আন্তর্জাতিক বিরতিতে দ্বিতীয় প্রীতি ম্যাচ খেলতে আগামীকাল সকালে পুয়ের্তো রিকোর বিপক্ষে মাঠে নামবে আর্জেন্টিনা। ম্যাচটি হবে ইন্টার মায়ামির মাঠ চেজ স্টেডিয়ামে, বাংলাদেশ সময় সকাল ছয়টায়। এ ম্যাচে একাদশে একাধিক পরিবর্তন আসছে বলে জানিয়েছে আর্জেন্টাইন সংবাদমাধ্যম টিওয়াইসি স্পোর্টস। সবচেয়ে বড় খবর, লিওনেল মেসির ফেরার পাশাপাশি অভিষেক হতে পারে তরুণ ফরোয়ার্ড হোসে ম্যানুয়েল লোপেজের।

আর্জেন্টিনার কোচ লিওনেল স্কালোনিসহ দলের কোচিং স্টাফদের ভাবনা, এই প্রীতি ম্যাচগুলোতে হারানোর কিছু নেই। তাই যাঁরা দলে ডাক পেয়েছেন, তাঁদের সবাইকে একবার করে দেখা উচিত। তাই ভেনেজুয়েলার বিপক্ষে যাঁরা একাদশে ছিলেন, তাঁদের কেউ কেউ হয়তো এবার বেঞ্চে থাকবেন। আবার বদলি হিসেবেও নামতে পারেন কয়েকজন নতুন মুখ।

আর্জেন্টিনার সর্বশেষ অনুশীলন সেশন বিশ্লেষণ করে টিওয়াইসি জানিয়েছে, পালমেইরাসের লোপেজ হয়তো শুরু থেকেই মাঠে নামবেন এবং আক্রমণভাগে মেসির সঙ্গী হবেন।

আরও পড়ুনলাওতারো রিভেরো: ফুটপাতের বিস্কুট বিক্রেতা থেকে আর্জেন্টিনা দলে মেসির সতীর্থ০৫ অক্টোবর ২০২৫

সোমবারের সংবাদ সম্মেলনে কোচ লিওনেল স্কালোনি বলেছেন, ফিট থাকলে মেসিকে অন্তত কিছু সময়ের জন্য হলেও দেখা যাবে মাঠে। তবে তিনি শুরু থেকে খেলবেন, নাকি দ্বিতীয়ার্ধে নামবেন, তা এখনো ঠিক হয়নি। যদি মেসি বেঞ্চে থাকেন, তাহলে নিকো পাজ ভেনেজুয়েলা ম্যাচের মতো এবারও সুযোগ পেতে পারেন।

আগামীকাল অভিষেক হতে পারে হোসে ম্যানুয়াল লোপেজের.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আর জ ন ট ন

এছাড়াও পড়ুন:

স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ঘুমের আগে নবীজির (সা.) ৭ নির্দেশনা

রাসুল (সা.)-এর জীবনধারায় নিদ্রাও ইবাদত। ঘুম মানুষের শরীর ও মনের জন্য এক অপরিহার্য নিয়ামত। আল্লাহ তায়ালা কোরআনে বলেন,“তিনিই তোমাদের জন্য ঘুমকে করেছেন বিশ্রামের মাধ্যম এবং ঘুম থেকে জাগরণকে করেছেন জীবনযাপনের সূচনা।” (সুরা ফুরকান, আয়াত: ৪৭)

কিন্তু ইসলামে ঘুম কেবল জৈব প্রয়োজন নয়, বরং এটি হতে পারে ইবাদতের অংশ, যদি তা নবীজির (সা.) নির্দেশনা অনুযায়ী হয়।

১. ঘুমানোর পূর্বের দোয়া ও জিকির

রাসুল (সা.) ঘুমানোর আগে আল্লাহর স্মরণে লিপ্ত থাকতেন। তিনি বলতেন, “যখন তোমরা বিছানায় যাবে, তখন ডান পাশে শুয়ে বলবে: ‘আল্লাহুম্মা বিস্মিকা আহইয়া ওয়া বিস্মিকা আমুত।’” অর্থ: “হে আল্লাহ, তোমার নামেই আমি জীবিত থাকি এবং তোমার নামেই মৃত্যুবরণ করি।” (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬৩১২; সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২৭১০)

এছাড়াও ঘুমের আগে সুরা ইখলাস, ফালাক ও নাস পাঠ করা সুন্নাহ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫০১৭)। এতে করে দুষ্টু জিনের মন্দ–প্রবঞ্চনা থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।

২. অজু করে ঘুমানো

রাসুল (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি পবিত্র অবস্থায় ঘুমায়, সে যখনই রাতে জেগে আল্লাহর স্মরণ করে ও দোয়া করে, আল্লাহ তার দোয়া কবুল করেন।” (সহিহ ইবনে মাজাহ, হাদিস: ৩৮৬৪)

অতএব, ঘুমের আগে ওজু করে নেওয়া শুধু শরীরকে পরিচ্ছন্ন রাখে না, বরং এটি আল্লাহর বিশেষ রহমতেরও মাধ্যম।

আরও পড়ুনগুহার ভেতর ৩০৯ বছরের এক ঘুম৩০ মে ২০২৫৩. ডান কাতে শোয়া

রাসুল (সা.) নিজে ডান কাতে শুয়ে ঘুমাতেন এবং সাহাবিদেরও তাই করতে বলেছেন, “যখন তুমি বিছানায় যাবে, তখন তোমার ডান পাশে শোও।” (সহিহ বুখারি, হাদিস: ২৪৭; সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২৭১০)

এটি শারীরিকভাবে চিকিৎসাবিজ্ঞানের দিক থেকেও উপকারী বলে স্বীকৃত, কারণ এতে হৃদপিণ্ডের উপর চাপ কমে ও হজম সহজ হয়।

৪. বিছানার পরিচ্ছন্নতা ও শরীরের নিরাপত্তা

নবীজির (সা.) নির্দেশ, “যখন কেউ শয্যায় যাবে, তখন তার বিছানার চাদর একবার ঝাড়ে নেবে, কারণ সে জানে না, সেখানে কী আছে।” (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬৩২০)

এ নির্দেশে যেমন নিরাপত্তার শিক্ষা আছে, তেমনি পরিচ্ছন্নতার গুরুত্বও প্রতিফলিত হয়েছে।

৫. নির্দিষ্ট দিক মুখ করে ঘুমানো

রাসুল (সা.)-এর অভ্যাস ছিল কিবলামুখী হয়ে ডান কাতে ঘুমানো। (মুসনাদ আহমাদ, হাদিস: ২৩৮৪৯)

অন্যদিকে, তিনি উল্টো পিঠে (উপুড় হয়ে) শোয়াকে অপছন্দ করতেন (সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ২৭৬৯)। উপুড় হয়ে ঘুমানো শারীরিক উত্তেজনা বাড়ায়, প্রশান্তিদায়ক ঘুমে ব্যাঘাত ঘটায়।

আরও পড়ুনতাহাজ্জুদের সময় ঘুম থেকে ওঠার জন্য কিছু বিষয় ১৯ মার্চ ২০২৩৬. ঘুমানোর আগে আত্মসমালোচনা

নবীজির (সা.) জীবনে ঘুম কেবল বিশ্রামের নয়, আত্মসমালোচনার সময়ও ছিল। তিনি বলতেন, “যে নিজের নফসের হিসাব করে, সে সফল।” (মুসনাদ আহমাদ, হাদিস: ২৩৯৮৮)

অতএব, দিনের শেষে ঘুমানোর আগে নিজের আমল যাচাই করাও এক ধরনের ইবাদত। এটা মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ভাল। কর্ম উদ্দীপনা বাড়ায় এবং মস্তিষ্ককে অহেতুক ভাবনা থেকে সুরক্ষিত রাখে।

৭. রাত্রিকালীন নামাজ ও ঘুমের ভারসাম্য

রাসুল (সা.) ঘুমাতেন এবং রাতের একাংশে জেগে তাহাজ্জুদ আদায় করতেন। কোরআনে বলা হয়েছে, “তুমি রাত্রির কিছু অংশে তাহাজ্জুদের মাধ্যমে দাঁড়াও।” (সুরা ইসরা, আয়াত: ৭৯)

এই অভ্যাস নিদ্রাকে ভারসাম্যপূর্ণ রাখে এবং আত্মাকে পবিত্র করে।

দুপুরের ঘুম

নবীজির (সা.) একটি সুন্নাহ হলো দুপুরে অল্প বিশ্রাম নেওয়া, যাকে কায়লুলা বলে। তিনি বলেন, “তোমরা দিনের কিছু অংশে ঘুমাও, কারণ শয়তান ঘুমায় না।” (জামে’ আস-সগীর, হাদিস: ৮৫৮৯)

আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানও প্রমাণ করেছে যে, দুপুরের সংক্ষিপ্ত ঘুম কর্মক্ষমতা ও মনোযোগ বৃদ্ধি করে।

ঘুম থেকে জাগার দোয়া

জেগে উঠলে রাসুল (সা.) বলতেন, “আলহামদুলিল্লাহিল্লাজি আহইয়ানা বা’দা মা আমাতানা, ও ইলাইহিন নুশূর।” অর্থ: “সব প্রশংসা আল্লাহর, যিনি আমাদের মৃত্যুর পর (ঘুম থেকে) জাগিয়ে তুলেছেন; এবং তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তন।” (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬৩১৪)

ঘুম ইসলামি জীবনের এমন এক অধ্যায়, যেখানে ইবাদত রয়েছে প্রতিটি ধাপে। ডান কাতে শোয়া, অজু করে ঘুমানো, দোয়া পাঠ, আত্মসমালোচনা—সবকিছুই একটি আত্মিক ও স্বাস্থ্যকর জীবনধারার অংশ। নবীজির (সা.) শিক্ষা হলো—“ঘুমও যেন হয় আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য।”

আরও পড়ুনসুস্থ জীবনের জন্য নবীজি (সা.)–এর কয়েকটি সুন্নাহ২৯ জুন ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ