মুসলিম সভ্যতায় ঘরবাড়ি নির্মাণ ও জীবনযাপনের গল্প
Published: 22nd, October 2025 GMT
মুসলিম সভ্যতার স্থাপত্য শুধু মসজিদ, মাদরাসা বা প্রাসাদের গল্প নয়, সাধারণ মানুষের বাড়িঘরের গল্পও এখানে অনেক। ঘরবাড়ির স্থাপত্য নকশা ছিল তাদের জীবন, সংস্কৃতি আর অর্থনৈতিক অবস্থার প্রতিফলন। মুসলিম শহরগুলোর পুরোনো মহল্লায় হাঁটলে আজও সেই স্থাপত্যের জৌলুশ চোখে পড়ে।
এই লেখায় আমরা সাধারণ ও মধ্যবিত্ত মানুষের বাড়ির নকশা, নির্মাণশৈলী আর তাদের জীবনযাত্রার ছোঁয়া নিয়ে আলোচনা করব। প্রাসাদ বা দুর্গের গল্প এড়িয়ে আমরা সাধারণ মানুষের ঘরের গল্পে প্রবেশ করব—তাদের দরজা থেকে ছাদ, ঘর থেকে সুবিধা এবং আলো ও শীতলতার ব্যবস্থা পর্যন্ত দেখার চেষ্টা করব।
সাধারণ জীবনের স্থাপত্যইসলামের প্রথম দিনগুলোতে আরবের বেদুইন অঞ্চলে বাড়ি বলতে ছিল তাঁবু, চামড়ার বিস্তার বা খেজুরপাতার ছাউনি। কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘আল্লাহ তোমাদের জন্য তোমাদের ঘরকে শান্তির আশ্রয় করেছেন এবং পশুর চামড়া থেকে ঘর তৈরি করেছেন।’ (সুরা নাহল, আয়াত: ৮০)
মক্কা বা আরবের উত্তরাঞ্চলে বাড়িগুলো ছিল ছোট, সাধারণ। নবীজির (সা.
ইবনে খালদুন বলেন, স্থাপত্য হলো শহুরে জীবনের প্রাচীনতম কারিগরি। এটি মানুষকে আশ্রয় দেয়, তাদের জীবনকে নিরাপত্তার ধরন প্রমাণ করে। (মুকাদ্দিমা, পৃষ্ঠা ২৩৭, দারুল ফিকর, বৈরুত, ১৯৮৮)
আবু হায়ান তাওহিদি বলেন, নির্মাণের জন্য দরকার মাটি, পাথর, কাঠ; নকশা; কারিগর; এবং উদ্দেশ্য—যেমন বসবাস বা সম্পদ সংরক্ষণ। (আল-বাসায়ির ওয়াজ জাখায়ির, ২/১৫৪, দারু সাদির, বৈরুত, ১৯৮৮)
উপর্যুক্ত দুজনের বক্তব্য থেকে সেই সময়ের ঘর নির্মাণের উপাদান এবং উদ্দেশ্য সম্পর্কে একটা ধারণা পাওয়া যায়।
ইবনে খালদুন আরও বলেন, স্থাপত্য জনগোষ্ঠীর রীতি, জলবায়ু ও অর্থনৈতিক অবস্থার ওপর নির্ভর করে গড়ে ওঠে। নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে বাড়ি হতো বাঁশ বা মাটি দিয়ে, আর মধ্য অঞ্চলে পাথর ও ইটের ব্যবহার হতো। (ইবনে খালদুন, মুকাদ্দিমা, পৃষ্ঠা ২৩৮)
উদাহরণস্বরূপ, কুফা ও বসরায় প্রথমে খেজুরপাতার বাড়ি ছিল। ৬৩৯ খ্রিষ্টাব্দে আগুন লাগার পর হজরত উমর (রা.) ইট ব্যবহারের অনুমতি দেন। (তাবারি, তারিখ, ৪/২১২, দারু তুরাস, কায়রো, ১৯৬৭)
ধনীদের বাড়ি হতো বড়, প্রাসাদের মতো, যেখানে থাকত ঘোড়ার আস্তাবল বা ভূগর্ভস্থ গুদাম। গরিবেরা ছোট ঘরে সন্তুষ্ট থাকত।
আরও পড়ুনমুসলিম সভ্যতায় রান্নার শিল্প১২ এপ্রিল ২০২৫ছবি: ফ্রিপিকউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র গল প
এছাড়াও পড়ুন:
চট্টগ্রাম-১৫: বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে আবার মশালমিছিল, মহাসড়ক অবরোধ
চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে আবারও মশালমিছিল হয়েছে। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় সাতকানিয়ার ছদাহা ইউনিয়নের মিঠার দোকান এলাকার চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে এ মিছিল হয়। এ সময় বিক্ষোভকারীরা প্রায় ৩০ মিনিট ওই মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন।
অবরোধকারীরা ওই আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী নাজমুল মোস্তফা আমিনকে পরিবর্তন করে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মুজিবুর রহমানকে প্রার্থী ঘোষণার দাবি জানান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল সন্ধ্যায় মহাসড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে ও আগুন জ্বালিয়ে অবরোধ করেন মুজিবুর রহমানের সমর্থকেরা। এতে প্রায় ৩০ মিনিট যান চলাচল বন্ধ ছিল। এ কারণে কয়েক কিলোমিটার এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
সাতকানিয়া সদর ইউনিয়নের বাসিন্দা মুজিবুর রহমান চট্টগ্রাম-১৫ আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ আসনে দলের প্রার্থী হিসেবে নাজমুল মোস্তফা আমিনের নাম ঘোষণা করেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। নাজমুল চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য ও লোহাগাড়া উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক।
নাজমুল মোস্তফা আমিনকে প্রার্থী ঘোষণার পর সেই রাতেই সাতকানিয়ার কেরানীহাট ও ঠাকুরদিঘী এলাকায় সড়ক অবরোধ করেন মুজিবুরের অনুসারীরা।
জানতে চাইলে সাতকানিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুদীপ্ত রেজা বলেন, গতকাল সন্ধ্যায় মিঠার দোকান এলাকায় ৩০ থেকে ৪০ নেতা-কর্মী সড়ক অবরোধ করেছিলেন। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাঁদের সরিয়ে দিয়েছে।
অবরোধের বিষয়ে জানতে চাইলে মুজিবুর রহমান বলেন, ‘নেতা-কর্মীরা মনে করছেন, সব দিক বিবেচনায় আমিই মনোনয়ন পাওয়ার যোগ্য। দলের হাইকমান্ডকে কেউ ভুল বোঝাতে পারেন। শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ করে মনোনয়ন পুনর্বিবেচনায় দৃষ্টি আকর্ষণ করতেই পারেন। তবে তাঁদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সড়ক অবরোধ করে যেন জনদুর্ভোগ সৃষ্টি না করা হয়।’
পরিবর্তনের দাবির এ কর্মসূচি সম্পর্কে জানতে চাইলে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী নাজমুল মোস্তফা আমিন গত বৃহস্পতিবার রাতে প্রথম আলোকে বলেছিলেন, ‘এই আসনে আমরা চারজন মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলাম। যাচাই-বাছাই করে দল আমাকে যোগ্য মনে করেছে বলেই মনোনয়ন দিয়েছে। বিএনপিতে উগ্রতার কোনো স্থান নেই। সাতকানিয়া-লোহাগাড়াবাসী আমার সঙ্গে রয়েছেন।’