Prothomalo:
2025-10-03@07:06:18 GMT

তিন লাখ গুলি ছুড়েছিল পুলিশ

Published: 29th, September 2025 GMT

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় পুলিশ এলএমজি, এসএমজি, চায়নিজ রাইফেল, শটগান, রিভলবার, পিস্তলসহ বিভিন্ন ধরনের মারণাস্ত্র ব্যবহার করেছে। এসব মারণাস্ত্র থেকে সারা দেশে ৩ লাখ ৫ হাজার ৩১১টি গুলি ছোড়া হয়েছিল। এর মধ্যে শুধু ঢাকাতেই ৯৫ হাজার ৩১৩টি গুলি ছুড়েছিল পুলিশ।

গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে করা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো.

আলমগীর আজ সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ দেওয়া জবানবন্দিতে এই তথ্য উল্লেখ করেন। তিনি এই মামলার ৫৪তম ও সর্বশেষ সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দিচ্ছেন। গত রোববার থেকে তাঁর জবানবন্দি রেকর্ড করা শুরু হয়। আগামীকাল মঙ্গলবারও তাঁর জবানবন্দি রেকর্ড করা হবে।

বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ তদন্ত কর্মকর্তার জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

পুলিশের ব্যবহার করা গুলি ও অস্ত্রের বিষয়ে জবানবন্দিতে তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীর বলেন, ছাত্র-জনতার ওপর ব্যবহার করা অস্ত্র ও গুলির বিষয়ে তিনি পুলিশ সদর দপ্তর থেকে ২১৩ পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদন পান। সেই প্রতিবেদনে পুলিশের ব্যবহার করা মারণাস্ত্র ও গুলির বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।

র‍্যাবের সদর দপ্তর থেকে হেলিকপ্টার ব্যবহার–সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাওয়ার কথাও জবানবন্দিতে উল্লেখ করেন তদন্ত কর্মকর্তা।

লক্ষ্য নির্ধারণ করে হত্যা

জবানবন্দিতে তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীর বলেন, তদন্তকালে সংগৃহীত তথ্য, জব্দ করা আলামত, পত্রপত্রিকা, ভিডিও ফুটেজ, অডিও ক্লিপ, বিশেষজ্ঞ রিপোর্ট, বিভিন্ন প্রতিবেদন, শহীদ পরিবারের সদস্য, আন্দোলনে আহত ব্যক্তি এবং মামলার আসামি পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি পর্যালোচনা করা হয়েছে। পর্যালোচনায় উঠে এসেছে, আন্দোলন চলাকালে ব্যাপক মাত্রায় ও পদ্ধতিগতভাবে এবং লক্ষ্য নির্ধারণ করে নিরীহ-নিরস্ত্র ছাত্র-জনতাকে আক্রমণের মাধ্যমে দেড় সহস্রাধিক মানুষকে হত্যা করা হয়েছে।

মো. আলমগীর বলেন, প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করে হাজারো ছাত্র-জনতাকে মারাত্মক জখম করা হয়েছে, পাশাপাশি অঙ্গহানি করা হয়েছে। এ ছাড়া বেআইনি আটক, নির্যাতন, মিথ্যা মামলা, অপহরণ, মৃত ও জীবিত মানুষকে একত্রে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসা, মৃত মানুষের জানাজা ও শেষকৃত্যে বাধা দেওয়া হয়েছে।

তদন্ত কর্মকর্তা জবানবন্দিতে বলেন, মৃত্যুর কারণ পরিবর্তন করতেও সংশ্লিষ্টদের বাধ্য করা হয়েছে। মৃত ব্যক্তিদের পরিবারকে লাশ শনাক্তের সুযোগ না দিয়ে বেওয়ারিশ আখ্যা দিয়ে দ্রুত লাশ দাফনে বাধ্য করা হয়েছে। অনেকের কাছ থেকে জোর করে স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়েছে। হাসপাতালে আহত ব্যক্তিদের ওপর হামলা করা হয়েছে। আন্দোলনরত ছাত্রীদের ওপর যৌন নিপীড়নসহ অন্যান্য মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করা হয়েছে।

গ্রেনেড নিক্ষেপ করার তথ্য

ট্রাইব্যুনালে দুটি ভিডিও প্রতিবেদন প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করা হয়। একটি প্রতিবেদনের বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীর বলেন, যাত্রাবাড়ী থানার সামনে নিরীহ-নিরস্ত্র অসংখ্য ছাত্র-জনতাকে বিনা উসকানিতে পুলিশ গুলি করে হত্যা করেছে। তাঁদের ওপর গ্রেনেড নিক্ষেপ করার দৃশ্যও দেখা গেছে ভিডিওতে।

গ্রেনেড নিক্ষেপ করার যে তথ্য জবানবন্দিতে উল্লেখ করা হয়েছে, এ বিষয়ে পরে প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ট্রাইব্যুনালে প্রদর্শন করা ভিডিওতে দেখা গেছে, আন্দোলনের সময় গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হয়েছে। আন্দোলনের সময় বোমা নিক্ষেপের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। এই সিদ্ধান্ত কার্যকরও করা হয়েছিল।

ইনুর বিরুদ্ধে করা মামলায় শুনানি ১৪ অক্টোবর

গণ–অভ্যুত্থানের সময় কুষ্টিয়ায় ছয়জনকে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের আরেক মামলায় জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনুর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের বিষয়ে আগামী ১৪ অক্টোবর দিন ধার্য করেছেন ট্রাইব্যুনাল।

বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-২-এ এই মামলার বিচার চলছে। এই ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারক মো. মঞ্জুরুল বাছিদ ও বিচারক নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ র ন ড ন ক ষ প কর র ব যবহ র কর ছ ত র জনত ন র সময় র ওপর সদস য অপর ধ

এছাড়াও পড়ুন:

স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করা নিয়ে বিতণ্ডা, কুপিয়ে হত্যার অভিযোগে প্রথম স্ত্রী আটক

ফেনীতে দ্বিতীয় বিয়ে নিয়ে কলহের জেরে স্বামীকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগে স্ত্রীকে আটক করেছে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ফেনীর দাগনভূঞার পৌর এলাকার জগতপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত ব্যক্তির নাম আলমগীর হোসেন (৪৫)। তিনি একই গ্রামের গফুর ভান্ডারি বাড়ির আবদুল গফুরের ছেলে। পেশায় তিনি ট্রাকচালক ছিলেন। আটক স্ত্রীর নাম খালেদা ইয়াসমিন (৩৮)।

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্র জানায়, ২০ বছর আগে পারিবারিকভাবে আলমগীরের সঙ্গে খালেদা ইয়াসমিনের বিয়ে হয়ছিল। তাঁদের এক ছেলে রয়েছে। তবে গত কয়েক মাস আগে নারায়ণগঞ্জ জেলায় আরেকটি বিয়ে করেন আলমগীর। এসব নিয়ে তাঁদের মধ্যে দ্বন্দ্ব ছিল। গতকাল দিবাগত রাত তিনটার দিকে নারায়ণগঞ্জ থেকে আলমগীর বাড়িতে আসেন। এরপর আজ দুপুরে তাঁর প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে দ্বিতীয় বিয়ে নিয়ে বিতণ্ডা হয়।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বাগ্‌বিতণ্ডার একপর্যায়ে ইয়াসমিন তাঁর স্বামীকে কুপিয়ে জখম করে। এতে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। পরে স্বজনেরা ঘরের শৌচাগারের ভেতর আলমগীরের মরদেহ দেখতে পান। এরপর পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।

জানতে চাইলে নিহত ব্যক্তির ছেলে কামরুল ইসলাম (১৬) প্রথম আলোকে বলে, নতুন বিয়ে করার পর তাঁর বাবা তাঁদের ভরণপোষণ দিতেন না। এ ঘটনার সময় তিনি বাড়িতে ছিলেন না। দুপুরের দিকে খবর পেয়ে বাড়িতে আসেন।

জানতে চাইলে দাগনভূঞা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওয়াহেদ পারভেজ বলেন, নিহত ব্যক্তির শরীরে একাধিক জখমের চিহ্ন রয়েছে। তাঁকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। অভিযুক্ত স্ত্রীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পারিবারিক কলহের জের ধরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আঁখির অতিথি সৈয়দ আবদুল হাদী
  • দেবী দুর্গা শক্তি ও সাহসের মূর্ত প্রতীক: মির্জা ফখরুল 
  • কাশিপুরে বিএনপি নেতা আলমগীর ও সাইদুর গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা সংঘর্ষের আশঙ্কা
  • হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে ৪১ জেলার ৪৩৮টি স্থানে
  • স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করা নিয়ে বিতণ্ডা, কুপিয়ে হত্যার অভিযোগে প্রথম স্ত্রী আটক