সদর উপজেলার ফতুল্লার কাশিপুরে আধিপত্য বিস্তার করতে এলাকার নাম পরিবর্তন করা নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। তারা একে অপরকে ঘায়েল করতে নিজ নিজ বাহিনী নিয়ে এলাকায় মহড়া সহ প্রতিবাদ সভা সমাবেশ করে উত্তেজনা বৃদ্ধি করে তুলছে।

তাদের মধ্যে যে কোন মুহুর্তে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী। তবে আধিপত্য বিস্তার করতে একটি মহল্লøার নিরীহ বসবাসকারীদের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে তাদের মাথায় কাঁঠাল ভেঙ্গে খাওয়ার জন্য দুই গ্রুপের রাজনৈতিক দুই নেতা উঠে পড়ে লেগেছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।

এলাকাবাসীর সূত্রে জানা গেছে, কাশিপুর ইউনিয়নের চর কাশিপুর এলাকায় বরিশাল, মুন্সিগঞ্জ, ফরিদপুর সহ বিভিন্ন এলাকা হতে আসা লোকজন জায়গা ক্রয় করে বাড়ি নির্মান করে আসছে। ঐ এলাকায় প্রায় ২০০ বাড়ি নির্মিত হয়। আর কামাল নামের এক ব্যক্তি একটি বাজার করে কামাল বাজার হিসাবে নাম করণ করা হয়।

কিন্তু বিগত আওয়ামীলীগ আমলে উত্তর নরসিংপুর এলাকার আওয়ামীলীগ নেতা গিয়াস উদ্দিন ও তার মেয়ের জামাতা আওয়ামীলীগ নেতা সামসুদ্দিন  ভুইয়া সহ আরো অনেকে কামাল বাজারকে মুজিবনগর হিসাবে নাম করণ করার অপচেষ্টা চালায়। কিন্তু চর কাশিপুর এলাকার মৃত সিরাজ মাদবর কামাল বাজারকে চর কাশিপুর এলাকার নাম অব্যাহত থাকবে বলে জোর প্রতিবাদ জানায়।

ঐ সময় থেকে কামাল বাজার চর কাশিপুর এলাকা হিসাবে পরিচিত রয়েছে। আর ঐ অঞ্চলের বসবাসকারীদের ভোটার আইডি কার্ডে ঠিকানায় চর কাশিপুর     লেখা রয়েছে। এমনকি তাদের ভোট কেন্দ্র, কবর স্থান সহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চর কাশিপুর এলাকায়। কিন্তু আওয়ামীলীগ পতনের পর কামাল বাজারকে নরসিংপুর হিসাবে প্রতিষ্ঠা করতে সাবেক ছাত্রদল নেতা সাইদুর রহমান মিশনে নামে।

কিভাবে কামাল বাজার এলাকাকে নরসিংপুর হিসাবে কিভাবে প্রতিষ্ঠা করা যায় তা পরিকল্পনা করে। সেই পরিকল্পনা অংশ হিসাবে সাইদুরের মামা কাশিপুর ৩নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সামসুদ্দিন ভুইয়া ও তার ভাই আশরাফ উদ্দিনকে ম্যানেজ করে ঐ এলাকায় থাকা তাদের জমিতে মসজিদ নির্মান করে।

আর কামাল বাজার এলাকায় প্রভাব বিস্তার করতে সাইদুর ঐ মসজিদের সভাপতি হয়। আর আওয়ামীলীগ নেতা সামসুদ্দিন ভুইয়া সিনিয়র সহসভাপতি এবং নরসিংপুর এলাকার গিয়াস উদ্দিনকে (ঘিয়ন) সাধারণ সম্পাদক করা হয়।

মসজিদের সাইনবোর্ডে ঠিকানা হিসাবে নরসিংপুর হিসাবে লেখা হয়। তার পর হতে নরসিংপুর এলাকার সাইদুর গং ও চর কাশিপুর এলাকার লোকদের মধ্যে শুরু হয় মল্লযুদ্ধ। একপর্যায়ে নরসিংপুর লেখা মসজিদের সাইবোর্ডটি নামিয়ে দেয় কাশিপুর ইউনিয়ন ৩নং ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আলমগীর সহ তার লোকজন।

সাইবোর্ড নামিয়ে দেয়ার সংবাদ পেয়ে সাইদুর তার বাহিনী নিয়ে কামাল বাজার এলাকায় মহড়া দেয়। এমনকি আলমগীরও তার বাহিনী নিয়ে এলাকা অবস্থান নেয়। পরে দুই গ্রুপের মধ্যে দেখা দেয়। তাদের মধ্যে তর্কবিতর্ক সহ চরম হট্রগোলে পরিনত হয়। এহেন পরিস্থিতিতে এলাকার ২০০ পরিবার অসহায় হয়ে পড়ে এবং তারা আতঙ্কের মধ্যে দিনাতিপাত করছে।

কামাল বাজারের লোকজনের মাথায় কাঠাল ভেঙ্গে খাওয়ার লক্ষ্য নিয়ে দুই গ্রুপের লোকজন ঐ এলাকার নাম পরিবর্তন করার নোংরা রাজনীতি খেলায় মেতে উঠছে। আলমগীর প্রভাব বিস্তার করতে চায় সে যেন ঐ এলাকায় ইট বালু সিমেন্টের ব্যবসা করতে পারে এবং সাইদুরও প্রভাব বিস্তার করতে চায় যাতে করে জমির ব্যবসা, ড্রেজার ব্যবসা করতে পারে।   

অপরদিকে এ ঘটনার ইস্যু করে প্রতিপক্ষ গ্রুপকে ঘায়েল করতে সাবেক ছাত্রদল নেতা সাইদুর নিজেকে জাহির করতে প্রেস ক্লাবে বিএনপি নেতা আলমগীরের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করে। তিনি আলমগীরের বিরুদ্ধে নানা তথ্য তুলে ধরেন।

সংবাদ সম্মেলনের পর আলমগীর সাইদুরকে ঘায়েল করতে চর কাশিপুর সহ কামাল বাজার এলাকার লোকজন নিয়ে সাইদুরের বিরুদ্ধে মানববন্ধন সহ ঝাড়ু মিছিল বের করে। এ নিয়ে এলাকায় চরম উত্তেজনা সহ কামাল বাজারবাসীর মধ্যে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক।

সাইদুর ও আলমগীর রাজনৈতিক ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় কামাল বাজারকে নিজেদের কজ্বায় নিতে মরিয়া হয়ে উঠে। যার কারনে তারা আলাদা ভাবে বাহিনী তৈরি করে এলাকায় মহড়া দেয়া সহ ঐ এলাকার লোকদের নিজেদের বলয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে।

কিন্তু ঐ অঞ্চলের লোকজন নিরীহ হওয়ায় তারা কোন বলয়ে যেতে চায় না। তারা তাদের এলাকাটি যে নামে পরিচয়ে পরিচিত সেই নামে থাকতে চায়। নিরীহ কামাল বাজারের ২০০ পরিবারকে পুজি করে দুই গ্রুপের লোকজন তাদের দখলে নিতে চাইছে।

এই ইস্যু নিয়ে তাদের মধ্যে যেকোন সময়ে বড় ধরনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছে।  
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: স ঘর ষ স ঘর ষ ন র য়ণগঞ জ

এছাড়াও পড়ুন:

স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করা নিয়ে বিতণ্ডা, কুপিয়ে হত্যার অভিযোগে প্রথম স্ত্রী আটক

ফেনীতে দ্বিতীয় বিয়ে নিয়ে কলহের জেরে স্বামীকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগে স্ত্রীকে আটক করেছে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ফেনীর দাগনভূঞার পৌর এলাকার জগতপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত ব্যক্তির নাম আলমগীর হোসেন (৪৫)। তিনি একই গ্রামের গফুর ভান্ডারি বাড়ির আবদুল গফুরের ছেলে। পেশায় তিনি ট্রাকচালক ছিলেন। আটক স্ত্রীর নাম খালেদা ইয়াসমিন (৩৮)।

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্র জানায়, ২০ বছর আগে পারিবারিকভাবে আলমগীরের সঙ্গে খালেদা ইয়াসমিনের বিয়ে হয়ছিল। তাঁদের এক ছেলে রয়েছে। তবে গত কয়েক মাস আগে নারায়ণগঞ্জ জেলায় আরেকটি বিয়ে করেন আলমগীর। এসব নিয়ে তাঁদের মধ্যে দ্বন্দ্ব ছিল। গতকাল দিবাগত রাত তিনটার দিকে নারায়ণগঞ্জ থেকে আলমগীর বাড়িতে আসেন। এরপর আজ দুপুরে তাঁর প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে দ্বিতীয় বিয়ে নিয়ে বিতণ্ডা হয়।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বাগ্‌বিতণ্ডার একপর্যায়ে ইয়াসমিন তাঁর স্বামীকে কুপিয়ে জখম করে। এতে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। পরে স্বজনেরা ঘরের শৌচাগারের ভেতর আলমগীরের মরদেহ দেখতে পান। এরপর পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।

জানতে চাইলে নিহত ব্যক্তির ছেলে কামরুল ইসলাম (১৬) প্রথম আলোকে বলে, নতুন বিয়ে করার পর তাঁর বাবা তাঁদের ভরণপোষণ দিতেন না। এ ঘটনার সময় তিনি বাড়িতে ছিলেন না। দুপুরের দিকে খবর পেয়ে বাড়িতে আসেন।

জানতে চাইলে দাগনভূঞা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওয়াহেদ পারভেজ বলেন, নিহত ব্যক্তির শরীরে একাধিক জখমের চিহ্ন রয়েছে। তাঁকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। অভিযুক্ত স্ত্রীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পারিবারিক কলহের জের ধরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আঁখির অতিথি সৈয়দ আবদুল হাদী
  • দেবী দুর্গা শক্তি ও সাহসের মূর্ত প্রতীক: মির্জা ফখরুল 
  • হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে ৪১ জেলার ৪৩৮টি স্থানে
  • স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করা নিয়ে বিতণ্ডা, কুপিয়ে হত্যার অভিযোগে প্রথম স্ত্রী আটক