আওয়ামী লীগ ফিরলে দায়ী থাকবেন ইউনূস ও তাঁর উপদেষ্টা পরিষদ: রাশেদ খান
Published: 29th, September 2025 GMT
অন্তর্বর্তী সরকার আওয়ামী লীগকে নির্মূল না করে পুনর্বাসন করেছে বলে অভিযোগ করেছেন গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান। তিনি বলেছেন, সরকারের দুর্বলতায় আওয়ামী দোসররা সাহস পেয়ে যাচ্ছে। প্রতিদিনই আওয়ামী লীগের মিছিল বড় হচ্ছে। এই দেশে আবারও আওয়ামী লীগ ফিরলে দায়ী থাকবেন অধ্যাপক ইউনূস ও তাঁর উপদেষ্টা পরিষদ।
আজ সোমবার বিকেলে রাজধানীর বিজয়নগরে গণ অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রাশেদ খান এসব কথা বলেন। গত রোববার রাতে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বড়বাড়ি এলাকায় বাংলাদেশ শ্রমিক অধিকার পরিষদের সভাপতি আবদুর রহমান সন্ত্রাসীদের হামলায় গুরুতর আহত হন। হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবিতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে রাশেদ খান বলেন, গত ২৯ আগস্ট গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হকের ওপর হামলা হয়েছে। নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরের সামনে এনসিপি নেতা আখতার হোসেন ও তাসনিম জারাকে অপদস্ত করা হয়েছে। সেখানে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে খারাপ আচরণ করা হয়েছে।
রাশেদ খান আরও বলেন, গতকাল (রোববার) রাতে গণ অধিকার পরিষদের সহসভাপতি ও শ্রমিক অধিকার পরিষদের সভাপতি আবদুর রহমানকে গুম করার চেষ্টা এবং হামলা করা হয়েছে। অন্যদিকে পাহাড়ে অশান্তি চলছে। এগুলো নিছক কোনো ঘটনা নয়। বরং প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত ও আওয়ামী লীগের সহযোগিতায় দেশকে অস্থিতিশীল করে নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। নুরুল হকের ওপর হামলার পরে যদি অপরাধীরা গ্রেপ্তার হতো, তাহলে তারা ষড়যন্ত্র করার সাহস করত না।
বিএনপি-জামায়াত তকমা দিয়ে গত ১৬ বছর যাদের বঞ্চিত করা হয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকার তাদের আরও বঞ্চিত করেছে অভিযোগ করে গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এখন সরকারের উপদেষ্টারা বলছে, সব বিএনপি-জামায়াত ভাগ করে নিয়েছে। তাহলে জনগণের ভাগ কোথায়? এভাবে দায় এড়ানো ঠিক নয়।
সংবাদ সম্মেলনে গণ অধিকার পরিষদের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র হাসান আল মামুন বলেন, আওয়ামী লীগের শাসনামলে যেভাবে সাদাপোশাকে সাধারণ মানুষকে ধরে নিয়ে যাওয়া হতো, ঠিক একইভাবে শ্রমিক অধিকার পরিষদের সভাপতি আবদুর রহমানকে গাজীপুর থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে হামলা করা হয়। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। কারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত তা–ও জানা যায়নি।
এ সময় গণ অধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য শাকিল উজ্জামান, আবদু জাহের, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জিলু খান, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক ইলিয়াস মিয়া, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক শহিদুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
দলের দুই পক্ষের বিরোধ মেটাতে যাচ্ছিলেন সালিস বৈঠকে, পথে দুর্ঘটনায় মৃত্যু বিএনপি নেতার
দলের দুটি পক্ষের মধ্যে হাতিহাতি ও সংঘর্ষের ঘটনায় বিরোধ মীমাংসায় ডাকা হয়েছিল সালিস বৈঠক। সে বৈঠকে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন ফেনীর পরশুরামের বিএনপি নেতা পারভেজ মজুমদার (৫৮)। পথে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান তিনি। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন তাঁর এক সহযোগী।
পারভেজ মজুমদার ফেনীর পরশুরাম উপজেলার মির্জানগর ইউনিয়নের নিজকালিকাপুর গ্রামের সাদেক মজুমদারের ছেলে। তিনি উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ছিলেন।
পুলিশ ও নিহত ব্যক্তির পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রোববার দুপুরে নিজকালিকাপুর গ্রামে নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ও মারামারির ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় উভয় পক্ষের চারজন আহত হন। সংঘর্ষের ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরশুরাম উপজেলা সদরে সন্ধ্যায় একটি সালিস বৈঠকে উদ্যোগ নেওয়া হয়। সালিসে যোগ দিতে স্থানীয় বিএনপি নেতা পারভেজ মজুমদার ও তাঁর সহযোগী মোহাম্মদ হারুন মোটরসাইকেলে নিজকালিকাপুর থেকে পরশুরাম যাচ্ছিলেন। তাঁদের বহন করা মোটরসাইকেলটি সুবার বাজার-পরশুরাম সড়কের কাউতলী রাস্তার মাথায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে মোটরসাইকেল আরোহী দুজন গুরুতর আহত হন।
স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরে ফেনীর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। পারভেজের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চিকিৎসকের পরামর্শে পরিবারের সদস্যরা রাতে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিলে পথে তাঁর মৃত্যু হয়।
পরশুরাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নুরুল হাকিম মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় বিএনপি নেতা পারভেজ মজুমদারের মৃত্যুর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, নিহত ব্যক্তির পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না থাকায় বিনা ময়নাতদন্তে মরদেহ বাড়ি নিয়ে যায় স্বজনরা।