সরকারের বিরুদ্ধে মামলার হুঁশিয়ারি শরীয়তপুরবাসীর
Published: 30th, September 2025 GMT
প্রস্তাবিত ফরিদপুর বিভাগে শরীয়তপুরের নাম অন্তর্ভুক্ত না করার দাবিতে ঢাকা-শরীয়তপুর সড়ক ঘণ্টাব্যাপী অবরোধ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে ‘জাগো শরীয়তপুর’ নামে একটি সংগঠন। তারা জানান, সরকার এ ধরনের কোনো চিন্তা বা চেষ্টা করে থাকলে, সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।
মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে থেকে বের হয়ে চৌরঙ্গীর মোড়ে গিয়ে বিক্ষোভ করে তারা। এতে প্রায় এক ঘণ্টা যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে।
বিক্ষোভকারীরা জানায়, শরীয়তপুর থেকে ঢাকার দূরত্ব কম, ফরিদপুরের দূরত্ব বেশি। শিক্ষা, চিকিৎসা, ব্যবসা, দাপ্তরিকসহ সব কার্যক্রম ঢাকার সঙ্গে। তাই শরীয়তপুরের সঙ্গে ঢাকার মেলবন্ধন। সেই বন্ধনেই অটুট থাকতে চায় শরীয়তপুরবাসী। তাই জেলা ফরিদপুর বিভাগে যুক্ত হতে চান না।
প্রস্তাবিত ফরিদপুর বিভাগে শরীয়তপুরের নাম অন্তর্ভুক্ত না করার দাবি তাদের। তাদের এই দাবি মানা না হলে আগামীতে কঠিন কর্মসূচির হুশিয়ারী দিয়ে তারা বলেন, অন্তর্বতী সরকার যদি টালবাহানা করে তাহলে সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে। দাবি না মানা হলে পদ্মা সেতু ব্লকেড কর্মসূচিও দেওযা হবে।
এসময় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক আহ্বায়ক ইমরান আল নাজির বলেন, “শরীয়তপুরের মানুষদের কোনোভাবেই জোরপূর্বক প্রস্তাবিত ফরিদপুর বিভাগের সঙ্গে যুক্ত করা যাবে না। যদি সরকার এ ধরনের কোনো চিন্তা বা চেষ্টা করে থাকে, তবে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।”
তিনি জানান, ৫ তারিখে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে গণসমাবেশও হবে। এরপরও যদি সরকার কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে তারা পদ্মা সেতু অবরোধের কর্মসূচি ঘোষণা করবেন।
জাগো শরীয়তপুরের সদস্য জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জাকির হাওলাদার বলেন, “প্রতিদিন হাজারো মানুষ পড়াশোনা, চাকরি কিংবা চিকিৎসার জন্য ঢাকায় যায়। ফরিদপুরের সঙ্গে আমাদের কোনো যোগাযোগ নেই, তাই শরীয়তপুরকে ফরিদপুর বিভাগে যুক্ত করার প্রশ্নই আসে না। প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের নামে জনগণকে বঞ্চিত করা যাবে না। যদি শরীয়তপুরকে জোর করে ফরিদপুর বিভাগের সঙ্গে যুক্ত করার চেষ্টা হয়, তবে শরীয়তপুরের মানুষ আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবে।”
জাগো শরীয়তপুরের আহ্বায়ক আমিন মোহাম্মদ জিতু বলেন, “আজকের এই রৌদ্রের তাপে দাঁড়িয়ে যারা রাস্তা অবরোধ কর্মসূচিতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিয়েছেন, আমি তাদের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাই। আমরা শান্তিপূর্ণ অবস্থানে এই কর্মসূচি করছি। তবে স্পষ্ট করে বলতে চাই যদি শরীয়তপুরকে ঢাকার সঙ্গে না রেখে জোরপূর্বক ফরিদপুরের সাথে যুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, তবে এই আন্দোলন আর শান্তিপূর্ণ থাকবে না।”
তিনি আরো বলেন, “আগামী ৫ অক্টোবর আমরা জেলার সকল ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বিশাল জেলা-ভিত্তিক মহাসমাবেশের আয়োজন করছি। যদি তাতেও সরকার আমাদের দাবি অগ্রাহ্য করে এবং আওয়ামী লীগের একতরফা চিন্তাধারা চাপিয়ে দিতে চায়, তবে আমরা ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের সবগুলো জেলাকে অচল করে দেব। আমাদের শিক্ষা, সংস্কৃতি, ইতিহাস, ঐতিহ্য সবকিছু ঢাকার সঙ্গে মিশে আছে। তাই আমরা ঢাকাতেই থাকতে চাই ফরিদপুরের সাথে যেতে চাই না।”
এসময় শরীয়তপুর জেলা ছাত্রদল, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ইসলামি ছাত্র শিবির, ছাত্র অধিকার পরিষদ, ইসলামি ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ ও সচেতন নাগরিক সমাজের লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/আকাশ/এস
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য ক ত কর সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
সিদ্ধিরগঞ্জে দুই গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় মামলা
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে পৃথক দুটি পরিবহনে আগুন দিয়ে নাশকতার ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ৪০ জন আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মী ও দুষ্কৃতিকারীর বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
হামলাকারীরা দলীয় স্লোগান ও রাষ্ট্রবিরোধী স্লোগান দিয়ে পরিবহনে আগুন ধরিয়ে দেয় বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে। এই ঘটনায় জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে এবং পুলিশ জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিয়েছে।
জানাগেছে, গত শনিবার (১৫ নভেম্বর) ভোরে নাফ পরিবহন নামের একটি মিনিবাস (ঢাকা-মেট্রো-জ-১১-০৩৩৮) ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে সড়ক ও জনপথ অফিসের মেইন গেটের সামনে পার্কিং করা অবস্থায় দুষ্কৃতিকারীরা হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে।
এরআগে , গত ১২ নভেম্বর রাতে তিনি দুই যাত্রী নিয়ে জালকুড়ি এলাকায় পৌঁছালে ২০/২৫ জন ব্যক্তি রাস্তা অবরোধ করে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় এসময় তারা জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধুসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক স্লোগান দিতে থাকে। পরবর্তীতে তারা তাঁর সিএনজিতে (ঢাকা-থ-১১-৯৯২১) পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।
দুটি নাশকতার ঘটনায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় পৃথক দুটি এজাহার দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে এবং জড়িতদের শনাক্তে আশেপাশের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা ও প্রত্যক্ষদর্শীর সাথে কথা বলছে বলে জানা গেছে।
মিনিবাসে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় দায়েরকৃত এজাহারে উল্লেখ করা হয়, শনিবার ভোরে মিনিবাস চালক সোহাগ মিয়া (৩৮) স্থানীয়দের মাধ্যমে জানতে পারেন যে নাফ পরিবহন নামের একটি মিনিবাস (ঢাকা-মেট্রো-জ-১১-০৩৩৮) ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে সড়ক ও জনপথ অফিসের মেইন গেটের সামনে পার্কিং করা অবস্থায় দুষ্কৃতিকারীরা হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে।
তিনি ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখেন, বাসটি সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। ভুক্তভোগী চালক দাবি করেন, এতে প্রায় ৫ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে। পরে হাইওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুড়ে যাওয়া মিনিবাসটি জব্দ করে হেফাজতে নেয়।
অন্যদিকে সিএনজি চালক মো. বাবুল মিয়া (৫৪) অভিযোগ করেন, গত ১২ নভেম্বর রাতে তিনি দুই যাত্রী নিয়ে জালকুড়ি এলাকায় পৌঁছালে ২০/২৫ জন ব্যক্তি রাস্তা অবরোধ করে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় এসময় তারা জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধুসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক স্লোগান দিতে থাকে।
পরবর্তীতে তারা তাঁর সিএনজিতে (ঢাকা-থ-১১-৯৯২১) পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে প্রায় ২ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে তিনি জানান। পরে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পুলিশ সিএনজিটি জব্দ করে থানায় নিয়ে আসে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ শাহিনূর আলম বলেন, আমরা প্রতিটি নাশকতার ঘটনা গুরুত্ব সহকারে দেখছি। ইতোমধ্যে পৃথক দুটি মামলা রুজু করা হয়েছে এবং তদন্ত দ্রুত গতিতে চলছে। জননিরাপত্তা বিঘ্নিত করে যারা এই ধরনের জঘন্য কাজ করছে, তারা যেই হোক না কেন, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।