সুন্দরবনে কাঁকড়া ধরতে গিয়ে কুমিরের আক্রমণে সুব্রত মণ্ডল (৩২) নামে এক জেলে নিহত হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের করমজল খালে ওই ঘটনা ঘটে। প্রায় সাত ঘণ্টা পর রাত সাড়ে ১০টার দিকে তাঁর লাশ উদ্ধার হয়েছে।

নিহত সুব্রত খুলনার দাকোপ উপজেলার ঢাংমারী এলাকার কুমুদ মণ্ডলের ছেলে। পেশায় তিনি একজন জেলে ছিলেন।

অনেক খোঁজাখুঁজির পর সুন্দরবনের করমজল খালের গজালমারী এলাকায় পানির নিচ থেকে গ্রামবাসীরা তাঁর লাশ উদ্ধার করে বলে জানিয়েছেন ঢাংমারী গ্রামের ইস্রাফিল বয়াতি। সুব্রতকে কুমির আক্রমণ করেছে—এমন খবর জানার পর ইস্রাফিলসহ অর্থশতাধিক গ্রামবাসী নৌকা ও ট্রলার নিয়ে তাঁর সন্ধানে সুন্দরবনের করমজল খালে তল্লাশি শুরু করেন।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সুব্রত মণ্ডল সুন্দরবনে নদী–খালে মাছ ও কাঁকড়া ধরে জীবিকা নির্বাহ করতেন।

বন বিভাগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল সকালে সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের ঢাংমারী স্টেশন থেকে সরকারি রাজস্ব দিয়ে পাশ সংগ্রহ করে সুব্রতসহ কয়েকজন জেলে কাঁকড়া ধরতে বনে প্রবেশ করেন। আমুরবুনিয়া গ্রাম থেকে হেঁটে জোংড়া এলাকায় যান তাঁরা। পথে নদী–খাল সাঁতরে পার হন তাঁরা।

আরও পড়ুনসুন্দরবনে কুমিরের আক্রমণে জেলে নিহত, মরদেহের খোঁজ চলছে১০ ঘণ্টা আগে

কাঁকড়া সংগ্রহ করে সুন্দরবন থেকে ফেরার পথে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে করমজল খাল সাঁতরে পার হওয়ার সময় একটি কুমির সুব্রতকে কামড়ে ধরে পানির নিচে টেনে নিয়ে যায়। এ সময় তাঁর সঙ্গে থাকা অন্য জেলেরা চেষ্টার পরও তাঁকে উদ্ধার করতে পারেননি। পরে বন বিভাগ ও স্থানীয় বাসিন্দারা খালে তল্লাশি শুরু করেন।

সুন্দরবনের করমজল পর্যটন ও বন্য প্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির প্রথম আলোকে বলেন, ‘করমজল খাল পার হওয়ার সময় কুমিরের আক্রমণে সুব্রত মারা গেছেন। তাঁর স্ত্রী সন্তানসম্ভবা বলে জানতে পেরেছি। খবর পেয়ে আমরা তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে যাই। গ্রামবাসীর সঙ্গে তাঁর সন্ধানে তল্লাশি শুরু করি। মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটার দিকে খালে সুব্রতর মরদেহ ভেসে উঠেছিল। আবার কুমির মুখে নিয়ে ডুব দেয়। সাড়ে পাঁচটার দিকে আবারও কুমিরের মুখে একবার মরদেহ দেখা যায়। পরে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে কুমিরটি মরদেহ ছেড়ে দিলে কিছুক্ষণ দেখা গেলেও তা আবারও পানিতে ডুবে যায়। পরে রাতে মরদেহ উদ্ধার হয়েছে।’

গত বছরও সুন্দরবনের করমজল খালে কুমিরের আক্রমণে এক বনজীবীর মৃত্যু হয়েছিল। মোশাররফ হোসেন গাজী নামে ওই বনজীবী সুন্দরবন থেকে মধু সংগ্রহ করে ফিরছিলেন। পথে সাঁতরে খাল পার হওয়ার সময় কুমিরের আক্রমণের শিকার হন তিনি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ন দরবন র করমজল র করমজল খ ল বন ব ভ গ উদ ধ র মরদ হ

এছাড়াও পড়ুন:

সাতক্ষীরায় নির্বাচনী ইশতেহার নিয়ে পরামর্শ সভা

সাতক্ষীরায় জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিদের নিয়ে স্থানীয়দের চাহিদা নিরুপনে নির্বাচনী ইশতেহার-২০২৫ শীর্ষক উপজেলা পর্যায়ে পরামর্শ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকালে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সিডো এর আয়োজনে এবং একশনএইড বাংলাদেশ এর সহযোগিতায় সাতক্ষীরা সদর উপজেলা পরিষদ হলরুমে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

আরো পড়ুন:

পূজার ছুটির পর গকসুর নির্বাচিত প্রতিনিধিদের অভিষেক

নিবন্ধন পাচ্ছে এনসিপিসহ ২ দল

সিডো সাতক্ষীরার প্রধান নির্বাহী শ্যামল কুমার বিশ্বাসের সভাপতিত্বে কর্মসূচির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন, প্রকল্প সমন্বয়কারী মো. তহিদুজ্জামান।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, সাতক্ষীরা পৌরসভার কাউন্সিলর শফিক-উ-দ্দৌলা সাগর, টিআইবি সাতক্ষীরা জেলা কমিটির সাবেক সভাপতি হেনরী সরদার, একশনএইড প্রতিনিধি সুইট খান, ইয়ূথ সভাপতি  সাকিব হাসান, প্রোগ্রাম অফিসার চন্দ্র শেখর হালদার প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, সাতক্ষীরায় যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন সাতক্ষীরা জেলার রাস্তা-ঘাটের অবস্থা অনেক শোচনীয়। যোগাযোগ ব্যবস্থাকে উন্নত করতে রাস্তা-ঘাটের সংস্কার খুব জরুরি। সুন্দরবন কেন্দ্রিক টেকসই ইকোটুরিজম প্রতিষ্ঠা, সুন্দরবনের পরিবেশ ও সম্পদ সংরক্ষণ ও পর্যটন বৃদ্ধির মাধ্যমে টেকসই ইকোটুরিজম ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। সাতক্ষীরা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে, যা জেলার শিক্ষার্থীদের আধুনিক শিক্ষা সুবিধা দেবে।

তারা বলেন, রেল সংযোজন সাতক্ষীরা জেলা দীর্ঘদিন ধরে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নে বৈষম্যের শিকার। সাতক্ষীরাকে দেশের রেল নেটওয়ার্কে অন্তভুক্ত করতে হবে, যা জেলা ও দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি ত্বরান্বিত করবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় উপকূলীয় এলাকায় দীর্ঘমেয়াদী স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের ব্যবস্থা করতে হবে।

এছাড়া সাতক্ষীরায় আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন আন্তর্জাতিক মানের স্টেডিয়াম ও ক্রীড়া কমপ্লেক্স নির্মাণ, সীমান্তে মাদক প্রতিরোধে প্রযুক্তি নির্ভর নজরদারী ব্যবস্থা গড়ে তোলা জরুরি, স্থলবন্দরকে পূর্নাঙ্গ বন্দরে রুপান্তর, সাতক্ষীরার ভোমরাকে একটি আধুনিক আন্তর্জাতিক মানের স্থলবন্দর প্রতিষ্ঠা করে ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধি, নাগরিক সুবিধা নিশ্চিতে কার্যকর পৌরসভার ব্যবস্থাপনা, সুন্দরবন বাঁচাতে জীবশ্ম জ্বালানীকে পরিবর্তে নবায়ন যোগ্য জ্বালানী সংযোজন, জলবায়ু পরিবর্তন সহনশীল কৃষি ব্যবস্থাপনা, সবুজ উদ্যোক্তা তৈরির জন্য যথাযথ প্রশিক্ষণাগার তৈরি, প্রাণ সায়ের খালের দুই ধার সৌন্দর্যবর্ধন, যুবদের মুক্ত চিন্তা, উন্নয়ন ভাবনা ও নিজস্ব সাংস্কৃতিক চর্চার জন্য শিক্ষালয় কেন্দ্রিক যুববান্ধব স্পেস তৈরি ও কার্যকর করার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণের কথাও বলেন বক্তারা।

ঢাকা/শাহীন/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সুন্দরবনে কেওড়ার মৌসুমে বানরের হৃষ্টপুষ্ট চেহারা
  • সুন্দরবনে কুমিরের আক্রমণে জেলে নিহত
  • সাতক্ষীরায় নির্বাচনী ইশতেহার নিয়ে পরামর্শ সভা
  • সুন্দরবনে কুমিরের আক্রমণে জেলে নিহত, মরদেহের খোঁজ চলছে