নেপালে নির্বাচনে লড়াইয়ের ঘোষণা গণ–আন্দোলনের নেতা গুরুংয়ের, গড়ছেন দল
Published: 27th, September 2025 GMT
নেপালে কে পি শর্মা অলির নেতৃত্বাধীন সরকারের বিরুদ্ধে জেন-জি প্রজন্মের তরুণদের আন্দোলনের নেতা ঘোষণা দিয়েছেন, দেশে আগামী মার্চে অনুষ্ঠেয় সাধারণ নির্বাচনে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। জনগণের সরকার গঠনের জন্য তাঁরা ‘শেষ পর্যন্ত লড়াই করবেন’।
তরুণ নেপালিদের আন্দোলনে দুই দিনের মধ্যে অলি সরকারের পতন হয়েছিল।
স্টার্ট হেয়ারের সান্ড্রা গাথম্যানকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আন্দোলনের নেতা সুদান গুরুং বলেন, প্রচলিত রাজনৈতিক দলের পরিবর্তে ‘পরিবর্তনের জন্য আন্দোলন’ গড়ে তুলতে দেশজুড়ে তাঁরা সমর্থকদের সংগঠিত করার কাজ করছেন।
‘স্বার্থপর’ ও ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’ সাবেক সরকার ও রাজনীতিকদের বিষয়ে গুরুং বলেন, ‘তাঁরা আমাদের রাজনীতিতে টেনে এনেছেন। যদি তাঁরা রাজনীতিই চান, তবে তা–ই পাবেন। আমরা পরবর্তী নির্বাচনে লড়ব। কারণ, আমরা এখন পিছু হটব না।’
৩৬ বছর বয়সী গুরুং মূলত নেপালের তরুণ প্রজন্মের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা গণ-অভ্যুত্থানের পরিচিত মুখ। ওই আন্দোলনে তাঁকে নেতৃত্বের ভূমিকায় দেখা গেছে।
সরকার ফেসবুক, এক্স, ইউটিউবসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বার্তা আদান-প্রদানের প্লাটফর্ম বন্ধ করে দিলে তরুণেরা প্রতিবাদে রাজপথে নামেন। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, এসব প্রতিষ্ঠান সরকারের বেঁধে দেওয়া সময়ে নিবন্ধন ও নজরদারির অধীন আসতে ব্যর্থ হয়েছে।
শিগগিরই এই বিক্ষোভ দুর্নীতি, রাষ্ট্রীয় সহিংসতা ও বিচারহীনতার বিরুদ্ধে গণ–আন্দোলনে রূপ নেয়। বিক্ষোভ চলাকালে কয়েক ডজন তরুণ নিহত ও হাজার হাজার মানুষ আহত হন।
গুরুং বিশ্বাস করেন, তাঁরা দেশ পরিচালনার জন্য প্রস্তুত। স্বেচ্ছাসেবকেরা আইন ও যোগাযোগ কমিটি গঠন করছে এবং ডিসকর্ড ও ইনস্টাগ্রামের মতো প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে সারা দেশ থেকে নীতিগত দাবি সংগ্রহ করছে। বিক্ষোভের সময় সংগঠিত হতে এসব প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করা হয়েছিল।
এই আন্দোলনের নেতা বলেন, তাঁদের দল ‘নেপালের প্রতিটি মানুষের কণ্ঠস্বর যাতে শোনা যায়’, তা নিশ্চিত করতে কাজ করছে।
‘ভয় পাই না’গুরুংয়ের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সম্ভাবনা কম। বরং তিনি ‘দলবদ্ধভাবে’ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার পরিকল্পনা করছেন।
গুরুং বলেন, ‘আমি যদি কেবল এককভাবে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করি, তাহলে আমরা তরুণদের এই শক্তিকে কাজে লাগাতে পারব না। একসঙ্গে আমরা আরও শক্তিশালী।’
এই আন্দোলনের নেতারা দুর্নীতিবিরোধী এজেন্ডার বাইরেও কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। তাঁরা নেপালের পর্যটন খাতকে চাঙা করতে এবং ‘বাইরের হস্তক্ষেপ’ ছাড়াই প্রতিবেশী ভারত ও চীনের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করার পরিকল্পনা করছেন।
গুরুং বলেন, ‘আমাদের তাদের সম্মান করতে হবে, তাদেরও আমাদের সম্মান করতে হবে।’
নেপালের গণ–আন্দোলনের এই নেতা আগামী মার্চের নির্বাচনে পুরোনো রাজনৈতিক নেতাদের দেখতে চান না। তিনি বিক্ষোভকারীদের হত্যা ও দুর্নীতির দ্রুত তদন্ত করতে অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কারকির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
গুরুং বলেন, ‘আমরা দেখতে চাই, তদন্ত সঠিকভাবে ও সময়মতো সম্পন্ন হয়েছে, যাতে তাঁরা (পুরোনো নেতারা) নির্বাচনে অংশ নিতে না পারেন।’
নিজে প্রধানমন্ত্রী হতে চান কি না, জানতে চাইলে গুরুং বলেন, ‘আমি বলব না যে আমি এখনই সঠিক ব্যক্তি। কিন্তু জনগণ যদি আমাকে বেছে নেয়, আমি অবশ্যই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করব।’
গুরুং তাঁকে চুপ করিয়ে দেওয়ার চেষ্টার কথাও বলেন। তিনি বলেন, ‘অনেকে আমাকে হতাশ করার চেষ্টা করেছেন। তাঁরা আমাকে অনুসরণ করার চেষ্টা করেছেন। তাঁরা আমাকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করেছেন।’
গুরুং বলেন, ‘আমি ভয় পাই না.
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কোনো চাঁদাবাজ দলের ক্ষমতায় যাওয়ার সিঁড়ি হবো না: চরমোনাই পীর
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও পীর সাহেব চরমোনাই মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেছেন, ‘‘বিদেশিদের প্রেসক্রিপশনে বাংলাদেশের মানুষ আর চলতে চায় না। স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরেও মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। তাই মানুষ ইসলামকে ক্ষমতায় দেখতে চায়। এজন্য দেশপ্রেমিক ইসলামিক দলগুলো ঐক্যবদ্ধ হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আগামীতে ইসলামের পক্ষে ভোটের বাক্স হবে একটি। আমরা ইসলামী দলগুলো আর কোনো চাঁদাবাজ দলের ক্ষমতায় যাওয়ার সিঁড়ি হবো না।’’
শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ লক্ষ্মীপুর জেলা শাখা আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রেজাউল করীম বলেন, ‘‘একটি দল আছে, যারা পূর্বে ক্ষমতায় গিয়ে দেশকে একাধিকবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন করেছিল। চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, দলবাজিসহ নানা অপরাধ করেছে। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তীও করছে। আবারো ক্ষমতায় যেতে ওরা মরিয়া হয়ে উঠেছে। এ দেশের ছাত্র-জনতা জীবন দিয়ে ফ্যাসিস্ট বিদায় করেছে পুরনো বন্দোবস্তর জন্য নয়। নতুন সিস্টেম ও নতুন কাউকে ক্ষমতায় দেখতে চায়। কারণ দেশের মানুষ গত ৫৩ বছর বিএনপি, আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির ক্ষমতা দেখেছে।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘দেশের মানুষ পুরনো সিস্টেম আর দেখতে চায় না। পুরনো বউকে নতুন কাপড়ে সাজিয়ে এনে জনগণের সামনে উপস্থাপন করলে জনগণ আর মেনে নেবে না। তাই নির্বাচনের পূর্বে গণভোট দিতে হবে। পিআর কার্যকর করতে হবে। জুলাই সনদের আইনিভিত্তি নির্বাচনের পূর্বেই দিতে হবে। বিদেশি অথবা দেশের কোনো অপশক্তির ইশারায় যদি এগুলো কার্যকর করা না হয়। তাহলে, ইসলামী আন্দোলন দেশের মানুষকে নিয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে।’’
ঢাকা/জাহাঙ্গীর/রাজীব