2025-12-13@08:59:04 GMT
إجمالي نتائج البحث: 378

«স দ ইবন»:

    ইসলামের মূল ভিত্তিগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো প্রতিদান বা প্রতিফলের নীতি। এই নীতিই মানুষকে সৎকর্মের প্রতি সবচেয়ে বেশি উৎসাহিত করে। কিন্তু অনেক সময় বাস্তবতার নিরীখে দেখা যায়, যারা বিশাল ত্যাগ ও প্রচেষ্টা করেছেন, তারা পৃথিবীতে তার কোনো দৃশ্যমান ফল বা প্রতিদান পাননি।তাহলে প্রশ্ন জাগে, এই পর্যবেক্ষণ কি সঠিক, নাকি এটি কেবলই একটি অদূরদর্শী ধারণা?এই প্রবন্ধে আমরা সাহাবিদের জীবনের দুটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত—মুসআব ইবনে উমাইর (রা.) এবং আব্দুর রহমান ইবনে আউফ (রা.)-এর জীবন তুলনার মাধ্যমে সৎকর্মের প্রতিদান তাৎক্ষণিক হবে নাকি আখেরাতে বিলম্বিত হবে, সেই গুরুত্বপূর্ণ দিকটি অনুসন্ধান করব।এই দুজনের মধ্যে একজন সম্পর্কে সাহাবি খাব্বাব (রা.) বলেছিলেন, “তার প্রতিদান আল্লাহর হাতে ন্যস্ত হয়েছে,” আর অন্যজন সম্পর্কে বলেছিলেন, “তার ফসল পেকেছে, আর সে তা কেটে নিচ্ছে।”এই কাজের ফলে দুনিয়াতে কী ফল আসবে বা তা উপভোগ...
    রাজধানীর ফার্মগেট এলাকার সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন একদল শিক্ষার্থী। এতে সড়কে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। দেখা দেয় তীব্র যানজট।তেজগাঁও কলেজের ছাত্রাবাসে দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে এই বিক্ষোভ শুরু হয়। পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার ইবনে মিজান এই তথ্য জানান।ইবনে মিজান বলেন, সংঘর্ষে আহত ছাত্র গতকাল রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এই ঘটনার প্রতিবাদে তেজগাঁও কলেজের শিক্ষার্থীরা আজ সকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে তাঁরা ফার্মগেট এলাকার সড়কে বিক্ষোভ দেখান।পুলিশ সূত্র জানায়, ফার্মগেট এলাকার সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন কয়েক শ শিক্ষার্থী। এতে সংশ্লিষ্ট সড়কগুলোতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে সড়কে তীব্র যানজট তৈরি হয়। যানজটে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন যাত্রীরা।
    কোরআনে ইয়াকিনের গুরুত্বকোরআনে ইয়াকিনের বিশেষ গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে:সফলতার মানদণ্ড: আল্লাহ মুমিনদের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করতে গিয়ে ইয়াকিনকে হেদায়েত ও সফলতার কারণ বলেছেন, ‘এরাই তাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে হিদায়াতের ওপর রয়েছে এবং এরাই সফলকাম।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ৫)চিন্তা ও নিদর্শনের ভিত্তি: আল্লাহ বলেন, পৃথিবীতে বিশ্বাসীদের (ইয়াকিনকারীদের) জন্য রয়েছে নিদের্শনাবলি, ‘এবং পৃথিবীতে ইয়াকিনকারীদের জন্য নিদের্শনাবলি রয়েছে।’ (সুরা জারিয়াত, আয়াত: ২০)নেতৃত্ব লাভের উপায়: আল্লাহ তাআলা বনি ইসরাইলের নবী ও শাসকদের উদাহরণ দিয়ে বলেছেন, ‘যখন তারা ধৈর্য ধারণ করেছিল এবং আমাদের নিদের্শনাবলিতে দৃঢ়বিশ্বাস করত তখন আমি তাদের মধ্য থেকে নেতা বানিয়েছিলাম, যারা আমার নির্দেশ অনুসারে পথ দেখাত।’ (সুরা সাজদা, আয়াত: ২৪)অবিশ্বাসের নিন্দা: যারা ইয়াকিন রাখে না, তাদের আল্লাহ নিন্দা করেছেন, ‘এবং যখন তাদের বলা হতো, আল্লাহর ওয়াদা সত্য এবং কিয়ামত অবশ্যম্ভাবী—এতে কোনো সন্দেহ নেই,...
    ইতিহাসের পাতায় এমন কিছু ঘটনা থাকে, যা কেবল অতীতেরই অংশ নয় বরং তা ভবিষ্যতের জন্য আলোকবর্তিকা। সাহাবিদের মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত তেমনই এক কালজয়ী অধ্যায়। এটি ছিল শুধু এক পবিত্র ভূমি ত্যাগ করে অন্য ভূমিতে আশ্রয় গ্রহণের সাধারণ ঘটনা নয়; এটি ছিল দুনিয়ার সবকিছু উপেক্ষা করে ইমান রক্ষার এক মহাকাব্যিক সংগ্রাম।এই যাত্রাপথে সাহাবিরা যে আত্মত্যাগ, সাহস ও ধৈর্যের নজির স্থাপন করেছেন, তা কিয়ামত পর্যন্ত মুমিনদের জন্য শিক্ষণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।হিজরতের মাধ্যমে সাহাবিরা প্রমাণ করেছেন, ইমানের মূল্য তাঁদের কাছে ধনসম্পদ, পরিবার বা জন্মভূমির চেয়ে অনেক বেশি।ইমানের ডাকে সর্বোচ্চ ত্যাগ আল্লাহর পথে যখনই কোনো মানুষ সত্যের আহ্বান নিয়ে দাঁড়ায়, তখনই তাকে চরম প্রতিকূলতার সম্মুখীন হতে হয়। মক্কার মুশরিকদের সীমাহীন অত্যাচার যখন মুমিনদের জীবন দুর্বিষহ করে তুলল, তখন মহান আল্লাহ তাআলা তাঁদের জন্য...
    ইয়াকিন হলো ইমানের সর্বোচ্চ স্তর এবং প্রতিটি মুমিনের চূড়ান্ত লক্ষ্য। এটি শুধু একটি নিছক জ্ঞান নয়, বরং হৃদয়ের সেই গভীর স্থিরতা ও পরম প্রশান্তি, যা ইমানের মধ্যে দেহের জন্য আত্মার মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থান রাখে।ইয়াকিনের মাধ্যমেই আল্লাহকে জানার ক্ষেত্রে পণ্ডিত ব্যক্তিরা ভিন্ন ভিন্ন স্তরে উপনীত হন এবং সৎকর্মশীলেরা একে অপরের চেয়ে এগিয়ে যান। (ইবনুল কাইয়্যিম, মাদারিজুস সালিকিন, খণ্ড: ২, পৃষ্ঠা: ৩৯৭)এই প্রবন্ধে আমরা ইয়াকিনের অর্থ, তার মৌলিক স্বরূপ, কোরআন ও সুন্নাহতে তার গুরুত্ব এবং তা অর্জনের বাস্তব উপায়গুলো আলোচনা করব।আরবিতে ‘ইয়াকিন’ শব্দের মূল অর্থ হলো নিশ্চিত জ্ঞান, সন্দেহ দূর করা এবং কোনো বিষয়কে প্রমাণ সাপেক্ষে সত্য বলে নিশ্চিত করা।ইয়াকিন: শাব্দিক ও পারিভাষিক অর্থ আরবিতে ‘ইয়াকিন’ শব্দের মূল অর্থ হলো নিশ্চিত জ্ঞান, সন্দেহ দূর করা এবং কোনো বিষয়কে প্রমাণ সাপেক্ষে সত্য বলে...
    ইসলামে সুদকে সবচেয়ে মারাত্মক নিষিদ্ধ কাজগুলোর (হারাম) মধ্যে গণ্য করা হয়েছে। পবিত্র কোরআনে সুদ গ্রহণকারীর জন্য আল্লাহ ও তাঁর রাসুল (সা.)–এর পক্ষ থেকে যুদ্ধের ঘোষণার মতো কঠোর হুঁশিয়ারি এসেছে। (সুরা বাকারা, আয়াত: ২৭৯)পবিত্র কোরআন সুদের মূল ভিত্তি স্থাপন করলেও সুন্নাহ বা হাদিস সুদের প্রকারভেদ, এর ছবিগুলো এবং তা থেকে বাঁচার জন্য প্রয়োজনীয় বিস্তারিত নিয়মাবলি বর্ণনা করেছে।সুদ–সম্পর্কিত হাদিসগুলো কেবল সংখ্যায় বেশি নয়; বরং বিষয়বস্তুতেও বিচিত্র ও সমৃদ্ধ। এগুলো কেবল সাধারণ হুঁশিয়ারি দিয়েই ক্ষান্ত হয়নি; বরং সুদের দুটি প্রধান রূপ—ঋণের সুদ (জাহেলি যুগের সুদ) এবং বেচাকেনার সুদের বিস্তারিত বিবরণ দিয়েছে।সুদের মধ্যে সবচেয়ে জঘন্য সুদ হলো কোনো মুসলিমের মানহানি করা।সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস: ২২৭৪এই প্রবন্ধের লক্ষ্য হলো সুদ–সম্পর্কিত হাদিসগুলোর একটি পদ্ধতিগত শ্রেণিবিন্যাস তুলে ধরা। আমরা ড. রফিক ইউনুস আল–মিসরির আল–জামি ফি আহকাম আর–রিবা...
    অহংকার বা দাম্ভিকতা মুমিনের চরিত্রে কখনোই মানায় না। প্রকৃত মুমিনের পরিচয় হচ্ছে নম্রতা, বিনয় ও নিরহঙ্কারিতা। কারণ অহংকার হল ‘অত্যন্ত সম্মানিত’, ‘গৌরবান্বিত’, ‘সর্বশ্রেষ্ঠ’ আল-মুতাকাব্বির-এর পোশাক; আর সেই পোশাক কেবল আল্লাহ তায়ালাকেই মানায়।হাদিসে কুদসিতে এই বিষয়টি আল্লাহর রাসুল (সা.) অত্যন্ত কঠোরভাবে তুলে ধরেছেন যে “আল্লাহ তায়ালা বলেন, ইজ্জত–সম্মান আমার পোশাক এবং গর্ব–অহঙ্কার আমার চাদর। যে ব্যক্তি এ দুটির কোনো একটি নিয়ে টানাটানি করবে, তাকে আমি কঠোর শাস্তি দেব।” (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৬৬০৯)আল্লাহ তায়ালা বলেন, ইজ্জত–সম্মান আমার পোশাক এবং গর্ব–অহঙ্কার আমার চাদর। যে ব্যক্তি এ দুটির কোনো একটি নিয়ে টানাটানি করবে, তাকে আমি কঠোর শাস্তি দেব।সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৬৬০৯মানুষের জন্য অহংকার কি আদৌ মানায় বাস্তবে মানুষের জন্য অহংকার করার মতো কিছুই নেই। মানুষের জ্ঞান, ধন-সম্পদ, বংশমর্যাদা, সম্মান—যাই হোক, সবই আল্লাহ তাআলার দান।...
    দোয়া বা প্রার্থনা হল মুমিনের সবচেয়ে বড় আশ্রয় এবং আল্লাহ তায়ালার সঙ্গে বান্দার যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম। এটি শুধু একটি চাওয়া বা আবদার নয়, বরং এটি হল ইবাদতের নির্যাস ও মূল ভিত্তি।পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা তাঁর বান্দাদের দোয়া করার বিশেষ পদ্ধতি শিখিয়েছেন এবং এর গুরুত্ব বর্ণনা করেছেন, যা আমাদের ইবাদতের আদব ও আচরণকে নির্দেশ করে।আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘তোমরা তোমাদের প্রতিপালককে ডাকো বিনয় ও গোপনে; নিশ্চয় তিনি সীমা লঙ্ঘনকারীদের ভালোবাসেন না। আর পৃথিবীতে শান্তি স্থাপনের পর বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করো না এবং তাঁকে ডাকো ভয় ও আশা নিয়ে। নিঃসন্দেহে আল্লাহর করুণা সৎকর্মশীলদের নিকটবর্তী।’ (সুরা আরাফ, আয়াত: ৫৫–৫৬)তোমরা তোমাদের প্রতিপালককে ডাকো বিনয় ও গোপনে; নিশ্চয় তিনি সীমালঙ্ঘনকারীদের ভালোবাসেন না।কোরআন, সুরা আরাফ, আয়াত: ৫৫–৫৬এই দুটি আয়াতে দোয়ার পদ্ধতি, আদব ও এর প্রতিপালকদের গুণাবলি অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে...
    আবু হামিদ মুহাম্মদ আল-গাজ্জালি। জন্ম তাঁর খোরাসানের তুস শহরে, হিজরি ৪৫০ সালে। তাঁর বাবা ছিলেন খুব গরিব। পশমের সুতা বুনে তাঁর সংসার চলত। তুস শহরে নিজের ছোট্ট একটি দোকানে বসে তিনি সুতা কাটতেন; আর সেই সুতা বেচে যা আয় হতো, তা দিয়েই দিন কাটাতেন। নিজের রোজগার করা পয়সা ছাড়া তিনি একটি দানাও মুখে তুলতেন না, পরিবারের সদস্যদের মুখেও দিতেন না।ধর্মের প্রতি ইমাম গাজ্জালির বাবার টান ছিল গভীর। জ্ঞানী, পণ্ডিত আর আলেমদের আসরে তিনি প্রায়ই যেতেন। তাঁদের সেবা করার জন্য ব্যাকুল থাকতেন। নিজের সাধ্যমতো তাঁদের দেখভাল করতেন ও খেয়াল রাখতেন।তাঁদের কথা আর উপদেশ শুনে তাঁর চোখে পানি এসে যেত। তখন তিনি দুই হাত তুলে আল্লাহর কাছে আকুল হয়ে চাইতেন, যেন তিনি এমন একটি ছেলে তাঁকে দেন, যে হবে ধর্মীয় জ্ঞানে পারদর্শী,...
    দামেস্ক ছিল মধ্যযুগীয় ইসলামি সভ্যতার জ্ঞান-বিজ্ঞানের কেন্দ্রবিন্দু। সুলতান সালাহুদ্দিন আইয়ুবির উত্থানের পর দামেস্কে একটি বড় আকারের শিক্ষা বিপ্লব ঘটে, যেখানে অসংখ্য মাদরাসা প্রতিষ্ঠিত হয়।এই মাদরাসাগুলির মধ্যে ‘আসাদিয়া মাদরাসা’ ছিল অন্যতম, যা কেবল একটি শিক্ষালয় নয়, বরং হানাফি ও শাফেয়ি—দুই প্রধান মাজহাবের আইন ও ধর্মতত্ত্ব চর্চার এক মিলনক্ষেত্র হিসেবে কাজ করেছিল।প্রতিষ্ঠাতা ও প্রতিষ্ঠার পটভূমি আসাদিয়া মাদরাসাটি প্রতিষ্ঠা করেন আসাদ উদ্দিন শিরকুহ ইবন সাজি। তিনি ছিলেন মুসলিম ইতিহাসের এক কিংবদন্তী ব্যক্তিত্ব, যিনি মিশর বিজয়ে এবং সালাহুদ্দিন আইয়ুবির উত্থানে প্রধান ভূমিকা রেখেছিলেন। তিনি ছিলেন সালাহুদ্দিন আইয়ুবির মামা এবং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ও রাজনৈতিক নেতা।ইবনুল ওয়ায্যানের মতো শিক্ষকের দীর্ঘ শিক্ষকতা এবং ইবনে শায়েরের আগমন থেকে বোঝা যায় যে, মাদরাসাটি ষষ্ঠ হিজরি শতকের মাঝামাঝি (প্রায় ১১৬৪ খ্রিষ্টাব্দের আশেপাশে) প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। আসাদ উদ্দিনের মৃত্যুর পরই মাদরাসাটির...
    কিস্তি: ১কিস্তি: ২কিস্তি: ৩কিস্তি: ৪দাড়ি তো বাহ্য, চিহ্নতান্ত্রিক অণু-শাসনের আরও বড় নিশানা ছিল বাঙালি মুসলমান নারী। উনিশ শতকের শেষ দিক থেকে বাংলার হিন্দু ও ব্রাহ্ম সমাজে নারীদের প্রকাশ্য উপস্থিতি নিয়ে দ্বন্দ্ব হয়ে গেছে। আর বিশের দশক থেকে তুরস্ক, ইরান ও আফগানিস্তানে মুসলমান নারীর প্রকাশ্য বিচরণের দৃষ্টান্ত ধরে বাংলার মুসলমান সমাজেও এ প্রশ্ন উঁকি দেয়। নজরুল তখন শ্রদ্ধা নিবেদন করছেন মিসেস এম রহমানের মতো নারী আন্দোলনের ভাবুককে। স্নেহাস্পদ সুফিয়া কামালের মতো ‘হেরেমের বন্দিনী বালিকা’কে কবি হিসেবে আত্মপ্রকাশে উৎসাহ জোগাচ্ছেন। আকৃষ্ট হচ্ছেন সমবয়সী ঢাবির প্রথম মুসলমান ছাত্রী ফজিলাতুন্নেসার প্রতি, যিনি ১৯২৮ সালে চলে যাচ্ছেন বিলেতে উচ্চতর লেখাপড়ার জন্য। দেশভাগের পর তিনি হবেন ইডেন কলেজের অধ্যক্ষ।পর্দা ও সর্দা বিল নজরুল বলেছেন, ‘আমাদের পথে মোল্লারা যদি হন বিন্ধ্যাচল, তাহা হইলে অবরোধ প্রথা হইতেছে হিমাচল।…আমাদের...
    ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা উমর ইবনুল খাত্তাব (রা.)-এর খিলাফতকালে ১৮ হিজরিতে আরবদের এক কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হয়েছিল, যা ইতিহাসে ‘আমুর রামাদা’ বা ‘ধূসর বর্ষ’ নামে পরিচিত। এই দুর্যোগ ছিল এক জাতিবিধ্বংসী বিপর্যয়, যা আরবের জীবনযাত্রা, অর্থনীতি এবং সমাজব্যবস্থাকে প্রায় স্থবির করে দিয়েছিল।১৮ হিজরিতে মদিনা ও এর পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে দীর্ঘ অনাবৃষ্টির কারণে ভয়াবহ খরা দেখা দেয়। ফসল উৎপাদন সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে যায় এবং ভূমি শুকিয়ে ধূসর বা কৃষ্ণবর্ণ ধারণ করে। এই মাটিকে বালির চেয়ে ছাইয়ের মতো মনে হতো, যা উত্তপ্ত মরুভূমির বাতাসে উড়ে বেড়াত। এ কারণেই বছরটিকে ‘ধূসর বর্ষ’ বা ‘আমুর রামাদা’ নাম দেওয়া হয়।দুর্ভিক্ষের তীব্রতা এতটাই ছিল যে, মানুষের জীবন যায় যায় অবস্থা। গ্রামাঞ্চলের লোকেরা সামান্য খাবারের আশায় মদিনার খিলাফতকেন্দ্রে ভিড় জমাতে শুরু করে। পেটের ক্ষিধের কারণে তাদের মুখ থেকে...
    পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত তিনটি কোম্পানির ক্রেডিট রেটিং নির্ণয় করে তা প্রকাশ করা হয়েছে। কোম্পানি তিনটি হলো- ন্যাশনাল পলিমার ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি, রূপালী ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড ও ইবনে সিনা ফার্মাসিউটিক্যালস ইন্ডাস্ট্রি পিএলসি। বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই)  সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। কোম্পানগুলোর মধ্যে ন্যাশনাল পলিমার ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি ও রূপালী ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের ক্রেডিট রেটিং নির্ণয় করেছে ন্যাশনার ক্রেডিট রেংটিস লিমিটেড (এনসিআর) এবং ইবনে সিনা ফার্মাসিউটিক্যালস ইন্ডাস্ট্রি পিএলসির ক্রেডিট রেটিং নির্ণয় করেছে আলফা ক্রেডিট রেটিং পিএলসি। ন্যাশনাল পলিমার: আলফা ক্রেডিট রেটিং পিএলসি অনুযায়ী, কোম্পানিটির দীর্ঘ মেয়াদে রেটিং হয়েছে ‘এ’। আর স্বল্প মেয়াদে রেটিং হয়েছে ‘এসটি-৩’। ২০২৫ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক পরিমাণগত ও গুণগত তথ্যের ভিত্তিতে এ...
    ইসলামি সংস্কৃতিতে একজন মুমিনের জীবনে শালীনতা, গাম্ভীর্য ও বিনয়কে অত্যন্ত গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। হাসি-তামাশা মানুষের স্বভাবজাত হলেও এর আধিক্য বা মাত্রাতিরিক্ততা ইসলামে অপছন্দনীয়।নামাজ ও অজুর মতো ইবাদতের ক্ষেত্রে এর প্রভাব কী, সেই বিষয়ে ইসলামি ফিকহের নির্দেশনা রয়েছে। মূলত, সাধারণ হাসি অজুর কোনো ক্ষতি করে না, তবে নামাজের ক্ষেত্রে এর পরিণতি সম্পূর্ণ ভিন্ন।অজু ভঙ্গের কারণ হিসেবে হাসি ‘নাওয়াক্বিদ আল-অজু’ বা অজু ভঙ্গের কারণ হিসেবে হাসি সরাসরি উল্লিখিত নেই। অজু ভঙ্গের যে সুনির্দিষ্ট কারণগুলো কোরআন ও সহিহ হাদিসে বলা হয়েছে, হাসি তার অন্তর্ভুক্ত নয়। (ইবন কুদামা, আব্দুল্লাহ ইবন আহমাদ, আল-মুগনি, ১/২২১, দারুল কিতাব আল-আরাবি, বৈরুত, ২০০৬)আরও পড়ুনঅজু করার নিয়ম কানুন১৯ ডিসেম্বর ২০২৩তবে এখানে দুইটি সূক্ষ্ম বিষয় বিবেচনায় আনতে হবে। তা হল:যদি প্রচণ্ড হাসির কারণে কোনো ব্যক্তির অজান্তে বায়ু নির্গত হয়, তবে সেই...
    ইসলামে নামাজের জন্য কিছু সময়কে ‘নিষেধের সময়’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, যখন সাধারণত নফল নামাজ আদায় করা থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। এই নির্দেশনা এসেছে যেন মুসলিমরা ইবাদতে কোনো ধরনের শিরক বা পৌত্তলিকতার সন্দেহের ধারেকাছেও না যায় এবং নামাজের সময়গুলো কেবল আল্লাহর জন্যই নির্দিষ্ট থাকে।হাদিসে এই নিষিদ্ধ সময়গুলোর বিস্তারিত বর্ণনা এসেছে।আল-কুদস বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিকহ ও উসুল বিশেষজ্ঞ হুসামুদ্দিন আফানাহ এই সংক্রান্ত হাদিসগুলো ও ফিকহবিদদের বক্তব্য সারসংক্ষেপ করেছেন। তবে এই নিষেধাজ্ঞার সময়গুলোতেও কিছু বিশেষ কারণযুক্ত নফল নামাজ আদায় করা বৈধ, যেমন ‘তাহিয়্যাতুল মসজিদ’ (মসজিদে প্রবেশের নামাজ) ইত্যাদি।স্পষ্ট নিষিদ্ধ ৫ সময় রাসুলুল্লাহ (সা.) একাধিক হাদিসে মোট পাঁচটি সময়ে বিশেষভাবে নফল নামাজ আদায় করতে নিষেধ করেছেন। এই পাঁচটি সময়ে নিষিদ্ধতা সাধারণ নফল নামাজের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। তবে এ সময়গুলোতে কাজা নামাজ আদায় করা বৈধ।ক. তিন...
    আমরা যখন কোরআন-হাদিস পাঠ করি, আমাদের সামনে বিধানসংক্রান্ত বিভিন্ন আলোচনা আসে। কোন ধর্মীয় উক্তি ও পাঠ্যের বাহ্যিক অর্থ অন্য আরেকটি পাঠ্যের সাথে বিরোধপূর্ণ ও সাংঘর্ষিক মনে হতে পারে।এমন বাহ্যিক বিরোধ সমাধান ও ব্যাখ্যার ক্ষেত্রে আলেমদের অনুসৃত পদ্ধতি কী, সেটা জানা প্রয়োজন। নাহলে আমরা কিভাবে পাঠ্যের ওপর আমল করব, তা নিয়ে সংশয়ে পড়তে পারি। ধর্মীয় পাঠ্য ও বর্ণনায় এমন বিরোধ দেখা দিলে তা সমাধান করা আবশ্যক, এ ব্যাপারে ইসলামের স্কলারগণ একমত। তবে সমাধানের পদ্ধতি নিয়ে তাদের দুটি মত রয়েছে। একটি হানাফি পদ্ধতি এবং অন্যটি সংখ্যাগুরু আলেমদের পদ্ধতি। মূলনীতির এই মতভেদ শুধু শব্দ ও পরিভাষাগত, কিন্তু ফলাফল একই থাকে। (মুস্তফা জুহাইলি, আল-ওয়াজিয ফি উসুলিল ফিকহ, ২/৪১১)দুটি বিপরীতমুখী ধর্মীয় পাঠ্য সামনে এলে পাঠক প্রথমে সেগুলোর প্রেক্ষাপট ও ইতিহাস খুঁজবেন। যদি জানা যায় কোনটি আগে...
    ইসলামি ফিকাহ অনুযায়ী, ‘সাজদাহ সাহু’ হলো নামাজের শেষাংশে বা সালামের পর এমন দুটি সিজদা, যা ভুলবশত কোনো রুকন ছেড়ে গেলে বা কোনো ওয়াজিব অতিরিক্ত করে ফেললে বা সন্দেহের সৃষ্টি হলে তা পূরণ করার জন্য দেওয়া হয়। (ইবনে উসাইমিন, আশ-শারহ আল-মুমতি’ আলা যাদ আল-মুসতাকনি’, ৩/৩৬৫, দার ইব্‌ন আল-জাওযি, দাম্মাম, ১৪২২ হি.)সাজদাহ সাহুর বিধান নিয়ে ফিকহবিদদের মত সাজদাহ সাহু ওয়াজিব (অবশ্য পালনীয়) নাকি সুন্নাহ (ঐচ্ছিক/অনুসরণীয়), তা নিয়ে ফিকহবিদদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে:ওয়াজিবের মত: হানাফি ও হাম্বলি মাজহাবের নির্ভরযোগ্য মত অনুযায়ী সাজদাহ সাহু ওয়াজিব বা অবশ্যকরণীয়। তাঁরা দলিল হিসেবে উল্লেখ করেন যে যেসব ভুলের কারণে ইচ্ছাকৃতভাবে নামাজ বাতিল হয়ে যায়, সেগুলোর জন্য সাহু সাজদা ওয়াজিব। কেননা, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “আমি তো তোমাদের মতোই একজন মানুষ। তোমরা যেমন ভুলে যাও, আমিও ভুলে যাই। যদি তোমাদের...
    ইসলামের প্রথম যুগে নারীরা সমাজে এক অনন্য ও ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন। তারা কেবল সংসারের কাজে স্বামীর সহায়তাই করতেন না, বরং সন্তানকে জিহাদে উৎসাহিত করতেন, নিজেরা ধর্মীয় জ্ঞানে গভীরতা অর্জন করতেন এবং কেউ কেউ জ্ঞান বিতরণে ‘শাইখা’ বা শিক্ষকের মর্যাদায় উন্নীত হয়েছিলেন।এমন বহু উদাহরণ রয়েছে যেখানে বড় বড় পুরুষ আলেম নারী শিক্ষক/শাইখাদের থেকে হাদিস, ফিকহ এবং অন্যান্য শরয়ী জ্ঞান অর্জন করেছেন।ইসলামের প্রারম্ভে নারী শাইখ ইউসুফ কারজাভি (রহ.) ইসলামের প্রথম যুগের নারীদের জ্ঞানান্বেষণের মানসিকতা সম্পর্কে বলেছেন, “নারীরা আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর কাছে আসতেন এবং ব্যক্তিগত বিষয়েও জিজ্ঞাসা করতেন। এমনকি আয়েশা (রা.) বলতেন, ‘আল্লাহ আনসার নারীদের প্রতি রহম করুন, লজ্জা তাদেরকে ধর্মীয় জ্ঞান শেখা থেকে বিরত রাখেনি।’”তারা জীবনের গোপনতম বিষয়েও নবীজি (সা.)-কে প্রশ্ন করতে কুণ্ঠাবোধ করেননি, কারণ দ্বীনের বিষয়ে কোনো লজ্জা নেই। (সহিহ...
    ইসলামে মানুষের যেকোনো বৈধ প্রয়োজন পূরণের জন্য আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়ার পদ্ধতি অত্যন্ত সরল ও সুস্পষ্ট। এটি কোনো নির্দিষ্ট ধরনের নামাজের সংখ্যার ওপর নির্ভর করে না, বরং নির্ভর করে আল্লাহর প্রতি বান্দার আনুগত্য, বিশ্বাস ও মনোযোগের ওপর।প্রয়োজন পূরণের জন্য কিছু সাধারণ আমল সুন্নাহ দ্বারা প্রমাণিত, যার মধ্যে একটি হলো নামাজ পড়া। এই নামাজকে বলে ‘সালাতুল হাজাত’ বা প্রয়োজন পূরণের নামাজ।হাদিসের বর্ণনা বিশুদ্ধ হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, মহানবী (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি উত্তমরূপে অজু করে, অতঃপর দুই রাকাত নামাজ পূর্ণভাবে আদায় করে, আল্লাহ তাকে তার চাওয়া জিনিস দ্রুত অথবা বিলম্বে দান করেন।” (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস: ১৬৯০০)অর্থাৎ, সে যদি আল্লাহর পক্ষ থেকে দোয়া কবুল হওয়ার উপযুক্ত হয় (অর্থাৎ, হালাল পথে থাকে ও আনুগত্যশীল হয়), তবে আল্লাহ তার দোয়া কবুল করেন। এ ক্ষেত্রে এই...
    আল্লাহ বলেছেন, “নিশ্চয় আমি আকাশমণ্ডল, পৃথিবী ও পর্বতসমূহের কাছে আমানত পেশ করেছিলাম। অতঃপর তারা তা বহন করতে অস্বীকার করল এবং সে বিষয়ে ভীত হলো; কিন্তু মানুষ তা বহন করল। নিঃসন্দেহে সে ছিল অতিশয় জালিম (স্ব-অত্যাচারী) ও অজ্ঞ।” (সুরা আহযাব, আয়াত: ৭২)কোরআন মাজিদের এই আয়াতটি সৃষ্টির ইতিহাসে এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তের কথা তুলে ধরেছে—যখন আকাশ, পৃথিবী এবং সুউচ্চ পর্বতমালা যে গুরুদায়িত্ব গ্রহণে অপারগতা প্রকাশ করেছিল, সেই দায়িত্ব মানুষ স্বেচ্ছায় গ্রহণ করেছিল।এই ‘আমানত’ কী ছিল? কেনই বা মানুষ এটিকে গ্রহণ করল, আর কেনই বা তাকে 'জালিম ও অজ্ঞ' বলে আখ্যায়িত করা হলো?আমানতের অর্থ ও তাৎপর্য এই আয়াতে উল্লিখিত ‘আমানত’-এর ব্যাখ্যা নিয়ে মুফাসসিরদের মধ্যে বহু আলোচনা রয়েছে। তবে অধিকাংশের মতে, এই আমানত বলতে মূলত শরীয়তের দায়িত্ব ও কর্তব্যসমূহ বোঝানো হয়েছে। এর সঙ্গে যুক্ত...
    মানুষের হৃদয়ে অর্থের প্রতি অনুরাগ একটি সহজাত প্রবৃত্তি। এই অনুরাগই মানবজাতিকে সম্পদ বৃদ্ধি, বিনিয়োগ বা কৃপণতা—এই দুই দিকের যেকোনো একটির দিকে পরিচালিত করে। জীবন ও ধর্মে অর্থের এমন তাৎপর্যপূর্ণ অবস্থানের কারণে ইসলামের পণ্ডিতগণ এই বিষয়টি নিয়ে বহু দিক থেকে আলোচনা করেছেন।এই আলোচনার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটি দিক হলো ‘বিনিয়োগ’ বা ‘সম্পদের সংস্কার’। নবম শতাব্দীর বিখ্যাত হাদিস বিশারদ ইবনে আবিদ দুনিয়া (রহ.) তাঁর এক মূল্যবান গ্রন্থে এই বিষয়টিকে ইসলাহুল মাল বা ‘সম্পদের পরিশুদ্ধি’ নামে অভিহিত করেছেন।আল্লাহ আপনাকে যা কিছু দিয়েছেন, তার মাধ্যমে আপনি পরকালের আবাস সন্ধান করুন, তবে দুনিয়া থেকে আপনার অংশ ভুলে যাবেন না।কোরআন, সুরা কাসাস, আয়াত: ৭৭ ‘ইসলাহুল মাল’ বা সম্পদের পরিশুদ্ধি ইবনে আবিদ দুনিয়ার আলোচ্য গ্রন্থটির নামই হলো ইসলাহুল মাল। ‘ইসলাহ’ বা পরিশুদ্ধি হলো একজন মুসলিমের অন্যতম প্রধান মিশন, যা...
    পবিত্র কোরআনে এমন বহু আয়াত রয়েছে যা নবীজির (সা.) প্রতি আল্লাহর ‘বিশেষ’ হেদায়েতের নেয়ামতকে প্রতিষ্ঠিত করে। এই হেদায়েতই ছিল তাঁর রিসালাতের মূল ভিত্তি এবং আল্লাহর অফুরন্ত অনুগ্রহের মুকুটস্বরূপ।এই প্রবন্ধে, আমরা কোরআনের তেমন দুটি আয়াত পর্যালোচনা করব, যা এই মহৎ দিকটি তুলে ধরেছে।১. সিরাতে মুস্তাকিমের প্রতি নির্দেশনা আল্লাহ তায়ালা বলেন, “বলুন, নিশ্চয় আমার প্রতিপালক আমাকে সরল পথ তথা একটি সুপ্রতিষ্ঠিত ধর্মের প্রতি পথনির্দেশ করেছেন—তা ইবরাহিমের আদর্শ, সে ছিল একনিষ্ঠ এবং সে মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত ছিল না’।” (সুরা আনআম, আয়াত: ১৬১)এই আয়াতে আল্লাহ তায়ালা তাঁর নবীজিকে (সা.) নির্দেশ দিচ্ছেন যেন তিনি তাঁর সম্প্রদায় এবং কিয়ামত পর্যন্ত আগত সকল মানুষকে সম্বোধন করে বলেন যে তিনি আল্লাহর পক্ষ থেকে এক সরল পথ বা সিরাতে মুস্তাকিমের প্রতি হেদায়েত পেয়েছেন।রশিদ রিদা এই আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন, “হে রাসুল...
    নামাজ একটি পরিপূর্ণ ইবাদত। এতে প্রতিটি অঙ্গভঙ্গি ও প্রতিটি বাক্যাবলি গভীর অর্থবহ। রুকু, সিজদা, কিয়াম—সবকিছুর মাঝে আল্লাহর প্রতি বিনয় ও আত্মসমর্পণের ভাষা রয়েছে। এর মধ্যে দুই সিজদার মধ্যবর্তী বৈঠকে পড়া দোয়াটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রাসুল (স.) তা নিয়মিত পড়তেন এবং সাহাবিদেরও শিক্ষা দিতেন।দোয়া (উচ্চারণ ও অর্থ)উচ্চারণ: আল্লাহুম্মাগ্‌ফিরলী, ওয়ারহামনী, ওয়াহদিনী, ওয়াজবুরনী, ওয়ারযুকনী, ওয়ারফা‘নীঅর্থ: হে আল্লাহ, আমাকে ক্ষমা করুন, আমাকে দয়া করুন, আমাকে সঠিক পথে পরিচালিত করুন, আমার দুর্বলতা পূরণ করুন, আমাকে রিজিক দিন এবং আমার মর্যাদা বৃদ্ধি করুন।আরও পড়ুনদোয়া কবুলের অলৌকিক রহস্য: নবী যাকারিয়া ও মারইয়ামের শিক্ষা২৩ নভেম্বর ২০২৫হাদিসের উৎস: সহিহ ইবন খুজাইমাহ, হাদিস: ৬৯৭; সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ৮৫০; সহিহ ইবনে হিব্বান। ইমাম নাসাঈ ও আলবানি (রহ.) হাদিসটি সহিহ বলেছেন।দোয়াটি কেন পড়তে হয়?১. ক্ষমা প্রার্থনা: দোয়ার প্রথম শব্দই “আল্লাহুম্মাগফিরলি”—অর্থাৎ, হে আল্লাহ,...
    আরব-ইসলামি ঐতিহ্য এক বিশাল ভাণ্ডার। এখানে জ্ঞান-বিজ্ঞান, সাহিত্য আর ইতিহাসের অগণিত পাণ্ডুলিপি ধুলোয় ঢাকা পড়ে আছে। যেসব গ্রন্থ প্রায় হারিয়ে যাওয়ার দ্বারপ্রান্তে ছিল, তার অন্যতম একটি হলো আমির উসামা ইবনে মুনকিজ আল-কিনানি আশ-শাইজারি (মৃ. ৫৮৪ হি.) রচিত আখবারুন নিসা (নারীর কথকতা) নামের বিরল গ্রন্থটি। এই বইটি কেবল একটি প্রকাশনা নয়, বরং সাংস্কৃতিক ও একাডেমিক জগতে একটি বড় ঘটনা।ইরাকি গবেষক ড. রশিদ আল-খাইয়ুন এই দুষ্প্রাপ্য গ্রন্থের সম্পাদনার দায়িত্ব নিয়েছেন। তিনি সমকালীন যুগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ঐতিহ্য-সম্পাদক হিসেবে পরিচিত। বইটি প্রকাশ করেছে সৌদি আরবের কিং ফয়সাল সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ, তাদের বিখ্যাত ‘তাহকিকুত তুরাস’ সিরিজের ৫২তম খণ্ড হিসেবে।মাঝারি আকারের প্রায় সাতশো পৃষ্ঠার এই সংস্করণে রয়েছে বিস্তারিত টীকা-ভাষ্য, সূচিপত্র এবং একটি বিশাল ভূমিকা, যা গ্রন্থের মূল্য ও গুরুত্বকে নতুন করে তুলে ধরেছে।উসামার...
    ইসলামে জ্ঞান অর্জন প্রত্যেক মুসলিমের উপর আবশ্যক করা হয়েছে। তবে কিভাবে, কোন ধারাবাহিকতার মধ্য দিয়ে জ্ঞান অর্জন ও চর্চা করতে হবে, যা স্পষ্টভাবে জানা প্রয়োজন। কারণ, ইসলামের দৃষ্টিতে নিছক তথ্য সংগ্রহই জ্ঞান নয়, বরং এর রয়েছে নির্দিষ্ট সোপান ও স্তর। ক্লাসিক ইসলামি পণ্ডিত ইবনুল কাইয়িম (রহ.) জ্ঞান চর্চাকে ছয় স্তরে বিভক্ত করেছেন। তাঁর মতে, জ্ঞান চর্চার এই পর্যায়গুলো হলো: ১. উত্তম প্রশ্ন করা, ২. মনোযোগ দিয়ে শোনা ৩. ভালোভাবে বোঝা, ৪. আত্মস্থ করা, ৫. জ্ঞান অন্যকে জানানো এবং ৬. সবশেষে জ্ঞান অনুযায়ী আমল করা, যা এই প্রক্রিয়ার চূড়ান্ত ফল। (ইবনুল কাইয়িম, মিফতাহু দারিস সাআদাহ, পৃ. ৪৮২-৪৮৩)এই স্তরগুলো একজন মুসলিমের জন্য পরিপূর্ণ জ্ঞান চর্চা ও সাধনার রূপরেখা প্রদান করে, যা একজন জ্ঞানান্বেষীকে তত্ত্ব থেকে বাস্তবতায় পৌঁছে দেয়।এই ছয় স্তর নিছক তথ্য আহরণের...
    জ্ঞান ইসলামে শুধু একটি বৌদ্ধিক সম্পদ নয়; জ্ঞান এটি নুর, হেদায়েত, মানবিক উন্নতি এবং আল্লাহর দিকে উত্তরণের পথ। কোরআন বহু স্থানে জ্ঞানকে মর্যাদা দিয়েছে এবং জানিয়ে দিয়েছে, জ্ঞানের অধিকারী ও অজ্ঞ ব্যক্তি কখনো সমান হতে পারে না। (সুরা যুমার, আয়াত: ৯)জ্ঞানের প্রার্থনা শুধু দুনিয়ার কল্যাণই দেয় না, বরং বান্দার আখেরাতকেও আলোকিত করে। তাই আল্লাহর রাসুল (সা.) তাঁর উম্মতকে জ্ঞান বৃদ্ধির জন্য বিশেষ দুটি দোয়া শিখিয়েছেন, যা কোরআন ও হাদিসে সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত।কোরআনে জ্ঞান বৃদ্ধির দোয়া কোরআনের একমাত্র দোয়া যেখানে আল্লাহ নিজেই তাঁর নবীকে জ্ঞান বৃদ্ধি চাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন, তা হল: রব্বি যিদনি ইল্‌মা। অর্থ: হে আমার প্রতিপালক, আমাকে আরও জ্ঞান দান করুন। (সুরা ত্বাহা, আয়াত: ১১৪)এটি এমন একটি দোয়া, যা রাসুল (সা.) নিয়মিত পড়তেন। আলেমদের মতে, দুনিয়ার যেকোনো কল্যাণ চাওয়ার দোয়াতে...
    ইসলামি শরিয়তের ভিত্তি কোরআন ও সুন্নাহ। কিন্তু এর পরে আসে ইজমা, অর্থাৎ, উম্মাহর ঐকমত্য। ইসলামি আইন বা ফিকহের দৃষ্টিকোণ থেকে ইজমার প্রামাণিক মর্যাদা কোরআন ও সুন্নাহর পরেই।যদিও শিয়া ও মুতাজিলা সম্প্রদায় ইজমার দলিল হওয়ার বিষয়ে আপত্তি তুলেছে, কিন্তু তাদের কথাকে ‘অস্বাভাবিক’ বলা হয়। ইজমা কোরআন-সুন্নাহ থেকে উদ্ভূত একটা অনুসরণীয় দলিল।কেউ যদি ইজমার দলিলে রাজি না হয়, তবুও শরিয়তের প্রয়োজনে তা মানতে হবে। যেমন, এক আল্লাহর ইবাদত, রাসুল-ফেরেশতায় ইমান আনা—এগুলো ইমানের বিষয়ে ইজমা। নামাজ, সামর্থ্যবানের হজ—এগুলো ফিকহের বাস্তব ইজমা।ইজমা উম্মাহর প্রতিনিধিত্ব করে। আলেম, নেতা, চিন্তাবিদ, শিক্ষিত, সাধারণ মুসলিম সবার মিলিত মতই ইজমা। ফিকহে মতভেদকেও ইজমা বলে মানা হয়। হ্যাঁ, মতভেদের স্বীকৃতি নিজেই একটা ইজমা। উম্মাহ সাধারণভাবে ইজমা মান্য করে থাকে, তাই এক-দুজনের বিরোধিতা এর প্রামাণিক মর্যাদায় কোনো ক্ষতি-বৃদ্ধি করবে না। (ইবনে...
    ইসলামের প্রথম খলিফা আবু বকর সিদ্দিক (রা.)-এর শাসনামল ছিল খোলাফায়ে রাশিদুনের সূচনা। সে হিসেবে এর গুরুত্বও ছিল অপরিসীম। তাঁর খেলাফতকাল ছিল নবীযুগের একবারে কাছাকাছি।তাঁর সময়ের বিচারব্যবস্থা ছিল মূলত মহানবী (সা.)-এর বিচারব্যবস্থারই সম্প্রসারণ ও সংরক্ষণ। মহানবী (সা.)-এর যুগে যা কিছু প্রমাণিত ছিল, তা হুবহু সংরক্ষণ ও কঠোরভাবে অনুসরণ করা হতো। যেমন: বিচার-সংক্রান্ত মহানবী (সা.)-এর সময়ের সমস্ত দলিল-প্রমাণ সংরক্ষণ করা এবং সে অনুযায়ী পুরোপুরি কাজ করা। সম্প্রসারিত ইসলামি সাম্রাজ্যের নতুন নতুন সমস্যার সমাধানের জন্য নতুন আইন তৈরি করা।রাসুল (সা.)-এর যুগের মতো তাঁর শাসনামলেও বিচারবিভাগকে প্রশাসন থেকে আলাদা করা হয়নি এবং বিচারকাজের জন্য আলাদা কোনো দপ্তরও ছিল না। মদিনায় বিচারবিভাগ দেখাশোনার জন্য তিনি উমর (রা.)-কে নিযুক্ত করেছিলেন।বিচারকার্যে শুধু উমর (রা.) নন, আরও অনেকে যুক্ত ছিলেন। খলিফা নিজেও বিচার করতেন এবং ফায়সালা দিতেন। এছাড়া...
    আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলার তিনটি স্তর রয়েছে: তাকওয়া, বির্‌র ও ইহসান। কোরআন ও সুন্নাহ আমাদের এই তিনটির সঠিক অর্থ, সম্পর্ক এবং ফলাফল শেখায়। যে এগুলো বুঝে জীবনে প্রয়োগ করে, তার জীবন হয়ে ওঠে আল্লাহর সন্তুষ্টির পথ।তাকওয়া কী? তাকওয়া মানে আল্লাহর ভয়ে চলা। ফরজ পালন করা, হারাম ছেড়ে দেওয়া। এটি শাস্তি থেকে রক্ষা করে। শর্ত হলো, খাঁটি নিয়ত এবং রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর অনুসরণ। কোরআনে তাকওয়ার ফলের কথা বলা হয়েছে যে তাকওয়া থাকলে কাজ সহজ হয়, রিজিক আসে, গুনাহ মাফ হয়, ফিতনা থেকে বাঁচা, সত্য-মিথ্যা চেনা যায়।আল্লাহ বলেন, “হে ইমানদারগণ, যদি তোমরা আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন করো, তিনি তোমাদের ফুরকান দেবেন, গুনাহ মাফ করবেন, ক্ষমা করবেন। আল্লাহ মহা অনুগ্রহশীল।” (সুরা আনফাল, আয়াত: ২৯)আরও বলেন, “যে তাকওয়া অবলম্বন করে, আল্লাহ তার জন্য মুক্তির পথ...
    বাংলা চলচ্চিত্রের বর্ষীয়ান নির্মাতা, ‘চাঁদের আলো’ সিনেমার পরিচালক শেখ নজরুল ইসলাম মারা গেছেন। শনিবার (২২ নভেম্বর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর ধানমন্ডির ইবনে সিনা হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমেছে চলচ্চিত্রাঙ্গনে। বিশেষ করে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন জনপ্রিয় চিত্রনায়ক ওমর সানী। অভিনয়জীবনের শুরুতেই শেখ নজরুল ইসলামের হাত ধরেই আলোচনায় আসেন এই নায়ক।  নব্বই দশকের অন্যতম স্মরণীয় সিনেমা ‘চাঁদের আলো’। এই চলচ্চিত্রেই প্রথমবার বড় পর্দায় দেখা যায় ওমর সানীকে। এতে তার সহশিল্পী ছিলেন মুক্তি। শেখ নজরুল ইসলাম পরিচালিত ‘চাঁদের আলো’ সিনেমা ১৯৯৩ সালে মুক্তি পায়। সিনেমাটির জনপ্রিয় গান ‘তুমি আমার চাঁদ, আমি চাঁদেরই আলো’ এখনো দর্শকের কাছে স্মৃতিতে অমলিন।  আরো পড়ুন: মারা গেছেন ‘চাঁদের আলো’ সিনেমার পরিচালক শেখ নজরুল ইসলাম দিল্লি বিস্ফোরণ নিয়ে...
    ‘চাঁদের আলো’খ্যাত বাংলা চলচ্চিত্রের বর্ষীয়ান নির্মাতা শেখ নজরুল ইসলাম মারা গেছেন। শনিবার (২২ নভেম্বর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর ধানমন্ডির ইবনে সিনা হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৯০ বছর।  শেখ নজরুল ইসলামের মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন নির্মাতা গাজী মাহবুব এবং ‘চাঁদের আলো’ চলচ্চিত্রের অভিনেত্রী রুমানা ইসলাম।  আরো পড়ুন: দিল্লি বিস্ফোরণ নিয়ে শাহরুখ খানের বক্তব্য সাঁইত্রিশে গায়কের মৃত্যু, মেয়েকে নিয়ে শেষ পোস্ট ভাইরাল গাজী মাহবুব বলেন, “বরেণ্য চলচ্চিত্র নির্মাতা শেখ নজরুল ইসলাম আমার ওস্তাদজি। তিনি ধানমন্ডির ইবনে সিনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২২ নভেম্বর রাত ১১টা ৩০ মিনিটে মারা যান।”  রবিবার (২৩ নভেম্বর) নিজ জেলা নাটোরে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হবে বলেও জানান তিনি। পারিবারিক সূত্র জানায়, গত ১৬ নভেম্বর...
    শিক্ষিত মুসলমান মাত্রেরই আরবি ভাষা শেখার এক স্বাভাবিক আকাঙ্ক্ষা ও প্রচেষ্টা থাকা উচিত। এই ভাষার বিপুল গভীরতা ও কাঠামোগত জটিলতার কারণে হয়তো সবার পক্ষে সম্পূর্ণ আয়ত্ত করা সম্ভব হবে না, সেই জটিলতার স্বরূপ নিয়ে না হয় একটু পরেই কথা বলা যাবে; কিন্তু কর্মব্যস্ত জীবনের নানা ডালপালার মধ্যেও এটিকে একটি পার্শ্বপ্রকল্প হিসেবে রাখা যায়।আরবির ধর্মতাত্ত্বিক গুরুত্ব প্রত্যেক মুসলমানের আধ্যাত্মিক জীবনে আরবির সংযোগ এক অবিচ্ছেদ্য সত্য। প্রাত্যহিক এবাদতের মৌলিক ভিত্তিই আরবি, ইসলামে প্রবেশের প্রথম সাক্ষ্যটিও আরবিতে। সর্বোপরি আল্লাহর বাণী কোরআন পাঠ করতে হয় তার মূল ভাষাতেই।ইসলামের মূল আকরগ্রন্থগুলো কেবল অনুবাদ অথবা কোনো ব্যাখ্যাকারের বয়ানের ওপর নির্ভর করে পুরোপুরি অনুধাবন করা প্রায় অসম্ভব। আরবির স্বভাবধর্মই এমন যে তার শব্দে শব্দে অর্থের বহুমাত্রিকতা, অলংকারের সূক্ষ্ম কারুকাজ এবং হাকিকত (অভিধার্থ) ও মাজাযের (লক্ষ্যার্থ) বিচিত্র জগৎ...
    টিকটকে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে নারীর ব্যক্তিগত ছবি সংগ্রহ, সেগুলো বিকৃত করে অশ্লীল ছবি ও ভিডিও তৈরি এবং তা ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায়কারী প্রতারক মো. আব্বাস (৩৮) কে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব-১১। শনিবার (২২ নভেম্বর) র‌্যাব-১১ কোম্পানী অধিনায়ক উপপরিচালক মেজর সাদমান ইবনে আলম গ্রেপ্তারের তথ্য জানিয়েছেন। আরো পড়ুন: নোয়াখালীতে মাদক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত নারী গ্রেপ্তার যুবদল নেতা হত্যায় বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে: র‌্যাব মেজর সাদমান ইবনে আলম জানান, কুমিল্লার দেবিদ্বারের এক নারী ৫ নভেম্বর র‍্যাব-১১, সিপিসি-২ কুমিল্লা ক্যাম্পে অভিযোগ করেন। তিনি জানান, কয়েকজন প্রতারক টিকটকের মাধ্যমে যোগাযোগ করে অনলাইনে আকর্ষণীয় চাকরির প্রলোভন দেখায়। রেজিস্ট্রেশনের কথা বলে তারা ওই নারীর ছবি ও তথ্য সংগ্রহ করে পরে তা এডিট করে অশ্লীল ছবি ও ভিডিও বানায়। এরপর সামাজিক...
    দেনমোহর (মাহর) হলো বিবাহের একটি মৌলিক ও অবিচ্ছেদ্যঅংশ। কোরআন ও সুন্নাহ–উভয় মাধ্যমেই এরবাধ্যতামূলকতা স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে। এটি স্ত্রীকে সম্মানদেওয়ার প্রতীক, আর্থিক নিরাপত্তার একটি অধিকার এবংস্বামীর দায়িত্ববোধের বাস্তব প্রতিফলন। ইসলামে দেনমোহরকোনো মূল্যচাপ নয়; বরং পরস্পরের সম্মান, সম্মতি ওন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার একটি ব্যবস্থা।এই নিবন্ধে আমরা দেব—দেনমোহরের গুরুত্ব, নির্ধারণেরনীতি, বাস্তব পদ্ধতি এবং ইসলামি আইনগত ব্যাখ্যা।দেনমোহর কী এবং কেনদেনমোহর হলো স্বামীর পক্ষ থেকে স্ত্রীর জন্য নির্ধারিত একটিআর্থিক অধিকার, যা বিবাহের মাধ্যমে স্ত্রী অবিলম্বে পাওয়ারযোগ্য হন। কোরআনে বলা হয়েছে,“তোমরা নারীদের তাদেরমাহর স্বেচ্ছায় (সৎভাবে) প্রদান করো।” (সুরা নিসা, আয়াত: ৪)নবীজি (স.) বলেছেন,“যে নারীকে বিবাহ করবে, তার মাহরপ্রদান করা তার ওপর কর্তব্য।” (সুনান ইবন মাজাহ, হাদিস: ১৮৮০)এটি স্পষ্ট যে দেনমোহর কোনো উপহার নয়; বরং একটিঅধিকার।দেনমোহর নির্ধারণ কীভাবে করা উচিতইসলামে দেনমোহর নির্ধারণের কোনো নির্দিষ্ট পরিমাণ নেই।নির্ধারণের ক্ষেত্রে অনুসরণযোগ্য কিছু নীতি আছে,ক. সামর্থ্য অনুযায়ী নির্ধারণ: স্বামীর আর্থিক অবস্থাই এখানে মূল বিবেচ্য। কোরআনে বলা হয়েছ, “সামর্থ্যবান তার সামর্থ্য অনুযায়ী দেবে, আর যাঁর সামর্থ্য কম তিনি তার অবস্থান অনুযায়ী দেবেন।” (সুরা তালাক, আয়াত: ৭)ইবনুল কাইয়্যিম (রহ.) লিখেছেন,“মাহরের মূলনীতি হলো, স্বামীর সামর্থ্য অনুযায়ী ন্যায়সঙ্গত নির্ধারণ।” (ইলামে আল-মুআক্কিয়িন, ৩/১৩৫, দারুস সালাম, রিয়াদ, ২০০২)খ. অযৌক্তিক ও অযথা বেশি নয়:  অত্যধিক উচ্চ দেনমোহর নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। নবীজি (স.) বলেছেন,“সর্বোত্তম মাহর সেই, যা সবচেয়ে সহজ।” (সুনান ইবন মাজাহ, হাদিস: ১৮৮৭)সামাজিক প্রতিযোগিতা বা মর্যাদা দেখানোর জন্য অতিরিক্ত দেনমোহর নির্ধারণ ইসলামি দৃষ্টিতে অনুচিত।আরও পড়ুনবিয়ে করার জন্য স্ত্রীকে মোহর প্রদান করা ফরজ০২ আগস্ট ২০২৩গ. স্ত্রীর সম্মতি অপরিহার্য: দেনমোহর উভয় পক্ষেরসম্মতিতে নির্ধারিত হবে। স্ত্রীর অনিচ্ছা বা চাপ প্রয়োগ করাজায়েজ নয়।ঘ. তাৎক্ষণিক ও মুলতুবি অংশ: দেনমোহর দুই ভাগে হতেপারে, ১. তাৎক্ষণিক (মুহর মু’আজ্জাল), ২. মুলতুবি বাপরবর্তী সময়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি (মুহর মুআখখার)।উভয়টাই শরীয়তে গ্রহণযোগ্য। ৩. বাংলাদেশসহ সমাজেদেনমোহর নির্ধারণের প্রচলিত পদ্ধতিবাংলা উপমহাদেশে প্রথাগতভাবে তিন পদ্ধতিতে দেনমোহরনির্ধারণ দেখা যায়—ক. স্বামীর আয়ের ভিত্তিতে: মাসিক আয়, সম্পদের পরিমাণ ও আর্থিক স্থিতি বিবেচনা করে যৌক্তিক পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়। এটি ইসলামের সবচেয়ে নিকটবর্তী পদ্ধতি।খ. স্ত্রী পক্ষের পারিবারিক মর্যাদার ভিত্তিতে: এটিও বৈধ, যদি পরিমাণ অযৌক্তিক না হয়।গ. উভয় পরিবারের পারস্পরিক আলোচনায়: এটিবাস্তবসম্মত ও প্রাধান্যযোগ্য।কোনো ক্ষেত্রেই আদালত বা কাজীর রেজিস্ট্রি বইতেঅস্বাভাবিক কম অর্থ (যেমন ১০১ টাকা) লেখা শরীয়তেরউদ্দেশ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।দেনমোহরের সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ সীমাহানাফি মাজহাবে সর্বনিম্ন দেনমোহর নির্ধারণ করা হয়েছিলদশ দিরহাম। তবে অধিকাংশ সমসাময়িক আলেম বলেন, “এটি নির্দিষ্ট নূন্যতম পরিমাণ নয়; বরং সময়ের সামাজিকমানদণ্ড অনুযায়ী।” (মুফতি তাকী উসমানী, ফিকহুল বুয়ূ, মাকতাবা মাআরিফুল কোরআন, করাচি, ২০১০)সর্বোচ্চ সীমা নেই; তবে অতি উচ্চ মাহর নিরুৎসাহিত।দেনমোহর কত হলে ভালো১. স্বামীর ছয় মাস থেকে এক বছরের আয়ের মধ্যকার পরিমাণঅধিকাংশ ফকিহের মতে যৌক্তিক।২. স্ত্রীর ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এমন পরিমাণ হওয়াউত্তম।৩. অতি সামান্য অর্থ (যেমন ৫০০ টাকা) সমাজ বাস্তবতারসঙ্গে সাংঘর্ষিক এবং ইসলামের উদ্দেশ্যের বিপরীত।ইমাম শাফেয়ি (রহ.) বলেন, “মাহরের মূল লক্ষ্য নিরাপত্তা, সম্মান ও স্থিতি।” (আল-উম্ম, খণ্ড ৫, পৃষ্ঠা ২৩৫, দারুলমাআরিফ, কায়রো, ১৯৯০)আরও পড়ুনআবু তালহার ইসলাম গ্রহণ২৫ মার্চ ২০২৫দেনমোহর প্রদান না করলে কী হবে১. স্ত্রীর অধিকার ক্ষুণ্ন হবে।২. স্ত্রী প্রয়োজন হলে আদালতে দাবি করতে পারবেন।(ফিকহুল ইসলামি, খণ্ড ৫, পৃপৃ. ৩৩৭)।৩. মৃত্যু বা তালাকের সময় সম্পূর্ণ দেনমোহর আদায় করতেহবে।নবীজি (স.) বলেছেন,“যে ব্যক্তি কারো অধিকার আদায়েরসামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও বিলম্ব করে, সে জুলুম করল।”(সহিহবুখারি, হাদিস: ২৪০০)দেনমোহরের সামাজিক তাৎপর্য১. স্ত্রীকে অর্থনৈতিক নিরাপত্তা দেয়।২. স্বামীকে দায়িত্বশীল করে।৩. বিবাহ প্রতিষ্ঠানকে সম্মানজনক রাখে।৪. বিচ্ছেদের ক্ষেত্রে স্ত্রীর ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।৫. সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করে।ড. ওয়াহবা যুহাইলি লিখেছেন,“মাহর হচ্ছে ইসলামে নারীমর্যাদা প্রতিষ্ঠার অন্যতম সবচেয়ে শক্তিশালী ব্যবস্থা।”(ফিকহুল ইসলামি ওয় আদিল্লাতুহু, খণ্ড ৭, পৃ. ৪৬১, দারুলফিকর, দামাস্কাস, ১৯৯৭)দেনমোহর কোনো আনুষ্ঠানিকতা বা প্রদর্শন নয়। এটি স্ত্রীকেসম্মান জানানোর ও নিরাপত্তা প্রদানের ইসলামি নীতি।সামর্থ্য অনুযায়ী, সম্মতি নিয়ে, যৌক্তিকভাবে এবংদায়িত্ববোধের সঙ্গে নির্ধারণ করাই সর্বোত্তম পদ্ধতি। ইসলামেরউদ্দেশ্য হলো, বিবাহকে সুখ, নিরাপত্তা ও মানবিকতারভিত্তিতে স্থাপন করা। দেনমোহর সেই ভিত্তির একটিঅপরিহার্য স্তম্ভ।আরও পড়ুনইসলামে বিয়ে ও পরিবার গঠনের উদ্দেশ্য০৮ নভেম্বর ২০২৪
    জান্নাত—যেখানে নেই কষ্ট, নেই মৃত্যু, নেই দুঃখ বা হতাশা। মানুষ সেখানে পাবে সীমাহীন আনন্দ, অপার শান্তি ও চিরন্তন সুখ। কোরআন ও হাদিসে জান্নাতের অসংখ্য নিয়ামতের বর্ণনা এসেছে,  বাগান, নদী, অমর যৌবন, সুন্দর পোশাক, মনোরম খাবার ও অনন্ত প্রশান্তি।কিন্তু এসবের চেয়েও মহান, শ্রেষ্ঠ ও অনন্য এক নিয়ামত আছে,  তা হলো আল্লাহর দর্শন।জান্নাতের সাধারণ নিয়ামতসমূহ কোরআনে আল্লাহ তায়ালা জান্নাতের সৌন্দর্য এভাবে বর্ণনা করেছেন,  “যারা ইমান এনেছে ও সৎকর্ম করেছে, তাদের জান্নাতের বাগানে প্রবেশ করানো হবে, যার তলদেশ দিয়ে নদী প্রবাহিত হবে। সেখানে তাদের জন্য থাকবে সোনার কঙ্কন ও মুক্তার অলঙ্কার, আর তাদের পোশাক হবে রেশম।” (সুরা হাজ্জ, আয়াত: ২৩)অন্যত্র বলেন, “তাদের জন্য থাকবে যা তাদের প্রাণ চায় এবং যা তারা চায় তা-ই সেখানে থাকবে।” (সুরা ফুসসিলাত, আয়াত: ৩১)অর্থাৎ জান্নাতে মানুষ পাবে প্রতিটি...
    নবুওয়তলাভের পঞ্চম বছর, নবীজি (সা.) দেখলেন শুধুমাত্র ইসলামগ্রহণের ‘অপরাধে’ নিজ গোত্রের আপন লোকেরাই সাহাবিগণের ওপর অমানবিক নির্যাতন শুরু করেছে। দিন যত যায়, জুলুম-নিপীড়ন আর অবমাননা বাড়তে থাকে। যারা সমাজে খুব সম্মানের সাথে চলাফেরা করতেন, তাদেরই এখন আড়ালে-আবডালে থাকতে হয়। সাহাবিগণের এই ‘পরাধীনতা’ নবীজির (সা.) মনে খুব কষ্ট দিল। তিনি তাদের বললেন, ‘তোমরা আল্লাহর জমিনের কোথাও হিজরত করে চলে যাও, আল্লাহ শীঘ্রই তোমাদের একত্রিত করবেন। সাহাবিগণ আরজ করলেন, কোথায় যাব? তিনি হাবশার দিকে ইঙ্গিত করেন।’ (সীরাতুল মুস্তফা, ইদরীস কান্ধলবী, খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ২১১-২১২, ইফাবা)আরেক বর্ণনায় আছে, নবীজি (সা.) বলেন, ‘তোমরা হাবশায় চলে যাও, এটাই তোমাদের জন্য ভালো। কারণ সেখানে একজন ন্যায়পরায়ণ বাদশাহ আছেন, যার রাজত্বে কেউ জুলুমে শিকার হয় না। সেই দেশটা সত্য ও ন্যায়ের দেশ। আল্লাহ যতদিন পর্যন্ত তোমাদের জন্য...
    জীবনের পথ কখনো সমতল নয়। কখনো উত্তল, কখনো অতল। রাসুল (সা.)-এর জীবনও ছিল এমনই—বিজয়ের মধ্যে পরাজয়ের ছায়া, সাফল্যের পাশে কষ্টের কাঁটা। মক্কায় দাওয়াহর পথে বাধা সৃষ্টি হলে, তিনি তাক করেন তায়েফের দিকে। সেখানকার থাকিফ গোত্রের কাছে আশা নিয়ে যান।কিন্তু যা পান, তা ছিল কঠোর প্রত্যাখ্যান, পাথরের আঘাত এবং গভীর একাকিত্ব। এই যাত্রা শুধু একটি ঘটনা নয়, বরং ধৈর্য, রহমত এবং ইমানের এক অসামান্য পাঠ।নতুন আশায় তায়েফের পথে মক্কা ছিল তখন আগুনের চুল্লির মতো। হযরত খাদিজা (রা.) এবং চাচা আবু তালিবের মৃত্যুর পর কুরাইশের নির্যাতন আরও তীব্র হয়। তারা নবীজিকে এবং মুসলিমদের এত কষ্ট দিত যে মক্কার বিশালতা মনে হতো এক হাতমুঠোর মতো সংকীর্ণ। ইসলাম প্রচারের জন্য নতুন আশ্রয় খোঁজা ছাড়া আর উপায় ছিল না।তাই নবীজি শাওয়াল মাসে, নবুয়তের দশম সালে তায়েফ যাত্রা করেন। সঙ্গে ছিলেন একমাত্র জায়েদ ইবনে হারিসা...
    ‘ফিকহ’ শব্দটি এসেছে আরবি মূল শব্দ ‘ফাকিহা’ থেকে, যার অর্থ ‘বোঝা’, বিশেষত গভীরভাবে কোনো বিষয় অনুধাবন করা। অর্থাৎ, ফিকহ মানে হচ্ছে, ইসলামি শরিয়তের বিধানগুলো গভীরভাবে অনুধাবন ও সেগুলোর ভিত্তিতে জীবন পরিচালনা করা।ইমাম আবু হানিফা (রহ.) ফিকহকে সংজ্ঞায়িত করেছেন এভাবে, “ফিকহ হল মানুষের জন্য কোনটি হালাল আর কোনটি হারাম, তা জানা।” (আল-জাসাস, ইলমুল ফিকহ, পৃ. ১৫, দারুল কুতুব আল-ইলমিয়্যাহ, বৈরুত, ১৯৯৫ খ্রি.)ইসলামি শরিয়তে ফিকহের অর্থ ইসলাম শুধু আধ্যাত্মিক ধর্ম নয়, বরং এটি একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা। এই জীবনব্যবস্থার আইনি কাঠামো বা বাস্তব রূপই হলো ফিকহ শাস্ত্র।সুতরাং ফিকহ বলতে বোঝায়, কোরআন, হাদিস, ইজমা (মতৈক্য) ও কিয়াস (যুক্তি)-এর আলোকে ইসলামি আইন ও তার প্রয়োগবিধি বোঝার বিজ্ঞান।সহজভাবে বলা যায়, ফিকহ হচ্ছে ইসলামি আইনশাস্ত্র, যা মুসলমানকে শেখায়, কোন কাজ বৈধ, কোনটি নিষিদ্ধ, আর কোনটি উত্তম।আরও পড়ুনইসলামে...
    দোয়া মুমিনের হাতিয়ার। আর যখন দোয়া করেন মহানবী নিজে (সা.), তখন তা হয়ে ওঠে অলৌকিকতার প্রতীক। আল্লাহ তাঁর প্রিয় নবীর দোয়া কবুল করেন তৎক্ষণাৎ, যা নবুয়তের সত্যতার সবচেয়ে বড় প্রমাণ। আলমেগণ বলেন, ‘নবীর দোয়া কবুল হওয়া তাঁর নবুয়তের সুস্পষ্ট চিহ্ন। আল্লাহ মিথ্যাবাদীর দোয়া কবুল করেন না।’নবীজির দোয়া কবুলের ঘটনা অসংখ্য। এখানে কয়েকটি উদাহরণ দিয়ে দেখব, কীভাবে আল্লাহ তাঁর দোয়া শুনেছেন।বৃষ্টির জন্য দোয়া: মেঘের পাহাড় উঠে আসা মদিনায় দীর্ঘ খরা। সম্পদ নষ্ট হচ্ছে, শিশুরা ক্ষুধায় কাঁদছে। জুমার খুতবায় এক বেদুঈন দাঁড়িয়ে বললেন, ‘আল্লাহর রাসুল, সম্পদ ধ্বংস হচ্ছে, পরিবার ক্ষুধায় কাতরাচ্ছে। আল্লাহর কাছে দোয়া করুন।’আনাস ইবনে মালিক (রা.) বলেন, নবীজি হাত তুললেন। আকাশে মেঘের টুকরোটিও ছিল না। কিন্তু হাত নামানোর আগেই মেঘ জমতে শুরু করল পাহাড়ের মতো। মিম্বর থেকে নামার আগেই বৃষ্টি পড়তে লাগল নবীজির দাড়িতে। সেই দিন, পরের...
    স্বামীর মৃত্যু এক নারীর জীবনের সবচেয়ে কঠিন মুহূর্ত। তাঁর সঙ্গী, অভিভাবক ও জীবনের অবলম্বন হারানোর শোক ভাষায় প্রকাশ করা যায় না।কিন্তু ইসলাম এই কঠিন সময়ে একদিকে যেমন স্ত্রীর শোক প্রকাশের সুযোগ দিয়েছে, অন্যদিকে তেমনি দিয়েছে কিছু নির্দিষ্ট করণীয় ও বিধান, যা তাঁর মর্যাদা রক্ষা করে, সামাজিক নিরাপত্তা দেয় এবং আধ্যাত্মিকভাবে ধৈর্যের পথে পরিচালিত করে।১. ইদ্দত পালন করাআল্লাহ বলেছেন, “তোমাদের মধ্যে যাদের স্বামী মৃত্যুবরণ করেছে, তারা চার মাস দশ দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করবে (ইদ্দত পালন করবে)।” (সুরা আল-বাকারা, আয়াত: ২৩৪)এই ইদ্দতকালকে আরবি ভাষায় বলা হয় ‘ইদ্দাতুল অফাতি’ বা মৃত্যুর ইদ্দত। এর সময়কাল হল চার মাস দশ দিন, বা ১৩০ দিন।ইদ্দত পালনের উদ্দেশ্য হল:১. স্ত্রীর গর্ভধারণের সম্ভাবনা নির্ণয় করা,২. স্বামীর স্মৃতি ও সম্পর্কের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা,৩. আবেগিক পুনর্গঠন ও সামাজিক স্থিতি...
    ইমাম মুহাম্মদ ইবনে ইদ্রিস আল-শাফেয়ি। কুরাইশ বংশের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র তিনি। তাঁর বংশধারা মহানবী মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রপিতামহ আবদে মানাফের সঙ্গে মিলিত হয়েছে। আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের চার মহান ইমামের মধ্যে তিনি তৃতীয়। তাঁর আগে রয়েছেন ইমাম আবু হানিফা এবং ইমাম মালিক (রহ.)।তিনি এক অসামান্য প্রতিভার অধিকারী, যিনি ফিকহ তথা ইসলামের আইনশাস্ত্রকে সুশৃঙ্খল রূপ দিয়েছিলেন। দ্বিতীয় হিজরি শতকের ‘মুজাদ্দিদ’ বা সংস্কারক হিসেবেও তাঁর খ্যাতি রয়েছে। তিনিই প্রথম ব্যক্তি, যিনি ‘আর-রিসালা’ গ্রন্থ লিখে ‘উসুলে ফিকহ’ বা ইসলামি আইনশাস্ত্রের মূলনীতিগুলো লিপিবদ্ধ করেন।তিনি ছিলেন ফিকহ, হাদিস ও তাফসির শাস্ত্রের ইমাম। সেই সঙ্গে তিনি ছিলেন একজন উঁচু দরের সাহিত্যিক ও কবি। যুগে যুগে মুসলিম উম্মাহর মাঝে তাঁর জ্ঞান ও প্রভাব আজও অম্লান।জন্ম ও শৈশব ১৫০ হিজরি সনের রজব মাসে (৭৬৭ খ্রিষ্টাব্দ) ফিলিস্তিনের গাজা অঞ্চলে তিনি...
    জীবনে সংকট আসে অপ্রত্যাশিতভাবে। কখনো পরিবারে, কখনো সম্পদে, কখনো সম্পর্কে। কিন্তু যারা আল্লাহকে ভয় করে চলে, তাদের জন্য রয়েছে অদৃশ্য দরজা, মুক্তির পথ। কোরআন মাজিদে আল্লাহ তায়ালা ঘোষণা করেন, ‘অমাই-য়াত্তিকিল্লাহা ইয়াজআল্লাহু মাখরাজা’..‘যে আল্লাহর ভয় অবলম্বন করে, আল্লাহ তার জন্য মুক্তির পথ করে দেন এবং তাকে এমন জায়গা থেকে রিজিক দেন, যা সে কল্পনাও করেনি।’ (সুরা তালাক, আয়াত: ২-৩)এই আয়াতের একটি অংশ, ‘যে আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন করে, আল্লাহ তার জন্য মুক্তির পথ করে দেন’ যদিও নাজিল হয়েছে সুরা তালাকের (বিবাহ বিচ্ছেদ) অংশ হিসেবে এবং একটি বিশেষ ঘটনায়। কিন্তু এটি শুধু বিবাহ বিচ্ছেদের মতো কোনো বিধানের সঙ্গে বিশেষায়িত নয়।হে নবী,  যখন তোমরা নারীদের তালাক দাও, তাদের ইদ্দত (বিচ্ছেদের পরে নির্দিষ্ট সময়ের অবকাশ) অনুসারে তালাক দাও।কোরআন, সুরা তালাকআয়াতটি অবতীর্ণ হওয়ার ঘটনাটি হলো, আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) তার স্ত্রীকে ঋতুমতী অবস্থায় তালাক দিয়েছিলেন।...
    পয়লা বৈশাখে বাংলা নববর্ষ উদ্‌যাপিত হয়ে এলেও এবার অগ্রহায়ণ মাসের শুরুতেই এ উৎসব উদ্‌যাপনের ঘোষণা দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু)। আজ শুক্রবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে আগামী রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলায় দিনব্যাপী নববর্ষের আয়োজন করা হবে বলে জানিয়েছেন ডাকসুর সাহিত্য ও সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক মুসাদ্দিক ইবনে আলী মোহাম্মদ। চারুকলায় অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বিপ্লবী সাংস্কৃতিক ঐক্য ও ডাকসুর যৌথ উদ্যোগে নববর্ষ উদ্‌যাপন করা হবে। অনুষ্ঠানটি চারটি পর্বে সেদিন রাত ১০টা পর্যন্ত চলবে। প্রথম পর্বে হবে রংতুলিতে নবান্ন। দেশবরেণ্য চিত্রশিল্পী এবং চারুকলার প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে জুলাই ও নবান্ন থিমে ছবি আঁকা হবে। মোট ১৫ জন শিল্পী এই পর্বে ছবি আঁকবেন। পর্বটি শুরু হবে সকাল ১০টায়। দ্বিতীয় পর্বে হবে আদি নববর্ষ আনন্দযাত্রা। উৎসবের সবচেয়ে আকর্ষণীয় পর্ব এটি। চারুকলার...
    রাজধানীর মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্পে অভিযান চালিয়ে ৩৫টি ককটেল ও ককটেল তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় এ অভিযান চালানো হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার মো. ইবনে মিজান।ডিএমপির এই কর্মকর্তা বলেন, গতকাল বৃহস্পতিবার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জেনেভা ক্যাম্পে অভিযান চালিয়ে ককটেল তৈরির তিন কারিগরকে আটক করে পুলিশ। পরে তাঁদের মোহাম্মদপুর থানায় বিস্ফোরক উপাদান আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।মো. ইবনে মিজান বলেন, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের দেওয়া তথ্যে আজ সন্ধ্যায় পুলিশ জেনেভা ক্যাম্পে অভিযান চালায়। এ সময় ক্যাম্পের ঘরগুলো থেকে ৩৫টি ককটেল ও ককটেল তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। তবে এসবের সঙ্গে জড়িত অন্যরা পালিয়ে যায়। রাত সোয়া আটটায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত অভিযান চলছিল।পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান, ডিএমপির বোমা উদ্ধার ও নিষ্ক্রিয়করণ দল উদ্ধার করা...
    প্রথম হিজরতের কয়েক মাস পর হাবশায় এই গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে মক্কার সবাই ইসলাম গ্রহণ করেছে। সাহাবিরা ভেবেছিলেন, নির্যাতনের দিন ফুরিয়েছে, এখন মক্কা নিরাপদ শহর। এই ভাবনা থেকে মক্কায় ফিরে এলেন।কিন্তু শিগগিরই বুঝলেন, সেটা ছিল একেবারেই ভুল সংবাদ। সবকিছু আগের মতোই আছে, তবে কুরাইশদের নিষ্ঠুরতা আগের চেয়েও তীব্র হয়ে উঠেছে। মক্কার সীমাবদ্ধ পরিসরে ইমান নিয়ে বেঁচে থাকা তখন প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে।এমন সময় নবীজি (সা.) সাহাবিদের পুনরায় হাবশার দিকে রওনা হওয়ার নির্দেশ দেন। হাবশা ৬১৫ সালে তাঁরা আলাদাভাবে হাবশায় গিয়ে পৌঁছান। ইতিহাসে এটি ‘হাবশায় দ্বিতীয় হিজরত’ নামে খ্যাত—যেখানে নারী সাহাবিদের অংশগ্রহণ ছিল আরও সক্রিয় ও তাৎপর্যপূর্ণ।হাবশা হল প্রাচীন আবিসিনিয়া, অর্থাৎ বর্তমান ইথিওপিয়া ও এর আশপাশের অঞ্চল। এটি ইসলামের ইতিহাসে মক্কা থেকে প্রথম হিজরতের স্থান হিসেবে পরিচিত, যেখানে সাহাবিরা তৎকালীন খ্রিষ্টান শাসক...
    মানুষের মৌলিক চাহিদা খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা ও শিক্ষা—এসব পূরণে ইসলামের ভূমিকা অত্যন্ত সুস্পষ্ট। শরীর ও মন সুস্থ থাকার নামই স্বাস্থ্য। পবিত্র কোরআনে সৃষ্টিতত্ত্ব ও চিকিৎসাবিদ্যা–সম্পর্কিত আয়াত আছে প্রায় ৩৬০টি এবং শুধু চিকিৎসাবিষয়ক আয়াতের সংখ্যাই প্রায় ২৪১।মানুষ সুস্থ অবস্থায় স্বাস্থ্য সম্পর্কে তেমন সচেতন হয় না। অসুস্থ হলে দিশাহারা হয়ে যায়। নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘দুটি নিয়ামতের ব্যাপারে অধিকাংশ মানুষ ধোঁকার মধ্যে রয়েছে, তা হলো সুস্থতা ও অবসর।’ (বুখারি, তিরমিজি, ইবনে মাজাহ, মিশকাত); তিনি আরও বলেন, ‘পাঁচটি বস্তুর পূর্বে পাঁচটি বস্তুকে গনিমত মনে করবে। বার্ধক্য আসার পূর্বে যৌবনকে, পীড়িত হওয়ার পূর্বে সুস্বাস্থ্যকে, দারিদ্র্যের পূর্বে সচ্ছলতাকে, ব্যস্ততার পূর্বে অবসরকে ও মৃত্যুর পূর্বে জীবনকে।’ (বুখারি: ১০৭৭)পুষ্টিকর ও সুষম খাদ্য গ্রহণ করা, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, অসুস্থ হলে সঠিক চিকিৎসা নেওয়া ও যথাযথভাবে ওষুধ সেবন...
    জীবনের সবচেয়ে কঠিন দিনটি এখনো আসেনি। সেদিন সম্পদের পাহাড় থাকলেও কোনো লাভ হবে না। সন্তান-কন্যা, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব—কেউ পাশে দাঁড়াবে না। সেদিন শুধু একটি জিনিস কাজে লাগবে: একটি পরিচ্ছন্ন হৃদয়।কোরআন মাজিদে আল্লাহ বলেন, ‘আর আমাকে সেই দিন লাঞ্ছিত করো না, যেদিন মানুষকে উত্থিত করা হবে। যেদিন না সম্পদ কোনো কাজে আসবে, না সন্তান। কিন্তু যে আল্লাহর কাছে পরিচ্ছন্ন অন্তর নিয়ে আসবে।’ (সুরা শু‘আরা, আয়াত: ৮৭-৮৯)।এই আয়াত ইবরাহিম (আ.)-এর দোয়া। তিনি বুঝেছিলেন, কিয়ামতের দিন সব সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যাবে।সেই দিনকে কোরআন বলেছে ‘ইয়াওমুত তাগাবুন’—প্রতারণার দিন। যেদিন মানুষ বুঝবে, দুনিয়ায় যা ভেবেছিল স্থায়ী, তা সব মায়া। সম্পদ, সন্তান, পদমর্যাদা—কিছুই সঙ্গী হবে না।ইমাম আবু মনসুর আল-মাতুরিদি (রহ.) বলেন, যদি কেউ সম্পদকে আল্লাহর আনুগত্যে ব্যয় করে, সন্তানকে সৎশিক্ষা দেয়, তাহলে সেটি কিয়ামতের দিন কাজে লাগবে। কারণ আল্লাহ বলেন, ‘তোমাদের সম্পদ ও সন্তান তোমাদের কাছে আল্লাহর নৈকট্য এনে দেবে...
    জাহেলি যুগের অন্ধকারময় মরুভূমিতে যখন অন্যায়, হানাহানি আর রক্তপাত ছিল নিত্যসঙ্গী, তখন আল্লাহ তায়ালা বিশ্ববাসীর জন্য রহমতস্বরূপ পাঠালেন তাঁর মুহাম্মাদ (সা.)-কে। তিনি অন্ধ চোখে আলো দিলেন, বধির কানে সত্যের সুর শোনালেন। সাহাবিরা তাঁর মধ্যে খুঁজে পেলেন পথের দিশা, অন্তরের তৃষ্ণা মেটানোর ঝরনা এবং এক অসীম স্নেহময় হৃদয়। কোরআনে বলা হয়েছে: ‘তোমাদের কাছে এসেছে একজন রাসুল, তোমাদেরই মধ্য থেকে, তোমাদের কষ্ট তাঁর কাছে কষ্টকর, তিনি তোমাদের কল্যাণকামী, মুমিনদের প্রতি দয়ালু, করুণাময়।’ (সুরা তাওবা, আয়াত: ১২৮)এই আয়াত সাহাবিদের হৃদয়ের কথা বলে দিল। তাঁরা নবীজিকে ভালোবাসলেন পুরো অন্তর দিয়ে—এমন ভালোবাসা যা দিন দিন বেড়েছে, ঝড়ঝাপ্টায়ও অটুট থেকেছে। এই ভালোবাসা শুধু আবেগ নয়, ইমানের অংশ সাব্যস্ত হয়েছে। আজ আমরা সেই অপূর্ব প্রেমের ছবি দেখলে বিস্ময়ে বিমূঢ় হই।বল, তোমাদের পিতা, সন্তান, ভাই, স্ত্রী, আত্মীয়, অর্জিত সম্পদ, যে ব্যবসা ক্ষতির ভয় করো, যে বাড়িঘর পছন্দ করো—যদি এসব আল্লাহ, তাঁর রাসুল ও তাঁর পথে জিহাদের চেয়ে প্রিয় হয়, তাহলে...
    ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বিজ্ঞান অনুষদে ৩ বছরের (২০২১, ২০২২ ও ২০২৩) ডিনস অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়েছে। বুধবার (১২ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের হাতে এ পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। আরো পড়ুন: শাবিতে ভাইস চ্যান্সেলর অ্যাওয়ার্ড পেলেন ৫ শিক্ষক জবি শিবিরের মেধাবীদের তালিকায় নেই ৩ বিভাগের শিক্ষার্থী অনুষদের আটটি বিভাগ ও একটি ইনস্টিটিউটের মোট ৭৬ জন শিক্ষার্থী ডিনস অ্যাওয়ার্ড পান। এছাড়া দেশে-বিদেশে প্রকাশিত গবেষণা গ্রন্থ এবং স্বীকৃত জার্নালে প্রকাশিত মৌলিক প্রবন্ধের জন্য ১০ জন শিক্ষককে ডিনস অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়। এছাড়া কিউ১ ও কিউ২ জার্নালে প্রকাশিত গবেষণাপত্রের জন্য অনুষদের বিভিন্ন বিভাগের ৩৮ জন শিক্ষককে প্রণোদনার চেক দেওয়া হয়। বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আবদুস সালামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে...
    পুঁজিবাজারে ওষুধ ও রসায়ন খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ইবনে সিনা ফার্মাসিউটিক্যালস ইন্ডাস্ট্রি পিএলসির পরিচালনা পর্ষদ চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকের (জুলাই-সেপ্টেম্বর, ২০২৫) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, আলোচ্য প্রান্তিকে আগের হিসাব বছরের তুলনায় কোম্পানির শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) বেড়েছে ১৬০.২৯ শতাংশ। বুধবার (১২ নভেম্বর) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। এর আগে মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে সর্বশেষ বছরের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর তা প্রকাশ করা হয়। ২০২৫ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানির শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ৭.০৮ টাকা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা ছিল ২.৭২ টাকা। সে হিসাবে কোম্পানিটি আলোচ্য প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি মুনফা বেড়েছে ৪.৩৬ টাবা বা ১৬০.২৯...
    মুসলিম সভ্যতায় ছিল শিক্ষাব্যবস্থার বৈচিত্র্য ও উন্মুক্ততা। এই ব্যবস্থার জোরেই মুসলিমরা একদিন দুনিয়ার সব শহরের সেরা হয়ে উঠেছিল, জ্ঞান আর চিন্তার জগতে। যেকোনো সাংস্কৃতিক জাগরণের তো মূল ভিত্তিই তো জ্ঞান ও শিক্ষা।ইসলামই হলো জ্ঞানচর্চার প্রথম এবং প্রধান অনুপ্রেরণা। ইসলাম জ্ঞান অর্জনের কথা বলে। জ্ঞান সঞ্চয়ের জন্য উৎসাহ দেয়। সেই জ্ঞান লিখে রাখতে আর ছড়িয়ে দিতে প্রেরণা জোগায়। আবার জ্ঞানকে লুকিয়ে রাখাকেও সে পাপ বলে মনে করে। ইসলামের বারবার বলা হয়েছে জ্ঞান, শিক্ষা আর শেখানোর গুরুত্বের কথা; ইহকালে ও পরকালে তার সম্মান ও মর্যাদার কথা।এই গুরুত্বের দিকটা মাথায় রেখেই, মুসলিমরা জ্ঞান অর্জনে আশ্রয় নিয়েছে বিচিত্র পদ্ধতির। কোনো একটা নির্দিষ্ট শিক্ষাক্ষেত্র, শিক্ষাধারা বা সিলেবাসে আবদ্ধ থাকেনি। এ জন্য মুসলিমদের জ্ঞান–বিজ্ঞানের স্বর্ণযুগে বিভিন্ন ধরনের উন্মুক্ত শিক্ষালয় দেখা যায়। স্বতন্ত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বাইরে যেসব শিক্ষাক্ষেত্র...
    মানুষের শরীরে একটা ছোট্ট অঙ্গ আছে, যাকে বলি হৃদয়। ইসলামে এটাকে বলা হয় কল্‌ব। কিন্তু ইসলাম অনুসারে এটা শুধু রক্ত সঞ্চালন করা যন্ত্র নয়, বরং আত্মার কেন্দ্র, ইমানের আধার, সব আমলের উৎস। হৃদয় দিয়ে ভালো হলে সারা জীবন ভালো হয়, খারাপ হলে সবকিছু নষ্ট হয়।আল্লাহ বলেছেন: ‘সেই দিন কোনো সম্পদ বা সন্তান কাজে আসবে না, শুধু সে ছাড়া যে আল্লাহর কাছে পৌঁছবে পরিচ্ছন্ন হৃদয় নিয়ে।’ (সুরা শুয়ারা, আয়াত: ৮৮-৮৯)এই আয়াত যেন বলে, কেয়ামতের দিন হৃদয়ই সবচেয়ে বড় সম্বল। আজকের এই লেখায় আমরা দেখব, ইসলামে হৃদয়ের কী মর্যাদা, অন্তরের আমল কী, তার রোগ কী, আর কীভাবে পরিষ্কার রাখব। পড়তে পড়তে মনে হবে, যেন নিজের হৃদয়কে আয়নায় দেখছি।শোনো, শরীরে একটা মাংসপিণ্ড আছে, সেটা ভালো হলে সারা শরীর ভালো হয়, খারাপ হলে সব...
    বর্তমানে সারা বিশ্বে পানিতে ডিটারজেন্ট দূষণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রতিবছর সারা বিশ্বে প্রায় ১ হাজার ২২০ কোটি লিটার ডিটারজেন্ট ব্যবহৃত হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাবে, এর মধ্যে শুধু ২৫-৩০ শতাংশ পানি পরিশোধিত হয়। এ সমস্যা সমাধানে দুই খুদে বিজ্ঞান আরীব বিন ফারুক ও সাইম ইবনে সারোয়ার ‘দ্য সল্টিং আউট সিস্টেম ২.০’ প্রকল্প বানিয়েছে। এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য ডিটারজেন্ট ও তেলের কারণে দূষিত পানিকে লবণাক্ত হলেও পরিষ্কার পানিতে পরিণত করা। এই পানি পরে শিল্প ও কৃষি খাতে ব্যবহার করা সম্ভব।আরীব ও সাইমের নকশা করা পদ্ধতিতে বিশেষ ধরনের লবণ পানিতে দ্রবীভূত করে দূষণকারী উপাদান, যেমন তেল ও ডিটারজেন্টকে কার্যকরভাবে পৃথক করা হয়। উচ্চমাত্রায় আয়নিত লবণ পানিতে নিষ্ক্রিয় গ্যাসের মতো কাজ করে ডিটারজেন্ট, তেল ও প্রোটিনের মতো পদার্থকে অদ্রবণীয় করে তোলে। এর ফলে পানি...
    আল্লাহর নবী হজরত আদম (আ.) মানবজাতির প্রথম পিতা, যাঁর সৃষ্টির মাধ্যমে আল্লাহ-তাআলা পৃথিবীতে মানুষকে প্রতিনিধি হিসেবে নিযুক্ত করেন। কোরআনে বর্ণিত আছে, আল্লাহ ফেরেশতাদের বলেছিলেন, ‘আমি পৃথিবীতে একজন প্রতিনিধি সৃষ্টি করতে যাচ্ছি।’ (সুরা বাকারা, ৩০)মানবসভ্যতার প্রথম অধ্যায় তাই শুরু হয় আদম (আ.)-এর অবতরণ থেকেই। ইসলামি ঐতিহ্য অনুসারে, তাঁর জীবনের সূচনা জান্নাতে এবং অবতরণ পৃথিবীতে। পরে সেই পৃথিবীতেই তাঁর বংশধরেরা ছড়িয়ে পড়ে এবং গড়ে ওঠে মানবসমাজের প্রথম ভিত্তি।আদম (আ.) ও তাঁর স্ত্রী হাওয়া (আ.) পৃথিবীতে অবতরণের পর আল্লাহ তাঁদের সন্তান দান করেন। পবিত্র কোরআনে সন্তানদের সংখ্যা উল্লেখ নেই, তবে ইসলামি ইতিহাসবিদ ইমাম ইবনে কাসির উল্লেখ করেন, হাওয়া (আ.)-এর প্রতি গর্ভে এক পুত্র ও এক কন্যা জন্ম নিত।এভাবে মোট চল্লিশটি যুগল সন্তান পৃথিবীতে এসেছিল। সেই হিসাবে আদম (আ.)-এর সন্তানের সংখ্যা প্রায় ৮০। ইমাম...
    ইসলামি সমাজে নারী কখনো পিছিয়ে থাকেনি। পুরুষের সঙ্গে কাঁধ মিলিয়ে নারী এগিয়েছে সব ক্ষেত্রে—আলেমা হিসেবে, মুহাদ্দিসা হিসেবে, কবি-সাহিত্যিক হিসেবেও তাঁরা ছিলেন উজ্জ্বল। আর সেবামূলক কাজে তো তাঁরা রীতিমতো প্রতিযোগিতাই করেছেন।ওয়াক্‌ফ, অর্থাৎ সম্পদকে ব্যক্তিগত ব্যবহার থেকে আলাদা করে স্থায়ীভাবে সেবামূলক কাজে লাগানো, এতে নারীদের ভূমিকা ছিল অসাধারণ।ইসলামি সভ্যতার উন্নয়ন, সমাজকল্যাণ, অর্থনীতি, ধর্মীয় জীবন—সবকিছুতে নারীর ওয়াক্‌ফের ভূমিকা রয়েছে। প্রথম যুগে এটা সীমিত ছিল, যদিও ফকিহরা নারীকে ওয়াক্‌ফকারী ও তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে পুরোপুরি অনুমোদন দিয়েছেন।উম্মুল মুমিনিন হাফসা (রা.) প্রথম ওয়াক্‌ফ ব্যবস্থার সূচনা করেন। খলিফা ওমর (রা.) মৃত্যুর আগে তাঁকে কিছু ওয়াক্‌ফের দায়িত্ব দেন। আব্বাসি যুগে হারুন রশিদের স্ত্রী যুবাইদা ছিলেন এ ক্ষেত্রে বিখ্যাত।উম্মুল মুমিনিন হাফসা (রা.) প্রথম ওয়াক্‌ফ ব্যবস্থার সূচনা করেন। খলিফা ওমর (রা.) মৃত্যুর আগে তাঁকে কিছু ওয়াক্‌ফের দায়িত্ব দেন। আব্বাসি যুগে হারুন...
    প্রিয় মানুষের কথা মনে পড়লে চোখ ভিজে আসে। প্রিয় বইয়ের পাতা উল্টালে মন ভালো হয়ে যায়। ভালোবাসা এমনই—যা ভালোবাসি, তার সঙ্গে সময় কাটাতে চাই, তার কথা শুনতে চাই, তাকে জানতে চাই।আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবনের সবচেয়ে বড় ভালোবাসা ছিল কোরআন। এটা কোনো বাড়িয়ে বলা কথা নয়—তাঁর পুরো জীবনই এর সাক্ষী।রাতের নামাজে কান্নাভেজা কণ্ঠ রাত যখন গভীর হতো, মানুষ যখন ঘুমে আচ্ছন্ন থাকত, তখন নবীজি (সা.) উঠে দাঁড়াতেন নামাজে। শুধু দাঁড়াতেন না—দীর্ঘ সময় ধরে কোরআন পড়তেন, এত ধীরে, এত গভীরভাবে যে পা ফুলে যেত।কখনো একটি আয়াত পড়তে পড়তে থেমে যেতেন। সেই আয়াত নিয়ে ভাবতেন, কাঁদতেন, বারবার পড়তেন। তাঁর দাড়ি ভিজে যেত অশ্রুতে। সহিহ বুখারি, হাদিস: ৪৭৬৩কখনো একটি আয়াত পড়তে পড়তে থেমে যেতেন। সেই আয়াত নিয়ে ভাবতেন, কাঁদতেন, বারবার পড়তেন। তাঁর...
    “মোহরে ফাতেমি” মুসলিম বিবাহে একটি বহুল আলোচিত ধারণা, যাকে মূলত নারীর অধিকার, সম্মান ও আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রতীক বলা যায়।‘মোহর’ বা ‘মাহর’ শব্দটি আরবি “মাহর” থেকে এসেছে, যার অর্থ, স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে নির্ধারিত অর্থ বা সম্পদ, যা বিবাহের অধিকার হিসেবে বাধ্যতামূলকভাবে প্রদান করতে হয়।‘মোহরে ফাতেমি’ বলতে বোঝানো হয় সেই পরিমাণ মাহর, যা নবীজি (স.) তাঁর কন্যা ফাতিমা (রা.)-এর বিয়েতে নির্ধারণ করেছিলেন। এটি মুসলিম ইতিহাসে আদর্শ মাহরের মানদণ্ড হিসেবে বিবেচিত হয়।মোহরে ফাতেমির ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটরাসুলুল্লাহ (স.)-এর কন্যা ফাতিমা (রা.)-এর বিয়ে হয়েছিল আলী ইবনে আবি তালিব (রা.)-এর সঙ্গে। এই বিয়েতে নবীজি (স.) যে পরিমাণ মোহর নির্ধারণ করেছিলেন, সেটিই পরে “মোহরে ফাতেমি” নামে পরিচিত হয়।ইমাম বায়হাকি ও ইবনে মাজাহ-এর বর্ণনা অনুযায়ী, মোহরে ফাতেমি ছিল ৫০০ দিরহাম রূপা (প্রায় ১.৫ কেজি রূপা)। (সুনান ইবনে...
    আমাদের এই পৃথিবীতে মানবজাতির ইতিহাস শুরু হয়েছিল নবী হজরত আদম (আ.)-এর মাধ্যমে। আল্লাহ তায়ালা যখন ফেরেশতাদের উদ্দেশে ঘোষণা করলেন, ‘আমি পৃথিবীতে একজন প্রতিনিধি সৃষ্টি করতে যাচ্ছি,’ তখনই মূলত সূচনা ঘটে মানব ইতিহাসের। ফেরেশতারা অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করেছিল, ‘আপনি কি এমন কাউকে সৃষ্টি করবেন, যে সেখানে ঝগড়া-ফাসাদ ও রক্তপাত ঘটাবে?’আল্লাহ তায়ালা তখন বলেন, ‘আমি যা জানি তোমরা তা জানো না।’ (সুরা বাকারা, ৩০-৩৪)কোরআনে উল্লেখ আছে, আল্লাহ তাঁকে সৃষ্টি করেছেন ‘শুষ্ক কাদামাটি থেকে, যা রূপান্তরিত হয়েছিল কালচে শুকনো মাটিতে।’ (সুরা হিজর, ২৬)আল্লাহ নিজ হাতে আদম (আ.)-এর অবয়ব তৈরি করেন, তাতে প্রাণ ফুঁকে দেন এবং ফেরেশতাদের আদেশ করেন তাকে সেজদা করতে।আল্লাহ নিজ হাতে আদম (আ.)-এর অবয়ব তৈরি করেন, তাতে প্রাণ ফুঁকে দেন এবং ফেরেশতাদের আদেশ করেন তাকে সেজদা করতে। সকল ফেরেশতা তাকে সেজদা...
    ইতিহাসের পরিক্রমায় এমন কিছু শহর আছে যেগুলো শুধু ভৌগোলিক স্থান নয়, বরং মানবসভ্যতার নৈতিক দিকনির্দেশক হয়ে উঠেছে। সপ্তম শতাব্দীর মদিনাতুন নবী বা মদিনা মুনাওয়ারা এমনই এক শহর, যেখানে আল্লাহর রাসুল হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইসলামি সভ্যতা ও রাষ্ট্রব্যবস্থার বাস্তব ভিত্তি স্থাপন করেন। মক্কায় তেরো বছরব্যাপী দাওয়াত, নির্যাতন ও সামাজিক বয়কটের পর যখন তিনি হিজরত করে ইয়াসরিবে (মদিনা) আগমন করেন, তখন ইসলামের রূপ আর শুধু একটি আধ্যাত্মিক আন্দোলনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকল না; বরং এটি একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থার বাস্তব রূপরেখা লাভ করল। হিজরতের প্রেক্ষাপট মক্কায় মুসলমানরা চরম নির্যাতনের শিকার হচ্ছিল। তৎকালীন কুরাইশদের অন্যায় আচরণ, অর্থনৈতিক অবরোধ ও ধর্মীয় নিপীড়নের কারণে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সাহাবিদের নিয়ে ইয়াসরিবে হিজরতের নির্দেশ দেন। আনসার গোত্রের প্রতিনিধি দল আকাবায় আল্লাহর রাসুলের...
    মুসলিম সভ্যতার ইতিহাসে প্রায়ই বিজ্ঞান, স্থাপত্য বা শাসনব্যবস্থার কথা আলোচিত হয়। কিন্তু এর মানবিক দিক অধরা রয়ে যায়। বিশেষ করে দরিদ্রদের প্রতি দয়া ও চিকিৎসাসেবার গল্প আড়ালে রয়ে গেছে সব সময়।মুসলিম সভ্যতায় কীভাবে দরিদ্র ও অসুস্থদের জন্য বিনা মূল্যে চিকিৎসা, আশ্রয় এবং মানসিক সান্ত্বনার ব্যবস্থা করা হয়েছিল, তা এক অপূর্ব কাহিনি।বিমারিস্তান: দরিদ্রদের জন্য চিকিৎসার আশ্রয় মুসলিম সভ্যতায় দরিদ্রদের চিকিৎসাসেবায় ‘বিমারিস্তান’ নামের হাসপাতাল ছিল একটি যুগান্তকারী উদ্যোগ। এগুলো শুধু চিকিৎসার জায়গা ছিল না, বরং দরিদ্রদের জন্য বিনা মূল্যে আশ্রয়, খাদ্য ও যত্নের ব্যবস্থা ছিল। বেশির ভাগ মুসলিম অধ্যুষিত নগরে, বিশেষ করে বড় রাজধানীগুলোতে বিমারিস্তান ছিল। দামেস্কে বিমারিস্তানের নাম ছিল ‘নুরি’, বাগদাদে ‘আদুদি’।প্রতিটি অন্ধ বৃদ্ধের জন্য এমন একজন সাহায্যকারী নিয়োগ কর, যে তাকে অত্যাচার বা অবহেলা না করে।খলিফা উমর ইবন আবদুল আজিজ...
    মুসলিম মনন ও মনীষার ইতিহাসে যে কয়েকজন মনীষী আপন প্রতিভার দ্যুতিতে স্বতন্ত্র এক জগৎ নির্মাণ করেছেন, ইমাম আবু জাফর মুহাম্মদ ইবন জারির আত-তাবারি (২২৪-৩১০ হিজরি) তাঁদের মধ্যে অবিস্মরণীয়।তাঁর পূর্ণ নাম মুহাম্মদ ইবন জারির ইবন ইয়াযিদ ইবন কাসির ইবনে গালিব। তিনি ছিলেন একাধারে কোরআনের এক অবিসংবাদিত ভাষ্যকার, নিপুণ ইতিহাসবিদ এবং প্রাজ্ঞ ফকিহ। তাঁকে ‘ইমামুল মুফাসসিরিন’ বা মুফাসসিরদের ইমাম উপাধিতে ভূষিত করা হয়।২২৪ হিজরি সনে তাবারিস্তানের উর্বর ভূমিতে ইমাম তাবারির জন্ম। শৈশব থেকেই তাঁর মধ্যে আশ্চর্য মেধা ও প্রতিভার স্ফুরণ ঘটে। তাঁর পিতা আল্লাহপ্রদত্ত এই গুণ বুঝতে পেরে শৈশব থেকেই জ্ঞানের পথে তাঁকে পরিচালিত করেন। পুত্রের পড়াশোনা, ভ্রমণ ও গবেষণায় পূর্ণ মনোযোগ নিশ্চিত করতে নিজের জমির আয় পর্যন্ত উৎসর্গ করেছিলেন।ধীরে ধীরে তিনি আরও প্রাজ্ঞ হয়ে ওঠেন। নিজস্ব ইজতিহাদ তাঁকে স্বতন্ত্র পথে চালিত...
    রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সুইমিং পুলে সাঁতার কাটতে গিয়ে সায়মা হোসাইনের মৃত্যুর ঘটনাকে ‘অবহেলাজনিত হত্যা’ অভিযোগ করে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা। সেই সঙ্গে তাঁরা প্রাথমিক তদন্তের তিন দিন ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। তদন্ত সাপেক্ষে সুষ্ঠু বিচারসহ চার দফা দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।আজ সোমবার বেলা ১১টা থেকে বেলা দেড়টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে কর্মসূচি পালন শেষ এ ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।তাঁদের অন্য তিনটি দাবি হলো প্রশাসন কর্তৃক সায়মার পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া, বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসাকেন্দ্রের সংস্কার ও উন্নত সেবা নিশ্চিত করতে রোডম্যাপ ঘোষণা এবং সুইমিং পুলের একটি অংশের গ্যালারি সায়মার নামে নামকরণ।সমাবেশে অংশ নিয়ে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ইবনে ফজল বলেন, ‘সায়মার মৃত্যুর সময় তিনজন প্রশিক্ষক সুইমিং পুলের ভেতরে উপস্থিত ছিলেন। তবে তাঁরা কেউ সায়মার অনুপস্থিতি লক্ষ করেননি। তাঁরা যখন বুঝতে...
    ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) তহবিলের পূর্ণাঙ্গ হিসাব প্রকাশ ও বরাদ্দকৃত অর্থ হস্তান্তরসহ তিন দফা দাবিতে প্রশাসনিক ভবন ঘেরাও করেন ডাকসু ও হল সংসদ নেতারা। একপর্যায়ে তাঁরা ভবনের তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক এম জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর কক্ষে গিয়ে স্লোগান দেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ–উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সায়মা হক বিদিশা ও প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমেদের আশ্বাসে তাঁরা ফিরে যান।আজ রোববার বেলা দুইটার দিকে ডাকসু নেতারা রেজিস্ট্রার ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত ঘেরাও কর্মসূচি পালন করেন। এ সময় ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক এ বি জুবায়ের, সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পাদক মুসাদ্দেক আলী ইবনে মোহাম্মদ, পরিবহন সম্পাদক আসিফ আব্দুল্লাহসহ বিভিন্ন হল সংসদের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।আন্দোলনকারীদের তিন দফা দাবি হলো, ২০১৯ সালের পর থেকে ডাকসু ও হল সংসদ ফি বাবদ...
    শিক্ষার্থীদের দেওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) জন্য প্রদেয় ফান্ডের টাকা এর নেতৃবৃন্দের কাছে হস্তান্তরসহ তিন দফা দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বিল্ডিং ঘেরাও করা হয়েছে। রবিবার (২৬ অক্টোবর) দুপুর ২টার দিকে রেজিস্ট্রার বিল্ডিং ঘেরাও করে এ বিক্ষোভ করেন ডাকসু ও হল সংসদের নেতৃবৃন্দ। আরো পড়ুন: জুলাই সনদ বাস্তবায়নসহ বিভিন্ন দাবিতে রংপুরে জামায়াতের বিক্ষোভ ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে ববিতে বিক্ষোভ  ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক এবি জোবায়ের, সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক মুসাদ্দিক আলী ইবনে মোহাম্মদ, পরিবহন সম্পাদক আসিফ আব্দুল্লাহ ও বিভিন্ন হল সংসদের নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা। তাদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- ২০১৯ সালের পর থেকে ডাকসু ও হল সংসদ ফি বাবদ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় করা টাকা হস্তান্তর ও ডাকসুর অতীতের সব ফান্ডের পূর্ণাঙ্গ হিসাব...
    বরকত শব্দটির আরবি ‘বারাকাহ’। এর অর্থ ‘আশীর্বাদ’, ‘প্রাচুর্য’ বা ‘কল্যাণ বৃদ্ধি’। এর দ্বারা বোঝানো হয় আল্লাহর পক্ষ থেকে কোনো কিছুতে বরকত বা কল্যাণ দেওয়া, যা অল্প সময়েই অধিক ফল দেয় বা দীর্ঘস্থায়ী হয়। এটি আধ্যাত্মিক শক্তি ও সমৃদ্ধির একটি ধারণা; যা জীবন, সম্পদ, স্বাস্থ্য বা সময়ের মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে হতে পারে।অল্প চেষ্টায় কোনো কিছু লাভ করা বা দীর্ঘ সময় ধরে কোনো কিছু অটুট থাকলে তাকেও বরকত বলা হয়।জীবনে উন্নতি ও শান্তির জন্য অনেকেই কঠোর পরিশ্রম করেন, বিভিন্ন ভাবে চেষ্টা করেন। তবু মনে হয় ঘরে যেন কোনো বরকত নেই, বরকত পাওয়া যাচ্ছেই না। আয়ে, শান্তিতে, এমনকি ভালো কাজেও কোনো ফল আসছে না। তখন তাঁরা ভীষণ দুঃখিত ও হতাশ হয়ে পড়েন।আসলে বরকত মানে তো শুধু কঠোর পরিশ্রম করার ফল বা কোনো কিছু...
    আজকের ডিজিটাল যুগে ই–মেইল, মেসেজিং অ্যাপ আর ইন্টারনেট আমাদের যোগাযোগকে দ্রুত ও সহজ করেছে। তবু ডাকব্যবস্থা এখনো সমাজের সংযোগ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।১৮৭৪ সালে বিশ্ব ডাক সংস্থা প্রতিষ্ঠার স্মরণে প্রতিবছর ৯ অক্টোবর বিশ্ব ডাক দিবস পালিত হয়। ২০২৫ সালে এই দিবসের প্রতিপাদ্য ছিল ‘মানুষের সেবায় ডাক’। যোগাযোগের সেতু হিসেবে, উদ্ভাবনের প্রেরণা ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনে ডাকব্যবস্থার গুরুত্ব ছিল সীমাহীন।ইসলামি সভ্যতায় ডাকব্যবস্থা ছিল শাসন, প্রশাসন ও জ্ঞানের আদান-প্রদানের একটি প্রধান স্তম্ভ।ডাকব্যবস্থার সুষ্ঠু পরিচালনা ছিল রাষ্ট্র সুসংহত থাকার প্রতীক। যদি কোনো প্রদেশ থেকে ডাক আসা বন্ধ হতো, তা বিদ্রোহ বা অস্থিরতার লক্ষণ হিসেবে বিবেচিত হতো।ইসলামি সভ্যতায় ডাকব্যবস্থার ইতিহাস ইসলামি সভ্যতায় ডাকব্যবস্থা ছিল রাষ্ট্রের প্রশাসনিক কাঠামোর একটি মূল অংশ। এটি বিভিন্ন প্রদেশকে রাজধানীর সঙ্গে সংযুক্ত করত, খলিফার কাছে খবর...
    রাওয়ালপিন্ডিতে চলমান পাকিস্তান-দক্ষিণ আফ্রিকা টেস্টে আজ তৃতীয় দিনের খেলা শেষ হয়েছে একটু অদ্ভুতভাবে। দক্ষিণ আফ্রিকার কেশব মহারাজ বল করলেন, আর পাকিস্তানের ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ রিজওয়ান সেটি কাভারের দিকে ড্রাইভ করলেন। কাভারে ফিল্ডার ছিলেন, রান নেওয়ার সুযোগ ছিল না। রিজওয়ান চেষ্টাও করেননি।অদ্ভুত ঘটনা ঘটে এরপরই। বল খেলেই রিজওয়ান ঘুরে দাঁড়ান এবং ইচ্ছাকৃতভাবেই ব্যাট দিয়ে স্টাম্পে আলতো টোকা মেরে বেলস ফেলে দেন। তাৎক্ষণিকভাবে আম্পায়ারের কাছে ‘হিট উইকেটের’ আবেদন করেন দক্ষিণ আফ্রিকার উইকেটকিপার কাইল ভেরেইনা। কিন্তু আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ তাতে সাড়া দেননি। বরং হেসে ইশারায় আপিল থামিয়ে দেন। স্কয়ার লেগে থাকা আম্পায়ার ক্রিস ব্রাউনও এ বিষয়ে কোনো ভূমিকা নেননি।দক্ষিণ আফ্রিকানদের আউটের আবেদনের কারণ ছিল যথেষ্টই। রিজওয়ানের ব্যাট হয়ে বল গেছে কাভারের দিকে। সেখান থেকে ফিল্ডার তখনো বল ফেরত পাঠাননি। আম্পায়ারও বেলস ফেলে খেলার...
    মুসলিম সভ্যতার স্থাপত্য শুধু মসজিদ, মাদরাসা বা প্রাসাদের গল্প নয়, সাধারণ মানুষের বাড়িঘরের গল্পও এখানে অনেক। ঘরবাড়ির স্থাপত্য নকশা ছিল তাদের জীবন, সংস্কৃতি আর অর্থনৈতিক অবস্থার প্রতিফলন। মুসলিম শহরগুলোর পুরোনো মহল্লায় হাঁটলে আজও সেই স্থাপত্যের জৌলুশ চোখে পড়ে।এই লেখায় আমরা সাধারণ ও মধ্যবিত্ত মানুষের বাড়ির নকশা, নির্মাণশৈলী আর তাদের জীবনযাত্রার ছোঁয়া নিয়ে আলোচনা করব। প্রাসাদ বা দুর্গের গল্প এড়িয়ে আমরা সাধারণ মানুষের ঘরের গল্পে প্রবেশ করব—তাদের দরজা থেকে ছাদ, ঘর থেকে সুবিধা এবং আলো ও শীতলতার ব্যবস্থা পর্যন্ত দেখার চেষ্টা করব।সাধারণ জীবনের স্থাপত্য ইসলামের প্রথম দিনগুলোতে আরবের বেদুইন অঞ্চলে বাড়ি বলতে ছিল তাঁবু, চামড়ার বিস্তার বা খেজুরপাতার ছাউনি। কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘আল্লাহ তোমাদের জন্য তোমাদের ঘরকে শান্তির আশ্রয় করেছেন এবং পশুর চামড়া থেকে ঘর তৈরি করেছেন।’ (সুরা নাহল, আয়াত: ৮০)মক্কা...
    কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজে রবিবার (১৯ অক্টোবর) নবীন বরণ অনুষ্ঠানে সংঘর্ষের ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ২৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। পুলিশ ও র‌্যাব নগরীর বিভিন্ন স্থানে যৌথ অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে।  সোমবার (২০ অক্টোবর) সকালে র‍্যাব-১১-এর কুমিল্লা কোম্পানি কমান্ডার মেজর সাদমান ইবনে আলম, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আব্দুল্লাহ ও কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি মহিনুল ইসলাম আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। আরো পড়ুন: খুলনা কারাগারে সংঘর্ষের ঘটনায় ৩ বন্দীকে কাশিমপুরে প্রেরণ খুলনা কারাগারে বন্দিদের মধ্যে সংঘর্ষ, আহত ৮ পুলিশ জানায়, রবিবার দুপুরে কলেজ ক্যাম্পাসে আধিপত্য নিয়ে তর্কাতর্কি সংঘর্ষে রূপ নিলে আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্র ব্যবহার করা হয়। ঘটনাস্থলে চারজন শিক্ষার্থী মোস্তাফিজুর রহমান, অনয় দেবনাথ, মাহিন ও রিজভী গুরুতর আহত হন। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সকালে...
    শহরে প্রবেশ করেন এক মুসাফির। চিন্তার ছাপ চেহারায়। পথচারীদের সাহায্যে তিনি মসজিদে নববিতে চলে আসেন। নবীজি (সা.) মসজিদেই ছিলেন৷ সঙ্গে সাহাবিরা৷ সামনে এগিয়ে যান মুসাফির। নবীজিকে সালাম করে বিনয়ের সঙ্গে জানান, ‘অনেক দূর থেকে এসেছি। মদিনায় কেউ পরিচিত নেই। থাকারও কোনো ব্যবস্থাপত্র হয়নি। আমাকে সাহায্য করুন, আল্লাহর রাসুল!’নবীজি (সা.) তখনই সম্মানিতা স্ত্রীদের ঘরে খোঁজ লাগান—তাদের কারও ঘরে খাবার কিছু আছে কি না! একে একে সকলেই জানান, ‘ঘরে আজ খাবার কিছুই নেই!’এবার সাহাবিদের দিকে ফিরে নবীজি (সা.) বলেন, ‘কেউ কী আছ, যে আল্লাহর এই বান্দাকে মেহমান বানাতে পারবে?’নবীজির আহ্বানে এক সাহাবি দাঁড়িয়ে যান। জ্যোতির্ময় চেহারা৷ সবিনয়ে বলেন, ‘মেহমানকে আমি বাড়ি নিয়ে যাব।’এটুকু বলে তখনই বেরিয়ে পড়েন। বাড়ি গিয়ে মেহমানের কথা জানিয়ে স্ত্রীকে জিজ্ঞেস করেন, ‘ঘরে খাবার কিছু আছে?’পরিকল্পনা মতো হয় সবকিছু।...
    জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় পুলিশের সঙ্গে ‘জুলাই যোদ্ধাদের’ সংঘর্ষের ঘটনায় শেরেবাংলা নগর থানায় চারটি মামলা করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার রাতে করা এসব মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় ৯০০ জনকে আসামি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) ইবনে মিজান।ডিসি ইবনে মিজান প্রথম আলোকে বলেন, জাতীয় সংসদ ভবন এলাকাটি সংরক্ষিত অঞ্চল। সেখানে জোর করে ঢুকে পুলিশের ওপর হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগে চারটি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় ৯০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।‘জুলাই যোদ্ধা’ পরিচয় দিয়ে গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে বিক্ষোভের পর সকালে প্রাচীর টপকে জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের মঞ্চের সামনে অবস্থান নিয়েছিলেন শতাধিক ব্যক্তি। পুলিশ কর্মকর্তা এবং জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্যরা রাত থেকে তাঁদের অনেক বোঝানোর পরও তাঁরা সরছিলেন না। একপর্যায়ে পুলিশ লাঠিপেটা করে তাঁদের সরিয়ে দেয়।আরও...
    নামাজ ইসলামের মূল স্তম্ভ এবং বান্দার সঙ্গে তার রবের মধ্যে সবচেয়ে গভীর সম্পর্কের মাধ্যম। এটি শুধু একটি ধর্মীয় আচার নয়, বরং আত্মার শান্তি, হৃদয়ের প্রশান্তি এবং জীবনের সঠিক পথে চলার শক্তির উৎস।রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘কিয়ামতের দিন বান্দার প্রথম যে আমলের হিসাব নেওয়া হবে, তা হলো তার নামাজ। যদি নামাজ সঠিক হয়, তবে সে সফল ও বিজয়ী হবে। আর যদি নামাজ নষ্ট হয়, তবে সে ব্যর্থ ও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’ (তিরমিজি, হাদিস: ৪১৩)নামাজের গুরুত্ব এতটাই যে, এটি সঠিকভাবে আদায় না করলে পুরো ধর্মই ক্ষতিগ্রস্ত হয়।নামাজে বান্দার সঙ্গে আল্লাহর একটি সংলাপ চলে। এটি কেবল শারীরিক ক্রিয়া নয়, বরং হৃদয় ও আত্মার সঙ্গে আল্লাহর সান্নিধ্য লাভের মাধ্যম।হাদিসের ঘটনা: ‘যাও, আবার নামাজ পড়ো’ আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, একদিন রাসুল (সা.) মসজিদে প্রবেশ করলেন। এমন...
    চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫টি হল ও হোস্টেল সংসদ নির্বাচনে জয়ীদের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) রাতে হল ও হোস্টেল সংসদের পূর্ণাঙ্গ ফলাফল প্রকাশ করে রাকসু নির্বাচন কমিশন। আরো পড়ুন: চাকসুর ফলাফল: ২ জন বাদে সবাই শিবিরের চাকসু নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হয়েছে: নাছির চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রী মিলেয়ে হল রয়েছে ১৪টি। হোেস্টেল আছে একটি। এই ১৫টিতেই নির্বাচন হয়েছে। এই ১৫ সংসদে জয়ীদের তালিকা একনজরে দেখে নেওয়া যাক। এফ রহমান হল সংসদ ভিপি- শাহরিয়ার আহমেদ সোহাগ, জিএস- তামিম চৌধুরী, এজিএস- সাইদুল ইসলাম, খেলাধুলা ও ক্রিয়া সম্পাদক- নাইমুর রহমান; সাহিত্য, সংস্কৃতি ও প্রকাশনা সম্পাদক- জয়নুল  আবেদীন ফাহিম, দপ্তর সম্পাদক- কামরুল ইসলাম; রিডিংরুম, ডাইনিংরুম ও হল লাইব্রেরি সম্পাদক- জামাল উদ্দিন; সমাজসেবা, পরিবেশ ও মানবাধিকার সম্পাদক- শেখ মাআজ আহাম্মেদ; বিজ্ঞান, গবেষণা...
    মুসলিম জীবনের সর্বোচ্চ লক্ষ্য হলো আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন। এটি এমন একটি পথ, যা বান্দার হৃদয়ে শান্তি, আত্মায় প্রশান্তি এবং জীবনে সুখ নিয়ে আসে। প্রতিটি পদক্ষেপ যদি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য নেওয়া হয়, তবে তা দুনিয়া ও আখেরাতে অপার সাফল্যের দ্বার খুলে দেয়।তবে এই পথে চলতে গিয়ে মানুষের সন্তুষ্টির সঙ্গে আল্লাহর সন্তুষ্টির দ্বন্দ্ব, নিজের ইচ্ছা-আকাঙ্ক্ষা এবং সমাজের চাপের মতো বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়।আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন একটি জীবনব্যাপী সাধনা। শুধু বড় বড় আমলের মাধ্যমে নয়, বরং ছোট ছোট কাজে খাঁটি নিয়তের মাধ্যমেও তা অর্জন করা যায়।আল্লাহর সন্তুষ্টি বনাম মানুষের সন্তুষ্টি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের পথে একজন মুসলিমকে প্রায়ই মানুষের অসন্তুষ্টির সম্মুখীন হতে হয়। এটি এমন একটি পরীক্ষা, যেখানে বান্দাকে দুনিয়ার স্বার্থ ও আখেরাতের কল্যাণের মধ্যে একটি বেছে নিতে হয়। কোরআনে আল্লাহ বলেন, “দুনিয়ার...
    রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ ও সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে বুথ। মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) রাত থেকেই শুরু হয়েছে বুথ প্রস্তুতের কাজ। ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে বুথ স্থাপন। আরো পড়ুন: ১৭ ঘণ্টার মধ্যেই রাকসুর ফল প্রকাশ: প্রধান নির্বাচন কমিশনার রাকসু: শীর্ষ তিন পদের প্রার্থীরা যেখানে ভোট দেবেন বুধবার (১৫ অক্টোবর) বেলা ১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান নির্বাচন কমিশন।  মমতাজউদ্দিন একাডেমিক ভবন, ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ্ কলাভবন, সৈয়দ ইসমাঈল হোসেন সিরাজী ভবন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাডেমিক ভবন, জাবির ইবনে হাইয়ান একাডেমিক ভবন, জামাল নজরুল একাডেমিক ভবন, সত্যেন্দ্রনাথ বসু একাডেমিক ভবন, জগদীশচন্দ্র একাডেমিক ভবনের দুটি করে কেন্দ্রে এবং জুবেরী ভবনের একটি কেন্দ্রসহ মোট ১৭টি কেন্দ্রের ৯৯০টি বুথে ভোটগ্রহণ...
    কুমিল্লায় বিদেশি পিস্তলসহ দুই যুবককে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। সংস্থাটির ভাষ্য, তাঁরা ভারত থেকে অবৈধভাবে অস্ত্র ও মাদক এনে দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করতেন। তাঁদের একজনের বিরুদ্ধে ১৮টি ও অন্যজনের বিরুদ্ধে সাতটি অস্ত্র, চাঁদাবাজি, মাদকসহ বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ডের মামলা আছে।আজ মঙ্গলবার দুপুরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে র‌্যাব-১১-এর সিপিসি-২ কুমিল্লার কোম্পানি অধিনায়ক মেজর সাদমান ইবনে আলম এসব তথ্য জানান।গতকাল সোমবার দিবাগত রাত একটার দিকে কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার ভাটকেশ্বর এলাকায় অভিযান চালিয়ে ওই দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও ৩টি গুলিসহ মাদকদ্রব্য জব্দ করা হয়।গ্রেপ্তার দুজন হলেন আদর্শ সদর উপজেলার ভাটকেশ্বর গ্রামের জসিম উদ্দিনের ছেলে রিয়াদ হোসেন (২৯) ও কার্তিকপুর গ্রামের প্রয়াত মঞ্জিল মিয়ার ছেলে মামুন মিয়া (২৯)। এর মধ্যে রিয়াদের বিরুদ্ধে ১৮টি ও...
    বগুড়ার একটি রোগনির্ণয় কেন্দ্রের (ডায়াগনস্টিক সেন্টার) ভুল আলট্রাসনোগ্রাফি প্রতিবেদনের (রিপোর্ট) কারণে দ্বিতীয় দফা অ্যাপেন্ডিসাইটিসের অস্ত্রোপচার করতে হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন এক নারী। প্রয়োজন না থাকলেও অস্ত্রোপচার করায় তিনি শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেছেন।শিমু আকতার নামের ওই নারী একজন স্কুলশিক্ষক ছিলেন। আজ সোমবার বগুড়া প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, শারীরিক অসুস্থতার কারণে তাঁকে চাকরি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। ইবনে সিনা ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড কনসালটেশন সেন্টার বগুড়া শাখার ভুল প্রতিবেদন দেওয়ার বিষয়ে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেও প্রতিকার পাচ্ছেন না।তবে এই সংবাদ সম্মেলনকে প্রতিষ্ঠানের সুনাম ক্ষুণ্ন করার শামিল বলে মন্তব্য করেছেন ইবনে সিনা বগুড়া শাখার ব্যবস্থাপক শওকত আলী। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ওই নারীর অভিযোগ নিয়ে দুই দফা তদন্ত হয়েছে। প্রথম দফা জেলা প্রশাসকের নির্দেশে মাস তিনেক আগে শহীদ জিয়াউর...
    ইসলামের আগমনের অনেক আগে, আরব উপদ্বীপে এক অদ্ভুত ঘটনা ঘটেছিল। আজও সেটি মুসলিমদের জন্য একটি জীবন্ত স্মৃতি। এটি আবরাহা নামে এক আবিসিনিয়ার (বর্তমান ইথিওপিয়া) সেই শাসকের গল্প, যিনি ইয়েমেন শাসন করে মক্কার কাবাকে প্রতিস্থাপন করার স্বপ্ন দেখেছিলেন।আবরাহা ইয়েমেনে একটি বিশাল গির্জা তৈরি করে সেটিকে ‘নতুন কাবা’ হিসেবে ঘোষণা করেন। কিন্তু তাঁর এই উচ্চাকাঙ্ক্ষা ধুলিসাৎ হয়ে যায়, যখন আল্লাহর অলৌকিক হস্তক্ষেপে তাঁর সেনাবাহিনী ধ্বংস হয়।এই ঘটনা কোরআনের সুরা ফিলে (১০৫ নম্বর সুরা) বর্ণনা করা হয়েছে। বিখ্যাত তাফসিরকার ইবনে কাসিরের ব্যাখ্যায়ও এর বিস্তারিত বিবরণ পাওয়া যায়। আজও এই গল্প আমাদের শেখায় যে সত্যিকারের ইমানের স্থানকে কোনো মানুষীয় ক্ষমতা বা প্রাসাদ দিয়ে সরানো যায় না।আবরাহা একটি বিশাল গির্জা নির্মাণ করেন, যার নাম ‘আল-কালিস’। গির্জাটি এত উঁচু ছিল যে এর চূড়া দেখার চেষ্টায় মানুষের...
    কোরআন তিলাওয়াত করা মানে শুধু পড়ে যাওয়া নয়, যেমন অন্য যে–কোনো বই পড়া হয়, বরং এটা হল আল্লাহর সঙ্গে কথা বলার মতো একটি পবিত্র কাজ।কোরআন পড়ার ফজিলত সম্পর্কে রাসুল (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি কোরআনের একটি অক্ষর পড়ে, তার জন্য একটি নেকি। আর প্রতিটি নেকি দশগুণ বৃদ্ধি পায়। আমি বলছি না যে ‘আলিফ লাম মীম’ একটি অক্ষর, বরং আলিফ একটি অক্ষর, লাম একটি অক্ষর, মীম একটি অক্ষর।” (সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ২৯১০)যে কোরআন পড়ে, সে যেন আল্লাহর কাছে চায়। কারণ, এমন কিছু লোক আসবে যারা কোরআন পড়ে মানুষের কাছে চাইবে। সুনান তিরমিজি, হাদিস: ২৯১৬এই কাজকে আরও অর্থপূর্ণ করতে কিছু শিষ্টাচার মেনে চলা উচিত। কথায় আছে, আদব নেই যার, সে আল্লাহর রহমত থেকে বঞ্চিত থাকে। কোরআন তিলাওয়াতের কয়েকটি আদব উল্লেখ করা হল:১. খাঁটি...
    দুপুরের খাবারের পর আমাদের অনেক সময় ক্লান্তি ও আলস্য পায়, তখন অনেকে স্বল্প সময় বিশ্রাম নেন। এ বিশ্রামকে হাদিসের ভাষায় বলে কায়লুলা। বাংলায় ‘ভাতঘুম’ বললে এর কাছাকাছি অর্থ হয়।কায়লুলা আমাদের দিনের পরবর্তী অংশকে প্রাণবন্ত ও সক্রিয় করে তোলে। বর্তমানে বিজ্ঞান কায়লুলার অনেক উপকারিতা উল্লেখ করছে। এটি নবীজি (সা.) ও সাহাবিগণের নিয়মিত অভ্যাস ছিল। তারা কখনও জোহরের নামাজের আগে আবার কখনও জুমার নামাজের পর কায়লুলা করতেন।বিজ্ঞানীরা মনে করেন, দুপুর বেলায় স্বল্প সময়ের ঘুম মানুষের শরীর ও মনকে সতেজ করে, চিন্তা ও মনোযোগ পুনসঞ্চয় ঘটায় ও কাজের সক্রিয়তা বৃদ্ধি করে।কায়লুলার উপকারিতা বিজ্ঞানীরা মনে করেন, দুপুর বেলায় স্বল্প সময়ের ঘুম মানুষের শরীর ও মনকে সতেজ করে, চিন্তা ও মনোযোগ পুনসঞ্চয় ঘটায় ও কাজের সক্রিয়তা বৃদ্ধি করে।‘সাইকোলজিক্যাল সায়েন্স’ জার্নালে ২০০২ সালে প্রকাশিত এক গবেষণায়...
    ইসলামি ফিকহের চারটি প্রধান মাজহাব—হানাফি, মালিকি, শাফেয়ি এবং হাম্বলি—সাহাবিদের ফিকহ ও জ্ঞানের গর্ভে জন্ম নিয়েছে। এদের শিকড় সাহাবিদের পদ্ধতির সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত, যারা ধর্মীয় জ্ঞান অর্জন, শরীয়া বিধান বোঝা এবং নাসের ব্যাখ্যা ও বাস্তবায়নে ইজতিহাদ করতেন।সাহাবিরা ঘটনাগুলোকে তাদের অনুরূপ ঘটনার সঙ্গে তুলনা করতেন, সাদৃশ্য খুঁজতেন এবং বিধান নির্ধারণে একটিকে অপরটির সঙ্গে যুক্ত করতেন। এভাবে তারা ইজতিহাদের পথ প্রশস্ত করেন এবং উলামাদের জন্য পথ নির্দেশ করেন। তাবিয়িনের যুগে এই পদ্ধতি আরও সুসংগঠিত হয়। চার মাজহাবের ইমামগণ সাহাবিদের শিষ্যদের শিষ্য ছিলেন। তারা সাহাবিদের জ্ঞান ও পদ্ধতি গ্রহণ করে তা প্রসারিত করেন। ইবনে কাইয়্যিম উল্লেখ করেন, ইসলামি জ্ঞান ও ফিকহের বিস্তার মূলত চারজন সাহাবির শিক্ষার মাধ্যমে হয়েছে: আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ, জায়েদ ইবনে সাবিত, আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর এবং আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.)।মদিনার জ্ঞান এসেছে...
    মোবাইল ফোন এখন আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায়, নামাজ চলাকালে কারও মোবাইল ফোন বেজে ওঠে, যা ইমাম ও জামাতের মনোযোগ নষ্ট করে এবং অন্যদের খুশু-খুজু (নিবিষ্টতা) ভঙ্গ করে।এই পরিস্থিতিতে অনেকেই দ্বিধায় পড়ে যান, এসময় মোবাইল বন্ধ করা যাবে কি না, নাকি নামাজ ভেঙে যাবে?নামাজে অল্প কাজের অনুমতি শরিয়তে ইসলামি শরিয়াহ নামাজে অতি সামান্য ও প্রয়োজনীয় কাজ করার অনুমতি দিয়েছে, যদি তা মনোযোগ নষ্ট না করে বা নামাজের আসল কাঠামো ভেঙে না দেয়। রাসুল (সা.)-এর আমলে সাহাবিরা নামাজে হালকা কাজ করতেন, সাহাবিরা নামাজে সেজদার জায়গা থেকে কাঁকর সরিয়ে নিতেন। (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৫৪৬)।ইমাম নববি (রহ.) বলেন, “যদি কোনো কাজ স্বল্প হয় এবং ইবাদতের স্বভাব পরিবর্তন না করে, তবে তা নামাজ নষ্ট করে না।” (শারহু মুসলিম, খণ্ড ৪,...
    ইসলামি ফিকহের ইতিহাসে সাহাবিদের যুগকে দ্বিতীয় পর্যায় হিসেবে গণ্য করা হয়, যা রাসুল (সা.)–এর যুগের পর শুরু হয়। এই যুগকে ‘ভিত্তি ও বিকাশের পর্যায়’ বলা হয়। রাসুলের যুগের ফিকহ মূলত তাঁর ব্যক্তিত্ব এবং ওহির অবতারণার সাথে যুক্ত ছিল, কিন্তু সাহাবিদের যুগে ফিকহের বিকাশ ঘটে নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়ে, যা ইসলামি আইনশাস্ত্রের ভিত্তি স্থাপন করে।অনেকে মনে করেন যে সকল সাহাবিই ছিলেন ফকিহ এবং ইজতিহাদকারী। কিন্তু এটি একটি ভুল ধারণা। প্রথম মুসলিম সমাজে সাহাবিদের সবাই উলামা বা ফকিহ ছিলেন না।রাসুলের যুগে বা খোলাফায়ে রাশেদিনের সময়ে তারা বেশিরভাগই দৈনন্দিন জীবনযাপন, ব্যবসা-বাণিজ্য এবং ইসলাম প্রচারে ব্যস্ত ছিলেন। তারা ছিলেন ধার্মিক এবং সৎ, যারা ইসলামকে জীবনে প্রয়োগ করতে আগ্রহী ছিলেন, কিন্তু গভীর জ্ঞানার্জন তাদের সকলের জন্য প্রধান লক্ষ্য ছিল না।তারা ধর্মের প্রয়োজনীয় জ্ঞান অর্জন করতেন...
    ইসলাম মানব সমাজে শালীনতা, পরিমিতি ও ভারসাম্য প্রতিষ্ঠার ধর্ম। এটি শুধু ইবাদত নয়, বরং জীবনযাত্রার নান্দনিক ও নৈতিক দিকগুলোও নির্ধারণ করে। পুরুষ ও নারীর পোশাক, আচরণ, অলঙ্কার—সব ক্ষেত্রেই ইসলাম একটি স্পষ্ট পার্থক্য রেখেছে।এর অন্যতম উদাহরণ হলো পুরুষের জন্য স্বর্ণ (Gold) পরিধান নিষিদ্ধকরণ। এই নিষেধাজ্ঞা শুধুমাত্র ধর্মীয় অনুশাসন নয়; বরং এটি সামাজিক, মনস্তাত্ত্বিক ও নৈতিক ভারসাম্য রক্ষার প্রজ্ঞায় ভরপুর এক বিধান।কোরআনের নির্দেশনা ও ব্যাখ্যা যদিও কোরআনে সরাসরি পুরুষদের স্বর্ণ পরার নিষেধাজ্ঞা নেই, তবে এতে সাজসজ্জার সীমা ও শালীনতার নীতি সুস্পষ্টভাবে বর্ণিত। আল্লাহ বলেন, “বল, কে হারাম করেছে আল্লাহর সৌন্দর্যোপকরণ, যা তিনি তাঁর বান্দাদের জন্য সৃষ্টি করেছেন এবং পবিত্র জীবনোপকরণ।”  (সুরা আ‘রাফ, আয়াত: ৩২)সাজসজ্জা বৈধ, তবে তা এমনভাবে হতে হবে যাতে শরিয়তের নির্ধারিত সীমা অতিক্রম না করে। পুরুষদের জন্য স্বর্ণ ও রেশম...
    ভাষা জন্মাল কীভাবে? এ এক প্রাচীন ধাঁধা। এই প্রশ্ন ভাবিয়েছে পুরোনো দিনের দার্শনিকদের, ভাবাচ্ছে আজকের ভাষাতাত্ত্বিকদেরও। আধুনিক ভাষাবিজ্ঞানে অবশ্য বিবর্তনের তত্ত্ব বেশ গভীর ছাপ ফেলেছে।প্রাচীনকালে কিন্তু অনেক রকম মত ছিল। এক দল মনে করত, ভাষার জন্ম স্বর্গীয় অনুপ্রেরণা বা ইলহাম থেকে। এই পথের পথিক ছিলেন আবু আলী ফারসি ও ইবনে হাজম আন্দালুসির মতো পণ্ডিতেরা। তাঁরা প্রমাণ হিসেবে তুলে ধরতেন সুরা বাকারার ৩১ নম্বর আয়াত, যেখানে বলা হয়েছে—‘তিনি আদমকে সব নাম (আসমা) শিক্ষা দিয়েছেন।’তাঁদের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, আল্লাহ স্বয়ং আদমকে আরবি, ফারসি, সিরীয় বা হিব্রুর মতো কিছু মৌলিক ভাষার মাধ্যমে সব প্রাণী আর জড়বস্তুর নাম শিখিয়ে দিয়েছিলেন।তাওরাত অনুসরণ করে হিব্রু পণ্ডিতেরাও প্রায় একই কথা বলেন। এমনকি গ্রিক ও রোমান দার্শনিকদের মধ্যেও এই ধারণার ছায়া খুঁজে পাওয়া যায়। প্লেটোর মতে, ভাষা আসলে ঈশ্বরের...
    ইসলামের ইতিহাসে নবীরা (আ.) কেবল আল্লাহর বাণী পৌঁছে দেওয়ার দূত ছিলেন না, তাঁরা ছিলেন চরিত্রের উজ্জ্বল আদর্শ। তাঁদের জীবন ছিল সততা, ধৈর্য, ক্ষমা, করুণা এবং দুনিয়ার প্রতি বৈরাগ্যের প্রতিফলন।কোরআনে কারিম তাঁদের এই গুণাবলিকে সাধারণভাবে এবং বিশদভাবে বর্ণনা করেছে, যাতে মানবজাতি তাঁদের অনুসরণ করে জীবনকে সুন্দর করে তুলতে পারে। আল্লাহ বলেছেন, ‘তাঁরাই যাদেরকে আল্লাহ পথ দেখিয়েছেন, তাই তাঁদের পথানির্দেশ অনুসরণ করো।’ (সুরা আনআম, আয়াত: ৯০)নবীরা ছিলেন আল্লাহর নির্বাচিত ব্যক্তিত্ব, যাঁদের জীবন ছিল সদাচারণতার আয়না।নবীদের চরিত্র: কোরআনের সাধারণ ও বিশদ বর্ণনা কোরআন নবীদের চরিত্রকে সাধারণভাবে বর্ণনা করে বলেছে যে তাঁরা সবাই উত্তম গুণাবলির অধিকারী ছিলেন। তাঁদের মধ্যে ছিল ধৈর্য, ক্ষমা, উদারতা, সততা, বিশ্বস্ততা, নম্রতা, করুণা, দয়া, দুনিয়ার প্রতি বৈরাগ্য এবং মানুষের অত্যাচার সহ্য করার ক্ষমতা। এই গুণগুলো তাঁদের সাধারণ মানুষ থেকে আলাদা...
    ইসলামি অর্থনীতির মূল ভিত্তি হলো আখলাকি মূল্যবোধ। এটা কেবল ব্যক্তিগত লাভের ওপর নির্ভর করে না, বরং সমাজের সামগ্রিক কল্যাণ নিশ্চিত করে। এর মধ্যে ‘ইসার’ একটি অনন্য ধারণা, যা অন্যকে নিজের ওপর অগ্রাধিকার দেওয়া বোঝায়।এটাকে শুধু একটি নৈতিক গুণ বললে ভুল হবে, বরং এটা অর্থনৈতিক ব্যবস্থার একটি মৌলিক স্তম্ভও বটে। সমাজে সহযোগিতা, ন্যায়বিচার এবং দয়ার পরিবেশ গড়ে তুলতে ‘ইসার’-এর ভূমিকা অনস্বীকার্য।যারা অভাব সত্ত্বেও নিজেদের ওপর অন্যকে অগ্রাধিকার দেয়... তারাই সফলকাম।’সুরা হাশর, আয়াত: ৯পুঁজিবাদী ব্যবস্থার স্বার্থপরতা এবং সুদভিত্তিক অর্থনীতির বিপরীত এই নীতি। এতে ব্যক্তি তার সম্পদ বা সুবিধা অন্যকে দিয়ে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করে, যা দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ নিয়ে আসে।‘ইসার’ অর্থ কীভাষাগত দিক থেকে, ইসার শব্দটি ‘আসারা’ থেকে উদ্ভূত, যার অর্থ অগ্রাধিকার দেওয়া বা পছন্দ করা। ইসলামি পরিভাষায়, এটি হলো দুনিয়াবি...
    শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ওষুধ কোম্পানি ইবনে সিনা ফার্মাসিউটিক্যালসের মুনাফা সাড়ে ৫ শতাংশ বা প্রায় পৌনে ৪ কোটি টাকা কমে গেছে। গত জুনে সমাপ্ত ২০২৪–২৫ অর্থবছরে কোম্পানিটি মুনাফা করেছে ৬৩ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। তার আগের অর্থবছরে যার পরিমাণ ছিল ৬৭ কোটি ৫ লাখ টাকা। কোম্পানিটি আজ রোববার শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের মুনাফার এই তথ্য জানিয়েছে।এর আগে ৩০ সেপ্টেম্বর কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের সভায় গত অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদন করা হয়। আজ রোববার সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে তা স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের জানানো হয়েছে। তাতে মুনাফার এই তথ্য পাওয়া যায়। আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদনের পাশাপাশি কোম্পানিটি গত অর্থবছরের জন্য শেয়ারধারীদের ৬৪ শতাংশ হারে নগদ লভ্যাংশ দেওয়ারও ঘোষণা দিয়েছে। তাতে একজন শেয়ারধারী একটি শেয়ারের বিপরীতে ৬ টাকা ৪০ পয়সা করে লভ্যাংশ পাবেন। বার্ষিক সাধারণ সভা বা এজিএমে অনুমোদনের...
    পুঁজিবাজারে ওষুধ ও রসায়ন খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ইবনে সিনা ফার্মাসিউটিক্যালের লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদ শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ৬৪ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। এর পুরোটাই নগদ লভ্যাংশ। প্রতিটি ১০ টাকা মূল্যের শেয়ারের বিপরীতে ৬.৪০ টাকা নগদ লভ্যাংশ পাবেন শেয়ারহোল্ডারা। ২০২৫ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য এ লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়েছে। রবিবার (৫ অক্টোবর) ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই-সিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। এর আগে মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) অনুষ্ঠিত কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে সর্বশেষ বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর লভ্যাংশের এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তথ্য মতে, ঘোষিত লভ্যাংশ শেয়ারহোল্ডারদের সম্মতিক্রমে অনুমোদনের জন্য কোম্পানির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৩ নভেম্বর সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে।...
    কোরআনের পাতায় ‘হিকমত’ শব্দটি ঘুরেফিরে এসেছে প্রায় ২০ বার। শুধু তা–ই নয়, এর ধাতুমূল থেকে জন্মানো আরও অনেক শব্দ চোখে পড়ে। যেমন ‘হাকিম’ শব্দটি। এর দেখা মেলে ৯৭ বার।বিখ্যাত আভিধানিক গ্রন্থ লিসানুল আরব থেকে জানা যায়, আগে ‘হিকমত’ শব্দটির অন্য মানে ছিল। এর ব্যবহার ছিল মূলত ঘোড়ার লাগাম বোঝাতে। লাগামকে বলা হতো হিকমত। কেন? কারণ লাগামই তো ঘোড়াকে শাসনে রাখে। তাকে অবাধ্য হতে দেয় না, বেপরোয়া হতে দেয় না।পরে মানুষের গভীর জ্ঞান আর জীবনবোধ বোঝাতে এই শব্দ ব্যবহৃত হতে শুরু করল। হিকমত মানুষকে নৈতিকতার লাগামে বেঁধে রাখে। সে নিজের কাছে দায়বদ্ধ থাকে। এখান থেকেই আরব মানসের একটি বড় পরিচয় মেলে। নৈতিকতার শিকড়হীন নিছক বুদ্ধির ফুলঝুরিকে আরব-মন যেন মেনে নিতে পারত না।তিনি যাকে ইচ্ছা হিকমত দান করেন এবং যাকে হিকমত দান...
    কোরআনের আয়াত আমাদের জন্য প্রকৃতির রহস্য উন্মোচনের জানালাও বটে। সুরা নামলের ৮৮ নম্বর আয়াতটি তার এক উজ্জ্বল উদাহরণ: ‘আর তুমি পাহাড়সমূকে দেখছ, সেগুলোকে তুমি স্থির মনে করছ। অথচ তা মেঘমালার ন্যায় চলতে থাকবে। (এটা) আল্লাহর কাজ, যিনি সবকিছু দৃঢ়ভাবে করেছেন। নিশ্চয় তোমরা যা করো, তিনি সে সম্পর্কে বিশেষভাবে অবহিত।’ (সুরা নামল, আয়াত: ৮৮)আয়াতটি শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে মুফাসসির ও আলিমদের মনে প্রশ্ন জাগিয়েছে। কেউ বলেছেন এটি কিয়ামতের দৃশ্য, কেউ বলেছেন এটি পৃথিবীর গতিশীলতার ইঙ্গিত। আজকের বিজ্ঞানের আলোয় এটি পৃথিবীর গতি ও পাহাড়ের স্থিতিশীলতার এক অসাধারণ বর্ণনা বলে মনে হয়।আর তুমি পাহাড়সমূকে দেখছ, সেগুলোকে তুমি স্থির মনে করছ। অথচ তা মেঘমালার ন্যায় চলতে থাকবে। (এটা) আল্লাহর কাজ, যিনি সবকিছু দৃঢ়ভাবে করেছেন।সুরা নামল, আয়াত: ৮৮আয়াতের পটভূমি: কিয়ামত, না পৃথিবী কোরআনের আয়াতটি সুরা...
    শিক্ষা কেবল বইয়ের পাতা ওলটানো নয়; বরং জীবনের সব ক্ষেত্রে আলো ছড়ানোর এক অমূল্য হাতিয়ার। কোরআন বলেছে, ‘যারা জানে এবং যারা জানে না, তারা কি সমান? নিশ্চয় শুধু বিবেকবানেরাই এতে চিন্তা করে।’ (সুরা যুমার, আয়াত: ৯)আবার বলেছে, ‘তোমাদের মধ্য থেকে যারা ইমান এনেছে এবং যাদের জ্ঞান দেওয়া হয়েছে, আল্লাহ তাদের মর্যাদা দান করবেন।’ (সুরা মুজাদালা, আয়াত: ১১)।মহানবী মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, ‘যাকে আল্লাহ কল্যাণকর করতে চান, তাকে ইসলামের জ্ঞান দান করেন।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস: ২২৪) এবং ‘জ্ঞান অর্জন প্রত্যেক মুসলিমের ওপর ফরজ।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস: ২২৪)ইসলামের প্রথম দিন থেকে এ আহ্বান বাস্তবায়িত হয়েছে। বদরের যুদ্ধের বন্দীদের মুক্তির শর্ত ছিল, মুসলিম শিশুদের শিক্ষা দেওয়া। ইসলামি ইতিহাসে ইবনে সিনা, গাজালি ও ইবনে খালদুনের মতো মহান চিন্তাবিদেরা শিক্ষার তাত্ত্বিক ভিত্তি গড়ে তুলেছেন।খালদুন...
    নবীজি (সা.)-এর মসজিদ ছিল সবার জন্য উন্মুক্ত। এখানে যেমন পুরুষেরা যেতেন, তেমনি যেতেন নারী ও শিশুরাও। তারা নবীজির পেছনে নামাজ আদায় করতেন, বক্তৃতা শুনতেন এবং ইসলামের জ্ঞান শিক্ষা করতেন। সাহাবিরা তাঁদের শিশুদের নিয়ে মসজিদে যেতেন। নবীজি (সা.) স্বয়ং তার দৌহিত্রদের সঙ্গে নিয়ে মসজিদে গিয়েছেন। পাশে রেখে নামাজ আদায় করেছেন, কখনও কাঁধে তুলে নিয়েছেন।শিশুদের কাতার নির্ধারণ মসজিদে নববিতে পুরুষের জন্য যেমন কাতার ছিল, তেমনি ছিল নারী ও শিশুদের কাতার। পুরুষদের কাতার ছিল সর্বাগ্রে, তাদের পেছনে শিশুদের এবং সর্বশেষ ছিল নারীদের কাতার।মসজিদে নববিতে পুরুষের জন্য যেমন কাতার ছিল, তেমনি ছিল নারী ও শিশুদের কাতার। পুরুষদের কাতার ছিল সর্বাগ্রে, তাদের পেছনে শিশুদের এবং সর্বশেষ ছিল নারীদের কাতার।আবু মালিক আশয়ারি (রা.) বর্ণনা করেন, নবীজি (সা.) চার রাকাত নামাজের মধ্যে কিরাত ও কিয়ামের (দাঁড়ানোর) ক্ষেত্রে সমতা রাখতেন। তবে প্রথম রাকাত একটু লম্বা করতেন...
    ইসলামে জ্ঞানের মর্যাদা এমন উঁচু যে, এটি কেবল একটি গুণ নয়; বরং জীবনের মূল ভিত্তি। পবিত্র কোরআনের প্রথম অবতীর্ণ আয়াতই ‘পড়’ নির্দেশ দিয়ে শুরু হয়েছে, যা জ্ঞানার্জনের প্রতি ইসলামের অটুট আহ্বানের প্রতীক।আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘এটা আল্লাহর কারিগরি, যিনি সবকিছুকে নিখুঁতভাবে সৃষ্টি করেছেন। নিশ্চয় তিনি তোমাদের কাজকর্ম সম্পর্কে সম্যক অবগত।’ (সুরা নামল, আয়াত: ৮৮)এই আয়াতগুলো আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে জ্ঞান ইমানের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘বলো, যারা জানে এবং যারা জানে না, তারা কি সমান? নিশ্চয়ই শুধু বিবেকবানরাই এতে চিন্তা করে।’ (সুরা জুমার, আয়াত: ৯)আর সবচেয়ে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, ‘আল্লাহ তোমাদের মধ্য থেকে যারা ইমান এনেছে এবং যাদের জ্ঞান দেওয়া হয়েছে, তাদের মর্যাদা দান করবেন।’ (সুরা মুজাদালা, আয়াত: ১১)বলো, যারা জানে এবং যারা জানে না, তারা কি সমান?...
    আব্বাসীয় খলিফা আল-মামুন একবার বাইজান্টাইন সম্রাটকে চ্যালেঞ্জ করে বলেছিলেন, ‘আমাকে তোমাদের লাইব্রেরি থেকে যত বই চাও পাঠাও, আমি তাদের স্বর্ণের ওজন দিয়ে পুরস্কৃত করব।’ এই উক্তির মধ্যেই লুকিয়ে আছে আব্বাসীয় সাম্রাজ্যের বৌদ্ধিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা ও জ্ঞানচর্চার প্রতি গভীর অনুরাগের প্রকাশ। আল-মামুনের পৃষ্ঠপোষকতায় ৭৫০ খ্রিষ্টাব্দের দিকে বাগদাদে প্রতিষ্ঠিত বায়তুল হিকমা তৎকালীন বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ জ্ঞানকেন্দ্র হয়ে উঠেছিল।বায়তুল হিকমা কেবল একটি গ্রন্থাগার ছিল না; ছিল অনুবাদ, গবেষণা, গণিত, জ্যোতির্বিজ্ঞান, দর্শন ও চিকিৎসাশাস্ত্রের প্রাণকেন্দ্রও। গ্রিক, পারসি, সিরীয় ও ভারতীয় ভাষা থেকে জ্ঞান আহরণ করে আরবিতে অনুবাদ করার এক বিশাল কর্মযজ্ঞ শুরু হয়েছিল এখানে। হুনাইন ইবনে ইসহাক, আল-খওয়ারিজমি, আল-কিন্দির মতো পণ্ডিতেরা শুধু অনুবাদেই সীমাবদ্ধ থাকেননি, বরং তাতে যুক্ত করেছেন নতুন আবিষ্কার ও বিশ্লেষণ।আরবিতে অনূদিত এই জ্ঞানের স্রোত পরে আন্দালুসিয়া ও সিসিলির মাধ্যমে ইউরোপে প্রবেশ করে।...
    সুরা মুহাম্মাদ আমাদেরকে এক অলৌকিক যাত্রায় নিয়ে যায়, যেখানে দুনিয়ার মায়াজাল থেকে শুরু করে আখিরাতের সত্যতা পর্যন্ত ছড়িয়ে আছে আল্লাহর অসীম রহমতের ছায়া। এই সুরার শেষ আয়াতগুলো (৩৬-৩৮) একটি বিশেষ নিয়ম প্রতিষ্ঠা করে: “আল্লাহ ধনী এবং তোমরা দরিদ্র”।এটা জীবনের এক গভীর দর্শন।সুরা মুহাম্মাদ মদিনায় অবতীর্ণ হয়েছে। মুসলিমরা হুদায়বিয়ার সন্ধির পরের দিনগুলো পার করছে। সহিহ বুখারিতে বর্ণিত আছে যে, সুরা ফাতহের পর এই সুরা ‘কারে আল-গামিম’ (মক্কার কাছে এক স্থান) নামক স্থাকে অবতীর্ণ হয়। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৪১৭২)এই সুরা মুসলিমদেরকে স্মরণ করিয়ে দেয় যে বিজয়ের পরও সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়, কারণ দুনিয়া ক্ষণস্থায়ী। ইমাম আলুসি বলেছেন, এই সুরা মুনাফিকদের সন্দেহ দূর করে এবং মুমিনদের ইমান বৃদ্ধি করে। (ইমাম আলুসী, রুহুল মা'আনি ফিত তাফসিরিল কুরআনিল আজিম, দারুল কুতুবিল ইলমিয়া, বৈরুত, ১৪১৫ হি./১৯৯৪...
    ইসলামের জয়যাত্রার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে প্রসারিত হচ্ছিল তার জ্ঞানচর্চার দিগন্তও। মুসলমানরা নিত্যনতুন সভ্যতা, ভাষা ও ঐতিহ্যের সংস্পর্শে আসছিলেন। একদিকে যেমন ভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে আরবি ভাষা শিক্ষার আগ্রহ বাড়ছিল, তেমনই মুসলিম বিশ্বের কাছে বিভিন্ন সভ্যতার জ্ঞানভান্ডার পৌঁছানোর জন্য প্রয়োজন হয়ে পড়ল বিপুল অনুবাদের।ধর্মীয় ও রাজনৈতিক কারণেই তৎকালীন বিশ্বে আরবি ছিল সংযোগ ও ভাবপ্রকাশের মূল মাধ্যম। কিন্তু আরবদের নিজস্ব লিখিত সম্পদ ছিল যৎসামান্য।প্রাচীন আরবেরা গণিত বা বিজ্ঞানের চেয়ে সাহিত্যানুরাগী ছিলেন বেশি। তাঁদের কবিতা ও বাগ্মিতার ঐতিহ্য ছিল অত্যন্ত সমৃদ্ধ। সেই সাহিত্যে জ্ঞানের যে প্রকাশ দেখা যেত, তা মূলত ভূয়োদর্শন ও অভিজ্ঞতালব্ধ; যাকে তাঁরা বলতেন ‘হিকমা’।অন্যান্য সভ্যতার মুখোমুখি হয়ে আরবেরা যখন এক বিপুল জ্ঞানসমুদ্রের সন্ধান পেলেন, তখন তাঁরা উপলব্ধি করলেন যে এই জ্ঞান কেবল স্মৃতিতে ধরে রাখা সম্ভব নয়।জ্ঞানের সংরক্ষণে লিপিবদ্ধকরণের পরিবর্তে তাঁরা...
    মক্কা বিজয়ের পর আশপাশের ভূখণ্ডে বেগবান হয়ে ছড়িয়ে পড়ে ইসলাম। আরব উপদ্বীপের আপাতবিক্ষিপ্ত গোত্রগুলো দলবদ্ধ হয়ে মেনে নিতে থাকে নতুন এই ধর্ম।তখন হিজরি নবম অথবা দশম বছর। অন্যদের মতো আবদুল কাইস গোত্রও নবীজি (সা.)-এর কাছে একটি প্রতিনিধিদল প্রেরণ করে। দলটি ছিল ২০ সদস্যের। আরেক বর্ণনামতে ৪০।দলটি নবীজি (সা.)-এর কাছে উপস্থিত হলে বাহিনীপ্রধান আগ বেড়ে নবীজিকে সম্বোধন করে বলেন, ‘হে মুহাম্মদ, আমি আগে থেকেই একটি আসমানি ধর্মাদর্শ অনুসরণ করে আসছি। এখন আপনার আনীত ধর্ম গ্রহণ করতে চাই। আপনি কি আমার পক্ষে কেবল একটা বিষয়ের দায় নিতে পারেন—আমি ইসলাম গ্রহণ করলে পরকালে মুক্তি পাব?’জবাবে নবীজি (সা.) বলেন, ‘হ্যাঁ, আমি এ কথার দায় নিচ্ছি; ইসলাম তোমার পূর্বেকার পালিত ধর্ম থেকে উত্তম।’হে মুহাম্মদ, আমি আগে থেকেই একটি আসমানি ধর্মাদর্শ অনুসরণ করে আসছি। এখন আপনার...
    মানুষের জীবনে জীবিকা, প্রশান্তি ও সমৃদ্ধির গুরুত্ব অপরিসীম। এগুলোর পেছনে তাকে ছুটে চলতে হয় অবিরাম। কিন্তু কোরআন ও হাদিস আমাদের জানায়, এসবের সবচেয়ে সহজ ও শক্তিশালী মাধ্যম হলো ইস্তিগফার। আল্লাহর কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা শুধু পাপ মোচনের জন্য নয়; বরং জীবিকা লাভের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম।কোরআনের সাক্ষ্য আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে নুহ (আ.)-এর কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো, তিনি তো অতি ক্ষমাশীল। (তোমরা তা করলে) তিনি আকাশ থেকে তোমাদের জন্য প্রচুর বৃষ্টি বর্ষণ করবেন, তোমাদের ধনসম্পদ ও সন্তানসন্ততি বাড়িয়ে দেবেন, তোমাদের জন্য বাগান সৃষ্টি করবেন এবং নদীনালা প্রবাহিত করবেন।’ (সুরা নুহ, আয়াত: ১০–১২)তোমরা ইস্তিগফার করো এবং আল্লাহর কাছে তাওবা করো। (তোমরা তা করলে) তিনি তোমাদের ওপর প্রচুর বৃষ্টি বর্ষণ করবেন এবং তোমাদের শক্তি বাড়িয়ে দেবেন।সুরা হুদ, আয়াত: ৫২হুদ...
    নাম মানুষের পরিচয়ের অন্যতম প্রধান অংশ। একটি সুন্দর ও অর্থবহ নাম শুধু দুনিয়াতে নয়, আখিরাতেও মর্যাদা বয়ে আনে। ইসলাম নামের গুরুত্বকে অত্যন্ত জোর দিয়ে উল্লেখ করেছে।রাসুল (সা.) সন্তানের সুন্দর নাম রাখতে বলেছেন এবং অনেকের নাম পরিবর্তনও করেছেন, যদি তাতে মন্দ অর্থ বা বিকৃত ধ্বনি থাকে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে আমাদের সমাজে প্রায়ই নাম বিকৃতি বা নাম বিকৃতভাবে উচ্চারণ করার প্রবণতা দেখা যায়, যা ইসলামি শিক্ষার পরিপন্থী।সঠিক নামে ডাকার গুরুত্ব কোরআন ও হাদিসে বারবার বলা হয়েছে, মানুষকে তার নিজস্ব নামেই ডাকা উচিত।আল্লাহ বলেন: “তোমরা একে অপরকে উপহাস করো না, একে অপরকে মন্দ নামে ডেকো না। ঈমানের পর মন্দ নামকরণ অতি নিকৃষ্ট।” (সুরা হুজুরাত, আয়াত: ১১)রাসুল (সা.) বলেছেন: “তোমরা সন্তানদের সুন্দর নাম দাও, কারণ কিয়ামতের দিনে তোমাদের নাম ও পিতার নামে ডাকা হবে।” (সুনানে...