নারায়ণগঞ্জের লুবনা ও জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের ১০ কর্মকর্তার নামে মামলা
Published: 14th, October 2025 GMT
জাতীয় নাগরিক পাটি (এনসিপি) নারায়ণগঞ্জ জেলার সদস্য সোনিয়া আক্তার লুবনা সহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। মামলাটি তদন্ত করছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
ভুয়া তথ্য দিয়ে ‘জুলাইযোদ্ধা’ হিসেবে সরকারি তালিকায় নাম দিয়েছেন, এমন অভিযোগ যাচাইয়ে জিজ্ঞাসাবাদের নামে নির্যাতনের অভিযোগে মামলাটি দায়ের করেন ভুক্তভোগী সাবিনা ইয়াসমিন।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আরিফুল ইসলামের আদালতে এ মামলা করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে আগামী ১১ নভেম্বরের মধ্যে সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। বাদীপক্ষের আইনজীবী মো.
লুবনা ছাড়াও মামলার অন্য আসামিরা হলেন- ইফতেখার হোসেন (সিনিয়র ভেরিফিকেশন অফিসার, জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন), সাগর (কর্মকর্তা, জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন), মেহেদী হাসান প্রিন্স (কর্মকর্তা, জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন), সাবরিনা আফরোজ শ্রাবন্তী (এক্সিকিউটিভ মেম্বার, জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন), আফজালুর রহমান সায়েম (কর্মকর্তা, জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন), সাইদুর রহমান শাহিদ (কর্মকর্তা, জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন), ফাতেমা আফরিন পায়েল (কর্মকর্তা, জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন), রেজা তানভীর (কর্মকর্তা, জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন), রাকিন, শামীম রেজা খান, আলিফ (কর্মকর্তা, জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন), জাহিদ (কর্মকর্তা, জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন)।
তাদের ঠিকানা ব্যবহার করা হয়েছে বিএসএল অফিস কমপ্লেক্স, ১১৯ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, বিল্ডিং নং-২, ৪র্থতলা, ইন্টারকন্টিনাল ঢাকা হোটেল সংলগ্ন, ঢাকা।
মামলায় বাদী উল্লেখ করেন, তার স্বামী বুলবুল সিকদার ও পুত্র রাকিবুল হাসান গত ২০২৪ সালের ফ্যাসীবাদ বিরোধী বিপ্লবে ২০২৪ সালের ১৯ জুলাই সন্ধ্যা আনুমানিক ৬টার দিকে সিদ্ধিরগঞ্জের চিটাগাং রোড ১০ তলা মাদানী নগর মাদ্রাসার সামনে দিয়ে মটর সাইকেল যোগে যাওয়ার পথে পুলিশ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, শ্রমিকলীগ, আওয়ামীলীগের সন্ত্রাসীরা আন্দোলনরত ছাত্র-জনতা ও পথচারীর উপর এলোপাথারী গুলি বর্ষন শুরু করে। এবং বাদীর স্বামী ও তার পুত্র সন্তানের উপর লাঠি, সোটা, রড, ইট, চাপাতি দিয়ে হামলা করলে বাদীর স্বামী ও তার সন্তান মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।
হামলায় বাদীর স্বামীর হাটুর নীচে পায়ের অংশ থেতলে যায় এবং বাদীর ছেলের পা ভেঙ্গে রগ ছিড়ে যায়। ৫ আগস্ট ফ্যাসীবাদের পতন ঘটে এবং উক্ত ফ্যাসীবাদের পতনের প্রেক্ষিতে জুলাই এর বর্ষা বিপ্লবীদের আত্মত্যাগের মূল্যায়ন এর জন্য জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন গঠিত হয়।
বাদী তার স্বামীকে নিয়ে জুলাই ফাউন্ডেশন কার্যালয়ে চলতি বছরের ২০ মার্চ সকাল ১১টায় গেলে ফাউন্ডেশনের সিনিয়র ভেরিফিকেশন অফিসার ১নং আসামী ইফতেখার হোসেন বাদীর সম্মুখে তার স্বামী ভিকটিম বুলবুল সিকদারকে জিজ্ঞাসাবাদ করে যে, আপনি কিভাবে জুলাই-এ আহত হলেন এবং আপনাকেকে পাঠাইছে।
তখন বাদী এবং তার স্বামী ১নং আসামীকে আহত হওয়ার ঘটনা বর্ণনা করেন এবং বলেন যে, ইতোপূর্বে তার আহত ছেলে রাকিবুল হাসান (জুলাই যোদ্ধা) এর ক্ষতিপূরণ বাবদ ১ লক্ষ টাকার চেক উত্তোলন করে নিয়ে গেছে। বাদীর স্বামী বুলবুল সিকদারের জুলাই যোদ্ধা গেজেট নম্বর ২৩৮৭ এবং মেডিক্যাল কেস আইডি ৩২৫০৬ এর কাগজ প্রদর্শন করলে ১নং আসামী, ২ ও ৩নং আসামীকে ডেকে নিয়ে আসে।
উক্ত ২ ও ৩নং আসামী ভিকটিমকে বাদীর নিকট হইতে অন্য একটি কক্ষে নিয়ে যায় এবং বাদীকে অপেক্ষা করতে বলে। প্রায় ৩ ঘণ্টা অতিবাহিত হওয়ার পরেও ভিকটিম না আসলে বাদী তার স্বামীর মোবাইলে ফোন দেয়। কিন্তু ফোন ২নং আসামী সাগর রিসিভ করে। বাদী তার স্বামীর খবর জানতে চাইলে আসামী সাগর বলে "ভুয়া জুলাই যোদ্ধা ধরেছি। এখন তার জামাই আদর চলতেছে"।
বাদীকে বলে আপনি কোথায়, বাদী বলে আমি অফিসেই আছি। তখন সাগর বাদীকে ভেতরে যেতে বলে। পরবর্তীতে বাদী ভিতরে গিয়ে আসামী সাগর, সায়েম, ইফতেখার ও আসামী সাগরের স্ত্রীকে দেখতে পায়। তারা বাদীকে বিভিন্নভাবে হুমকি দেয় এবং বাদীর ব্যাগ ও মোবাইল নিয়ে যায়।
এরপর বাদীকে জিজ্ঞাসা করা হয় আপনারা আফরিন (৩নং সাক্ষী) কে কিভাবে চিনেন, বাদী জানায় যে, তার ছেলে রাকিবুল হাসান (জুলাই যোদ্ধা)কে ডিসি অফিসে তার ছেলেকে সহযোগিতা করার মাধ্যমে দিলশাদ আফরিনের সংগে পরিচয় হয়।
বাদীকে আসামী সাগর জিজ্ঞাসা করে আপনারা কি আফরিন (মামলার ৩নং সাক্ষী)কে টাকা পয়সা দিয়েছেন কিনা? বাদী উত্তরে দিলশাদ আফরিন কে কোন টাকা দেয় নাই বললে আসামীরা বাদীকে মারধর করে মিথ্যা স্বীকারোক্তি দেওয়ার জন্য।
তখন আসামী সাগরের সাথে উপস্থিত ১৩নং আসামী জাহিদ বাদীকে গণ ধোলাই দেওয়ার জন্য উস্কানী দেয়। এবং পুলিশ দিয়ে এ্যারেস্ট করার ভয় দেখায়, এরপর আসামী সাগরের সাথে উপস্থিত জাহিদ বাদীর মুখ চেপে ধরে এবং বাদীকে, চড়, থাপ্পর মেরে শারীরিক নির্যাতন করে। পরে আসামী ইফতেখার, সাগর বাদীকে চাপ দেয় দিলশাদ আফরিনকে ফোন দিয়ে আসার জন্য।
এতে বাদী রাজী না হলে আসামী সাবরিনা শ্রাবন্তী বিভিন্ন ভাবে মারধর করে। আসামীদের মারধরের কারনে বাদী ফোন করে ইতোমধ্যে ইফতার এর সময় অতিক্রান্ত হলে বাদীর স্বামীকে আবার আলাদা রুমে নিয়া যায় এবং প্রায় ৩ ঘন্টা বাদীর স্বামীকে বিভিন্নভাবে অত্যাচার করে।
মামলার ৩নং সাক্ষী দিলশাদ আফরিন রাত প্রায় সাড়ে ১০ কি ১১টায় জুলাই ফাউন্ডেশন অর্থাৎ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে আসামীরা তাকে বিভিন্নভাবে প্রাণ নাশের হুমকি দিয়ে এবং পুলিশে সোপর্দ করার ভয় দেখিয়ে মিথ্যা স্বীকারোক্তি প্রদানে চাপ প্রয়োগ করে।
আসামীদের এইরূপ অত্যাচার ও ভয়ভীতি প্রদর্শনে দিলশাদ আফরিন অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায় বাদীর স্বামী বুলবুল সিকদার। হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা শেষে দিলশাদ আফরিন বুলবুল সিকদারকে পুনরায় ঘটনাস্থলে নিয়ে আসলে দিলশাদ আফরিনের কাছ থেকে জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি প্রদানে বাধ্য করে আসামিরা।
বাদী তার স্বামী বুলবুল সিকদারের কাছ থেকে জানতে পারে যে, তার স্বামী বুলবুল শিকদারকে জুলাই ফাউন্ডেশন এ কর্মরত আসামী সায়েম ও সাগর অফিসের একটি রুমে নিয়ে যায় এবং তাকে একটা চেয়ারে বসায় এবং বলে এটা আমাদের টর্চার সেল, শেখ হাসিনার আয়নাঘর এর মতো বড় আয়না ঘর।
তুই স্বীকার কর তুই ভূয়া জুলাই যোদ্ধা এবং তোকে কে পাঠিয়েছে। তখন বাদীর স্বামী বুলবুল শিকদার দিলশাদ আফরিনের নাম উল্লেখ করলে আসামীরা প্রায় ৩ ঘন্টা বুলবুল শিকদারকে শারীরিক নির্যাতন করে।
আসামী সাগর ও সায়েম হত্যার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন ভাবে মাথায় এলোপাথারীভাবে মারধর করে।
পরে সাগর ও ইফতেখারের সাথে আসামি প্রিন্স যোগ দেয়। পরদিন ২১ মার্চ ৬টায় একজন এডভোকেট হাজির হয়ে স্বীকারোক্তি দেয়ার জন্য বললে বাদী ও বাদীর স্বামী ভিকটিম বুলবুল শিকদার এবং সাক্ষীদের কাছ থেকে জোরপূর্বক স্বীকারোক্তী নেয়।
আসামি এমন আচরণে বাদী অসুস্থ হয়ে পড়ে। এবং বাদীর স্বামী আসামিদের গুরুত্বর আঘাতের কারণে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে দীর্ঘদিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল। বাদী ও তার স্বামী কিছুটা সুস্থ হওয়ার পর মামলা দায়ের করেন।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: র জন ত ন র য়ণগঞ জ কর মকর ত ইফত খ র আস ম র র জন য ম রধর
এছাড়াও পড়ুন:
সাধারণ মানুষের ভাবনায় প্রাইম বাবুল
নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী বিশিষ্ট শিল্পপতি ও সমাজসেবক প্রাইম গ্রুপের চেয়ারম্যান আবু জাফর আহমেদ বাবুলকে উচ্ছ্বসিত দলীয় নেতাকর্মী, সমর্থক ও সাধারণ মানুষ। ডেঙ্গু প্রতিরোধে প্রগার মেশিন সরবরাহ, ফ্রী মেডিকেল সার্ভিস সহ নানামুখী উদ্যোগে প্রসংশিত হচ্ছেন তিনি। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত শিল্পপতি বাবুলের পক্ষে তার সমর্থকরা শহর ও বন্দরে নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছে। জনমত গড়ে তুলছে তারা বাবুলের পক্ষে। ভোটারদের কাছে আবু জাফরের নির্বাচনী সালাম পৌঁছে দিচ্ছেন তারা।
এদিকে আবু জাফর আহমেদ বাবুল নিজেও দিনরাত দলীয় নেতাকর্মী ছাড়াও শহর ও বন্দরের বিভিন্ন এলাকার মানুষের সাথে যোগাযোগ করছেন। দিচ্ছেন উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি। এবং তিনি মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচিত হলে শহর ও বন্দরের উন্নয়নে কি কি করবেন সেই ম্যাসেজ দিচ্ছেন।
ওদিকে দলের একাধিক নেতাকর্মী জানান, আবু জাফর আহমেদ বাবুলের সাথে কেন্দ্রীয় নেতাদেরও যোগাযোগ রয়েছে। তিনি বিগত সময়ে নারায়ণগঞ্জে দলের নেতাকর্মীদের নানাভাবে সহযোগিতা করেছেন। তিনি দলীয় মনোনয়ন পেলে স্থানীয় বিএনপির জন্য ভালোই হবে। তিনি একজন শিল্পপতি। তার চাওয়া পাওয়ার কিছু নাই। মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচিত হলে দল ও এলাকার উন্নয়নে তিনি অনেক বেশি ভুমিকা রাখতে পারবেন।
সাধারণ মানুষও মনে করছেন, শিল্পপতি বাবুল সাহেব মনোনয়ন পেলে এবং নির্বাচিত হলে এলাকার অনেক উন্নয়ন হবে, এলাকার জন্য ভালো হবে। তিনি হাসিখুশি মানুষ। কোনো অহংকার নাই। সাধারণ মানুষের সাথে মিশে যেতে পারেন।
প্রাইম গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান “প্রাইম ওয়াশিং প্লান্ট”-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক জহির আহমেদ সোহেল গণমাধ্যমকে জানান, আবু জাফর আহমেদ বাবুল সর্বদা শত শত মানুষের সেবামূলক কার্যক্রমে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন।
সম্প্রতি শেষ হওয়া শারদীয় দুর্গাপূজায় নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাড়াস্থ ঐতিহ্যবাহী রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রম মন্দির প্রাঙ্গণে কুমারী পূজায় আগত দর্শনার্থীদের মাঝে বিশুদ্ধ খাবার পানি বিতরণ করা হয়।
এছাড়াও কুমারী পূজা উদযাপন উপলক্ষে চাষাড়া থেকে মিশনপাড়া সড়কের যানজট নিরসনে বিএনপির একদল নেতাকর্মী সমর্থকরা তাঁর পক্ষে ভলান্টিয়ারের দায়িত্ব সুশৃঙ্খলভাবে পালন করেন।
গত শুক্রবার থেকে আবু জাফর আহমেদ বাবুলের উদ্যোগে শুরু হয়েছে ফ্রী মেডিকেল সার্ভিস।