দেশের ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্প খাতের (সিএমএসএমই) রপ্তানি সম্ভাবনা কাজে লাগাতে ব্র্যান্ডিং ও বাজার সম্প্রসারণকে জরুরি বলে মনে করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা। উদ্যোক্তারা বলেন, মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) এসএমই খাতের অবদান ২৮ শতাংশ হলেও শ্রীলঙ্কা, ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়ায় এ খাতের অবদান ৫০ শতাংশের কাছাকাছি। অর্থায়ন সংকট, অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতা, প্রযুক্তি ব্যবহার ও দক্ষতার ঘাটতি, নীতি-সহায়তার অভাব এবং বৈশ্বিক বাজারে প্রবেশের জটিলতা—এসব কারণে খাতটির সম্ভাবনা পুরোপুরি কাজে লাগানো যাচ্ছে না।

আজ সোমবার রাজধানীর ঢাকা চেম্বার ভবনে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘সিএমএসএমই খাতের ব্র্যান্ডিং ও বিপণন চ্যালেঞ্জ: রপ্তানির সম্ভাবনা’ বিষয়ক ফোকাস গ্রুপ আলোচনায় এসব কথা উঠে আসে। অনুষ্ঠানে শিল্পসচিব মো.

ওবায়দুর রহমান প্রধান অতিথি ছিলেন। বিসিক চেয়ারম্যান মো. সাইফুল ইসলাম ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হাসান আরিফ বিশেষ অতিথি ছিলেন।

ডিসিসিআই সভাপতি তাসকিন আহমেদ মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করে বলেন, দেশের মোট শিল্প খাতের প্রায় ৯০ শতাংশ সিএমএসএমই, যেখানে প্রায় ১ কোটি ১৮ লাখ মানুষ কাজ করছেন। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের অতিরিক্ত শুল্কারোপের কারণে পোশাক খাতে রপ্তানি খরচ বাড়বে। এ অবস্থায় স্থানীয় উদ্যোক্তাদের খরচ কমানো ও সক্ষমতা বাড়াতে উদ্ভাবনী কার্যক্রমে জোর দিতে হবে। তিনি বলেন, জটিল আমদানি-রপ্তানি প্রক্রিয়া, কমপ্লায়েন্সের অভাব, উচ্চ উৎপাদন খরচ ও আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার দুর্বলতা উদ্যোক্তাদের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ। তাই সনদ প্রদান, নতুন প্রযুক্তি প্রশিক্ষণ, মানোন্নয়ন, আন্তর্জাতিক বাজারে ব্র্যান্ডিং, সমন্বিত নীতি সহায়তা এবং ক্লাস্টারভিত্তিক উন্নয়নের ওপর জোর দিতে হবে।

শিল্পসচিব মো. ওবায়দুর রহমান বলেন, ব্র্যান্ডিং ও মার্কেটিং ছাড়া সিএমএসএমই খাত কাঙ্ক্ষিত রপ্তানি প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পারবে না। তবে বাণিজ্য সম্প্রসারণে বাংলাদেশের বিদেশি মিশনগুলোকে আরও গতিশীল হতে হবে। কিছু কাজ করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। যেমন ২০১৯ সালের এসএমই নীতিমালাকে হালনাগাদ করা হচ্ছে, যাতে অনলাইন ব্যবসায় ট্রেড লাইসেন্সে বাসার ঠিকানা ব্যবহারের সুযোগ রাখা হতে পারে। ব্র্যান্ডিংয়ের পাশাপাশি মান ও মেধা স্বত্ব নিশ্চিত করা গেলে রপ্তানি বাড়বে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

বিসিক চেয়ারম্যান মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও বিসিক শিল্পপার্ক স্থাপন, আর্থিক সহায়তা ও প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। তবে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশের জন্য পণ্যের প্যাকেজিং আকর্ষণীয় করা দরকার। উদ্যোক্তাদের জন্য ক্যাটাগরিভিত্তিক তথ্যভান্ডার তৈরির কাজও চলছে। ইপিবি ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হাসান আরিফ বলেন, দেশের ইতিবাচক ব্র্যান্ডিংয়ের পাশাপাশি ভোক্তাদের মানসিকতার পরিবর্তন জরুরি। ইপিবি শিগগিরই সিএমএসএমই হেল্প ডেস্ক ও রপ্তানি ইকো-সিস্টেম চালু করবে। আগামী বছর ব্রাজিলে বাণিজ্য মেলায় বাংলাদেশের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে কাজ করা হচ্ছে।

আলোচনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের অতিরিক্ত পরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, জামানত ছাড়া ৫ লাখ টাকা ঋণ সহায়তার সুযোগ রয়েছে। তিনি রপ্তানি পণ্যের জন্য লোগো তৈরি, প্রচারণা ও আন্তর্জাতিক অংশীদারত্ব বৃদ্ধির ওপর জোর দেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স এমএসএমই উদ য ক ত

এছাড়াও পড়ুন:

মোহাম্মদপুরে বিশেষ অভিযানে গ্রেপ্তার ২৯

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের কয়েকটি অপরাধপ্রবণ এলাকায় বুধবার দিনভর বিশেষ অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন অপরাধে জড়িত অভিযোগে ২৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে তিনটি ছুরি, দুটি ধারালো চাকু, দুটি লোহার রড, একটি সাইকেল ও ৩০ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার করা হয়।

বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে নিয়মিত মামলা, মাদক মামলা, পরোয়ানাভুক্ত আসামি ও বিভিন্ন অপরাধে জড়িত অপরাধী রয়েছে।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন হীরা (১৯), রফিক (২১), আবদুর রহমান (৩৯), নাবিদ হাসান ওরফে চয়ন (২৬), খোকন (৩১), মনসুর (৩৫), জুয়েল (৩২), সানজু (২২), মিলন (৪২), শাওন (৩৬), নোয়াজ শরীফ (২৮), সেলিম (৩৪), আসাদুজ্জামান ওরফে ইমন (২৩), আনোয়ার হোসেন (৩৬), সজল (৩০), বরকত গাজী (২৮), জুয়েল (৩৮), আরমান (৩০), বাদল (৩৮), কোরবান (২৮), নয়ন (২৭), মাসরুফ (২৩), আল আমিন (২৭), রাকিব (১৮), মিলন (২৫), ওয়াজিদ (৩৬), এরশাদ (২৫), ছালাম ওরফে সামাদ (৩৭) ও দিলসার (৩০)।

সম্পর্কিত নিবন্ধ