ইস্তিগফার জীবিকা লাভের মাধ্যম
Published: 30th, September 2025 GMT
মানুষের জীবনে জীবিকা, প্রশান্তি ও সমৃদ্ধির গুরুত্ব অপরিসীম। এগুলোর পেছনে তাকে ছুটে চলতে হয় অবিরাম। কিন্তু কোরআন ও হাদিস আমাদের জানায়, এসবের সবচেয়ে সহজ ও শক্তিশালী মাধ্যম হলো ইস্তিগফার। আল্লাহর কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা শুধু পাপ মোচনের জন্য নয়; বরং জীবিকা লাভের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম।
কোরআনের সাক্ষ্যআল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে নুহ (আ.
হুদ (আ.)-এর বক্তব্য উল্লেখ করে বলেন, ‘হে আমার সম্প্রদায়, তোমরা ইস্তিগফার করো এবং আল্লাহর কাছে তাওবা করো। (তোমরা তা করলে) তিনি তোমাদের ওপর প্রচুর বৃষ্টি বর্ষণ করবেন এবং তোমাদের শক্তি বাড়িয়ে দেবেন।’ (সুরা হুদ, আয়াত: ৫২)
আরও পড়ুনক্ষমা প্রার্থনা করার শ্রেষ্ঠ ৩ সময়২৪ এপ্রিল ২০২৫ইস্তিগফারের ফলআল্লাহ তাআলা এই আয়াতে ইস্তিগফারের ফল হিসেবে তিন ধরনের নেয়ামতের কথা উল্লেখ করেছেন—
১. ধারাবাহিক বৃষ্টি বর্ষণ;
২. সবুজ-শ্যামল বাগবাগিচা;
৩. সুমিষ্ট পানির নদীনালা।
ইমাম কুরতুবি (রহ.) বলেন, এ আয়াতগুলো স্পষ্ট প্রমাণ দেয়, ইস্তিগফারের কারণে জীবিকা বৃদ্ধি হয় ও বৃষ্টি বর্ষিত হয়।
হাফেজ ইবনে কাসির (রহ.) এর ব্যাখ্যায় বলেন, ‘যখন তোমরা আল্লাহর কাছে তাওবা ও ইস্তিগফার করবে এবং তাঁর আনুগত্য করবে, তখন তোমাদের রিজিক বৃদ্ধি পাবে। আল্লাহ আসমান থেকে বরকত নাজিল করবেন, জমিনে বিভিন্ন প্রকার ফল-ফসল উৎপন্ন করবেন এবং প্রাণীদের ওলান দুধে পরিপূর্ণ করবেন। তোমাদের জন্য এমন সব বাগান সৃষ্টি করবেন, যেখানে থাকবে ফলমূল। সেই সঙ্গে এমন নদীনালা প্রবাহিত করবেন, যাতে থাকবে সুমিষ্ট পানির ধারা।’
হাদিসের প্রমাণনবীজি (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি বেশি বেশি ইস্তিগফার করবে, আল্লাহ তার জন্য প্রতিটি দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির পথ খুলে দেবেন, প্রতিটি সংকীর্ণতা থেকে বের হওয়ার উপায় করে দেবেন এবং এমন জায়গা থেকে জীবিকার ব্যবস্থা করবেন, যেখান থেকে সে কল্পনাও করেনি।’ (মুসনাদে আহমাদ: ২,২৩৪; সুনানে নাসায়ি: ১০,২১৭)
এতে তিনটি সুস্পষ্ট প্রতিশ্রুতি রয়েছে—
১. দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি;
২. সংকীর্ণতা থেকে উত্তরণ;
৩. অপ্রত্যাশিত উৎস থেকে জীবিকা।
আরও পড়ুনইস্তিগফার নিয়ে হাসান বসরি (রহ.)–এর ব্যাখ্যা২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ইস্তিগফার শুধু পাপ মোচনের জন্য নয়; বরং জীবিকা লাভ ও বৃদ্ধির অন্যতম মাধ্যম। তবে শর্ত হলো, এটি যেন কেবল মুখের শব্দ না হয়; বরং জীবনের আমলে প্রতিফলিত হয়।উত্তম উপভোগের ওয়াদাআল্লাহ তাআলা কোরআনে আরও বলেন, ‘তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের কাছে ইস্তিগফার করো ও তাওবা করো, তাহলে তিনি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত তোমাদের উত্তম উপভোগ সামগ্রী দান করবেন।’ (সুরা হুদ, আয়াত: ৩)
ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘এর অর্থ হলো আল্লাহ তোমাদের জীবিকা আর জীবনে প্রশান্তি ও প্রশস্ততা দান করবেন।’
ইমাম কুরতুবি (রহ.) বলেন, ইস্তিগফার ও তাওবার ফল হলো প্রশস্ত রিজিক, সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য ও বরকতপূর্ণ জীবন।
কোরআন ও হাদিস উভয়েই স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, ইস্তিগফার শুধু পাপ মোচনের জন্য নয়; বরং জীবিকা লাভ ও বৃদ্ধির অন্যতম মাধ্যম। তবে শর্ত হলো, এটি যেন কেবল মুখের শব্দ না হয়; বরং জীবনের আমলে প্রতিফলিত হয়। মুখে ইস্তিগফার করে পাপে লিপ্ত থাকা মিথ্যুকদের কাজ।
তাই যাঁরা জীবিকাপূর্ণ, প্রশান্তিময় ও সমৃদ্ধির জীবন কামনা করেন, তাঁদের জন্য ইস্তিগফারই সর্বোত্তম হাতিয়ার।
মুজিব হাসান: লেখক ও সম্পাদক, সমকালীন প্রকাশন
আরও পড়ুনসাইয়েদুল ইস্তিগফার কীভাবে করবেন২৮ ডিসেম্বর ২০২৪উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: দ র জন য আল ল হ ত ণ করব ন ক রআন
এছাড়াও পড়ুন:
ইস্তিগফার জীবিকা লাভের মাধ্যম
মানুষের জীবনে জীবিকা, প্রশান্তি ও সমৃদ্ধির গুরুত্ব অপরিসীম। এগুলোর পেছনে তাকে ছুটে চলতে হয় অবিরাম। কিন্তু কোরআন ও হাদিস আমাদের জানায়, এসবের সবচেয়ে সহজ ও শক্তিশালী মাধ্যম হলো ইস্তিগফার। আল্লাহর কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা শুধু পাপ মোচনের জন্য নয়; বরং জীবিকা লাভের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম।
কোরআনের সাক্ষ্যআল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে নুহ (আ.)-এর কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো, তিনি তো অতি ক্ষমাশীল। (তোমরা তা করলে) তিনি আকাশ থেকে তোমাদের জন্য প্রচুর বৃষ্টি বর্ষণ করবেন, তোমাদের ধনসম্পদ ও সন্তানসন্ততি বাড়িয়ে দেবেন, তোমাদের জন্য বাগান সৃষ্টি করবেন এবং নদীনালা প্রবাহিত করবেন।’ (সুরা নুহ, আয়াত: ১০–১২)
তোমরা ইস্তিগফার করো এবং আল্লাহর কাছে তাওবা করো। (তোমরা তা করলে) তিনি তোমাদের ওপর প্রচুর বৃষ্টি বর্ষণ করবেন এবং তোমাদের শক্তি বাড়িয়ে দেবেন।সুরা হুদ, আয়াত: ৫২হুদ (আ.)-এর বক্তব্য উল্লেখ করে বলেন, ‘হে আমার সম্প্রদায়, তোমরা ইস্তিগফার করো এবং আল্লাহর কাছে তাওবা করো। (তোমরা তা করলে) তিনি তোমাদের ওপর প্রচুর বৃষ্টি বর্ষণ করবেন এবং তোমাদের শক্তি বাড়িয়ে দেবেন।’ (সুরা হুদ, আয়াত: ৫২)
আরও পড়ুনক্ষমা প্রার্থনা করার শ্রেষ্ঠ ৩ সময়২৪ এপ্রিল ২০২৫ইস্তিগফারের ফলআল্লাহ তাআলা এই আয়াতে ইস্তিগফারের ফল হিসেবে তিন ধরনের নেয়ামতের কথা উল্লেখ করেছেন—
১. ধারাবাহিক বৃষ্টি বর্ষণ;
২. সবুজ-শ্যামল বাগবাগিচা;
৩. সুমিষ্ট পানির নদীনালা।
ইমাম কুরতুবি (রহ.) বলেন, এ আয়াতগুলো স্পষ্ট প্রমাণ দেয়, ইস্তিগফারের কারণে জীবিকা বৃদ্ধি হয় ও বৃষ্টি বর্ষিত হয়।
হাফেজ ইবনে কাসির (রহ.) এর ব্যাখ্যায় বলেন, ‘যখন তোমরা আল্লাহর কাছে তাওবা ও ইস্তিগফার করবে এবং তাঁর আনুগত্য করবে, তখন তোমাদের রিজিক বৃদ্ধি পাবে। আল্লাহ আসমান থেকে বরকত নাজিল করবেন, জমিনে বিভিন্ন প্রকার ফল-ফসল উৎপন্ন করবেন এবং প্রাণীদের ওলান দুধে পরিপূর্ণ করবেন। তোমাদের জন্য এমন সব বাগান সৃষ্টি করবেন, যেখানে থাকবে ফলমূল। সেই সঙ্গে এমন নদীনালা প্রবাহিত করবেন, যাতে থাকবে সুমিষ্ট পানির ধারা।’
হাদিসের প্রমাণনবীজি (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি বেশি বেশি ইস্তিগফার করবে, আল্লাহ তার জন্য প্রতিটি দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির পথ খুলে দেবেন, প্রতিটি সংকীর্ণতা থেকে বের হওয়ার উপায় করে দেবেন এবং এমন জায়গা থেকে জীবিকার ব্যবস্থা করবেন, যেখান থেকে সে কল্পনাও করেনি।’ (মুসনাদে আহমাদ: ২,২৩৪; সুনানে নাসায়ি: ১০,২১৭)
এতে তিনটি সুস্পষ্ট প্রতিশ্রুতি রয়েছে—
১. দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি;
২. সংকীর্ণতা থেকে উত্তরণ;
৩. অপ্রত্যাশিত উৎস থেকে জীবিকা।
আরও পড়ুনইস্তিগফার নিয়ে হাসান বসরি (রহ.)–এর ব্যাখ্যা২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ইস্তিগফার শুধু পাপ মোচনের জন্য নয়; বরং জীবিকা লাভ ও বৃদ্ধির অন্যতম মাধ্যম। তবে শর্ত হলো, এটি যেন কেবল মুখের শব্দ না হয়; বরং জীবনের আমলে প্রতিফলিত হয়।উত্তম উপভোগের ওয়াদাআল্লাহ তাআলা কোরআনে আরও বলেন, ‘তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের কাছে ইস্তিগফার করো ও তাওবা করো, তাহলে তিনি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত তোমাদের উত্তম উপভোগ সামগ্রী দান করবেন।’ (সুরা হুদ, আয়াত: ৩)
ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘এর অর্থ হলো আল্লাহ তোমাদের জীবিকা আর জীবনে প্রশান্তি ও প্রশস্ততা দান করবেন।’
ইমাম কুরতুবি (রহ.) বলেন, ইস্তিগফার ও তাওবার ফল হলো প্রশস্ত রিজিক, সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য ও বরকতপূর্ণ জীবন।
কোরআন ও হাদিস উভয়েই স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, ইস্তিগফার শুধু পাপ মোচনের জন্য নয়; বরং জীবিকা লাভ ও বৃদ্ধির অন্যতম মাধ্যম। তবে শর্ত হলো, এটি যেন কেবল মুখের শব্দ না হয়; বরং জীবনের আমলে প্রতিফলিত হয়। মুখে ইস্তিগফার করে পাপে লিপ্ত থাকা মিথ্যুকদের কাজ।
তাই যাঁরা জীবিকাপূর্ণ, প্রশান্তিময় ও সমৃদ্ধির জীবন কামনা করেন, তাঁদের জন্য ইস্তিগফারই সর্বোত্তম হাতিয়ার।
মুজিব হাসান: লেখক ও সম্পাদক, সমকালীন প্রকাশন
আরও পড়ুনসাইয়েদুল ইস্তিগফার কীভাবে করবেন২৮ ডিসেম্বর ২০২৪