জুলাই ফাউন্ডেশনের ১০ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ‘জুলাই যোদ্ধা’কে নির্যাতনের অভিযোগে মামলা
Published: 14th, October 2025 GMT
মামলা হয়েছে জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের ১০ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে; মামলাটি করেছেন ‘জুলাই যোদ্ধা’ হিসেবে পরিচয় দেওয়া এক ব্যক্তির স্ত্রী। তাঁর স্বামীকে জুলাই ফাউন্ডেশনে আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ তুলেছেন তিনি।
সাত মাস আগের ঘটনায় ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আজ মঙ্গলবার মামলাটি করেন সাবিনা ইয়াসমিন। তাঁর স্বামী বুলবুল শিকদার জুলাই যোদ্ধা হিসেবে সরকারি গেজেটে তালিকাভুক্ত বলে জানিয়েছেন তিনি।
মামলায় সাবিনা ইয়াসমিন জুলাই ফাউন্ডেশনের ১০ কর্মকর্তার পাশাপাশি আরও ৩ জনকে আসামি করেছেন বলে প্রথম আলোকে জানিয়েছেন তাঁর আইনজীবী ইলতুৎমিস সওদাগর।
আইনজীবী ইলতুৎমিস বলেন, নির্যাতনের অভিযোগে জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের ১০ কর্মকর্তাসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। আদালত মামলাটি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। আগামী ১১ নভেম্বর প্রতিবেদন জমা দেওয়ার দিন ধার্য করেছেন আদালত।
মামলায় জুলাই ফাউন্ডেশনের সিনিয়র ভেরিফিকেশন অফিসার ইফতেখার হোসেন, কর্মকর্তা সাগর, মেহেদী হাসান প্রিন্স, আফজালুর রহমান সায়েম, সাইদুর রহমান শাহিদ, ফাতেমা আফরিন পায়েল, রেজা তানভীর, আলিফ, জাহিদ, এক্সিকিউটিভ মেম্বার সাবরিনা আফরোজ শ্রাবন্তী এবং সোনিয়া আক্তার লুবনা, শামীম রেজা খান ও রাকিনকে আসামি করা হয়েছে।
আইনজীবী ইলতুৎমিস সওদাগর আরও বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ১৯ জুলাই ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকায় গুরুতর জখম হন বুলবুল শিকদার ও তাঁর ছেলে। পরে জুলাই যোদ্ধা হিসেবে তাঁদের নাম গেজেটভুক্ত হয়।
গত ২০ মার্চ জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনে গিয়ে বুলবুল শিকদার নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন দাবি করে মামলায় সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ‘সেদিন ভুয়া জুলাই যোদ্ধা হিসেবে অভিযোগ তুলে তাকে ২৪ ঘণ্টা আটক রেখে জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের কক্ষে নির্যাতন করা হয়।’
ঘটনার এত দিন পর মামলা করার কোনো ব্যাখ্যা সাবিনা ইয়াসমিনের আইনজীবীর কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।
অভিযোগের বিষয়ে জুলাই ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তাদের কোনো বক্তব্য তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়নি।
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে গত বছরের ১২ সেপ্টেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে ‘জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন’ গঠন করা হয়। এই ফাউন্ডেশনের তহবিল থেকে জুলাই যোদ্ধাদের সহায়তা করা হচ্ছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আইনজ ব
এছাড়াও পড়ুন:
রাবিতে ফারুক হত্যা মামলায় জামায়াত-শিবিরের সব আসামি খালাস
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ছাত্রলীগকর্মী ফারুক হোসেন হত্যা মামলার সব আসামিকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।
রবিবার (১২ অক্টোবর) দুপুর ২টার দিকে রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক জুলফিকার উল্লাহ চাঞ্চল্যকর এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।
এ মামলায় জামায়াতে ইসলামীর তৎকালীন কেন্দ্রীয় আমির মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ, নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, রাজশাহী মহানগরের তৎকালীন আমির আতাউর রহমানসহ ১১৪ জন আসামি ছিলেন।
রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আলী আশরাফ মাসুম বলেন, ‘‘সাক্ষ্য-প্রমাণে আসামিদের বিরুদ্ধে সন্দেহাতীতভাবে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত সকলকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন।’’
তিনি জানান, মামলার ১১৪ জন আসামির মধ্যে ৯ জন এরইমধ্যে মারা গেছেন। ১০৫ জন জীবিত আছেন। রায় ঘোষণার সময় ২৫ আসামি উপস্থিত ছিলেন। বাকিরা অনুপস্থিত ছিলেন।
ফারুক হোসেন রাবির গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। ২০১০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে হল দখল ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে ছাত্রশিবিরের সংঘর্ষ হয়। এতে ছাত্রলীগকর্মী ফারুক হোসেন নিহত হন। তার লাশ ম্যানহোলে পাওয়া যায়।
ঘটনার পরদিন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মাজেদুল ইসলাম অপু বাদী হয়ে ৩৫ জন জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরো ২০-২৫ জনকে আসামি করে নগরের মতিহার থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এর প্রায় আড়াই বছর পর ২০১২ সালের ২৮ জুলাই পুলিশ আদালতে ১২৬৯ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র দাখিল করে।
এতে জামায়াতের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ছাড়াও রাবি ছাত্রশিবিরের তৎকালীন সভাপতি শামসুল আলম গোলাপ, সম্পাদক মোবারক হোসেন, নবাব আব্দুল লতিফ হল শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি হাসমত আলী, শহীদ হবিবুর রহমান হলের সভাপতি রাইজুল ইসলামসহ ১১৪ জনকে অভিযুক্ত করা হয়। দীর্ঘদিন পর অবশেষে এ মামলার রায় ঘোষণা করা হলো।
রায়ের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আলী আশরাফ মাসুম বলেন, ‘‘রায়ে খুশি-অখুশি এখনই বলা যাবে না। আগে রায়টা দেখি, তারপর। তবে মামলাটা করার সময় প্রকৃত আসামিদের আড়াল করে রাজনৈতিক কারণে অন্যদের আসামি করা হয়েছিল।’’
ঢাকা/কেয়া/এস