‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে গত বছরের ২০ জুলাই গুলিবিদ্ধ হয়ে আমার ছেলে শহীদ হয়। সন্তান হত্যার বিচার চেয়ে সাভার মডেল থানায় মামলা করেছি, ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দিয়েছি। কিন্তু এখন শুনতে পাচ্ছি, সম্প্রতি আমার সন্তান হত্যার বিচার চেয়ে মৃত্যুর তারিখ, সময় ও ঘটনাস্থল সবই ভুল দিয়ে এক ব্যক্তি আদালতে মামলা করেছে। অচেনা কেউ কেন আমার ছেলের হত্যার ঘটনায় মামলা দেবে? এটা মনে হচ্ছে ষড়যন্ত্র।’

কথাগুলো বলছিলেন মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর উপজেলার ধল্লা গ্রামের বাসিন্দা শহীদ ছায়াদ মাহমুদ খানের (১২) বাবা বাহাদুর খান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার ছেলে হত্যার বিচারের প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে উদ্দেশ্যমূলকভাবে এটি করা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। পুলিশের কাছে অনুরোধ থাকবে, তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে কেন তিনি আমাদের অনুমতি ছাড়া ও ভুল তথ্য দিয়ে মামলা করছেন, সেটি জানার চেষ্টা করা হয়।’

শহীদ ছায়াদের স্বজনেরা জানান, গত বছরের ২০ জুলাই বিকেলে সাভারের শাহীবাড় এলাকায় ভাড়া বাসা থেকে বাইরে বের হয় ছায়াদ মাহমুদ। পরে সে ৫টা ৪০ মিনিটের দিকে সাভার বাসস্ট্যান্ড-সংলগ্ন সাভার নিউমার্কেটের দক্ষিণ–পূর্ব দিকের চাঁপাইনগামী সড়কে বাঁ পায়ের ঊরুতে গুলিবিদ্ধ হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই দিনই হাসপাতালে সে মারা যায়।

ছায়াদ মাহমুদ খান সাভারের জাবাল-ই-নুর দাখিল মাদ্রাসার ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। গত বছর ৮ সেপ্টেম্বর বাহাদুর খান বাদী হয়ে সাভার মডেল থানায় ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে একটি মামলা করেন। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা ২০ থেকে ৫০ জনকে আসামি করা হয়।

বাহাদুর খান বলেন, সম্প্রতি ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একই ঘটনায় রফিকুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি ছায়াদের মৃত্যুর তারিখ, সময় ও ঘটনাস্থল ভিন্ন জায়গা হিসেবে উল্লেখ করে মামলা করেছেন। ছায়াদকে অনেকে সাদ বলে ডাকেন। সিঙ্গাইরে এই নামে আর কেউ জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে নিহত হয়নি।

আদালতে করা মামলার নথিতে দেখা যায়, বাদী নিজের পরিচয় হিসেবে উল্লেখ করেন ঢাকার সাভার থানাধীন শাহীবাগ এলাকার সোলায়মান মিয়ার ছেলে রফিকুল ইসলাম (৫৬)। ছায়াদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের বিষয়ে কিছু উল্লেখ না থাকলেও নিজেকে দেশের সচেতন নাগরিক হিসেবে উল্লেখ করেন। নিহত ব্যক্তির নাম হিসেবে উল্লেখ করা হয় সাদ মাহমুদ খান। বয়স বলা হয়েছে ২৬ বছর। নিহত ব্যক্তির পিতার নাম বাহাদুর খান ও মানিকগঞ্জের সিংগাইর থানার ধল্লা হিসেবে ঠিকানা উল্লেখ করা হয়েছে। ঘটনাস্থল দেখানো হয় আশুলিয়া থানার সামনে। ঘটনার তারিখ দেখানো হয়েছে গত বছরের ১৯ জুলাই। মামলায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত বছরের ২৫ জুলাই মৃত্যু হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। মামলায় শেখ হাসিনাসহ ২৫২ জনের নাম উল্লেখসহ ২০০ থেকে ৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। আদালত আশুলিয়া থানা-পুলিশকে মামলাটির তদন্তের নির্দেশ দেন।

এ বিষয়ে কথা বলতে বাদী রফিকুল ইসলামের সঙ্গে মুঠোফোন নম্বরে যোগাযোগ করলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হান্নান প্রথম আলোকে বলেন, আদালত এ–সংক্রান্ত একটি মামলা তদন্তের আদেশ দিয়েছেন। মূলত এ ঘটনায় আগে আশুলিয়া থানায় কোনো মামলা হয়েছে কি না, সেটি আদালত জানতে চেয়েছিলেন। আদালতের আদেশ পাওয়ার পর থানার নথিপত্র যাচাই করে দেখেছেন, এ ঘটনায় আশুলিয়া থানায় কোনো মামলা হয়নি। তবে একই হত্যার ঘটনায় সাভার মডেল থানায় ভুক্তভোগীর বাবা বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন। ওই মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে। বিষয়টি জানিয়ে ইতিমধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। বাদী রফিকুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁকে পাওয়া সম্ভব হয়নি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: হত য র ব চ র গত বছর র ঘটন য়

এছাড়াও পড়ুন:

আজ মুক্তি পাচ্ছে নতুন দুই সিনেমা, হলে আছে আরও ৭ সিনেমা

কুয়াকাটায় একদল ব্যাচেলর
করোনার সময় দীর্ঘদিন ঘরবন্দী ছিল মানুষ। বিধিনিষেধ শিথিল করা হলে কুয়াকাটায় ঘুরতে যায় একদল ব্যাচেলর। সেখানে নারীদের একটি দলের সঙ্গে তাদের দেখা হয়ে যায়। তাদের কেন্দ্র করেই রোমান্টিক, কমেডি ও থ্রিলারের মিশেলে তৈরি হয়েছে নাসিম সাহনিকের ‘ব্যাচেলর ইন ট্রিপ।’

সিনেমাটির শুটিং শুরু হয় ২০২২ সালের শেষ দিকে। প্রথম লটে এক সপ্তাহের মতো শুটিং করার কথা থাকলেও বাজেটের সমস্যায় দুই দিন পর শুটিং টিমকে রেখেই ঢাকায় চলে গেছেন পরিচালক—এমন একটা অভিযোগ সে সময় এনেছিলেন সিনেমার নায়িকা শিরিন শিলা। পরে তিনি আরও জানান, নায়ক-নায়িকাসহ শিল্পীদের থাকা, খাওয়া—সবকিছুতেই অব্যবস্থাপনা ছিল। এতে ইউনিটে অসন্তোষ তৈরি হয়। সে সময় কলাকুশলীরা ধরেই নিয়েছিলেন, এ সিনেমার শুটিং আর হবে না। দ্বন্দ্ব মিটিয়ে পরের বছর শেষ হয় শুটিং। ডাবিং ও পোস্টের কাজ শেষ করতে লেগে যায় আরও এক বছর।

সিনেমায় জুটি হয়েছেন শিরিন শিলা ও কায়েস আরজু। ছবি: কায়েসের সৌজন্যে

সম্পর্কিত নিবন্ধ