ফরিদা পারভীনের স্মরণানুষ্ঠানে ‘চুল কেটে’ প্রতীকী প্রতিবাদ সংস্কৃতিকর্মীদের
Published: 26th, September 2025 GMT
প্রকাশ্যে জোর করে বিভিন্ন ব্যক্তির চুল কেটে দেওয়ার ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছেন ময়মনসিংহের সংস্কৃতিকর্মীরা। আজ শুক্রবার সকালে নগরের শিল্পাচার্য জয়নুল উদ্যান এলাকায় ব্রহ্মপুত্র নদের পারে এক অনুষ্ঠানের শুরুতে আয়োজকের চুল কেটে প্রতীকী এ প্রতিবাদ জানানো হয়।
অনুষ্ঠানটি মূলত ছিল সদ্য প্রয়াত কিংবদন্তি শিল্পী লালনকন্যাখ্যাত ফরিদা পারভীনের স্মরণে। অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ময়মনসিংহের সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘পরম্পরা’। অনুষ্ঠানের একটি ব্যানারে লেখা ছিল, ‘আল্লাহ তুই দেহিস: মাজার ভাঙার সংস্কৃতিতে আঘাত, মানুষের ওপর অত্যাচারকারীদের ঘৃণা।’
সম্প্রতি ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলার হালিম উদ্দিন আকন্দকে জোর করে চুল কেটে দেওয়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এলাকায় তিনি হালিম ফকির নামে পরিচিত। তাঁকে যেভাবে কয়েকজন লোক ধরে জোর করে চুল কেটে দেন, সেই ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে অনুষ্ঠানের শুরুতে আয়োজক কবি শামীম আশরাফের চুলও কেটে দেওয়া হয়। তিনি ‘পরম্পরা’ সাংস্কৃতিক সংগঠনের সভাপতি।
আরও পড়ুনজোর করে চুল কেটে দেওয়ার ভিডিও ভাইরাল, সেই বৃদ্ধ বললেন ‘হেই থাইক্কা কামকাজ করতে পারি না’২০ ঘণ্টা আগেব্রহ্মপুত্র পারের বরইতলায় আয়োজিত এ অনুষ্ঠান শুরু হয় সকাল ছয়টায়। শুভেচ্ছা বক্তব্যে কবি শামীম আশরাফ বলেন, ‘এই আয়োজনের মাধ্যমে প্রতিবাদ জানাই। আমরা দু-এক দিন ধরে একটি ঘটনা দেখছি, তিনজন মানুষ একটা মানুষকে জোর করে ধরে তাঁর লম্বা চুল কেটে দিচ্ছে। যখন চুল কেটেই দিচ্ছে, তখন লোকটি সর্বশেষ কথা বলে দিচ্ছেন, ‘‘হে আল্লাহ, তুই দেহিস’। এই যে “দেহিস”, এর ভেতর দিয়ে আমরা প্রতিবাদ জানাই। মাজার সংস্কৃতির ওপর যারা আঘাত করছে, শিল্প-সংস্কৃতির মানুষের ওপর যে অত্যাচার করা হচ্ছে, এর প্রতিবাদ জানাই।’
স্মরণসভা উপলক্ষে বরইগাছের মাঝে ফরিদা পারভীনের ছবি দিয়ে লাগানো হয়, ‘আমি অপার হয়ে বসে আছি’, গাছের ডালে ঝুলছে, ‘মিলন হবে কত দিনে’, ‘জাত গেল জাত গেল বলে’, ‘সময় গেলে সাধন হবে না’সহ বিভিন্ন গানের লাইন। গাছের নিচে সাদা কাপড় পেতে গাইছেন শিল্পীরা। অনুষ্ঠানে তরুণ প্রজন্মের শিল্পীরা গান করেন। চলে সকাল ১০টা পর্যন্ত।
অনুষ্ঠানে এমন একটি ব্যানার সাঁটিয়ে মাজার ভাঙার সংস্কৃতি ও মানুষের ওপর অত্যাচারকারীদের বিরুদ্ধে ঘৃণা জানানো হয়.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ন র জ র কর র ওপর
এছাড়াও পড়ুন:
ময়মনসিংহে গারো স্কুলছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগে মামলা, একজন গ্রেপ্তার
ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে গারো স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তির এক সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল রাত ১০টার দিকে জুগলি ইউনিয়নের নয়াপাগা গ্রাম থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ব্যক্তির নাম মিলন মিয়া (২১)। তিনি একই এলাকার বাসিন্দা ও পেশায় অটোরিকশাচালক। এর আগে গতকাল রাতেই মূল অভিযুক্ত আবুল বাশার (২৫) ও তাঁর সহযোগী মিলন মিয়াকে আসামি করে হালুয়াঘাট থানায় মামলা করেন ওই ছাত্রীর মা। তবে মামলার প্রধান আসামিকে আজ সকাল পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা যায়নি।
আরও পড়ুনহালুয়াঘাটে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ১৫ ঘণ্টা আগেপুলিশ, স্থানীয় বাসিন্দা ওই কিশোরীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ওই কিশোরী (১৫) নবম শ্রেণিতে পড়ে। গত সোমবার দুপুরে মিলন মিয়ার (২১) সঙ্গে সে একটি পার্কে বেড়াতে যায়। বিকেলের দিকে সেখান থেকে বাড়ি পৌঁছে দিতে কিশোরীটিকে বাশারের অটোরিকশায় তুলে দেন মিলন। এ সময় বাশার হালুয়াঘাট উপজেলা শহরে পূজামণ্ডপ দেখানোর কথা বলে মেয়েটিকে নিয়ে ঘুরতে থাকেন। একপর্যায়ে একটি নির্জন স্থানে নিয়ে স্কুলছাত্রীটিকে ধর্ষণ করেন। এরপর রাত ১১টার দিকে গামারীতলা এলাকায় তাকে নামিয়ে দিয়ে অটোরিকশাচালক চলে যান। পরে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে তাকে বাড়িতে নিয়ে যান।
খবর পেয়ে পুলিশ গতকাল রাতেই আবুল বাশারের (২৫) বাড়িতে অভিযান চালায়। তবে তাঁকে পাওয়া যায়নি। ওই সময় অটোরিকশাটি জব্দ করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
হালুয়াঘাট থাকার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুল ইসলাম বলেন, ‘প্রধান অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারে আমাদের চেষ্টা চলছে। তাঁর সহযোগী মিলনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মিলন জানিয়াছেন, মেয়েটি তাঁর বন্ধু।’
এদিকে হালুয়াঘাটে গারো ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী ছাত্র ও যুব সংগঠনগুলো। আজ বেলা তিনটায় ঢাকা শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে এ কর্মসূচি আয়োজন করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) কেন্দ্রীয় সদস্য সাবেক যুগ্ম মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) অলিক মৃ।
আজ বুধবার সকালে নিজের ফেসবুকে পেজে পোস্ট দিয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স ওই ঘটনার নিন্দা ও শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, মেয়েটি জীবনের সবচেয়ে বড় ক্ষতি ও বিপর্যয়ের সম্মুখীন। মেয়েটির মা বিএনপি পরিবারের সদস্য ও গত ৩ সেপ্টেম্বর বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর মিছিলেও অন্য গারো নারীদের সঙ্গে অংশ নিয়েছেন। অবশ্যই এই ধর্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হতে হবে।