সুন্দরবনে কুমিরের আক্রমণে জেলে নিহত, মরদেহের খোঁজ চলছে
Published: 30th, September 2025 GMT
সুন্দরবনে কুমিরের আক্রমণে সুভ্রত মণ্ডল (৩২) নামের এক জেলে নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের করমজল খালে এ ঘটনা ঘটে। রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত তাঁর মরদেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
সুভ্রত মণ্ডল খুলনা জেলার দাকোপ উপজেলার ঢাংমারী এলাকার কুমুদ মণ্ডলের ছেলে। তিনি সুন্দরবনে মাছ ও কাঁকড়া ধরে জীবিকা নির্বাহ করতেন।
বন বিভাগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার সকালে সুভ্রত মণ্ডল ঢাংমারী স্টেশন থেকে রাজস্ব জমা দিয়ে পাস সংগ্রহ করে মাছ ধরতে সুন্দরবনে প্রবেশ করেন। ফেরার পথে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে তিনি সাঁতরে করমজল খাল পার হচ্ছিলেন। এ সময় একটি কুমির তাঁকে ধরে টেনে নিয়ে যায়। সঙ্গে থাকা অন্য জেলেরা চেষ্টা করেও তাঁকে উদ্ধার করতে পারেননি। ঘটনার পর বন বিভাগের লোকজন ও স্থানীয় গ্রামবাসী করমজল খালে তল্লাশি চালান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকেল পাঁচটার দিকে খালে সুভ্রতের মরদেহ ভেসে উঠেছিল। সাড়ে পাঁচটার দিকে আবারও দেখা যায়। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে কুমিরটি মরদেহ ছেড়ে চলে গেলেও পরে আর মরদেহটির খোঁজ পাওয়া যায়নি।
সুন্দরবনের করমজল পর্যটন ও বন্য প্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির বলেন, মঙ্গলবার ঢাংমারী স্টেশন থেকে পাস নিয়ে আমুরবুনিয়া গ্রাম থেকে হেঁটে সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন সুব্রতসহ স্থানীয় কয়েকজন জেলে। সেখান থেকে ফেরার সময় মঙ্গলবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে সাঁতরে করমজল খাল পার হচ্ছিলেন সুব্রত। তখন একটি কুমির তাঁকে টেনে নিয়ে যায় (কামড়ে ধরে পানিতে ডুব দেয়)। আজাদ কবির বলেন, ‘এখনো মরদেহের খোঁজ চলছে। সুব্রতর কোনো ছেলেমেয়ে নেই। তবে তাঁর স্ত্রী এখন সন্তানসম্ভবা বলে শুনেছি।’
নিখোঁজ জেলের খোঁজে তল্লাশি চালাতে বনে যাওয়া ঢাংমারী গ্রামের ইস্রাফিল বয়াতি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা খালে দেখেছি কুমিরের মুখে সুভ্রতকে। তবে কুমির খায়নি, মুখে নিয়ে ঘুরছিল। ভাটার সময় পানি কমে এলে আমরা খালে নেমে তল্লাশি শুরু করেছি। রাত হয়ে যাওয়ায় আলোর ব্যবস্থা করে এখনো খোঁজ চলছে।’
সুব্রতর সঙ্গে মঙ্গলবার একসঙ্গে বনে যাওয়া জুয়েল সরদার, জয় সরকার ও স্বপন বিশ্বাস জানান, সুভ্রত মণ্ডল দীর্ঘদিন ধরে সুন্দরবনে মাছ, প্রধানত কাঁকড়া ধরে জীবিকা নির্বাহ করতেন।
গত বছরও একইভাবে খালে সাঁতার কাটার সময় এক জেলে কুমিরের আক্রমণে নিহত হয়েছিলেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: করমজল খ ল স ন দরবন মরদ হ
এছাড়াও পড়ুন:
সাতক্ষীরায় নির্বাচনী ইশতেহার নিয়ে পরামর্শ সভা
সাতক্ষীরায় জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিদের নিয়ে স্থানীয়দের চাহিদা নিরুপনে নির্বাচনী ইশতেহার-২০২৫ শীর্ষক উপজেলা পর্যায়ে পরামর্শ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকালে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সিডো এর আয়োজনে এবং একশনএইড বাংলাদেশ এর সহযোগিতায় সাতক্ষীরা সদর উপজেলা পরিষদ হলরুমে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আরো পড়ুন:
পূজার ছুটির পর গকসুর নির্বাচিত প্রতিনিধিদের অভিষেক
নিবন্ধন পাচ্ছে এনসিপিসহ ২ দল
সিডো সাতক্ষীরার প্রধান নির্বাহী শ্যামল কুমার বিশ্বাসের সভাপতিত্বে কর্মসূচির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন, প্রকল্প সমন্বয়কারী মো. তহিদুজ্জামান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, সাতক্ষীরা পৌরসভার কাউন্সিলর শফিক-উ-দ্দৌলা সাগর, টিআইবি সাতক্ষীরা জেলা কমিটির সাবেক সভাপতি হেনরী সরদার, একশনএইড প্রতিনিধি সুইট খান, ইয়ূথ সভাপতি সাকিব হাসান, প্রোগ্রাম অফিসার চন্দ্র শেখর হালদার প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, সাতক্ষীরায় যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন সাতক্ষীরা জেলার রাস্তা-ঘাটের অবস্থা অনেক শোচনীয়। যোগাযোগ ব্যবস্থাকে উন্নত করতে রাস্তা-ঘাটের সংস্কার খুব জরুরি। সুন্দরবন কেন্দ্রিক টেকসই ইকোটুরিজম প্রতিষ্ঠা, সুন্দরবনের পরিবেশ ও সম্পদ সংরক্ষণ ও পর্যটন বৃদ্ধির মাধ্যমে টেকসই ইকোটুরিজম ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। সাতক্ষীরা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে, যা জেলার শিক্ষার্থীদের আধুনিক শিক্ষা সুবিধা দেবে।
তারা বলেন, রেল সংযোজন সাতক্ষীরা জেলা দীর্ঘদিন ধরে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নে বৈষম্যের শিকার। সাতক্ষীরাকে দেশের রেল নেটওয়ার্কে অন্তভুক্ত করতে হবে, যা জেলা ও দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি ত্বরান্বিত করবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় উপকূলীয় এলাকায় দীর্ঘমেয়াদী স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের ব্যবস্থা করতে হবে।
এছাড়া সাতক্ষীরায় আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন আন্তর্জাতিক মানের স্টেডিয়াম ও ক্রীড়া কমপ্লেক্স নির্মাণ, সীমান্তে মাদক প্রতিরোধে প্রযুক্তি নির্ভর নজরদারী ব্যবস্থা গড়ে তোলা জরুরি, স্থলবন্দরকে পূর্নাঙ্গ বন্দরে রুপান্তর, সাতক্ষীরার ভোমরাকে একটি আধুনিক আন্তর্জাতিক মানের স্থলবন্দর প্রতিষ্ঠা করে ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধি, নাগরিক সুবিধা নিশ্চিতে কার্যকর পৌরসভার ব্যবস্থাপনা, সুন্দরবন বাঁচাতে জীবশ্ম জ্বালানীকে পরিবর্তে নবায়ন যোগ্য জ্বালানী সংযোজন, জলবায়ু পরিবর্তন সহনশীল কৃষি ব্যবস্থাপনা, সবুজ উদ্যোক্তা তৈরির জন্য যথাযথ প্রশিক্ষণাগার তৈরি, প্রাণ সায়ের খালের দুই ধার সৌন্দর্যবর্ধন, যুবদের মুক্ত চিন্তা, উন্নয়ন ভাবনা ও নিজস্ব সাংস্কৃতিক চর্চার জন্য শিক্ষালয় কেন্দ্রিক যুববান্ধব স্পেস তৈরি ও কার্যকর করার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণের কথাও বলেন বক্তারা।
ঢাকা/শাহীন/মেহেদী