পাল্টাপাল্টি ডিম ছোড়া কি চলতে থাকবে
Published: 25th, September 2025 GMT
ডিম ছুড়ে মারা বা নিক্ষেপ। কারও প্রতি ক্ষোভ, রাগ বা অপমানের ‘প্রতিশোধ’ হিসেবে বাংলাদেশে রাজনৈতিক ও সামাজিক উত্তেজনায় ডিম ছুড়ে মারা হয়ে আসছে।
ডিম নিক্ষেপের ঘটনা সবচেয়ে বেশি চোখে পড়েছে গত বছর গণ–অভ্যুত্থানে সরকার পতনের পর আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী, সংসদ সদস্য এবং ওই সরকারের সময়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা গ্রেপ্তার হওয়ার পরে।
সর্বশেষ গত সোমবার বিকেলে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা আখতার হোসেনের ওপর আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীদের ডিম নিক্ষেপের ঘটনা ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী হিসেবে নিউইয়র্কে যাওয়া একজন রাজনৈতিক নেতাকে হেনস্তার এ ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন রাজনীতিবিদসহ বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ।
আরও পড়ুননিউইয়র্কে এনসিপি নেতা আখতারকে হেনস্তা করলেন আওয়ামী লীগ নেতা–কর্মীরা, ডিম নিক্ষেপ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫অবশ্য বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে ডিম, টমেটো ও পানির বোতল নিক্ষেপের ঘটনা নতুন নয়। এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক স ম আলী রেজা প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ দেশের প্রচলিত সহিংস রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে যেখানে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে শারীরিক আক্রমণের মতো দৃষ্টান্ত রয়েছে, সেখানে প্রতিবাদের এ ধরনকে সফট (নমনীয়) প্রতিবাদ হিসেবে বিবেচনা করা যায়। পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোতেও আমরা মাঝেমধ্যে এমন ঘটনা দেখে থাকি।’
অধ্যাপক আলী রেজা বলেন, মূলত আক্রান্ত ব্যক্তির প্রতি ক্ষোভ অথবা ঘৃণার কারণে অনেক ক্ষেত্রেই ভুক্তভোগীরা এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে থাকেন। আবার বিচারব্যবস্থার প্রতি অনাস্থার প্রতীক হিসেবে অনেকে এ রকম আচরণ করে থাকেন। দীর্ঘ মেয়াদে রাজনৈতিক শিক্ষার অভাবেও এমনটি ঘটে থাকে।
২০২৪ সালের ১৪ আগস্ট আনিসুল হক ও সালমান এফ রহমানকে যে প্রিজন ভ্যানে করে আদালতে নেওয়া হয়, সেটির ওপরে উঠে বিক্ষোভ করেন বিএনপিসমর্থক আইনজীবীরা। এ সময় তাঁরা গাড়িতে ডিম ছোঁড়েন। ঢাকার সিএমএম আদালত এলাকায়.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
নিউইয়র্ক সফর শেষে দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে যোগদান শেষে নিউইয়র্ক থেকে আজ বৃহস্পতিবার সকালে দেশে ফিরেছেন।
নয় দিনের নিউইয়র্ক সফর শেষে প্রধান উপদেষ্টা দেশে ফিরলেন। এমিরেটস এয়ারলাইনসের একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইট প্রধান উপদেষ্টা ও তাঁর সফরসঙ্গীদের নিয়ে আজ সকাল ৯টায় ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বাসসকে এই তথ্য জানান।
এর আগে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রাত ১১টা ১০ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টা ও তাঁর সফরসঙ্গীরা যুক্তরাষ্ট্রের জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন। জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি সালাহউদ্দিন নোমান চৌধুরী ও যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তারেক এমদাদ আরিফুল ইসলাম বিমানবন্দরে প্রধান উপদেষ্টাকে বিদায় জানান।
সফরকালে গত ২৬ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে ভাষণ দেন প্রধান উপদেষ্টা। ৩০ সেপ্টেম্বর তিনি জাতিসংঘ সদর দপ্তরে আয়োজিত ‘রোহিঙ্গা মুসলিম ও মিয়ানমারের অন্যান্য সংখ্যালঘুর পরিস্থিতিবিষয়ক’ উচ্চপর্যায়ের সম্মেলনের উদ্বোধনী সম্মেলনে বক্তব্য দেন।
২৯ সেপ্টেম্বর প্রধান উপদেষ্টা জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে বৈঠক করেন। এ ছাড়া প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তাঁর অবস্থান করা হোটেলে সাক্ষাৎ করেন জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপো গ্রান্ডি। একই দিন জাতিসংঘের স্বল্পোন্নত দেশ, স্থলবেষ্টিত উন্নয়নশীল দেশ এবং ক্ষুদ্র দ্বীপরাষ্ট্রপুঞ্জবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল রাবাব ফাতিমাও প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
নিউইয়র্ক সফরে মুহাম্মদ ইউনূস মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেওয়া সংবর্ধনায় যোগ দেন। তিনি ট্রাম্পকে সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।
এ ছাড়া মুহাম্মদ ইউনূস নেদারল্যান্ডস, পাকিস্তান, ভুটান, কসোভোসহ বেশ কয়েকটি দেশের রাষ্ট্র-সরকারপ্রধানের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন।
প্রধান উপদেষ্টা গত ২২ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্কের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেছিলেন।