রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) দুই শিক্ষককে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অশালীন মন্তব্য করায় ছাত্রদল নেতার প্রশংসাপত্র ও চারিত্রিক সনদপত্র বাতিল করেছে উর্দু বিভাগ।

গত ২৪ সেপ্টেম্বর বিভাগের একাডেমিক কমিটিতে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়াও এমন মন্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে আইনি ব্যবস্থা নিতে উপাচার্য বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছে একাডেমিক কমিটি।

আরো পড়ুন:

ইউজিসির অর্থায়নে গবেষণা করবেন ইবির ১৪১ শিক্ষক-শিক্ষার্থী

নজরুল কলেজে বিসিএস অ্যাডুকেশন অ্যাসোসিয়েশনের ৮ দাবিতে মানববন্ধন

অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা হলেন বুলবুল রহমান। তিনি উর্দু বিভাগের ২০১৩-১৪ সেশনের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি বর্তমান ছাত্রদলের রাবি শাখার সহ-সভাপতি।

ভুক্তভোগী দুই শিক্ষক হলেন, উর্দু বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড.

মুহাম্মাদ শহীদুল ইসলাম ও একই বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. নাসির উদ্দিন।

গত ২২ সেপ্টেম্বর বিকেলে ওই দুই শিক্ষককে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছাত্রদল নেতা বুলবুল রহমান লেখেন, “বিভাগের দুই কুলাঙ্গার শিক্ষক ভিসি নকিবের অনুগত কুকুর বর্তমান চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম ও সহকারী প্রক্টর নাসির উদ্দিনের বেহাল অবস্থা। এই দুই কুকুর ছাত্র-ছাত্রীদের মার্ক করে খাতায় কম নম্বার দিত যার প্রমাণ স্বয়ং আমি। তাদের হায়া লজ্জা ঘৃণা বলে কি কিছুই নেই?”

বিভাগীয় একাডেমিক কমিটি সূত্রে জানা যায়, উর্দু বিভাগে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হলে বুলবুল রহমান যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও (বিজ্ঞপ্তির শর্ত ছিল ৩.৫০ পেতে হবে কিন্তু তার অনার্সে প্রাপ্ত সিজিপিএ ৩.৩৫) আবেদন করেন। বিজ্ঞপ্তির শর্ত পূরণ না করায় বাছাইয়ে তার আবেদনপত্র বাতিল হয়ে যায়। এজন্য তিনি ক্ষোভের বশবর্তী হয়ে বিভাগীয় সভাপতিসহ পরিকল্পনা কমিটির সদস্যদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা, অসদাচরণ এবং বিভিন্ন হুমকি-ধামকি প্রদান করেন।

এদিকে, উর্দু বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ বোর্ড বন্ধ করতে গত ১১ আগস্ট সিন্ডিকেট সভা চলাকালীন উপাচার্যের বাসভবনের মূলফটকে তালা লাগিয়ে দেন ছাত্রদলের এ নেতা। এতে উর্দু বিভাগের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুণ্ন হয়। তিনি একটি বৃহৎ ছাত্রসংগঠনের পদে থাকায় তার ফেসবুক পোস্ট ও হুমকির কারণে উর্দু বিভাগের শিক্ষকরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

ফলে বিভাগীয় একাডেমিক কমিটিতে সিদ্ধান্ত হয়, বিভিন্ন ন্যাক্কারজনক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকায় একাডেমিক কমিটির সিদ্ধান্তে বুলবুল রহমানকে উর্দু বিভাগ থেকে তার প্রশংসাপত্র, চারিত্রিক সনদপত্র ও সকল প্রত্যয়নপত্র বাতিল এবং ভবিষ্যতে বিভাগ থেকে তাকে কোনো প্রকার প্রত্যয়নপত্র প্রদান করা হবে না। উর্দু বিভাগে তাকে অবাঞ্চিত ঘোষণা এবং ভবিষ্যতে তিনি বিভাগের কোনো কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।

এছাড়া শৃঙ্খলাবিরোধী ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড এবং শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ফেসবুকে অসত্য, অশালীন ও কুরুচিপূর্ণ ভাষায় পোস্ট করায় তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে উপাচার্যের কাছে আহ্বান জানায় কমিটি। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা বুলবুল রহমান বলেন, “চারিত্রিক সনদ বাতিলের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। তবে তারা মনগড়া কোনো সিদ্ধান্ত নিলে তো আর হবে না। আমাকে এ বিষয়ে কেউ ডাকেনি এবং কেউ জানতেও চায়নি। তবে আমি বিভাগের শিক্ষকদের নিয়ে পোস্ট দিয়েছি, তারা আমাকে নম্বর কম দিয়েছেন। এছাড়াও অ্যাকাডেমিক মিটিংয়ে সব শিক্ষক উপস্থিতও ছিলেন না।”

তবে বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মুহাম্মাদ শহীদুল ইসলাম বলেন, “শিক্ষকদের নিয়ে এমন বাজে মন্তব্য তা কোনোভাবেই কাম্য না। অবৈধভাবে নিজের স্বার্থ হাসিলে ব্যর্থ হয়ে তিনি শিক্ষকদের কুকুরের সঙ্গে তুলনা করেছেন, যা শুধু আমাদের জন্য নয়, বরং সব শিক্ষকদের জন্য অবমাননাকর। আমরা প্রশাসন থেকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করছি।”

ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত রদল ছ ত রদল ন ত শ ক ষকদ র

এছাড়াও পড়ুন:

শিক্ষকদের নিয়ে অশালীন মন্তব্য, ছাত্রদল নেতার চারিত্রিক সনদ বাতিল

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) দুই শিক্ষককে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অশালীন মন্তব্য করায় ছাত্রদল নেতার প্রশংসাপত্র ও চারিত্রিক সনদপত্র বাতিল করেছে উর্দু বিভাগ।

গত ২৪ সেপ্টেম্বর বিভাগের একাডেমিক কমিটিতে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়াও এমন মন্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে আইনি ব্যবস্থা নিতে উপাচার্য বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছে একাডেমিক কমিটি।

আরো পড়ুন:

ইউজিসির অর্থায়নে গবেষণা করবেন ইবির ১৪১ শিক্ষক-শিক্ষার্থী

নজরুল কলেজে বিসিএস অ্যাডুকেশন অ্যাসোসিয়েশনের ৮ দাবিতে মানববন্ধন

অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা হলেন বুলবুল রহমান। তিনি উর্দু বিভাগের ২০১৩-১৪ সেশনের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি বর্তমান ছাত্রদলের রাবি শাখার সহ-সভাপতি।

ভুক্তভোগী দুই শিক্ষক হলেন, উর্দু বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মুহাম্মাদ শহীদুল ইসলাম ও একই বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. নাসির উদ্দিন।

গত ২২ সেপ্টেম্বর বিকেলে ওই দুই শিক্ষককে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছাত্রদল নেতা বুলবুল রহমান লেখেন, “বিভাগের দুই কুলাঙ্গার শিক্ষক ভিসি নকিবের অনুগত কুকুর বর্তমান চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম ও সহকারী প্রক্টর নাসির উদ্দিনের বেহাল অবস্থা। এই দুই কুকুর ছাত্র-ছাত্রীদের মার্ক করে খাতায় কম নম্বার দিত যার প্রমাণ স্বয়ং আমি। তাদের হায়া লজ্জা ঘৃণা বলে কি কিছুই নেই?”

বিভাগীয় একাডেমিক কমিটি সূত্রে জানা যায়, উর্দু বিভাগে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হলে বুলবুল রহমান যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও (বিজ্ঞপ্তির শর্ত ছিল ৩.৫০ পেতে হবে কিন্তু তার অনার্সে প্রাপ্ত সিজিপিএ ৩.৩৫) আবেদন করেন। বিজ্ঞপ্তির শর্ত পূরণ না করায় বাছাইয়ে তার আবেদনপত্র বাতিল হয়ে যায়। এজন্য তিনি ক্ষোভের বশবর্তী হয়ে বিভাগীয় সভাপতিসহ পরিকল্পনা কমিটির সদস্যদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা, অসদাচরণ এবং বিভিন্ন হুমকি-ধামকি প্রদান করেন।

এদিকে, উর্দু বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ বোর্ড বন্ধ করতে গত ১১ আগস্ট সিন্ডিকেট সভা চলাকালীন উপাচার্যের বাসভবনের মূলফটকে তালা লাগিয়ে দেন ছাত্রদলের এ নেতা। এতে উর্দু বিভাগের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুণ্ন হয়। তিনি একটি বৃহৎ ছাত্রসংগঠনের পদে থাকায় তার ফেসবুক পোস্ট ও হুমকির কারণে উর্দু বিভাগের শিক্ষকরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

ফলে বিভাগীয় একাডেমিক কমিটিতে সিদ্ধান্ত হয়, বিভিন্ন ন্যাক্কারজনক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকায় একাডেমিক কমিটির সিদ্ধান্তে বুলবুল রহমানকে উর্দু বিভাগ থেকে তার প্রশংসাপত্র, চারিত্রিক সনদপত্র ও সকল প্রত্যয়নপত্র বাতিল এবং ভবিষ্যতে বিভাগ থেকে তাকে কোনো প্রকার প্রত্যয়নপত্র প্রদান করা হবে না। উর্দু বিভাগে তাকে অবাঞ্চিত ঘোষণা এবং ভবিষ্যতে তিনি বিভাগের কোনো কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।

এছাড়া শৃঙ্খলাবিরোধী ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড এবং শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ফেসবুকে অসত্য, অশালীন ও কুরুচিপূর্ণ ভাষায় পোস্ট করায় তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে উপাচার্যের কাছে আহ্বান জানায় কমিটি। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা বুলবুল রহমান বলেন, “চারিত্রিক সনদ বাতিলের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। তবে তারা মনগড়া কোনো সিদ্ধান্ত নিলে তো আর হবে না। আমাকে এ বিষয়ে কেউ ডাকেনি এবং কেউ জানতেও চায়নি। তবে আমি বিভাগের শিক্ষকদের নিয়ে পোস্ট দিয়েছি, তারা আমাকে নম্বর কম দিয়েছেন। এছাড়াও অ্যাকাডেমিক মিটিংয়ে সব শিক্ষক উপস্থিতও ছিলেন না।”

তবে বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মুহাম্মাদ শহীদুল ইসলাম বলেন, “শিক্ষকদের নিয়ে এমন বাজে মন্তব্য তা কোনোভাবেই কাম্য না। অবৈধভাবে নিজের স্বার্থ হাসিলে ব্যর্থ হয়ে তিনি শিক্ষকদের কুকুরের সঙ্গে তুলনা করেছেন, যা শুধু আমাদের জন্য নয়, বরং সব শিক্ষকদের জন্য অবমাননাকর। আমরা প্রশাসন থেকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করছি।”

ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ