বলেন, “কাঞ্চান্টার বিএসএফ ক্যাম্পের সদস্যরা আটককৃতদের চামুচা ও চাঁনশিকারী বিওপির মধ্যবর্তী সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করায়। পরে বিজিবি তাদের আটক করে। আটককৃতদের ভোলাহাট থানায় হস্তান্তর করা হবে।”
এর আগে, চলতি বছরের ২৭ মে চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিভীষণ সীমান্ত দিয়ে ১৭ জন, ৩ জুন চাঁনশিকারী সীমান্ত দিয়ে আটজন, ১৮ জুন মাসুদপুর সীমান্ত দিয়ে ২০ জন এবং ১৪ আগস্ট চামুচা সীমান্ত দিয়ে ১৩ জনকে ঠেলে পাঠায় বিএসএফ। চাঁপাইনবাবগঞ্জের এই কয়েকটি সীমান্ত দিয়ে এখন পর্যন্ত ৭৭ জনকে ঠেলে পাঠিয়েছে বিএসএস।
ঢাকা/মেহেদী/মাসুদ