সরকারি চাকরি ফিরে পাচ্ছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান। শিগগিরই এ বিষয়ে আদেশ জারি করা হবে।     

বুধবার (৫ মে) স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ডা. জোবাইদা রহমান ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ থেকে চিকিৎসাবিদ্যায় স্নাতক (এমবিবিএস) সম্পন্ন করে লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজ থেকে মেডিসিনে স্নাতকোত্তর (এমএসসি) ডিগ্রি নেন।

চিকিৎসকদের সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করে ১৯৯৫ সালে চিকিৎসক হিসেবে সরকারি চাকরিতে যোগ দেন। তবে ২০০৮ সালে শিক্ষা ছুটি নিয়ে লন্ডনে চলে যান ।

এরপর ছুটি বিধিমালা অনুযায়ী দেশে ফেরত আসতে না পারায় চাকরি থেকে তাকে বরখাস্ত করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এর আগে ২০১৩ সালে দেশে ফিরে নিজ কর্মস্থলে যোগদান না করায় বাংলাদেশ সার্ভিস রুলস অনুযায়ী তার চাকরির অবসান হয়।

বিসিএস পরীক্ষায় প্রথম হয়ে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসক হিসেবে যোগ দিয়ে কর্মজীবন শুরু করেছিলেন ডা.

জোবাইদা রহমান। ২০০৮ সালে শিক্ষা ছুটি নিয়ে স্বামী তারেক রহমানের সঙ্গে চলে যান যুক্তরাজ্যে। তার পরের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের নানা অপতৎপরতার কারণে আর দেশে ফেরা হয়নি তার। দীর্ঘ ১৭ বছর পর অবশেষে মঙ্গলবার সকালে তিনি শাশুড়ি খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেশে ফিরে এসেছেন। দেশে ফিরে ডা. জোবাইদা রহমান তার বাবার ধানমন্ডির বাসায় থাকছেন। 

ডা. জোবাইদা রহমান ছুটি নিয়ে যুক্তরাজ্যে যান ২০০৮ সালের ৮ সেপ্টেম্বরে। এর আগে একই বছরের ৯ এপ্রিল শিক্ষা ছুটির আবেদন করলে সরকার তাকে ২০১০ সালের ১০ অক্টোবর পর্যন্ত ছুটি মঞ্জুর করে। এরপর কয়েক দফায় ছুটির মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করলে ২০১০ সালের ১০ অক্টোবর পর্যন্তই তার ছুটি বহাল রাখে সরকার। এরপর আরো দুই দফায় এক বছর করে মোট দুই বছর ছুটি বাড়ানোর আবেদন করলেও সরকার তা নাকচ করে। ফলে সরকারের অনুমোদন ছাড়া একনাগাড়ে ৫ বছর কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার কারণে তার চাকরির অবসান হয়। 


তৎকালীন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হুমায়ন কবীর দুইবারই ডা. জোবাইদার ছুটির আবেদন নাকচ করেন। ছুটির আবেদন নাকচ হলেও রহস্যজনক কারণে দেরিতে এ সংক্রান্ত অফিস আদেশ জারি করে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট শাখা।

প্রথম দফায় স্বাস্থ্য সচিব ছুটির আবেদন নাকচ করেন ২০১১ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি কিন্তু মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট শাখা অফিস আদেশ জারি করে এর একমাস পর ৯ মার্চে। দ্বিতীয় দফায় ছুটির আবেদন নাকচ হয় একই বছরের ১২ জুলাই অথচ অফিস আদেশ জারি হয় ২০১২ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি। আবার এসব অফিস আদেশ জারি করা হলেও অদৃশ্য কারণে তা যুক্তরাজ্যে ডা. জোবাইদা রহমানের কাছে বা বাংলাদেশে তার স্থায়ী ঠিকানায় পাঠানো হয়েছে বা তিনি রিসিভ করেছেন এমন কোনো রেকর্ড সংশ্লিষ্ট শাখায় নেই।

ছুটি বিধিমালা অনুযায়ী অসাধারণ ছুটির মেয়াদ পাঁচ বছরের বেশি হতে পারবে না। ছুটি বিধিমালা ৯ (৩) অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ ইচ্ছা করলে যেকোনো ছুটি অনুমোদন করতে পারে। অন্য দিকে ছুটি বিধিমালার অধ্যয়ন ছুটি সংক্রান্ত এফ আর-৮৪ এর নিরীক্ষা নির্দেশনার (গ) তে বলা হয়েছে : ‘এই প্রকার ছুটির মেয়াদ সাধারণভাবে ১২ মাস। তবে বিশেষ কারণে সর্বোচ্চ ২৪ মাস পর্যন্ত এই প্রকার ছুটি মঞ্জুর করা যাইবে। কোর্সের প্রয়োজনে অতিরিক্ত সময় প্রয়োজন হইলে আরো ৪ মাস অর্জিত ছুটি এবং ৩২ মাস অসাধারণ ছুটি প্রদান করা যাইবে। অর্থাৎ অধ্যয়নের প্রয়োজনে ৫ বছর ছুটি প্রদান করা যাইতে পারে। ইহার অতিরিক্ত অনুপস্থিতির ক্ষেত্রে বিএসআর পার্ট-১ এর ৩৪ নং বিধির আওতায় চাকরির অবসান হইবে।

বাংলাদেশ সার্ভিস রুলস বিধি ৩৪ ধারায় বলা হয়, বিশেষ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে সরকার ভিন্নরূপ কোনো সিদ্ধান্ত না নিলে, বাংলাদেশে ফরেন সার্ভিসে কর্মরত থাকার ক্ষেত্র ছাড়া, অন্যত্র ছুটিসহ অথবা ছুটি ছাড়া একাধিক ক্রমে ৫ বছর দায়িত্ব থেকে অনুপস্থিত থাকার পর একজন সরকারি কর্মচারীর চাকরির অবসান ঘটবে।

 স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের যুগ্ম সচিব এ কে এম ফজলুল হক বলেন, “ডা. জোবাইদা রহমান দেশে ফিরেছেন। তিনি সরকারি চাকরি ফিরে পাচ্ছেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রস্তাব প্রক্রিয়াধীন। এখন সব প্রক্রিয়া শেষে শিগগিরই   আদেশ জারি করা হবে।”

ঢাকা/এএএম/ইভা 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অন য য় সরক র রহম ন

এছাড়াও পড়ুন:

শমিত এখন বাংলাদেশের, জুনে খেলবেন হামজার সঙ্গে

বাংলাদেশের জার্সিতে খেলতে আর বাধা নেই শমিত সোমের। গত ২০ এপ্রিল জন্মনিবন্ধন হাতে পাওয়ার পর ১ মে পেয়েছিলেন কানাডা সকার অ্যাসোসিয়েশনের ছাড়পত্র। এরপর ৫ মে পেয়ে যান বাংলাদেশের পাসপোর্টও। আজ পেলেন ফিফার প্লেয়ার্স স্ট্যাটাস কমিটির অনুমোদন।

খবরটি নিশ্চিত করে বাফুফের সহসভাপতি ফাহাদ করিম প্রথম আলোকে বলেছেন, ‘আমরা শমিতের পাসপোর্ট হাতে পেয়েই ফিফায় আবেদন করে ফেলি। আজ ফিফা থেকে ফিরতি মেইলে জানিয়েছেন তাঁর বাংলাদেশের হয়ে খেলতে আর বাধা নেই। তারা সব ক্লিয়ারেন্স দিয়ে দিয়েছে। আশা করি ১০ জুন সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে সে খেলবে।’

বাংলাদেশি বাবা-মায়ের সন্তান শমিতের জন্ম ও বেড়ে ওঠা কানাডায়। ২৭ বছর বয়সী এই মিডফিল্ডার ২০২০ সালে কানাডা জাতীয় দলের হয়ে ২টি ম্যাচও খেলেছেন। লম্বা সময় আন্তর্জাতিক ফুটবল না খেলা শমিত ক্লাব ফুটবলে কানাডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের দল ক্যাভালরি এফসিতে খেলেন।

সব ঠিক থাকলে ১০ জুন সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ম্যাচ দিয়ে লাল–সবুজের জার্সিতে অভিষেক হবে শমিতের।

গত ২৫ মার্চ ভারতের বিপক্ষে এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের ম্যাচ দিয়ে বাংলাদেশের জার্সিতে অভিষেক হয় ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলা হামজা চৌধুরীর। এরপর থেকে প্রবাসী ফুটবলারদের বাংলাদেশের হয়ে খেলার আগ্রহ বেড়েছে।

প্রথম বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ফুটবলার হিসেবে বাফুফের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন জামাল ভূঁইয়া। ২০১৩ সালে বাংলাদেশ জাতীয় দলে অভিষেক হয় ডেনমার্কে জন্ম নেওয়া জামালের।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কেরানি থেকে প্রধান শিক্ষক অবশেষে বরখাস্ত
  • সোহান-অঙ্কনের সেঞ্চুরিতে রান পাহাড়ে বাংলাদেশ
  • হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর পর বিচারককে ৩ বার ‘ধন্যবাদ’ বললেন তাপস
  • সোহান-অঙ্কনের জোড়া সেঞ্চুরিতে রান পাহাড়ে বাংলাদেশ
  • শমিত এখন বাংলাদেশের, জুনে খেলবেন হামজার সঙ্গে
  • দল ছেড়ে ইসলামী আন্দোলনে মোস্তাফিজুর, যা বলছেন বিএনপি নেতারা 
  • ইন্টার-বার্সা সেমিফাইনালে ফিরে আসছে ২০১০ সালের স্মৃতি
  • জুবাইদার ১৭ বছরের নির্বাসিত জীবনের অবসান
  • ১১০৪ কোটি ৪১ লাখে দুই কার্গো এলএনজি কিনবে সরকার