প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে কমিশন বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করেছে। ইতিমধ্যে তাঁরা প্রায় ২১ লাখ মৃত ভোটারকে তালিকা থেকে বাদ দিয়েছেন।

আজ রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে নির্বাচন কমিশন সচিবালয় সম্মেলন কক্ষে এক সংলাপে তিনি এ তথ্য জানান। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের উদ্যোগে এই সংলাপের আয়োজন করা হয়।

সিইসি বলেন, 'আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে আমরা অনেক কাজ ইতিমধ্যে সম্পন্ন করতে পেরেছি। সবচেয়ে বড় কাজ যেটা করতে পেরেছি সেটা হচ্ছে, বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা । এটা একটা বিশাল কাজ। আমরা প্রায় ২১ লক্ষ মৃত ভোটার কর্তন করতে পেরেছি।'

নির্বাচন কমিশন নয়টি আইন সংশোধন করেছে উল্লেখ করে সিইসি বলেন, 'মোটামুটি নির্বাচন অনুষ্ঠানটা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য যা যা করা দরকার, এ ক্ষেত্রে আমরা অনেক এগিয়ে গিয়েছি।’

অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত সংস্কার কমিশন নির্বাচন কমিশনের অনেক কাজ এগিয়ে রেখেছে বলেও মন্তব্য করেন সিইসি।

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রবাসী ভোটার, সরকারি কর্মকর্তা, নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা রিটার্নিং কর্মকর্তারা কিংবা হাজতে থাকা ব্যক্তিরা ভোট দিতে পারবেন বলে জানান সিইসি। তিনি বলেন, 'অনেক কিছু শাস্ত্রে ছিল বাস্তবে ছিল না, যেমন পোস্টাল ব্যালট.

.. দেশের ভেতরে নির্বাচনের দিন নির্বাচন নিয়ে ১০ লাখ লোক কাজ করেন। তারা ভোট দিতে পারেন না৷ সবার ভোটের ব্যবস্থা হবে। যারা হাজতে আছে, ভোট দেওয়ার সুযোগ পান না। আমরা তাদের ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা করব।'

নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু সুন্দর এবং বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলেও উল্লেখ করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাৎকার শুধু আনুষ্ঠানিকতা হিসেবে না দেখে তাদের পরামর্শ নিতে আশ্বাস দেন সিইসি।

সংলাপে অংশ নেন সাবেক কূটনৈতিক এম হুমায়ুন কবির। নির্বাচন কমিশনকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আপনাদের সফলতা শুধু নির্বাচন কমিশনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং এটা বাংলাদেশের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। তিনি আগামী সংসদ নির্বাচনকে দেশের জন্য টার্নিং পয়েন্ট বলে উল্লেখ করেন।

এম হুমায়ুন কবির বলেন, ‘আমরা যে স্বপ্নের বাংলাদেশকে দেখছি ভবিষ্যতে, সেই স্বপ্নের জায়গাটাও ভিন্ন হচ্ছে। কারণ তরুণ প্রজন্ম ভিন্নভাবে বাংলাদেশকে দেখবে ভবিষ্যতে। কাজেই তরুণ প্রজন্মের স্বপ্নের সঙ্গে আমরা কীভাবে আমাদের কাজগুলো করব, সেটাও এই নির্বাচনে একটা ধাপ হিসেবে কাজ করবে।'

বর্তমান তরুণ প্রজন্ম অনেক বেশি আধুনিক বলেও উল্লেখ করেন এম হুমায়ুন কবির। তিনি বলেন, 'অনেক বেশি তথ্য তাদের কাছে আছে। তারা অনেক বেশি দায়বদ্ধ এবং স্বচ্ছ ব্যবস্থাপনা দাবি করে। তারা এটার জন্য সংগ্রাম করবে।'

বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশের মানুষ একজন অপরজনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত আছে বলে উল্লেখ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণমাধ্যম ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস। আগামী নির্বাচনে পুরো পৃথিবী বাংলাদেশের দিকে তাকিয়ে থাকবে উল্লেখ করে রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, 'এই পরিস্থিতিতে নির্বাচন কমিশনকে সত্যিকারার্থে অনেক বেশি স্বাধীন ও স্বচ্ছ হতে হবে।'

অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে দুর্নীতি ও ঘুষ বাণিজ্য আগের অবস্থায় আছে। এমন পরিস্থিতিতে কমিশনকে নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। এই অধ্যাপক নির্বাচন কমিশনকে কয়েকটি বিষয়ে বাস্তবায়নের আহ্বান জানান। এর মধ্যে নিরপেক্ষ প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা, বিশ্বাসযোগ্য ভোটার তালিকা, নির্বাচনী আচরণবিধি সত্যিকারভাবে বাস্তবায়ন, রাজনৈতিক দলগুলোর ন্যায়ানুগ অংশগ্রহণ, নাগরিক সমাজ ও নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের অন্তর্ভুক্ত করা এবং নারী ও সংখ্যালঘুদের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করা প্রভৃতি।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ ইয়াহইয়া আখতার বলেন, 'বর্তমান নির্বাচন কমিশনের সবচেয়ে ভালো দিক হলো তাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই।'

পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের বিরোধিতা করে মুহাম্মদ ইয়াহইয়া আখতার বলেন, 'কোনো নতুন সিস্টেম সংযোগ করতে গেলে তার আগে অনেক ধরনের এক্সপেরিমেন্ট করে নিতে হয়। অনেক রকম পরীক্ষা নিরীক্ষার পরে সেটা কতটা ফলপ্রসূ হবে, সেটা চিন্তা করার পর নতুন সিস্টেম ইন্ট্রুডিউস করা উচিত।'

বক্তব্যে তিনি রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি কোন নির্দিষ্ট প্রতীকের জন্য কমিশনকে চাপ না দেওয়ার অনুরোধ করেন।

ইসির আমন্ত্রণে সংলাপ অংশ নেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টার রাশেদা কে চৌধুরী, জাহাঙ্গীরনগর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আল মাহমুদ হাসানউজ্জামান, নিরাপত্তা বিশ্লেষক মো. মাহফুজুর রহমান, অধ্যাপক আব্দুল ওয়াজেদ, কবি মোহন রায়হান, পুলিশ সংস্কার কমিশনের মোহাম্মদ হারুন চৌধুরী, শিক্ষার্থী প্রতিনিধি জারিফ রহমান এবং টিআইবি পরিচালক মোহাম্মদ বদিউজ্জামান প্রমুখ।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অন ক ব শ ম হ ম মদ র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

আজ মুক্তি পাচ্ছে নতুন দুই সিনেমা, হলে আছে আরও ৭ সিনেমা

কুয়াকাটায় একদল ব্যাচেলর
করোনার সময় দীর্ঘদিন ঘরবন্দী ছিল মানুষ। বিধিনিষেধ শিথিল করা হলে কুয়াকাটায় ঘুরতে যায় একদল ব্যাচেলর। সেখানে নারীদের একটি দলের সঙ্গে তাদের দেখা হয়ে যায়। তাদের কেন্দ্র করেই রোমান্টিক, কমেডি ও থ্রিলারের মিশেলে তৈরি হয়েছে নাসিম সাহনিকের ‘ব্যাচেলর ইন ট্রিপ।’

সিনেমাটির শুটিং শুরু হয় ২০২২ সালের শেষ দিকে। প্রথম লটে এক সপ্তাহের মতো শুটিং করার কথা থাকলেও বাজেটের সমস্যায় দুই দিন পর শুটিং টিমকে রেখেই ঢাকায় চলে গেছেন পরিচালক—এমন একটা অভিযোগ সে সময় এনেছিলেন সিনেমার নায়িকা শিরিন শিলা। পরে তিনি আরও জানান, নায়ক-নায়িকাসহ শিল্পীদের থাকা, খাওয়া—সবকিছুতেই অব্যবস্থাপনা ছিল। এতে ইউনিটে অসন্তোষ তৈরি হয়। সে সময় কলাকুশলীরা ধরেই নিয়েছিলেন, এ সিনেমার শুটিং আর হবে না। দ্বন্দ্ব মিটিয়ে পরের বছর শেষ হয় শুটিং। ডাবিং ও পোস্টের কাজ শেষ করতে লেগে যায় আরও এক বছর।

সিনেমায় জুটি হয়েছেন শিরিন শিলা ও কায়েস আরজু। ছবি: কায়েসের সৌজন্যে

সম্পর্কিত নিবন্ধ