গাজার জন্য কি ক্ষীণ আশার আলো দেখা যাচ্ছে
Published: 30th, September 2025 GMT
গাজায় প্রায় দুই বছর ধরে চলা ফিলিস্তিনি গণহত্যা থামিয়ে যুদ্ধবিরতি ও শান্তি আসবে—এমন কোনো বাস্তব আশার কারণ কি আছে? এ প্রশ্নই অনেকের মনে ঘুরছে।
আগের মতো এবারও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধু, ব্যবসায়িক অংশীদার ও বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ বলেছেন, গাজায় শান্তি এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে কাছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো আগে যেমন তাঁদের আশাবাদ ভুল প্রমাণিত হয়েছিল, এবার তা হবে না, সে নিশ্চয়তা কোথায়?
আমি মনে করি, দুটি বড় ঘটনা এবার বাঁকবদল বিন্দু হতে পারে।
প্রথমটি হলো কাতারে হামাস নেতাদের লক্ষ্য করে ইসরায়েলের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা। যদিও ইসরায়েল হামাস নেতাদের হত্যা করতে ব্যর্থ হয়েছে, কিন্তু এ ঘটনা বড় আকারে আলোচিত হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান পশ্চিমা মিত্রদের কয়েকটি দেশ (যেমন যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া) অবশেষে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়েছে। এমনকি ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের নিষেধাজ্ঞার কথাও বলেছে।পর্যবেক্ষকেরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র (যারা কাতারের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থার দায়িত্বে আছে এবং সেখানে তাদের সবচেয়ে বড় সামরিক ঘাঁটি রয়েছে) শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত এ হামলার বিষয়ে কিছু জানত না, এটা বিশ্বাস করা কঠিন। তাঁদের মতে, হামাস নেতাদের হত্যা করতে ব্যর্থ হওয়ার পরই যুক্তরাষ্ট্র ঘটনাটির দায় থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করেছে। যদিও যুক্তরাষ্ট্র তাদের এক মিত্রের ওপর হামলার নিন্দা করেছে, কিন্তু একই সঙ্গে ইসরায়েলের ‘শত্রুদের যেকোনো জায়গায় টার্গেট করার অধিকার’ আছে বলে সাফাই দিয়েছে।
মূলত কাতারে ইসরায়েলি হামলায় আরব বিশ্বের প্রতিক্রিয়া ভয়ংকর রূপ নেয়। উপসাগরীয় দেশগুলো দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ককে ন্যায্যতা দিত এ যুক্তি দিয়ে যে যুক্তরাষ্ট্র তাদের নিরাপত্তার ঢাল। কিন্তু ইসরায়েল যখন কাতারের ওপর হামলা করল, তখন বিষয়টি পরিষ্কার হলো যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া এ সুরক্ষা আসলে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে নয়। যুক্তরাষ্ট্রের সুরক্ষা মূলত ইরান, ইয়েমেনের মতো প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ কিংবা অভ্যন্তরীণ বিদ্রোহ ঠেকানোর জন্য কাজে লাগে। অর্থাৎ ইসরায়েল যদি হামলা করে, সে ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র আরব দেশগুলোকে রক্ষা করবে না। এটাই আরব বিশ্বের চোখে এক ভয়ংকর বাস্তবতা হিসেবে ধরা দিল।
আরও পড়ুনগাজা এখন ইসরায়েলের ভিয়েতনাম২২ মে ২০২৫দ্বিতীয় বড় ঘটনা হলো যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান পশ্চিমা মিত্রদের কয়েকটি দেশ (যেমন যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া) অবশেষে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়েছে। এমনকি ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের নিষেধাজ্ঞার কথাও বলেছে।
প্রথম বড় অগ্রগতি দেখা যায় জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে ট্রাম্প যখন মিসর, জর্ডান, পাকিস্তান, কাতার, সৌদি আরব, তুরস্ক ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এর পর থেকেই উইটকফ ও অন্যান্য সূত্র যুদ্ধবিরতি ও বন্দিবিনিময়ের কথা বলতে শুরু করে।
এ বৈঠকের পর থেকেই মার্কিন মধ্যস্থতাকারী উইটকফ এবং অন্যরা যুদ্ধবিরতি ও বন্দিবিনিময় নিয়ে কথা বলতে শুরু করেন। এখানে ‘বন্দিবিনিময়’ বলা হলেও বাস্তবে এটি অসম। কারণ, ইসরায়েল অনেক বেশিসংখ্যক বন্দীকে আটকে রেখেছে, আর অন্য পক্ষের কাছে সংখ্যাটা কম।
আরও পড়ুনইসরায়েল এখনো বুঝতে পারছে না, তারা যুদ্ধে হেরে গেছে১৯ মে ২০২৫এরপর ট্রাম্প দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন। সবচেয়ে আলোচিত ছিল পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনিরের সঙ্গে হোয়াইট হাউসে বৈঠক। সেখানে ট্রাম্প তাঁদের ‘গ্রেট’ বলে উল্লেখ করেন এবং একসঙ্গে ‘থাম্বস আপ’ ছবিও তোলেন। যদিও বৈঠক শেষে দুই পক্ষই কোনো বিস্তারিত তথ্য দেয়নি।
তবু ওয়াশিংটনভিত্তিক সাংবাদিকদের মাধ্যমে কিছু তথ্য ফাঁস হয়। সেখান থেকে ধারণা পাওয়া যায়, যদি যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়, বন্দিবিনিময় হয় এবং ধাপে ধাপে ইসরায়েলি সেনারা সরে যান, তাহলে পাকিস্তান হয়তো গাজায় নিরাপত্তা তদারকির জন্য একটি বহুজাতিক মুসলিম রাষ্ট্রের বাহিনীর অংশ হবে।
আরও কিছু পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে স্বীকৃত আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর মাধ্যমে মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়া, মার্কিন–সমর্থিত ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন’ ভেঙে দেওয়া (যা আসলে খাবার বিতরণের নামে ফিলিস্তিনিদের হত্যা ফাঁদে ফেলছিল) এবং যুক্তরাষ্ট্রের তরফ থেকে একটি নিশ্চয়তা দেওয়া যে পশ্চিম তীরকে ইসরায়েল দখল করবে না।
আব্বাস নাসির ডন–এর সাবেক সম্পাদক
ডন পত্রিকা থেকে নেওয়া, ইংরেজি থেকে সংক্ষিপ্তাকারে অনূদিত
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র র ইসর য় ল র
এছাড়াও পড়ুন:
এভাবে লুচি বানালে ফুলবেই ফুলবে, জেনে নিন রেসিপি
উপকরণ
ময়দা: ২ চামচ
আটা: দেড় চামচ
চিনি: ১ চা-চামচ
ঘি: ১ চা-চামচ
তেল: ১ চা-চামচ।
প্রণালিসব উপকরণ একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। একটু গরম পানি দিয়ে ময়ান বানাতে হবে। ময়ান পাঁচ মিনিটের মতো মেখে রাখুন। তারপর লুচি বেলে ডুবোতেলে ভেজে নিতে হবে।
আরও পড়ুনপূজায় অপু বিশ্বাসের প্রিয় খাবার মহাষ্টমীর ভোগের থালা, দেখুন তাঁর দেওয়া রেসিপি৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫