আদিম মানুষ হিসেবে পরিচিত নিয়ান্ডারথালদের পায়ের ছাপ আবিষ্কার করেছেন পর্তুগালের লিসবন বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্লোস নেটো ডি কারভালহো ও সেভিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্নান্দো মুনিজের নেতৃত্বে একদল বিজ্ঞানী। পর্তুগালে আবিষ্কার হওয়া পায়ের ছাপগুলো প্রায় ৭৮ হাজার থেকে ৮২ হাজার বছরের পুরোনো। এই আবিষ্কারের মাধ্যমে পর্তুগালকে নিয়ান্ডারথাল সম্পর্কে গবেষণার জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচনা করা হচ্ছে।

বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, মন্টে ক্লেরিগো ২৮ ডিগ্রি থেকে ৩৫ ডিগ্রি কোণে নেমে আসা একটি বালিয়াড়ির ঢালে আদি মানুষের একাধিক পায়ের ছাপযুক্ত পথ শনাক্ত করা হয়েছে, যার মধ্যে পৃষ্ঠের প্রায় ২২ বর্গমিটার ওপরে অন্তত পাঁচটি ছোট পথ এবং ২৬টি একক পায়ের ছাপ পাওয়া গেছে। সৈকতে পাওয়া নিয়ান্ডারথালদের পায়ের ছাপের কারণ ধারণা করা হচ্ছে, নিয়ান্ডারথালরা পাহাড়ের ওপরে ও নিচে চলাচল করত।

পায়ের ছাপের দৈর্ঘ্য পর্যালোচনা করে নিয়ান্ডারথালদের শরীরের উচ্চতা অনুমান করেছেন বিজ্ঞানীরা। আকারে বড় কিছু পায়ের ছাপ পর্যালোচনা করে সেগুলোকে প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের বলে অনুমান করা হচ্ছে। তার উচ্চতা ছিল প্রায় ১.

৭ মিটার। একটি ছোট বিচ্ছিন্ন পায়ের ছাপ ৭ থেকে ৯ বছর বয়সী একটি শিশুর হতে পারে। তার উচ্চতা ছিল প্রায় ১.১৩ মিটার। অন্য একটি পায়ের ছাপ মাত্র ১১ সেন্টিমিটার হওয়ায় সেটিকে দুই বছরের কম বয়সী শিশুর পা বলে অনুমান করা হচ্ছে। আরেক এলাকা প্রাইয়া ডো তেলহেইরোতে ২২.৬ সেন্টিমিটার লম্বা ও ৭.৬ সেন্টিমিটার চওড়া একটি পায়ের ছাপ পাওয়া গেছে। সেটি সম্ভবত একজন কিশোর বা প্রাপ্তবয়স্ক নারীর ছিল।

মন্টে ক্লেরিগোতে পায়ের ছাপের আকার ও দিকনির্দেশকের বিন্যাস কিছুটা কৌণিক। বাঁকা পথে পায়ের ছাপ থেকে বোঝা যাচ্ছে তারা সম্ভবত খাড়াভাবে আরোহণ করছিল। সেখানে একটি হরিণের পায়ের ছাপ দেখা যায়। বিজ্ঞানীদের ধারণা, সম্ভবত শিকারের সময় এসব পায়ের ছাপ পড়েছিল। এ বিষয়ে বিজ্ঞানী নেটো ডি কারভালহো বলেন, এসব পায়ের ছাপ একটি নির্দিষ্ট মুহূর্তকে প্রায় তাৎক্ষণিকভাবে রেকর্ড করছে। এসব পায়ের ছাপ থেকে নিয়ান্ডারথালরা কীভাবে বসবাস করত, সে সম্পর্কে জানা যাচ্ছে। সেখানে শিশু থেকে প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের উপস্থিতি ছিল।

সূত্র: আর্থ ডটকম

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

দলের দুই পক্ষের বিরোধ মেটাতে যাচ্ছিলেন সালিস বৈঠকে, পথে দুর্ঘটনায় মৃত্যু বিএনপি নেতার

দলের দুটি পক্ষের মধ্যে হাতিহাতি ও সংঘর্ষের ঘটনায় বিরোধ মীমাংসায় ডাকা হয়েছিল সালিস বৈঠক। সে বৈঠকে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন ফেনীর পরশুরামের বিএনপি নেতা পারভেজ মজুমদার (৫৮)। পথে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান তিনি। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন তাঁর এক সহযোগী।

পারভেজ মজুমদার ফেনীর পরশুরাম উপজেলার মির্জানগর ইউনিয়নের নিজকালিকাপুর গ্রামের সাদেক মজুমদারের ছেলে। তিনি উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ছিলেন।

পুলিশ ও নিহত ব্যক্তির পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রোববার দুপুরে নিজকালিকাপুর গ্রামে নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ও মারামারির ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় উভয় পক্ষের চারজন আহত হন। সংঘর্ষের ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরশুরাম উপজেলা সদরে সন্ধ্যায় একটি সালিস বৈঠকে উদ্যোগ নেওয়া হয়। সালিসে যোগ দিতে স্থানীয় বিএনপি নেতা পারভেজ মজুমদার ও তাঁর সহযোগী মোহাম্মদ হারুন মোটরসাইকেলে নিজকালিকাপুর থেকে পরশুরাম যাচ্ছিলেন। তাঁদের বহন করা মোটরসাইকেলটি সুবার বাজার-পরশুরাম সড়কের কাউতলী রাস্তার মাথায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে মোটরসাইকেল আরোহী দুজন গুরুতর আহত হন।

স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরে ফেনীর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। পারভেজের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চিকিৎসকের পরামর্শে পরিবারের সদস্যরা রাতে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিলে পথে তাঁর মৃত্যু হয়।

পরশুরাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নুরুল হাকিম মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় বিএনপি নেতা পারভেজ মজুমদারের মৃত্যুর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, নিহত ব্যক্তির পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না থাকায় বিনা ময়নাতদন্তে মরদেহ বাড়ি নিয়ে যায় স্বজনরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ