ঝিনাইদহে ছেলের সঙ্গে বিরোধের জেরে বাঁশিওয়ালা আমির হামজার (৫৫) ওপর হামলা হয়েছে। হাতুড়িপেটায় তিনি গুরুতর আহত হয়েছেন। তাঁর স্ত্রীকে মারধর করা হয়েছে। তাঁদের দুজন এখন ঝিনাইদহ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি আছেন।

আমির হামজার বাড়ি সদর উপজেলার ভগবাননগর গ্রামে। প্রায় ৪০ বছর ধরে ফেরি করে বাঁশি বিক্রি করেন। বাঁশি বাজিয়ে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করেন তিনি। স্থানীয়ভাবে তিনি বাঁশিওয়ালা হিসেবে পরিচিত। গত সোমবার সকালে ভগবাননগর গ্রামে আমির হামজা ও তাঁর স্ত্রী তারা বানুর ওপর হামলা হয়।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আমির হামজা বলেন, তাঁর বড় ছেলে নয়ন হোসেন স্থানীয় রাজা মিয়ার ট্রাকের চালক হিসেবে কাজ করেন। কয়েক দিন আগে ডাকাতির কবলে পড়ে ট্রাকটি। ডাকাতেরা রাজা ও তাঁর সহকারীর মুঠোফোন ও টাকা ছিনিয়ে নেয়। তবে ট্রাকমালিক রাজা মিয়া তা মানতে চাননি। তিনি পথখরচ বাবদ দেওয়া টাকা ফেরত চান। এ নিয়ে গত রোববার রাতে রাজা মিয়া ও তাঁর ছেলে রাশেদ লোকজন নিয়ে আমির হামজার বাড়িতে চড়াও হন। এ সময় তিনি ২ হাজার ৫০০ টাকা দিয়ে মাফ চান।

আমির হামজা জানান, গত সোমবার সকালে তিনি বাড়ির পাশে লতিফ মোল্লার চায়ের দোকানে বসে ছিলেন। এ সময় রাজা মিয়ার ছেলে রাশেদ পেছন থেকে হাতুড়ি দিয়ে তাঁর পিঠে আঘাত করেন। তিনি মাটিতে পড়ে যান এবং রাশেদ তাঁর পায়ে হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করতে থাকেন। খবর পেয়ে তাঁর স্ত্রী ছুটে এলে তাঁকেও মাথায় আঘাত করা হয়। পরে গ্রামের লোকজন তাঁদের দুজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।

ঝিনাইদহ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ফারহানা ইয়াসমিন বলেন, আমির হামজা অর্থোপেডিক ওয়ার্ডে ভর্তি আছেন। তাঁর বাঁ হাঁটুর হাড় ভেঙে গেছে। তাঁর স্ত্রী তারা বানু মাথায় আঘাত নিয়ে নারী সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি আছেন।

ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘আমির হামজার ওপর হামলার বিষয়ে আমার জানা নেই। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ঝ ন ইদহ

এছাড়াও পড়ুন:

দলের দুই পক্ষের বিরোধ মেটাতে যাচ্ছিলেন সালিস বৈঠকে, পথে দুর্ঘটনায় মৃত্যু বিএনপি নেতার

দলের দুটি পক্ষের মধ্যে হাতিহাতি ও সংঘর্ষের ঘটনায় বিরোধ মীমাংসায় ডাকা হয়েছিল সালিস বৈঠক। সে বৈঠকে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন ফেনীর পরশুরামের বিএনপি নেতা পারভেজ মজুমদার (৫৮)। পথে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান তিনি। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন তাঁর এক সহযোগী।

পারভেজ মজুমদার ফেনীর পরশুরাম উপজেলার মির্জানগর ইউনিয়নের নিজকালিকাপুর গ্রামের সাদেক মজুমদারের ছেলে। তিনি উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ছিলেন।

পুলিশ ও নিহত ব্যক্তির পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রোববার দুপুরে নিজকালিকাপুর গ্রামে নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ও মারামারির ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় উভয় পক্ষের চারজন আহত হন। সংঘর্ষের ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরশুরাম উপজেলা সদরে সন্ধ্যায় একটি সালিস বৈঠকে উদ্যোগ নেওয়া হয়। সালিসে যোগ দিতে স্থানীয় বিএনপি নেতা পারভেজ মজুমদার ও তাঁর সহযোগী মোহাম্মদ হারুন মোটরসাইকেলে নিজকালিকাপুর থেকে পরশুরাম যাচ্ছিলেন। তাঁদের বহন করা মোটরসাইকেলটি সুবার বাজার-পরশুরাম সড়কের কাউতলী রাস্তার মাথায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে মোটরসাইকেল আরোহী দুজন গুরুতর আহত হন।

স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরে ফেনীর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। পারভেজের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চিকিৎসকের পরামর্শে পরিবারের সদস্যরা রাতে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিলে পথে তাঁর মৃত্যু হয়।

পরশুরাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নুরুল হাকিম মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় বিএনপি নেতা পারভেজ মজুমদারের মৃত্যুর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, নিহত ব্যক্তির পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না থাকায় বিনা ময়নাতদন্তে মরদেহ বাড়ি নিয়ে যায় স্বজনরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ