এক কেজি কাঁচা মরিচের দাম ৩০০ টাকা ছাড়াল
Published: 17th, August 2025 GMT
টানা বৃষ্টির কারণে মরিচের সরবরাহ কম থাকায় বেড়েছে কাঁচা মরিচের দামের ঝাঁজ। কয়েক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচের দাম প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে। রাজধানীর বাজারে আজ সকালে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ৩০০ থেকে ৩৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি ও কিছু এলাকায় বন্যার ফলে উৎপাদন কমেছে দেশের অনেক জেলায়। অনেক জেলায় মরিচের গাছ নষ্ট হয়ে গেছে। তাই বাজারে মরিচের সরবরাহ কমেছে।
আজ রোববার রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট ও টাউন হল খুচরা বাজারে সর্বোচ্চ ৩৬০ টাকা কেজি দরে মরিচ বিক্রি হয়েছে। সপ্তাহখানেক আগেও বাজারে ১৮০ থেকে ২২০ টাকা কেজি দরে কাঁচা মরিচ কেনা যেত। যদিও কোথাও একটু কমেও বিক্রি হয়েছে। বিমানবন্দরের পাশে হজ ক্যাম্প বাজারে ৮০ টাকার নিচে ২৫০ গ্রাম কাঁচা মরিচ মিলছে না। এ নিয়ে প্রায় ক্রেতা-বিক্রেতার বাগ্বিতণ্ডা হয়।
রাজধানীর বাজার ঘুরে দেখা যায়, কাঁচা মরিচের ধরন ও বাজারের অবস্থানভেদে দামে পার্থক্য রয়েছে। পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ১৮০ থেকে ২৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে গত কয়েক সপ্তাহ আগে পাইকারিতে মরিচের কেজি ছিল ৬০ থেকে ১০০ টাকা। তবে বেশির ভাগ পরিবারই কাঁচা মরিচ কেনে ২৫০ থেকে ৫০০ গ্রাম। সেই হিসেবে রাজধানীর খুচরা বাজারে ২৫০ গ্রাম কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। আর পাড়া-মহল্লার দোকান বা যাঁরা ভ্যানে করে মরিচ বিক্রি করছেন, সেখানে দাম আরও বেশি।
তবে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে আজ থেকে মরিচের দামের ঝাঁজ কিছুটা কমতে শুরু করেছে। এমনিতেই রাজধানীর অন্যান্য বাজার থেকে কারওয়ান বাজারে সব ধরনের পাইকারি পণ্যের দাম কিছুটা কম। কারওয়ান বাজারের করম আলী নামে এক আড়তদার জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে দামটা বেশি। আগে ১২০ থেকে ১৬০ টাকায় কিনতাম, এখন সেটা ১৮০ থেকে ২০০ টাকায় গিয়ে ঠেকেছে। গতকাল তো ২৪০ থেকে ২৮০ টাকাও কেজিতে কেনাবেচা হয়েছে। তবে গতকাল থেকে দেশীয় মরিচের সরবরাহ কিছুটা বেড়েছে। তাই আগামীকাল থেকে দাম কিছুটা কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটের সবজি বিক্রেতা সোহেল রানা বলেন, ‘আমরা কারওয়ান বাজার থেকে গতকাল ১ হাজার ২০০ টাকা দরে পাল্লা (১ পাল্লা ৫ কেজি হিসেবে) কিনেছি। সেই সঙ্গে পরিবহন ও অন্যান্য খরচ হিসাব করে ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা কেজি বিক্রি করছি।’
মোহাম্মদপুর টাউন হল বাজারের আরেক সবজি বিক্রেতা নুরুজ্জামান বাবু বলেন, এই সময়ে দেশের বগুড়া, যশোর, কুষ্টিয়া ও রংপুরে বেশি কাঁচা মরিচ হয়। তবে অনেক জায়গায় অতিবৃষ্টির কারণে ফলন কমেছে। তাই সরবরাহ কম। সে জন্য দামও কিছুটা বাড়তি।
বিক্রেতারা জানান, মূলত বৃষ্টির কারণে বাজারে কাঁচা মরিচের সরবরাহ কমে গেছে। এ কারণে দাম কিছুটা বেড়েছে। এ ছাড়া বৃষ্টি দেখে মরিচের আড়তদার ও পাইকারি বিক্রেতারাও বাড়তি দাম নিচ্ছেন। সব মিলিয়ে বেশ খানিকটা দাম বেড়ে গেছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ক রওয় ন ব জ র সরবর হ কম
এছাড়াও পড়ুন:
চলতি অর্থবছরে ৫% জিডিপি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস এডিবির; ৪ কারণে চাপে প্রবৃদ্ধি
চলতি অর্থবছর মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) কিছুটা বাড়বে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। এডিবির পূর্বাভাস অনুসারে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৫ শতাংশ হতে পারে। গত অর্থবছরের জন্য জিডিপি প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন হলো ৪ শতাংশ।
এডিবি আরও বলেছে, তৈরি পোশাক রপ্তানি স্থিতিশীল থাকলেও রাজনৈতিক পরিবর্তন, ঘন ঘন বন্যা, শিল্প খাতে শ্রমিক অস্থিরতা এবং বিরাজমান উচ্চ মূল্যস্ফীতি কারণে দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা দুর্বল হয়ে পড়েছে। এই চার কারণে প্রভাব পড়ছে সামগ্রিক প্রবৃদ্ধিতে।
আজ মঙ্গলবার এডিবি এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক (এডিও) সেপ্টেম্বর সংস্করণ প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি সম্পর্কে এমন পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
এডিবি আরও বলেছে, চলতি অর্থবছরে ভোগ্যব্যয় বাড়বে। কারণ, রেমিট্যান্সের প্রবৃদ্ধি পাবে। এ ছাড়া আসন্ন নির্বাচনসংক্রান্ত নানা ধরনের খরচের কারণেও ভোগব্যয় বাড়াবে।
বাংলাদেশে এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হো ইউন জিয়ং বলেন, ‘ভবিষ্যৎ প্রবৃদ্ধিনির্ভর করবে ব্যবসায়িক পরিবেশ উন্নয়নের মাধ্যমে প্রতিযোগিতা বাড়ানো, বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা এবং নির্ভরযোগ্য জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করার ওপর। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের বাণিজ্যে মার্কিন শুল্কের প্রভাব এখনো স্পষ্ট নয়। দেশের ব্যাংক খাতের দুর্বলতা অব্যাহত রয়েছে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য জরুরি।
এডিবির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০২৬ অর্থবছরের জন্য কিছু ঝুঁকি রয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যসংক্রান্ত অনিশ্চয়তা, ব্যাংক খাতের দুর্বলতা এবং নীতি বাস্তবায়নের অনাগ্রহ প্রবৃদ্ধির অগ্রগতিতে বাধা হতে পারে। এ জন্য সঠিক সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বজায় রাখা এবং কাঠামোগত সংস্কার দ্রুততর করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৭ শতাংশ। গত অর্থবছরের তা বেড়ে দাঁড়ায় ১০ শতাংশ। এর পেছনে রয়েছে পাইকারি বাজারে সীমিত প্রতিযোগিতা, বাজার তথ্যের ঘাটতি, সরবরাহ শৃঙ্খলে বাধা এবং টাকার অবমূল্যায়ন।
এডিবি বলছে, চলতি অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি হবে ভোগব্যয়, যা শক্তিশালী রেমিট্যান্স প্রবাহ ও নির্বাচন-সংশ্লিষ্ট ব্যয়ের কারণে বাড়বে। তবে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি ও রাজস্বনীতি এবং বিনিয়োগকারীদের সতর্ক মনোভাব বিনিয়োগকে মন্থর করতে পারে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রপ্তানির ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নে প্রতিযোগিতা বাড়ায় রপ্তানি খাত এবং এর প্রবৃদ্ধি চাপ বাড়াবে। ফলে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে রপ্তানিকারকদের মূল্য কমাতে হতে পারে।