পাকিস্তান ১৫টির বেশি শহরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে: ভারত
Published: 8th, May 2025 GMT
ভারতের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের কাশ্মীর, পাঞ্জাব ও গুজরাটসহ ১৫টির বেশি শহরে সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান। বুধবার (৭ মে) দিবাগত রাত থেকে আজ বৃহস্পতিবার এখন পর্যন্ত এসব হামলা চালায় পাকিস্তান। তবে হতাহত কিংবা ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানানো হয়নি। খবর বিবিসির
আজ বৃহস্পতিবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১টার পর ‘অপারেশন সিঁদুর’ নাম দিয়ে পাকিস্তানের পাঞ্জাব ও আজাদ কাশ্মীরের বিভিন্ন স্থাপনায় এই হামলা চালায় ভারত। ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ও গুলিবর্ষণে নিহত হন ৩১ জন। এতে আহত হয়েছেন আরও ৫৭ জন। অন্যদিকে ভারতীয় সেনাবাহিনী জানিয়েছে, মঙ্গলবার রাতেই নিয়ন্ত্রণ রেখার কাছে (এলওসি) পাকিস্তানি সেনারা গোলাবর্ষণ করেছে। এতে ১৫ ভারতীয় নাগরিক নিহত হয়েছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, কাশ্মীরের অবন্তিপুরা, শ্রীনগর, জম্মু, পাঠানকোট, অমৃতসর, কাপুরথালা, জলান্ধর, লুধিয়ানা, আদমপুর, ভাতিন্ডা, চণ্ডীগড়, নাল, ফালোদি, উত্তরলাই, ভুজসহ ভারতের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলে সামরিক বাহিনীর অনেকগুলো স্থাপনা লক্ষ্য করে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছিল পাকিস্তান। তবে এই হামলা প্রতিহত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতের প্রতিরক্ষা বাহিনী।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, ভারতের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলে বেশ কিছু সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে পাকিস্তান থেকে ‘ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র’ নিক্ষেপ করা হয়েছে। পাকিস্তানের ছোড়া এসব ‘ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র’ নিষ্ক্রিয় করেছে তারা।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পাকিস্তান ৭ ও ৮ মে রাতে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে ভারতের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের অনেকগুলো সামরিক স্থাপনাকে লক্ষ্যবস্তু করতে চায়। এসব ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্রের সব কটিই ইন্টিগ্রেটেড কাউন্টার ইউএএস গ্রিড এবং এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম (আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা) নিষ্ক্রিয় করে দিয়েছে।
এদিকে ভারতের হামলার পর পাকিস্তানের পক্ষ থেকে পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার দাবি করা হয়েছে। পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র জানান, এর মধ্যে তিনটি ফ্রান্সের তৈরি রাফাল, একটি রাশিয়ার তৈরি সু-৩০ ও অন্যটি মিগ-২৯ যুদ্ধবিমান। সু-৩০ ও মিগ-২৯ যুদ্ধবিমান সোভিয়েত আমলে তৈরি।
পাকিস্তানের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, সশস্ত্র বাহিনী এখন পর্যন্ত ২৫টি ড্রোন ধ্বংস করেছে এবং বিভিন্ন স্থান থেকে তাদের ধ্বংসাবশেষ সংগ্রহ করা হচ্ছে। আইএসপিআর মুখপাত্র বলেন, ভারতীয় ড্রোনগুলো পাকিস্তানের লাহোর, গুজরানওয়ালা, চকওয়াল, অ্যাটক, রাওয়ালপিন্ডি, বাহাওয়ালপুর, মিয়ানওয়ালি, ছোড় এবং করাচির দিকে পাঠানো হয়েছিল।
গত ২২ এপ্রিল ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জনের প্রাণহানির পর ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল। এখন তা পাল্টাপাল্টি হামলায় রূপ নিয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: লক ষ য
এছাড়াও পড়ুন:
বেড়েছে সাপের উপদ্রব আতঙ্কে শিক্ষার্থী
কুষ্টিয়ায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) সম্প্রতি বিষধর সাপের উপদ্রব বেড়েছে। মাঝে মধ্যে আবাসিক হলগুলোতেও ঢুকে পড়ছে এসব সাপ। এতে শিক্ষার্থীদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
বেশ কয়েকদিন ধরে ইবির আবাসিক হলের আশপাশের এলাকা ও চলাচলের রাস্তায় নিয়মিত পাতি কাল কেউটে, কালাচসহ বিভিন্ন প্রজাতির সাপের দেখা মিলছে। সাপের উপদ্রবের কারণ হিসেবে নিয়মিত ঝোপঝাড় পরিষ্কার না করাকে দায়ী করছেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা জানান, নিয়মিত পরিষ্কার না করায় হলগুলোর আশপাশ ও রাস্তার দুই পাশসহ বিভিন্ন জায়গা আগাছা ও ঝোপঝাড়ে পূর্ণ হয়ে থাকে। ফলে এগুলোতে সাপ সহজেই বাসা বাঁধছে। সম্প্রতি ভারী বর্ষণের ফলে শুকনো জায়গা ও খাবারের সন্ধানে আবাসস্থল ছেড়ে সাপগুলো লোকালয়ে ঢুকছে।
গত কয়েক সপ্তাহে আবাসিক হল ও হলের আশপাশের এলাকা থেকে বেশ কয়েকটি পাতি কাল কেউটে, কালাচ ও দেশি প্রজাতির বিষধর সাপ মেরেছেন শিক্ষার্থীরা। আবাসিক এলাকার আশপাশে বিষধর সাপ দেখে উদ্বিগ্ন তারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেলে সাপে কাটার চিকিৎসা না থাকায় উদ্বেগ আরও বেড়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অ্যান্টিভেনম প্রয়োগের অনুমতি কেবল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলোর রয়েছে। ফলে ১০ বছর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে সাপে কামড়ের চিকিৎসার জন্য ১২টি অ্যান্টিভেনম ক্রয় করা হলেও এগুলো কখনও ব্যবহার করা যায়নি। অ্যান্টিভেনমগুলোর একটি বাদে সবগুলো মেয়াদোত্তীর্ণ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান মেডিকেল অফিসার সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘কার্ডিয়াক সাপোর্টসহ বিভিন্ন টেস্ট শেষে অ্যান্টিভেনম ব্যবহার করতে হয়। ইবি মেডিকেলে সেই সুযোগ নেই। এ ছাড়া সরকারি বিধিনিষেধও রয়েছে। কোনো শিক্ষার্থীকে সাপ কামড়ালে তারা শুধু সাপোর্টিভ ট্রিটমেন্ট দিয়ে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন।
সাপের উপদ্রব ও তা মোকাবিলায় পর্যাপ্ত চিকিৎসা সুবিধা না থাকায় শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন। ঝোপঝাড় পরিষ্কার, হলের চারপাশে ক্লোরোফরম প্রয়োগ, জরুরি চিকিৎসার ব্যবস্থা এবং প্রয়োজনে অ্যান্টিভেনম ব্যবহারের অনুমতির জন্য যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন তারা।
ল’ অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ইউসুফ সানি বলেন, সম্প্রতি হলের রুমের সামনেই সাপ মেরেছেন। প্রায়ই সাপ দেখা যায়। ক্যাম্পাসের ঝোপঝাড় নিয়মিত পরিষ্কার করা হলে হয়তো এই উপদ্রব কমবে।
আল-ফিকহ্ অ্যান্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগের মনির হোসেনের ভাষ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেলে সাপে কাটার চিকিৎসা নেই। এটা খুবই উদ্বেগজনক। কাউকে বিষধর সাপে কামড়ালে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসা পাওয়ার উপায় নেই– এটা নিয়েই আতঙ্কে থাকেন। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট অফিস প্রধান আলাউদ্দিন জানান, লোকবল সংকট থাকায় নিয়মিত ঝোপঝাড় পরিষ্কার সম্ভব হচ্ছে না। তবে নতুন কিছু মেশিন সংযোজনের মাধ্যমে পরিষ্কার কার্যক্রম জোরদারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
প্রভোস্ট কাউন্সিলের সভাপতি অধ্যাপক শেখ এ বি এম জাকির হোসেন বলেন, দ্রুত প্রভোস্ট কাউন্সিলের সভা ডেকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।
উপাচার্য অধ্যাপক নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেলে অ্যান্টিভেনম ব্যবহারের অনুমতিসহ সাপে কাটার প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ব্যবস্থার বিষয়ে প্রধান মেডিকেল অফিসারের সঙ্গে আলোচনা করবেন।