‘খাতিরের’ ঠিকাদারকে কাজ দিতে ডিএনসিসির ‘দরপত্রে কারসাজি’
Published: 17th, August 2025 GMT
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে (ডিএনসিসি) বাতি স্থাপনের কাজ ‘খাতিরের’ ঠিকাদারকে দিতে দরপত্রে কারসাজির অভিযোগ উঠেছে।
দরপত্র জমাদানের সময় শেষ হওয়ার মাত্র তিন দিন আগে শর্ত বদলানো হয়। পরে দরপত্র জমার সময় বাড়ানো হয়। শর্ত বদলানোর ক্ষেত্রে কারিগরি কমিটির অনুমোদন নেওয়া হয়নি।
ঢাকার রামপুরা সেতু থেকে কুড়িল মোড় পর্যন্ত সড়কের অংশে বসানোর জন্য খুঁটি, সড়কবাতি (স্মার্ট এলইডি লাইট) ও অন্যান্য বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম কিনতে গত ১ জুন এই দরপত্র ডাকা হয়েছিল।
দরপত্রে সর্বনিম্ন দর আসে ৭ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। যদিও ঢাকা ওয়াসার অর্থায়নের এই কাজের প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয় ৯ কোটি টাকার বেশি।
ঢাকার রামপুরা সেতু থেকে কুড়িল মোড় পর্যন্ত সড়কের অংশে বসানোর জন্য খুঁটি, সড়কবাতি (স্মার্ট এলইডি লাইট) ও অন্যান্য বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম কিনতে গত ১ জুন এই দরপত্র ডাকা হয়েছিল।সবচেয়ে কম দরদাতা প্রতিষ্ঠানের নাম মেসার্স জেএপি ট্রেডিং। প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে ডিএনসিসির প্রকৌশল বিভাগের বিদ্যুৎ শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী (অতিরিক্ত দায়িত্ব) সাইফুল ইসলামের যোগসাজশের অভিযোগ উঠেছে।
জানতে চাইলে সাইফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, দরপত্রের শর্তে বড় কোনো পরিবর্তন হয়নি। কারিগরি কমিটির অনুমোদন ছাড়া এসব শর্তে পরিবর্তন আনা হলেও তাতে কর্তৃপক্ষের সম্মতি রয়েছে।
ঠিকাদারের সঙ্গে খাতির-যোগসাজশের অভিযোগ অস্বীকার করেন সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, দরপত্রের শর্ত পরিবর্তন না করলে প্রতিযোগিতা কম হতো, ডিএনসিসির খরচ বেড়ে যেত।
যদিও একজন সরকারি ক্রয় বিশেষজ্ঞ বলছেন, এভাবে শর্ত পরিবর্তনের সুযোগ নেই। দরপত্র জমাদানের সময় শেষ হওয়ার মাত্র তিন দিন আগে শর্ত বদল করাটা সন্দেহজনক।
এই কেনাকাটার দরপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল গত ২৯ জুন। তবে ২৬ জুন শর্ত পরিবর্তনের পর দরপত্র জমার সময় বাড়িয়ে ১০ জুলাই নির্ধারণ করা হয়। দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দরপত্র জমা দেয়। জেএপি দর দেয় ৭ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। এসএস রহমান ইন্টারন্যাশনাল দেয় ৮ কোটি ৭ লাখ টাকা।
যে কারিগরি কমিটি স্পেশিফিকেশন তৈরি করেছে, সেটা তাদের অবগত না করে পরিবর্তন করা হয়েছে। এটা ধরে নেওয়া যায়, উদ্দেশ্যমূলকভাবে করা হয়েছে। কাউকে পক্ষপাতিত্ব করার জন্য করা হয়েছে।ফারুক হোসেন, সরকারি ক্রয় বিষয়ে বিশেষজ্ঞশর্তবদলপ্রথম দরপত্র আহ্বানের সময় টিডিএসের (টেন্ডার ডাটা শিট) শর্তে আন্তর্জাতিক মানের প্রতিষ্ঠান থেকে পণ্যের গুণগত নিশ্চয়তার বিভিন্ন সনদ চাওয়া হয়েছিল। সংশোধিত শর্তে ‘আন্তর্জাতিক মান’ বাদ দিয়ে শুধু ‘প্রতিষ্ঠিত সংস্থা’ থেকে সনদ দেওয়ার কথা বলা হয়।
প্রথমে শর্ত ছিল, বাতি, ড্রাইভার, ডিসিইউ (একাধিক বাতি একত্রে সমন্বয়ের ব্যবস্থা) ও সিএমএস (সেন্ট্রাল ম্যানেজমেন্টে সিস্টেম) একই ব্র্যান্ড বা প্রতিষ্ঠানের হতে হবে। পরে তা পরিবর্তন করে শুধু ডিসিইউ ও সিএমএস একই প্রতিষ্ঠানের হতে হবে বলা হয়। আর নতুন করে শর্ত যোগ হয়, সিএমএসের সোর্স কোড সরবরাহ করতে হবে।
কোনো আন্তর্জাতিক বা প্রতিষ্ঠিত কোম্পানি সাধারণত নিজেদের সফটওয়্যারের সোর্স কোড দেয় না। তা ছাড়া সোর্স কোডের মূল্য অনেক ও অত্যন্ত গোপনীয়।
খোদ ডিএনসিসির কর্মকর্তারাই বলছেন, তাঁরা ধারণা করছেন, ঠিকাদার জেএপিকে আগেভাগেই সোর্স কোড দেওয়ার নিশ্চয়তা দিয়েছে স্থানীয় সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান এনার্জি প্লাস।
দরপত্রের কারিগরি বিবরণেও (স্পেসিফিকেশন) একাধিক সংশোধনী আনা হয়। প্রথমে শর্ত ছিল, বাতির ড্রাইভার হতে হবে ফিলিপস জাইটানিয়াম (পোল্যান্ডের তৈরি)। পরে যুক্ত করা হয় এর ‘সমমান বা সমতুল্য’।
একইভাবে প্রথমে বলা হয়েছিল, ইউরোপের যেকোনো দেশের বন্দর থেকে পণ্য আনতে হবে। পরে তা পরিবর্তন করে করা হয়, দরদাতা যে বন্দর উল্লেখ করবে, সেটিই প্রযোজ্য।
তবে শর্তে এসব পরিবর্তনের আগে প্রকিউরমেন্ট এনটিটি (ক্রয়কারী) নির্বাহী প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম কারিগরি কমিটির কোনো অনুমোদন নেননি।
এ বিষয়ে সরকারি ক্রয় বিষয়ে বিশেষজ্ঞ ও সরকারের বাংলাদেশ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অথরিটির (বিপিপিএ) সাবেক মহাপরিচালক ফারুক হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, যে কারিগরি কমিটি স্পেশিফিকেশন তৈরি করেছে, সেটা তাঁদের অবগত না করে পরিবর্তন করা হয়েছে। এটা ধরে নেওয়া যায়, উদ্দেশ্যমূলকভাবে করা হয়েছে। কাউকে পক্ষপাতিত্ব করার জন্য করা হয়েছে।
সবচেয়ে কম দরদাতা প্রতিষ্ঠানের নাম মেসার্স জেএপি ট্রেডিং। প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে ডিএনসিসির প্রকৌশল বিভাগের বিদ্যুৎ শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী (অতিরিক্ত দায়িত্ব) সাইফুল ইসলামের খাতির-যোগসাজশের অভিযোগ উঠেছে।নানান ঘাটতিনির্বাচিত প্রতিষ্ঠান জেএপি এলইডি বাতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ এলভিডি ও আরওএইচএস সনদ জমা দেয়নি। এর মধ্যে আরওএইচএস সনদ পরিবেশে ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদানের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করে। আর এলভিডি সনদ ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিরাপত্তামান পূরণের স্বীকৃতি।
সংশোধিত টিডিএসে সড়কবাতি, ডিসিইউ ও সিএমএসের জন্য প্রস্তুতকারকের কাছ থেকে গুণগত মানের সনদ (কোয়ালিটি অ্যাসিওরেন্স সার্টিফিকেট) চাওয়া হয়। তবে জেএপি ডিসিইউ ও সিএমএসের জন্য প্রস্তুতকারীর কোনো স্বীকৃত সনদ জমা দেয়নি। সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান এনার্জি প্লাস শুধু নিজেদের প্যাডে এ-সংক্রান্ত একটি ‘ডিক্লারেশন’ দিয়েছে।
শর্ত অনুযায়ী, বাতির ড্রাইভারে ডাবল আইসোলেশন থাকতে হবে, তা ক্লাস-২ মানের হবে। জেএপি দিচ্ছে চীনা প্রতিষ্ঠানের ড্রাইভার, যা সিঙ্গেল আইসোলেশন ক্লাস-১ মানের।
এ ছাড়া ভোল্টেজ, পাওয়ার ফ্যাক্টর, সিস্টেম লুমেন টলারেন্সের শর্ত পূরণ করতে পারেনি জেএপি।
এলইডি বাতি ও সিএমএস একই কোম্পানির হওয়ার কথা। কিন্তু ট্রেডিং দিচ্ছে চীনা প্রতিষ্ঠান শ্রেডারের এভানতো সিরিজের বাতি এবং এনার্জি প্লাসের সিএমএস, যা পরিচালনায় জটিলতা তৈরি করবে বলে মত ডিএনসিসির প্রকৌশলীদের।
কম দামি বাতিজেএপি জানিয়েছে, তারা চীনা প্রতিষ্ঠান শ্রেডার লাইটিং ইন্ডাস্ট্রিয়াল কোং লিমিটেডের এভানতো সিরিজের এলইডি বাতি সরবরাহ করবে।
আমদানিকারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এসব বাতির আন্তর্জাতিক মূল্য ৬০-৭০ মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি টাকায় তা প্রায় ৭ হাজার ৩০০ থেকে ৮ হাজার ৫০০ টাকা। সব ধরনের শুল্ক ও কর যোগ হলে দেশে প্রতিটি বাতির দাম দাঁড়ায় ১৮ থেকে ২০ হাজার টাকার মধ্যে। অথচ দরপত্রের প্রাক্কলনে উন্নত মানের জন্য প্রতিটি বাতির দাম ধরা হয়েছে এক লাখ টাকার কাছাকাছি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডিএনসিসির এক প্রকৌশলী প্রথম আলোকে বলেন, নিম্নমানের বাতি দেওয়ার সুযোগ নিয়েই জেএপি প্রাক্কলিত দামের তুলনায় প্রায় ২০ শতাংশ কম দরপ্রস্তাব করেছে।
বিষয়টি তিনি খতিয়ে দেখবেন। দরপত্রপ্রক্রিয়ায় অনিয়ম করে যদি কোনো কাজ দেওয়া হয়ে থাকে, তাহলে তিনি তা বাতিল করবেন। আবার দরপত্র আহ্বান করবেন।মোহাম্মদ এজাজ, ডিএনসিসির প্রশাসকঅন্য অভিযোগ৪ আগস্ট ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ জমা পড়ে। এতে বলা হয়, জেএপির প্রোপাইটর (মালিক) মোর্তজা পারভেজ ও আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য এস এম কামাল হোসেন সম্পর্কে বেয়াই। অতীতে কামাল হোসেনের প্রভাব খাটিয়ে ডিএনসিসির প্রায় ৪০ কোটি টাকার কাজ নিয়েছে জেএপি।
বেয়াইয়ের সম্পর্ক সত্য বলে প্রথম আলোকে জানান মোর্তজা পারভেজ। তবে তিনি বলেন, সম্পর্ক হওয়ার আগে থেকেই তিনি ঠিকাদারি ব্যবসা করছেন। আত্মীয়স্বজন বড় কেউ হয়ে গেলে, তখন এ নিয়ে কাউকে জড়িয়ে কিছু বললে করার কিছু থাকে না। তিনি ঠিকাদার হিসেবে কাজ পেয়েছেন, বেয়াইয়ের ক্ষমতায় কিংবা প্রভাব খাটিয়ে নয়। আর ৪০ কোটি নয়, প্রায় ৩৫ কোটি টাকার কাজ তিনি ডিএনসিসিতে করেছেন।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী বরাবর এনার্জি প্লাস, হ্যাভেন্স ও সিবিই—এই তিন প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স, কাজ ও পাওনা বাতিলের লিখিত আবেদন জানায় বাংলাদেশ গণপূর্ত ঠিকাদার সমিতি।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়, প্রতিষ্ঠান তিনটির শেয়ারমালিক পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের আত্মীয়। আগে এসব প্রতিষ্ঠান বেনজীর আহমেদের অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে পুলিশ সদর দপ্তরসহ অন্যান্য দপ্তরের কাজ বাগিয়ে নেয়।
ডিএনসিসির প্রশাসকের কাছে দেওয়া অভিযোগেও বিষয়টির উল্লেখ আছে। এতে এনার্জি প্লাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহ জুবায়েরকে বেনজীর আহমেদের নিকটাত্মীয় বলা হয়।
শাহ জুবায়ের প্রথম আলোকে বলেন, আত্মীয়তা আর টেন্ডার বাগিয়ে নেওয়ার অভিযোগ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। সাবেক পুলিশপ্রধান বেনজীর আহমেদ তাঁর কোনো আত্মীয় নন। আওয়ামী লীগের আমলে তাঁর প্রতিষ্ঠান কোনো দরপত্রে অংশগ্রহণ করেনি।
দরপত্রে অনিয়মের অভিযোগ সম্পর্কে জানানো হলে ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ প্রথম আলোকে বলেন, বিষয়টি তিনি খতিয়ে দেখবেন। দরপত্রপ্রক্রিয়ায় অনিয়ম করে যদি কোনো কাজ দেওয়া হয়ে থাকে, তাহলে তিনি তা বাতিল করবেন। আবার দরপত্র আহ্বান করবেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ড এনস স র প র প রথম আল ক র দরপত র ও স এমএস দরপত র র সরবর হ ড স ইউ প রক শ এন র জ হয় ছ ল র জন য সরক র হওয় র র সময় করব ন
এছাড়াও পড়ুন:
মেঘনায় ইলিশের দেখা নেই, বিপাকে অর্ধলক্ষাধিক জেলে পরিবার
লক্ষ্মীপুরের মেঘনায় ভরা মৌসুমেও কাঙ্খিত রূপালী ইলিশের দেখা মিলছে না। দিনের পর দিন নদীতে জাল ফেলেও বেশিরভাগ জেলে ফিরছেন খালি হাতে। এতে চরম আর্থিক সংকটে পড়েছেন জেলার প্রায় অর্ধলক্ষাধিক জেলে পরিবার। ক্ষতির মুখে পড়েছেন আড়ৎদার ও মাছ ব্যবসায়ীরাও।
ইলিশের আশায় ভোরের আলো ফুটতেই জাল কাঁধে নিয়ে নদীতে নামছেন জেলার মেঘনাপাড়ের জেলেরা। তবে দীর্ঘ সময় নদীতে কাটিয়েও মিলছে না কাঙ্ক্ষিত ইলিশ। গত দুই মাস ধরেই চলছে এমন পরিস্থিতি। মেঘনার ২৫টি মাছঘাটে প্রতিদিন যেখানে গড়ে বেচাবিক্রি হতো প্রায় সাড়ে তিন টন ইলিশ, সেখানে এখন চাহিদার তুলনায় সরবরাহ একেবারেই নেই।
গত অর্থবছরে লক্ষ্মীপুরে ২৩ হাজার টন ইলিশ উৎপাদন হলেও এবার ভিন্ন চিত্র। সামান্য পরিমাণে যে ইলিশ উঠছে, তার দাম মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে। সব মিলিয়ে জেলে পরিবার থেকে শুরু করে আড়ৎদার, সবার মুখে এখন একটাই কথা, ‘ইলিশ গেলো কই?’
জেলে আব্দুর রহমান, রবিন হোসেন, ইলিয়াস, মোস্তফা ও জুলফিকাররা বলছেন- বর্ষা মৌসুমে যেখানে প্রতিদিন ৮-১০ কেজি ইলিশ ধরা পড়তো, সেখানে এখন জাল তুলে মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। অনেকে ধারদেনা করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। আগে দিনে ১০-১৫ কেজি মিলতো, এখন ২-৩ কেজিও পাওয়া যায় না। ঘরে চাল নাই, ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে চিন্তিত এসব জেলেরা।
ইলিশের সরবরাহ কম থাকায় বিপাকে পড়েছেন স্থানীয় আড়ৎদার ও মাছ ব্যবসায়ীরাও। আড়ৎদার নিজাম উদ্দিন বলেন, “মাছ না থাকলে আড়ৎ চালানো দায়। এখন তো আড়ৎ বন্ধ করে বসে থাকা ছাড়া উপায় দেখছি না। গত তিনদিনে অল্প কিছু মাছ জেলেদের জালে উঠলেও হতাশা কাটছে না।”
দেশের বিভিন্ন জেলায় ইলিশ রপ্তানি করা আব্দুল হক ব্যাপারী বলেন, “প্রতি মৌসুমে যেখানে ট্রাকে ট্রাকে ইলিশ বাজারজাত হতো, এখন দিনে ১-২ মণ ইলিশও পাওয়া যাচ্ছে না। যেটুকু মাছ পাই, দাম এত বেশি যে মানুষ কিনতেই পারছে না। ব্যবসায় আমরাও ক্ষতিতে আছি।”
মৎস্য বিভাগ বলছে, নদীতে লবণাক্ততা কমে যাওয়া, পানির প্রবাহে পরিবর্তন এবং জলবায়ু প্রভাবের কারণে ইলিশের প্রজনন ও আগমন ব্যাহত হচ্ছে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন বলেন, “ইলিশের মাইগ্রেশনে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। প্রাকৃতিক প্রভাব ও পরিবেশগত কারণে মাছ কম পাওয়া যাচ্ছে। তবে গত কয়েকদিনে কিছুটা ইলিশ ধরা পড়ছে। আশা করছি অবস্থা ধীরে ধীরে উন্নতি হবে।”
ঢাকা/জাহাঙ্গীর/এস