জেন ওয়াই বা মিনেলিয়ালস প্রজন্মের অনেকের মনে গেঁথে গেছে ভিডিও গেমসের চরিত্র জ্যাক ও মুস্তাফা। বর্তমান বা আগামীর প্রজন্ম ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকেও একইভাবে ধারণ করতে পারে। রোনালদো যে ভিডিও গেমের নতুন চরিত্র হতে যাচ্ছেন! গতকাল রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি তিনি নিজেই জানিয়েছেন।

রোনালদো একটি ভিডিও পোস্ট করে লিখেছেন, ‘আজ সবাইকে জানানোর মতো একটা বড় খবর আছে। আমি নতুন ফাইটিং গেম ফ্যাটাল ফিউরি: সিটি অব দ্য উলভস-এ একটি চরিত্র হতে যাচ্ছি! চলুন, ২৪ এপ্রিল একটু মজা করি।’

‘ফ্যাটাল ফিউরি: সিটি অব দ্য উলভস’ জাপানের ভিডিও গেমিং কোম্পানি এসএনকে করপোরেশন তৈরি করেছে। ১৯৯১ সালে এটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল ভিডিও গেম প্ল্যাটফর্ম ‘নিও জিও’ সিস্টেমে। গেমটির অরিজিনাল ভার্সনে চরিত্রগুলো দুটি আলাদা বিমান থেকে লড়াই করত। ধীরে ধীরে এর জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকায় একের পর এক কাল্পনিক চরিত্র যুক্ত হতে থাকে।

ফ্যাটাল ফিউরির উল্লেখযোগ্য চরিত্রগুলো হলো টেরি বোগার্ড, অ্যান্ডি বোগার্ড, জো হিগাশি, জেসে হাওয়ার্ড, রক হাওয়ার্ড, বিলি কেইন, চেন সিনজান, অ্যালেক্স হক, জুবেই ইয়ামাদা, লরেন্স ব্লাড, ব্লু মেরি, আলফ্রেড, কেভিন রিয়ান ইত্যাদি। কিন্তু এরা সবাই কাল্পনিক চরিত্র।

আরও পড়ুনমেসি ও রোনালদো এখন কত টাকার মালিক১৪ মার্চ ২০২৫

এই ভিডিও গেম সিরিজে রোনালদোই হতে চলেছেন প্রথম বাস্তবিক চরিত্র, যাকে নিয়ে আপনিও খেলতে পারবেন। ‘ফ্যাটাল ফিউরি: সিটি অব দ্য উলভস’ গেম সিরিজের ১২তম সংস্করণ। প্লেস্টেশন৪, প্লেস্টেশন৫, উইন্ডোজ ও এক্সবক্স সিরিজ প্ল্যাটফর্মে এটি খেলা যাবে। গেমে ফুটবল রোনালদোর লড়াইয়ের একটি হাতিয়ার।

গেমে ফুটবল হবে রোনালদোর লড়াই করার হাতিয়ার.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

চার কিশোরীর ধর্ষণ, হত্যার রহস্য উন্মোচিত হয়নি ৩৩ বছরেও

১৯৯১ সালের ৬ ডিসেম্বরের রাত। টেক্সাসের অস্টিন শহরের ব্যস্ত এক বাণিজ্যিক এলাকায় ছোট্ট এক দইয়ের দোকান। সেখানেই ঘটে গেল যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড। দোকান থেকে উদ্ধার হলো চার কিশোরীর ক্ষতবিক্ষত মরদেহ। ১৩ বছরের অ্যামি এয়ারস, ১৫ বছরের সারা হারবিসন, ১৭ বছরের জেনিফার হারবিসন ও এলিজা থমাসকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছিল নির্মমভাবে। তাদের গলা টিপে ধরা হয়েছিল, শরীর বেঁধে রাখা হয়েছিল দড়ি দিয়ে, মাথায় গুলি করা হয়েছিল—এরপর প্রমাণ নষ্ট করতে দোকানেই আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।

তিন দশকের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও এই হত্যাকাণ্ড আজও অস্টিনবাসীর মনে এক দুঃসহ স্মৃতি। এইচবিও তাই চার পর্বের তথ্যচিত্র ‘দ্য ইয়োগার্ট শপ মার্ডারস’ নির্মাণ করেছে, যেখানে আর্কাইভ ফুটেজ, তদন্তকারীদের বক্তব্য, আর নিহত ব্যক্তিদের পরিবার-বন্ধুদের সাক্ষাৎকারে ফুটে উঠেছে শোক, ক্ষোভ আর অসহায়তার চিত্র।
প্রথম পর্বেই নিহত অ্যামি এয়ারসের বাবা বব এয়ারস বলেন, ‘৩০ বছর, ৭ মাস, ৫ দিন হয়ে গেল—তবু আজও বিশ্বাস করতে পারি না।’ প্রতি রবিবার রাত ১০টায় এইচবিওতে সম্প্রচারিত হচ্ছে এই তথ্যচিত্র সিরিজ। যারা ‘ট্রু ক্রাইম’ ধরনের তথ্যচিত্রে আগ্রহী, তাঁদের কাছে এটি দেখা, নিঃসন্দেহে এক ভয়ংকর আর হৃদয়স্পর্শী অভিজ্ঞতা।

ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নেভানোর পর ভেতরে যা দেখেছিলেন, তা বর্ণনা করতে গিয়ে সেই সময়ের একজন পুলিশ কর্মকর্তা বলেন—‘চারদিকে ধোঁয়া, ভেজা সিলিং, গলে যাওয়া আসবাবের মধ্যেই দেখা যাচ্ছিল লাশগুলো। তিনটি একসঙ্গে, আরেকটি একটু আলাদা।’

এই হত্যাকাণ্ডে অস্টিন শহর শোকে স্তব্ধ হয়ে যায়। নিহত কিশোরীদের পরিবার ও স্থানীয় ব্যক্তিরা ন্যায়বিচারের দাবিতে মিছিল করেছিলেন, শহরের রাস্তায় টাঙানো হয়েছিল পোস্টার ও বিলবোর্ড, স্থানীয় সংগীতশিল্পীরা গান লিখেছিলেন তাঁদের স্মরণে। তবু ৩৩ বছর পরেও রহস্যের জট খোলেনি।
আলোচিত এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে এইচবিওর নতুন তথ্যচিত্র ‘দ্য ইয়োগার্ট শপ মার্ডারস’। গত ৩ আগস্ট মুক্তি পেয়েছে চার পর্বের তথ্যচিত্রটি। মুক্তির পর থেকে সমালোচকদের ব্যাপক প্রশংসা পেয়েছে তথ্যচিত্রটি।

‘দ্য ইয়োগার্ট শপ মার্ডারস’ পরিচালনা করেছেন মার্গারেট ব্রাউন। তবে ব্রাউনের আগে আরও একজন নির্মাতা এই ঘটনাকে তথ্যচিত্রে রূপ দিতে চেয়েছিলেন। প্রায় এক দশক আগে চলচ্চিত্র নির্মাতা ক্লেয়ার হুই ঘটনাটির ওপর কাজ শুরু করেছিলেন। কিন্তু কিশোরীদের ওপর চালানো নির্যাতনের ভয়াবহতা ও তদন্তপ্রক্রিয়ার অন্ধকার তাঁকে এতটাই মানসিকভাবে আঘাত করেছিল যে তিনি পুরো প্রজেক্ট ছেড়ে দেন, এমনকি চলচ্চিত্র ক্যারিয়ারও ত্যাগ করেন। তাঁর সঙ্গে কাজ করা কয়েকজন ক্রু সদস্যকেও মানসিক আঘাত সামলাতে থেরাপির আশ্রয় নিতে হয়েছিল।

তদন্ত ও ভেঙে পড়া বিচারপ্রক্রিয়া
ঘটনার অল্প কিছুদিন পরই মেক্সিকোয় দুজনকে আটক করা হলেও তাঁরা জোর করে স্বীকারোক্তি নেওয়ার অভিযোগ করলে মামলা এগোয়নি। ১৯৯৯ সালে অস্টিন পুলিশ আবারও চার তরুণকে গ্রেপ্তার করে—রবার্ট স্প্রিংস্টিন জুনিয়র, মাইকেল স্কট, মরিস পিয়ার্স ও ফরেস্ট ওয়েলবর্ন।

‘দ্য ইয়োগার্ট শপ মার্ডারস’ তথ্যচিত্রের দৃশ্য। আইএমডিবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ